সুলতান সালাহুদ্দীন আইয়্যূবী ও আশআরী মতবাদ

সুলতান সালাহুদ্দীন আইয়্যূবী রাহিমাহুল্লাহ আশআরী মতবাদের ওপর বড় হয়েছিলেন এবং এ মতবাদের ওপরই তিনি সারা জীবন অতিবাহিত করেছেন এটিই অধিকাংশ আলেমের মত।
সুলতান সালাহুদ্দীন আইয়্যূবী রাহিমাহুল্লাহ ছিলেন মুসলিম বীর, মহান নেতা, যিনি মিসর থেকে বাতেনী শিয়া ফির্কার লোকদেরকে সমূলে উৎপাটন করেছিলেন, তাদের মতবাদকে গুড়িয়ে দিয়েছিলেন। আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিয়াদের উৎখাত করে সে জায়গায় আশ‘আরীদের কিতাব দিয়ে ইলমী হালাকা চালু করেছিলেন।

সুলতান সালাহুদ্দীন আইয়্যূবী রাহিমাহুল্লাহ সম্পর্কে এটিই বিশুদ্ধ যে, তিনি শাফে‘ঈ মাযহাবের অনুসারী ছিলেন, আকীদাতে আশআরী ছিলেন। ইমাম সুয়ূত্বী রাহিমাহুল্লাহ তার ‘আল-ওয়াসায়িল ইলা মুসামারাতিল আওয়ায়িল’ গ্রন্থে (প. ১৫) বলেন, ‘সুলতান সালাহুদ্দীন আইয়্যূবী রাহিমাহুল্লাহ মুআযযিনদেরকে নির্দেশ দিতেন যেন আশআরী আকীদা প্রচার-প্রসার করে, সেটা তার সময় থেকে আজ পর্যন্ত চালু আছে।’ [অর্থাৎ সুয়ূত্বীর সময় ৯১১ পর্যন্ত চালু ছিল]
শাইখ মুহাম্মাদ ইবন ‘আল্লান আস-সিদ্দীকী, আশ-শাফে‘ঈ বলেন, ‘অতঃপর যখন সুলতান সালাহুদ্দীন ইবন আইয়্যূব ক্ষমতায় গেলেন, তিনি মানুষদেরকে আশ‘আরী আকীদা গ্রহণে বাধ্য করলেন, মুআযযিনদের নির্দেশ দিলেন যেন আশআরী আকীদা প্রচার-প্রসার করে, যা তখন ‘মুর্শিদিয়া’ নামে খ্যাত ছিল। তারা সেটা প্রতি রাতেই করতেন’।
সুলতান সালাহুদ্দীন রাহিমাহুল্লাহ এ আকীদায় থাকার বিষয়টি নিয়ে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই; কারণ তিনি এ আকীদার ওপর বড় হয়েছিলেন, যখন তিনি দামেশকে সুলতান নূরুদ্দীন ইবন যিঙ্কী এর অধীন চাকুরী করতেন। সে সময় ছোট বয়সে সুলতান সালাহুদ্দীন সে আকীদার গ্রন্থটি মুখস্থ করেছিলেন, যা তার জন্য আবুল মা‘আলী মাস‘ঊদ ইবন মুহাম্মাদ ইবন মাস‘উদ আন-নাইসাপূরী লিখেছিলেন আর তিনি তা তৎকালীন শিশুদের মুখস্থ করাতেন।
বস্তুত এভাবেই বনু আইয়্যূব এর সকল সুলতানরা আশআরী আকীদার ধারক-বাহক হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করে আর তাদের পুরো যুগ ধরেই তা চলতে থাকে, পরবর্তীতে মামলুকরাও ওয়ারিস সূত্রে তা প্রাপ্ত হয়, তারপর বনী উসমান তথা উসমানীয় খিলাফতের লোকেরাও সেটাকেই আকীদা হিসেবে গ্রহণ করে নেয়।
তাদের মধ্যে প্রসিদ্ধ ছিলেন, আল-মালেক আল-কামিল আল-আইয়্যূবী, যিনি দিমইয়াত্ব থেকে ক্রুসেডারদের হটাতে সক্ষম হয়েছিলেন। অনুরূপভাবে সুলতান আল-আশরাফ খলীল ইবন মানসূর সাইফুদ্দীন ক্বালাঊন, যিনি ক্রুসেডারদেরকে পুরো শাম দেশ থেকে বিতাড়িত করেছিলেন। বরং সকল মামলুক শাসকরাই এ আকীদায় বিশ্বাস করতেন। এমনকি উসমানীয় খিলাফতের বিখ্যাত সুলতান ‘মুহাম্মাদ আল-ফাতেহ’ আল-উসমানী, তিনিও একই আকীদা বিশ্বাস ধারণ করতেন।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে বুঝা গেল যে সুলতান সালাহুদ্দীন আশ‘আরী মতবাদের লোক ছিলেন। তখনকার সময়ে মিসর ও সিরিয়ায় এ আকীদাই প্রসিদ্ধ ছিল; তারপরও ইমাম ইবন কুদামাহ রাহিমাহুল্লাহ তাাদের সাথে যুদ্ধ করতেন। আর তাদেরকে উদ্দেশ্য করেই তার ‘লুম‘আতুল ই‘তিক্বাদ’ গ্রন্থটি রচনা করেন।
তবে কোনো কোনো গবেষক বলেন, সুলতান সালাহুদ্দীন আইয়্যূবী রাহিমাহুল্লাহ আশআরী আকীদার ছিলেন না। কারণ তিনি কালাম শাস্ত্রের কিতাবাদী জ্বালিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
বস্তুত এটি কোনো প্রমাণ নয়; কারণ তিনি কালাম শাস্ত্রে যারা বাড়াবাড়ি করে দার্শনিকদের মত সীমালঙ্গন করত তাদের পুস্তুকাদি জ্বালিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন, সাধারণ আশআরী আকীদার কিতাব নয়।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যদি সুলতান সালাহুদ্দীন আইয়্যূবী রাহিমাহুল্লাহ তিনি আশ‘আরী আকীদার লোক ছিলেন সেটা প্রমাণিত হয়, আর তার সাথে অনেক আলেম যুদ্ধ করেছেন সেটাও সাব্যস্ত হয়, অনুরূপভাবে আল্লাহ তা‘আলা তাকে বিজয় দিয়েছেন সেটাও সর্বজনবিদিত। তাহলে তা দ্বারা কি এটা প্রমাণিত হয় না যে আশ‘আরী মতবাদ হক্ব?
বস্তুত এখানেই হচ্ছে যত বুঝার ভুল।
প্রথমত: সালাহুদ্দীন আইয়্যূবী রাহিমাহুল্লাহ নিঃসন্দেহে একজন বীর মুজাহিদ ছিলেন, যুদ্ধের দিকপাল ছিলেন, কিন্তু তিনি আলেমগণের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। আর বাদশাহদের কর্মকাণ্ড দিয়ে শার‘ঈ কাজের দলীল নেয়া যায় না। এর প্রমাণ হচ্ছে,
১- ‘আব্বাসী খলীফা মু‘তাসিম’ তিনি বিখ্যাত ‘আম্মুরিয়া’ বিজয়ের বীরপুরুষ ও খৃষ্টানদের পতাকা অবনমিতকারী ছিলেন। কিন্তু তিনি ছিলেন মু‘তাযিলা আকীদার প্রচার-প্রসারকারী। আল্লাহ তাকে বিজয় দিয়েছেন। সুতরাং তার বিজয়ের ওপর নির্ভর করে মু‘তাযিলা মতবাদকে সত্য বলার বিষয়টি কি আশ‘আরীরা মেনে নিবে?
বরং আমরা মু‘তাযিলাদেরকে আশ‘আরীদের থেকে বেশি বিবেকবান দেখতে পাই; কারণ তারা আব্বাসী খলীফা মামুন তাদের পক্ষে থাকাকে হকের মানদণ্ড নির্ণয় করেনি।
২- সুলতান তুগরিলবিক, যিনি নাসারাদের পর্যুদস্ত করেছিলেন। আল্লাহ তাকে নাসারাদের উপর বিশাল বিজয় দিয়েছিলেন; কিন্তু আমরা দেখতে পাই তৎকালীন আশআরীরা তাকে মিম্বরে উঠে লা‘নত করতো।
৩- আল-মালিক আল-আশরাফ ইবন আল-মালিক আল-আদেল, যিনি সুলতান সালাহুদ্দীন এর ভাই ছিলেন, তিনি আশ‘আরী মতবাদ বিরোধী ছিলেন। আল্লাহ তা‘আলা তাকেও অনেক বিজয় দিয়েছিলেন।
৪- সুলতান মুহাম্মাদ আল-ফাতিহ, যিনি মাতুরিদী ও সুফী হিসেবে বিখ্যাত ছিলেন, তিনি আশ‘আরী মতবাদের লোক ছিলেন না, তাহলে তার বিজয়কে কী হিসেবে নেয়া হবে?
বস্তুত বিজয় লাভের বিষয়টি বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে; সেটাকে হকের মানদণ্ড নির্ধারণ করা যাবে না। কখনও কখনও ঈমান ও তাকওয়ার কারণে বিজয় আসে, যেমন রাসূল ও সাহাবায়ে কিরামের যুগে। কখনও কখনও যুলুমকে প্রতিরোধ করার জন্য আল্লাহ তা‘আলা মাযলুমের পক্ষ নিয়ে কাউকে দিয়ে বিজয়ের ব্যবস্থা করেন। কখনও কখনও যুদ্ধের সেনাপতির ইখলাস ও তার সাথীদের সততা ও ঐকান্তিক চাওয়াকে মূল্যায়ণ করে আল্লাহ তা‘আলা বিজয় দান করেন, সুতরাং সামরিক বিজয় লাভ করলেই সেটাকে বিশুদ্ধ আকীদার মানদণ্ড নির্ধারণ করার কোনো সুযোগ নেই। যদি তাই হতো তবে নবী-রাসূল ও সাহাবায়ে কিরামের সময়ে তাদের সকল যুদ্ধে জয়লাভ করা অবশ্যম্ভাবী হতো; কিন্তু তাদের যুদ্ধের মাঝেও বিভিন্ন কারণে বিপর্যয় এসেছিল।
দ্বিতীয়ত: সালাহুদ্দীন আইয়্যূবীর সাথে আলেমগণ যুদ্ধ করেছেন, এর দ্বারাও প্রমাণিত হয় না যে সালাহুদ্দীন আইয়্যূবী রাহিমাহুল্লাহর সম্পূর্ণ আকীদা বিশুদ্ধ ছিল; কারণ এখানে আমাদেরকে জানা দরকার, আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত তাদের শাসকদের সাথে কী আচরণ করেন।
আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের আলেমগণ তাদের শাসকের সাথে ভারসাম্যপূর্ণ আচরণ করেন; তাদের সাথে যুদ্ধ করেন, তাদের ঝাণ্ডার নিচে একত্রিত হয়ে তাদের চেয়েও খারাপ আকীদার লোকদের বিরুদ্ধে লড়াই করেন। তাদের শ্রেষ্ঠত্ব ও নেতৃত্বকে মেনে নেন। তবে তারা মনে করেন যে এরা যুদ্ধের জন্য যথাযথ মানুষ হলেও তারা ইলম ও বুঝের ক্ষেত্রে অপূর্ণ; তাদের থেকে ইলম ও সমঝ নেয়ার চিন্তা তারা করে না। তারা এদের অধীন যুদ্ধ করার কারণ কখনও কখনও এটাও হতে পারে যে, এসব আলেমদের অনেকের কাছেই বিশুদ্ধ আকীদার অনেক কিছু স্পষ্ট ছিল না। আবার কখনও কখনও তারা আল্লাহর পথের লড়াই বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করে তাদের সাথে অংশগ্রহণ করেছেন। আবার কখনও কখনও তারা চিন্তা করেছেন দীনী স্বার্থের কথা; কারণ কাফিরদের কুফরীর বড় বিপদের সামনে মুসলিমদের বিভিন্ন ফির্কার ছোট বিপদকে তারা তাদের সাথে অবস্থান করে সংশোধনযোগ্য মনে করেছিলেন।
তাছাড়া পূর্বোক্ত আলেমগণের একটি বিরাট গোষ্ঠী নিজেদেরকে আশ‘আরী মতবাদের দিকে সম্পৃক্ত করতেন, কিন্তু তারা সালাফে সালেহীনের আকীদার বিরোধী ছিলেন না। বরং তারা ইমাম আশ‘আরীকে ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বলের মতাদর্শের অনুসারীই মনে করতেন। তারা মনে করতেন ইমাম আশআরী যেহেতু ইমাম আহমাদের মতই প্রচার করেন, সেহেতু তার দিকে নিজেদের সম্পৃক্ত করার অর্থই হচ্ছে হকের দিকে নিজেদের সম্পৃক্ত করা। সেজন্য হতে পারে সুলতান সালাহুদ্দীন রাহিমাহুল্লাহ আশ‘আরী আকীদার দিকে নিজেকে সম্পৃক্ত করতেন আর অন্যান্য অনেক আলেমও নিজেদের আশ‘আরী বলতেন, কিন্তু তারা আকীদায় আশ‘আরীদের যেসব ভুল রয়েছে সেগুলোতে বিশুদ্ধ মতই গ্রহণ করতেন। যার বড় দৃষ্টান্ত হচ্ছে ইমাম বাইহাক্বী ও ইমাম ইবন হাজার রাহিমাহুমাল্লাহ। তাদের সময়ে তারা যেসব মাসআলায় ইজতিহাদ করেছেন, সেখানে যদি ভুলও হয়ে থাকে, যেহেতু তাদেরকে সেটা সংশোধন করার জন্য কেউ দাঁড়িয়েছে তেমন প্রমাণ আমাদের কাছে নেই, তাই আমরা তাদেরকে মা‘যূর মনে করব। আর পূর্ববর্তী আলেমগণ যারা কোনো মতবাদের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে মারা গেছেন তাদের ব্যাপারে এটিই আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের মানহাজ।
শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহ বলেন, ‘‘যারাই উক্ত আকীদার কোনো কিছুতে বিরোধিতা করে (দুনিয়া থেকে চলে গেছে) তারাই অত্যাবশ্যকরূপে ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে এমনটি নয়। কারণ এ ব্যাপারে বিরোধে লিপ্ত ব্যক্তি হতে পারেন একজন মুজতাহিদ, তিনি ইজতিহাদ করে ভুল করেছে, যার গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করবেন। অথবা হতে পারে তার কাছে এ ব্যাপারে এমন জ্ঞান পৌঁছেনি, যা প্রমাণ হিসেবে তার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারে। অথবা হতে পারে তার এমনসব নেক আমল রয়েছে, যার কারণে তার এসব গুনাহ ক্ষমা হয়ে যাবে। সুতরাং ব্যাখ্যাকারী, তাওবাহকারী, নেক আমলের মাধ্যমে গুনাহ নিশ্চিহ্ণকারী ও ক্ষমাপ্রাপ্ত লোক যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে শাস্তির ধমকি দেয়া ভাষ্যসমূহের অন্তর্ভুক্ত হতে বাধ্য না হয়, তাহলে এরাও ধমকির অধীন না হওয়ার বিষয়টি আরও বেশি প্রমাণিত।’ [মাজমূ‘ ফাতাওয়া: ৩/১৭৯]
সুতরাং বুঝা গেল যে, অমুক শাসক অমুক মতবাদের লোক ছিলেন, সেটা দিয়ে উক্ত মতবাদ হক্ব হওয়ার পক্ষে দলীল দেয়া যাবে না। কারণ এসব শাসক সৃষ্টির জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে দলীল নয়, বরং দলীল হবে আলেমগণ ও তাদের পক্ষ থেকে প্রদান করা দলীল।
শাসকরা সাধারণত তাদের একান্ত মানুষদের কথা ও পরামর্শ অনুসারে চলেন, যেমনটি আমরা দেখতে পাই খলীফা মামুনকে, তিনি আহমাদ ইবন আবী দুআদ প্রমুখের কথা অনুসারে চলতেন। ঠিক একই পদ্ধতিতে সালাহুদ্দীন আল-আইয়্যূবী রাহিমাহুল্লাহ নিজে যা কিছু ছোট বয়সে জেনেছেন, যার ওপর বড় হয়েছেন, যাদের সাথে তার সকাল সন্ধা উঠা-বসা ছিল তারা সকলেই ছিলেন আশআরী মতবাদের ধারক ও বাহক। সে হিসেবে তিনি তাদের মতবাদে থাকার বিষয়টি স্বাভাবিক। কিন্তু সেটাকে আশ‘আরী মতবাদের হক হওয়ার প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করার সুযোগ কোথায়। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য বিষয় হতে পারে না। দেখার বিষয় হবে, কুরআন, সুন্নাহ ও সাহাবায়ে কিরামের মানহাজের সাথে একাত্মতা ও মিল। এটিই হবে হক্বের মানদণ্ড। এর ভিত্তিতেই শুদ্ধ কিংবা ভুল হওয়া নির্ভর করবে। আর জিহাদ, সেটি হতে পারে কোনো খারেজী লোকের দ্বারা সম্পন্ন হয়েছে, অথবা কোনো মু‘তাযিলী লোক করেছে, অথবা কোনো সুফী ব্যক্তি নেতৃত্ব দিয়েছে, অথবা হতে পারে আশ‘আরী ব্যক্তি হাল ধরেছে, অথবা কোনো মাতুরিদী ব্যক্তির হাতে তা সম্পন্ন হয়েছে। আবার হতে পারে সত্যিকারের আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের লোকের মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা তা দাঁড় করিয়েছেন।
‘আল্লাহ আমাদের বুঝার তৌফিক দান করুন’।
রচনায় : Abubakar Muhammad Zakaria

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button
kiw kow kan