চিরঞ্জীব বাদশাহ ফয়সল

সাম্রাজ্যবাদী শক্তির কাছে শান্তিকামী জনগোষ্ঠি চিরকালই পর্যুদস্ত ও নিপীড়িত। প্রাচীনকালে ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ আরব দেশসহ বিভিন্ন দেশে যে নীতিটি প্রচলিত ছিল, তা হচ্ছে “জোর যার মুলুক তার।” শক্তিই হচ্ছে প্রতিষ্ঠিত হবার মূল চাবিকাঠি, মানবতা ও ন্যায় নীতির কষ্টিপাথর মদমত্ত শক্তির কাছে নিষ্প্রয়োজন ও হাস্যকর। সভ্য মানুষ বিশ্বাস করে, এ ধরণের প্রকৃতি ছিল মধ্যযুগেরও পূর্বকালীন ; কিন্তু বর্তমান যুগেও এই মানসিকতার পরিপূর্ণ উপস্থিতি লোপ পায়নি।

ইসরাইল রাষ্ট্র হিসেবে অত্যন্ত ক্ষুদ্র। কিন্তু এই অতি ক্ষুদ্র একটি রাষ্ট্রই আটকোটি জনতা অধ্যুষিত এক বিশাল আয়তনের সামগ্রিক শক্তিকে পদদলিত করে মানবতার চরম অবমাননা করছে। সে প্যালেষ্টাইনীদেরই শুধু ঘরছাড়া করেনি, বিতাড়িত করেনি; মিসরের গোলান উপত্যকা, সুয়েজখাল তীরবর্তী অঞ্চল গাজা ইত্যাদি এলাকাসহ সিরিয়া, লেবানন ও জর্ডানের বিস্তৃত অঞ্চল জোর পূর্বক অধিকার করে আছে। মিসরসহ অন্যান্য আরব রাষ্ট্রসমূহ ১৯৬৭ সালের জুন এবং ১৯৭৩ অক্টোবর যুদ্ধে চেষ্টা করেছে হারানো ভূমি পূণরুদ্ধারের, কিন্তু পরিণাম খুব ফলপ্রসূ হয়নি। উল্টো অধিক ভূমি হারাতে হয়েছে আরব দেশগুলোকে।

আরবগণ অতঃপর হাতিয়ার হিসেবে প্রয়োগ করলেন ‘তেল’ সম্পদকে। কিন্তু তাতেও কাঙ্খিত সূর্যোদয় ঘটেনি। ১৯৭৩ সালের ২১শে ডিসেম্বর মিসর জেনেভা শান্তি সম্মেলনে যোগ দেয়। কিছু কিছু আরব রাষ্ট্র এই সম্মেলনে যোগদান করলেও লিবিয়া, সিরিয়া এবং ইরাক সম্মেলনে যোগদান থেকে বিরত থাকে। ইসরাইলের সঙ্গে পারস্পরিক সমঝোতায় আসার ব্যাপারে ডঃ কুর্ট ওয়াল্ড হেইমের সভাপতিত্বে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের প্রথম দিনে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডঃ হেনরী কিসিঞ্জার বলেন, “সুয়েজখাল ফ্রন্ট হতে আরব ও ইসরাইলী সৈন্য প্রত্যাহার হবে মধ্যপ্রাচ্য সম্মেলনের প্রথম কাজ।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, এর ফলে মধ্যপ্রাচ্য বিরোধ দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনার পথ সুগম হবে। সম্মেলনে যোগদানকারী সোভিয়েত পররাষ্ট্র মন্ত্রী মিঃ গ্রোমিকো বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরে না আসলে সারা বিশ্বের ভাগ্য বিপন্ন হয়ে পড়বে। সম্মেলনে যে দলিল গ্রহণ করা হবে, উহাতে ১৯৬৭ সালে অধিকৃত এলাকা ছেড়ে দেয়ার জন্য ইসরাইলকে অবশ্যই সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।” কিসিঞ্জার আশ্বাস দেন, ইসরাইলী বাহিনী চলতি বছর (১৯৭৩) শেষ হবার পূর্বেই ২২শে অক্টোবরের যুদ্ধ-বিরতি রেখায় ফিরে যাবে।

ডঃ কিসিঞ্জারের অন্য সব আশ্বাস বাস্তবায়িত না হলেও দুই পক্ষের সৈন্য অপসারণের চুক্তি রূপায়িত হয়েছে। আপাততঃ মিসরের সঙ্গে ইসরাইলের মোটামুটি শান্তিপূর্ণ আলোচনা ও বাস্তবায়নের সম্ভাবনা বেশ সুস্পষ্ট ; কিন্তু আরব এলাকা ছেড়ে দেবার কিংবা প্যালেষ্টাইনকে মেনে নেবার কোন ইচ্ছে ইসরাইলের নেইতো বটেই, পরন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রী গোল্ডামেয়ার সদন্তে বলেছিলেন, “জেরুজালেম ‘অবিভক্ত থাকবেই এবং তা’ ইসরাইলের রাজধানীও থাকবে।” প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মোশে দারানও বলেছেন, “জেরুজালেমসহ দখলীকৃত আর ভূমি সম্পূর্ণ ছেড়ে আসার কোন প্রশ্নই উঠেনা। তবে হাঁ, শান্তির খাতিরে ছাড়লে একটু আধটু ছাড়া যেতে পারে, এর বেশী নয়।” অন্য এক ইহুদী সমর নায়ক জেনারেল হাইম হার্জগ বলেছেন, “শান্তি সম্মেলন বছর খানিক চলতে পারে। খুব তাড়াতাড়ি ফয়সালা হবার সম্ভাবনা নেই।”

এই হল ইসরাইলী নেতৃত্বদের অভিসন্ধি। স্পষ্টতই বুঝা যাচ্ছে, শাস্তির প্রশ্নেও ইসরাইল সম্পূর্ণ নমনীয় হবে না।

মধ্যপ্রাচ্যের এই পরিস্থিতির প্রতি সবচে’ প্রখর দৃষ্টি রাখছিলেন যে লৌহ মানব, আরবদের ন্যায় সংগ্রামে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করছিলেন যে অতিমানব ; তিনি হচ্ছেন সৌদী বাদশাহ ফয়সল, ১৯৭৪ এর ‘Super man’ ; বিশ্বের সেরা ব্যক্তিত্ব, ফয়সল। আরব স্বার্থে সব প্রথম তিনিই তেল সম্পদকে হাতিয়ার রূপে ব্যবহারের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। আর হয়তো এই কারণেই তাঁকে শহীদ হতে হলো, জীবনের শেষ রক্ত বিন্দু বিসর্জন দিতে হলো।

বাদশাহ ফয়সল ১৯০৬ সালের এপ্রিল মাসে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ইবনে সউদ তখনো আরব সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হননি। ইসরাইল বা আরবে তখনো তেলের অস্তিত্ব অনুভূত হয়নি। ফয়সল ছোটকাল থেকেই ছিলেন সংযমী, পরিশ্রমী ও বিদ্যানুরাগী। ইংরেজী তুর্কী ও ফরাসী ভাষায় তিনি বুৎপত্তি অর্জন করেন। তাঁর বয়স বিশ বছর পূর্ণ হবার পূর্বেই পিতা ইবনে সউদের প্রতিষ্ঠিত আরব সাম্রাজ্য বিশ্বের স্বীকৃতি লাভ করে ; ১৯২৫ সালে তিনি সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠায় পিতাকে উল্লেখযোগ্য সহযোগিতা করেন। ৬০ বছর বয়সের সময় সিংহাসনচ্যুত ভ্রাতা সউদের স্থলাভিষিক্ত হন। তারপরেই তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ফয়সল আরব বিশ্বকে অভূতপূর্ব উন্নয়নের পথে উন্নীত করেন। আধুনিক সৌদি আরবে আধুনিকতার যে দৃপ্ত পদধ্বনি শুনতে পাই তা ফয়সলেরই কৃতিত্বের রূপায়ন। তিনি তাঁর দেশবাসীকে উপহার দেন একটি পার্লামেন্ট, একে তিনি নিজে উল্লেখ করেছেন ‘সুখী রাজার ক্র্যাচ’ বলে। ফয়সল প্রকাশ্য ধূমপান ও মদ্যপানের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। তাছাড়া ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী ব্যাভিচারের জন্য পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা, চুরির জন্য হাত কেটে ফেলা ইত্যাদি প্রথা এখনো সচল রেখেছেন, তাঁর সুদূর প্রসারী ইচ্ছে ছিল সৌদি আরবকে একটি শিল্প প্রধান দেশে পরিণত করা। তেল সম্পদ নিঃশেষে নিঃশেষ হয়ে যাবার পরও যেন সাম্রাজ্য দুরাবস্থার সম্মুখীন না হয়, এজন্য এই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চেয়েছেন।

তাঁর শাসনকালের প্রথম দিকেই তিনি দাস প্রথার বিলোপ সাধন করেন ও অন্যদিকে চালু করেন ব্যাপক শিক্ষা। ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের কঠোর সমালোচনাকে এড়িয়ে তিনি টিভি, সেট চালু করেন। সৌদি আরবে এখন টিভির সংখ্যা ৩ লক্ষ। মেয়েদের শিক্ষার সুব্যবস্থা তাঁর অন্যতম কৃতিত্ব। বর্তমানে সৌদি আরবে কেবল ছাত্রী সংখ্যাই হচ্ছে ২ লক্ষ। ফয়সলের নির্দেশে আরব থেকে রাজপুত্রদের অক্সফোর্ড ও হার্ভাডে পাঠানো হতো অভিজ্ঞ প্রকৌশলীর শিক্ষা গ্রহণ করতে। যাতে করে তারা নিজেদের জন্য নিজেরাই উপার্জন করতে পারেন ; দেশের প্রয়োজনে নিজেদের কর্ম প্রয়াসে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারেন।

দেশে ও বিদেশে যে কারণে ফয়সলের সুখ্যাতি বেড়েছে ব্যাপক ভাবে, তা হলো তেলের ব্যাপারে পশ্চিম বিশ্বের সাথে তার শক্তির ব্যবহার। এ কারণেই ফয়সলের কণ্ঠ পাশ্চাত্য দেশ সমূহে এতো মূল্য- বান। ১৯৭৩-এর আরব-ইসরাইল যুদ্ধে ফয়সল আর্থিক দিক দিয়ে আরবদের সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। সর্বোপরি ‘তেল’ কে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে প্রয়োগ করে সমগ্র বিশ্বকে হতবাক করে দেন। ইসরাইলের প্রতি মার্কিনী সাহায্যের ন্যায় তিনি মিসরীয় ও সিরীয় সৈন্যদের প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার প্রদান করেন। পশ্চিমা দেশ সমূহে ‘বয়কট’ সিদ্ধান্তের তিনি প্রথম সারির নেতা। কিন্তু এতসব সত্ত্বেও ফয়সল মার্কিনীদের সঙ্গে খুব ভাল সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন। তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ রূপেই শান্তির পথে পরিচালিত হবার পক্ষপাতী। তাইতো দেখি, ফয়সল মিসরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদতকে শান্তির পথে মধ্যম পন্থা অবলম্বনের জন্যে বহুল ভাবে উৎসাহিত করেছেন।

বাদশাহ ফয়সলের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে সৌদি আরব যখন একটি শিল্প সমৃদ্ধ নগরে পরিণত হতে যাচ্ছিল, যখন সমগ্র বিশ্বে সৌদি আরব একটি অভূতপূর্ব সাফল্যের সঙ্গে সমৃদ্ধির সিঁড়ি একের পর এক অতিক্রম করে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই ঘাতকের হাতে ১৯৭৫ সালের ২৫শে মার্চ এই রাজর্ষির শেষ নিঃশ্বাস পৃথিবীর আলো-বাতাস থেকে মুছে গেল (ইন্নালিল্লাহে… …রাজেউন)। ভ্রাতুষ্পুত্র মোসায়েদের হস্তে বাদশাহ ফয়সলের সকরুণ মৃত্যু শুধু আরব বা আরব জাহানেরই নয়, -বরং সমগ্র মুসলিম জগতের জন্য এক বিরাট মর্মবিদারক ইতিবৃত্ত ; এক বিপুল ও অপূরণীয় ক্ষতি। এক সময় সমগ্র মুসলিম জগতের আধ্যাত্মিক নেতৃত্ব গ্রহনের জন্য তাঁকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল, তাঁর নামে খোৎবা পাঠেরও প্রস্তাব করা হয়েছিল ; কিন্তু বিনয় বশতঃ তিনি তা গ্রহণ করেননি। অবশ্য এ’পথ তিনি গ্রহণ করেননি ঠিক ; কিন্তু তিনিই হয়ে উঠেছিলেন মুসলিম জাহানের সংহতি সমন্বয় সাধনকারী মহা নায়ক। ফয়সল ছিলেন হজরত ওমরের (রাঃ) পদাংক অনুসরণকারী এমন এক বাদশাহ, যিনি মহান খলিফা ওমরেরই মতো রাজ্যভার গ্রহণ করতে প্রথম অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। আততায়ীর অস্ত্র ওমরেরই ন্যায় তাঁরও জীবন-প্রদীপ নির্বাপিত করে দিয়েছে।

ক্ষমতার প্রতি নিরাসক্ত ভোগ বিলাস- বিমুখ বাদশাহ ফয়সল রাজ্যভার গ্রহণের দশ বছরের মধ্যে অর্থনৈতিক দেউলিয়াদশাগ্রস্ত পশ্চাদপদ সৌদি আরবকে বিশ্বের সর্বাধিক ঐশ্বর্যশালী উন্নয়ণশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেন। সারা দুনিয়ায় সৌদি আরবের বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণ ছিল সর্বাধিক। আশি সালের মধ্যে এই উদ্ধত্ত অর্থের পরিমাণ পৌঁছবে দশ হাজার কোটি ডলারের উপর। এই পর্বত প্রমাণ ধনৈশ্বর্যের কপর্দকও তিনি আপন ভোগ-বিলাসে ব্যয় না করে তা নিয়োজিত করেছেন তাঁর দেশ এবং অন্যান্য আরব ও অনুন্নত দেশের কল্যাণার্থে।

ব্যাপকভাবে তিনি ইউরোপ আমেরিকা সফর করেছিলেন। কিন্তু স্বল্পভাষী ফয়সল মাতৃভাষা ছাড়া অন্য ভাষা বলতেন না। সনাতন আরবীয় পোষাক ছাড়া অন্য কিছু পরতেন না। অগ্রজ ভ্রাতা সাদত কর্তৃক শতাধিক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বিলাসবহুল প্রসাদে বাস না করে ফয়সল বাস করতেন একটি ক্ষুদ্রতর গৃহে। শয়ন করতেন তিনি সাধারণ শয্যায়; দুগ্ধ ‘ফেননিভ’ শয্যা তিনি পরিত্যাগ করেছিলেন। সরল ও সাধারণ জীবন যাপনকারী বাদশাহ, গৃহের কর্মী, – কর্মচারীদের পাশে বসিয়ে এক টেবিলে আহার করতেন। তিনি রাস্তায় চলাকালে যে কোন নারী-পুরুষ হাত তুলে তাঁর গাড়ী থামিয়ে তাঁর কাছে আজি পেশ করতে পারতেন। মৃত্যুকালে মহামনীষী ফয়সল ঘাতকের প্রতি লক্ষ্য করে বলেন, “তাহাকে দয়া প্রদর্শন কর। তাহার প্রতি আমার কোন বিদ্বেষ নাই। দেশ তোমাদের আমানতে রহিল। বিবাদ সম্পর্কে হুঁশিয়ার! নেতৃত্বের সংহতি যেন অখুন্ন থাকে।” একজন আদর্শবান, নিষ্ঠাবান ও প্রতুৎপন্নমতি বাদশাহর উপযুক্ত বক্তব্যই ফয়সল ব্যক্ত করেছেন তাঁর মরণ বেলার উত্তপ্ত মুহুর্তে।

তাঁর মৃত্যুর কারণ এখনো রহস্যাবৃত। ঘাতক মুসায়েদ বাদশাহের ভ্রাতুষ্পুত্র। যুক্তরাষ্ট্রের কলারোডা বিশ্ববিদ্যালয় হতে তিনি বিজ্ঞানে স্নাতকডিগ্রী নেন। অনেকের ধারণা, ধর্মীয় গোঁড়ামী ও প্রতিশোধ স্পৃহা হতেই যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষাপ্রাপ্ত শাহজাদা, — বাদশাহকে হত্যা করেন। ইতিপূর্বে মোসায়েদের এক ভাই বাদশাহের পুলিশের গুলিতে নিহত হন। তিনি এক বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। আবার অনেকের ধারণা, সাম্রাজ্যবাদী শক্তিই বাদশাহ কে মৃত্যুমুখে ঠেলে দিয়েছে। অভিনেত্রী ক্রিশ্চিয়ানার সঙ্গে মোসায়েদের অবৈধ প্রেম ছিল। অনেকে অনুমান করেন, ইহুদী কিংবা মার্কিনী ইশারায় ক্রিশ্চিয়ানা মোসায়েদের দ্বারা এই কার্য করিয়েছে। অবশ্য মোসায়েদের পরিণাম ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী সংসাধিত হয়েছে, শিরোচ্ছেদের মাধ্যমে। অপরাধী তার উপযুক্ত শাস্তি পেয়েছে।

মৃত্যুর কিছু পূর্বে এক সাক্ষাৎকারে ফয়সল প্যালেষ্টাইন নেতা ইয়াসির আরাফাতের কাছে ইচ্ছে প্রকাশ করেন, তিনি মৃত্যুর পূর্বে জেরুজালেম মসজিদে নামাজ পড়তে চান। তিনি বলেন, “জেরুজালেমের মুসলিমদের মুক্তির দায়িত্ব সকল আরবদের কাঁধে সম্মিলিতভাবে অর্পিত। আরব- জাহানের একাত্মতা ব্যতিরেকে এ কর্তব্য সম্পাদন সম্ভব নয়।” তিনি জানান মধ্যপ্রাচ্যে কোন সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হলে ফিলিস্তিনীদের অধিকারকেই আগে বাস্তবায়িত করতে হবে।” বাদশাহ, উর্ধে হাত তুলে প্রার্থনা করেন, আল্লাহর সাহায্যে যেন তাঁর সপ্ন বাস্তবায়িত হয়। তিনি বলেন, “ইসলাম বিশ্বাসের পূত-পবিত্র পথ ধরেই ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা আসতে পারবে।”

বাদশাহ সমাধিস্থ হয়েছেন। ইসলামী রীতি অনুসারে কোন স্মৃতি ফলক থাকবে না তাঁর সমাধি পাশে। না থাকুক ; কিন্তু তিনি চিরদিন বেঁচে রইবেন বিশ্বের সকল মানুষের মনিকোঠায়। একজন শাসকের এত বড় সৌভাগ্যের চেয়ে বড় আর কিছু নেই।

সূত্র : প্রবাল প্রকাশন থেকে প্রকাশিত  এবং নজমুল হক ও আবদুস সালাম রচিত “ফিলিস্তিন মুক্তি সংগ্রাম” নামক বই থেকে সংগৃহীত।

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
skybet88 skybet88 skybet88 skybet88 mix parlay skybet88 slot bonus new member skybet88 skybet88 skybet88 slot gacor skybet88 skybet88