ইমাম তিরমিযী (রহঃ) এর সংক্ষিপ্ত জীবনী

রচনায়ঃ মুহাম্মাদ কবীরুল ইসলাম

উপক্রমণিকাঃ

ইসলামী শরীআতের অন্যতম মূল ভিত্তি হাদীছ সংকলনে যে সমস্ত মনীষীবৃন্দ তাঁদের সময়, শ্রম ব্যয় করেছেন ও সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছেন এবং হাদীছ সংকলনের মাধ্যমে মিল্লাতে মুসলিমার ধর্মীয় কার্যাবলী সম্পাদন ও বিধি-বিধান পালন সহজতর করে দিয়েছেন ইমাম তিরমিযী ছিলেন তাঁদের অন্যতম। হাদীছ সংকলন করে তিনি ইসলামী বিশ্বে স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে আছেন। এ নিবন্ধে এই মহামনীষীর জীবনী ও তাঁর ভূবন বিখ্যাত গ্রন্থের বৈশিষ্ট্য সহ হাদীছ শাস্ত্রে তার অবদান সংক্ষিপ্তাকারে আলোচিত হ’ল।

নাম ও বংশ পরিচয়ঃ

নাম মুহাম্মাদ, আবু ঈসা উপনাম, পিতার নাম ঈসা। পূর্ণ বংশক্রম এরূপ- আবু ঈসা মুহাম্মাদ ইবনু ঈসা ইবন সাওরা বিন মূসা বিন যাহহাক আস-সুলামী আয-যারীর আল-বুগী আত-তিরমিযী।[1] ‘বনী সালিমে’র প্রতি নেসবত করে সুলামী, ‘বুগ’ গ্রামের প্রতি সম্বন্ধিত করে বুগী’[2] এবং তিরমিয শহরের প্রতি নেসবাত করে তাকে ‘তিরমিযী’ বলা হয়।[3] সাওয়াহ তার দাদার নাম।[4] কোন কোন বর্ণনায় ‘সাওরাহ’-এর পিতার নাম ‘শাদ্দাদ” এবং কোন কোন রিওয়ায়াতে ‘আসফান’ উল্লেখিত হয়েছে।[5]

জন্মস্থান ও কালঃ

তিনি আমু দরিয়অর বেলাভূমিতে অবস্থিত ট্রান্স অক্সিয়ানার ‘তিরমিয’ নামক স্থানে ২০৯ হিজরীতে জন্মগ্রহণ করেন।[6] কেউ কেউ বলেন, তিনি ‘বুগ’ নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[7] এটি তিরমিযের একটি গ্রাম। তিরমিয হ’তে এর দুরত্ব ৬ ফারসাখ।[8] তার পূর্বপুরুষ মারভ হ’তে তিরমিযে এসে বসতি স্থাপন করেন।[9]

শিক্ষাজীবনঃ

তিনি নিজ এলাকায় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপন করেন। এরপর হেজায, মিছর, সিরিয়া, কুফা, বছরা, খোরাসান ও বাগদাদের শিক্ষাকেন্দ্র সমূহে সমকালীন খ্যাতনামা বিদ্বানগণের নিকট উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। বিশেষ করে ইলমে হাদীছে তিনি ব্যাপক জ্ঞানার্জন করেন।[10]

দেশ ভ্রমণঃ

হাদীছ সংকলন ও সংগ্রহের জন্য তিনি বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন। বিশেষ করে তিনি খোরাসান, ইরাকু, হেজায, কুফা, বছর প্রভৃতি দেশে ভ্রমণ করে হাদীছ, সংগ্ৰহ করেন।[11] এ সম্পর্কে ইবনু হাজার বলেন,

‘তিনি বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন এবং খোরাসান ও হেজাযের অনেক লোকের নিকট থেকে হাদীছ শ্রবণ করেন।[12] ড. মুছতফা আস-সাবাঈ বলেন,

‘তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে সফর করেছেন করেছেন এবং খোরাসানী, ইরাকী ও হিজাযীদের নিকট থেকে হাদীছ গ্রহণ করেছেন। এমনকি হাদীছ শাস্ত্রে একজন ইমাম হিসাবে পরিগণিত হয়েছেন।[13]

শিক্ষক মন্ডলীঃ

ইমাম তিরমিযী অগণিত শিক্ষকের নিকট হতে হাদীছ শ্রবণ ও গ্রহণ করেন। তার যুগে ইলমে হাদীছে এক বিরাট বিপ্লব চলছিল। এ বিপ্লবের প্রভাব সমকালীন যুগে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছিল। এ বিপ্লব যাদের হাতে সাধিত হয়েছিল তন্মধ্যে ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইদ্রীসের নাম সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। এছাড়া মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈল বুখারী (১৯৪-২৫৬ হিঃ), ইমাম মুসলিম (২০৪-২৬১ হিঃ) আবুদাউদ (২০২-২৭৫ হিঃ) প্রমূখ। ইমাম তিরমিযী তাঁদের ওস্তাদগণের নিকট থেকেও হাদীছ গ্রহণ করেন।[14] তবে ইমাম তিরমিযীর শিক্ষকগণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েক জন হলেন, ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল (রহঃ), ইমাম বুখারী, ইমাম মুসলিম, আবু দাউদ আস-সিজিস্তানী, আলী ইবনু হুজর মারুযী, হান্না ইবনু সিররী, কুতাইবা ইবনু সাঈদ, মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার বুন্দার, মুহাম্মাদ ইবনুল মুছান্না আবু মূসা, যিয়াদ ইবনু ইয়াহইয়া আল-হাসসানী, আব্বাস ইবনু আব্দুল আযীম আল-আম্বরী, আবু সাঈদ আল-আশাজ্জ, আবু হাফছ আমর, ইয়াকুব ইবনু ইবরাহীম, মুহাম্মাদ ইবনু মা’মার আল-কাইসী, নাছর ইবনুল-জাহযমী, আবদুল্লাহ ইবনু মু’আবিয়া আল-জামহী, আবু মুছ’আব আহমাদ ইবনু আবি বকর আয-যুহরী, ইসমাঈল ইবনু মূসা আল-ফাযারী আস-সুদ্দী প্রমুখ।[15]

ছাত্রবৃন্দঃ

তাঁর নিকট থেকে অনেকে হাদীছ শুনেছেন এবং বর্ণনা করেছেন। তাদের মধ্যে প্রসিদ্ধ হ’লেন, আবু হামিদ আহমাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনে দাঊদ আল-মারুযী, আল-হাইছাম ইবনু কুলাইব আশ-শাশষী, মুহাম্মাদ ইবনু মাহবূব আবুল আব্বাস আল-মাহবূবী আল-মারুযী, আহমাদ ইবনু ইউসুফ আন-নাসাফী, আবুল হারিশ, আসাদ ইবনু হামদুবিয়াহ, দাউদ ইবনু নাছর ইবনে সুহাইল আল-বারযুবী, আবদ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনে মাহমুদ আন-নাসাফী, মাহমূদ ইবনু নুমাইর, মুহাম্মাদ ইবনু মাহমূদ, মুহাম্মাদ ইবনু মাক্কী ইবনে নুহ, আবু জাফর মুহাম্মাদ ইবনু সুফিয়ান ইবনিন-নাযর, মুহাম্মাদ ইবনুল মুনযির ইবন সাঈদ আল-হারাবী প্রমুখ।[16]

স্মৃতিশক্তিঃ

ইমাম তিরমিযী অসাধারণ স্মৃতি শক্তির অধিকারী ছিলেন। তাঁর সম্বন্ধে অনেক ঘটনা বর্ণিত আছে। তন্মধ্যে কয়েকটা প্রসিদ্ধ ঘটনা উল্লেখ করা হলোঃ ইমাম তিরমিযী তাঁর কোন এক শিক্ষকের নিকট হতে অনেক হাদীছ শ্রবণ করেন এবং লিখে রাখেন, যা দুখণ্ড বিশিষ্ট পাণ্ডুলিপি হয়েছিল। কিন্তু তিনি সে হাদীছ সমূহ তার ঐ শিক্ষককে শুনানোর সুযোগ পাননি। হঠাৎ করে মক্কা মুকাররামা যাওয়ার পথে ঐ শিক্ষকের সাক্ষাৎ হওয়ায় তিনি তাকে হাদীছ শুনানোর আবেদন করলে শিক্ষক তার আবেদন মঞ্জুর করে হাদীছ শুনতে রাযী হয়ে যান। তিনি ইমাম তিরমিযীকে স্বীয় পাণ্ডুলিপি বের করে মিলিয়ে নিতে বলে হাদীছ পড়তে শুরু করলেন। কিন্তু ঘটনাক্রমে ইমাম তিরমিযীর নিকটে তখন ঐ পাণ্ডুলিপি দুটি ছিল না। তিনি তখন দু’টি সাদা কাগজ বের করে তাতে হাত বুলাতে লাগলেন এবং শিক্ষকের পঠিত হাদীছ সমূহ শুনতে থাকলেন। হঠাৎ শিক্ষকের দৃষ্টি তার উপর পতিত হওয়ায় তাকে সাদা কাগজের উপর হাত বুলাতে দেখে শিক্ষক রেগে যান এবং বললেন, তুমি কি আমার সাথে ঠাট্টা করছ? ইমাম তিরমিযী বিনীতভাবে শিক্ষকের নিকট ঘটনা বর্ণনা করলেন এবং বললেন যদিও আমার কাছে লিখিত পাণ্ডুলিপি নেই কিন্তু ঐ সমস্ত হাদীছ আমার মুখস্থ আছে। শিক্ষক বললেন, ঠিক আছে তাহলে আমাকে পড়ে শুনাও! ইমাম তিরমিযী সমস্ত হাদীছ মুখস্থ শুনিয়ে দিলেন। শিক্ষক বললেন, মাত্র একবার পড়ায় সমস্ত হাদীছ তোমার মুখস্থ হয়ে গেছে, এটা আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। ইমাম তিরমিযী বললেন, আপনার বিশ্বাস না হ’লে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। শিক্ষক তখন আরো ৪০টি নতুন হাদীছ বর্ণনা করলেন। ইমাম তিরমিযী তৎক্ষণাৎ বিশুদ্ধ ও নির্ভুলভাবে সমস্ত হাদীছ শুনিয়ে দিলেন। তখন শিক্ষক বলতে বাধ্য হলেন, ‘আমি তোমার মত স্মৃতিশক্তি সম্পন্ন অন্য কাউকে দেখিনি’।[17]

ইমাম আশশুযী বর্ণনা করেন, একদা ইমাম তিরমিযী হজ্জ সফরকালে রাস্তায় কিছু মুহাদ্দিছীনের সাক্ষাৎ লাভ করে হাদীছ শুনতে চাইলে তারা বললেন, কলম ও দোয়াত নিয়ে এস। ইমাম তিরমিযী দোয়াত-কলম পেলেন না। তখন তিনি শিক্ষকের সামনে বসে সাদা কাগজের উপর আঙ্গুল চালাতে লাগলেন। শিক্ষক হাদীছ বর্ণনা করতে লাগলেন। ৬০টির মত হাদীছ বর্ণনার পর শিক্ষকের দৃষ্টি কাগজের উপর পড়ায় তিনি কাগজ সাদা ও পরিষ্কার দেখতে পেয়ে রাগান্বিত হয়ে বললেন, ‘তুমি আমার সময় নষ্ট করলে? ইমাম তিরমিযী বললেন, আমি সমস্ত হাদীছ মুখস্থ করেছি। তিনি শ্রুত সমস্ত হাদীছ শিক্ষককে শুনিয়ে দিলেন।[18]

আবু সাঈদ আল-ইদরীসী বলেন, স্মৃতিশক্তির ক্ষেত্রে আবু ঈসাকে দিয়ে উদাহরণ দেওয়া যায়।[19]

সুউচ্চ মর্যাদাঃ

ইমাম তিরমিযী উচ্চ মর্যাদার অধিকারী ছিলেন। তার উচ্চ মর্যাদা প্রমাণে এতটুকু বলাই যথেষ্ট যে, ইমাম তিরমিযীর শিক্ষক ইমাম বুখারীও তিরমিযীর নিকট থেকে হাদীছ শ্রবণ করেছেন। এমর্মে বুখারী বলেছেন,

‘তুমি আমার নিকট থেকে যতটুকু উপকার পেয়েছো, আমি তোমার দ্বারা তার চেয়ে বেশী উপকৃত হয়েছি’।[20] মুহাদিছগণ তাকে ইমাম বুখারীর খলীফা বলতেন। ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি বুখারীর মাধ্যমে হাদীছ শাস্ত্রে জ্ঞান লাভ করেন। ইমাম হাকীম ইবনু ‘আলাক হ’তে বর্ণনা করেন, ইমাম বুখারীর ও কৃচ্ছতা সাধনে এবং দুনিয়ার প্রতি অনাসক্ত আবু ঈসার। মত অন্য কাউকে রেখে যাননি।[21]

আল্লাহভীতিঃ

ইমাম তিরমিযী অত্যন্ত আল্লাহভীতু ছিলেন। আল্লাহর ভয় তাঁর মধ্যে এতই প্রবল ছিল যে, তিনি শেষ বয়সে কাঁদতে কাঁদতে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন।[22] কেউ কেউ বলেন, তিনি জন্মান্ধ ছিলেন। ইবনু হাজার আসকালানী ইউসুফ ইবন আহমাদ আল-বাগদাদী হতে বর্ণনা করেন, আবু ঈসা শেষ বয়সে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন।[23] মুহাম্মাদ আবদুর রহমান মুবারকপুরী বলেন, তিনি শেষ বয়সে অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন এতে কোন মতদ্বৈততা নেই।[24] শাহ আবদুল আযীয বুস্তানুল মুহাদ্দিছীন গ্রন্থে বলেছেন, ইমাম তিরমিযীর কৃচ্ছতা ও আল্লাহভীতি এতই উচ্চ স্তরে পৌছে ছিল যে, তার অধিক কল্পনা করা যায় না। আল্লাহর ভয়ে কাঁদতে কাঁদতে এক পর্যায়ে তিনি তার দৃষ্টিশক্তি বিসর্জন দেন।[25]

অনুসৃত মাযহাবঃ

কোন কোন বিদ্বান মনে করেন ইমাম তিরমিযী শাফেঈ মাযহাবের অনুসারী ছিলেন। আবার কেউ কেউ বলেন, তিনি হাম্বলী মাযহাব অনুসরণ করতেন। এসব কথা ভিত্তিহীন। প্রকৃত কথা হ’ল তিনি শাফেঈ বা হাম্বলী ছিলেন না, তেমনি তিনি মালেকী ও হানাফী মাযহাবের অনুসারীও ছিলেন না; বরং তিনি ছিলেন আছহাবুল হাদীছ বা হাদীছের অনুসারী এবং হাদীছ অনুযায়ী তিনি আমল করতেন। তিনি মুজতাহিদ ছিলেন, কোন ব্যক্তির অন্ধ অনুসারী ছিলেন না।[26]

গ্রন্থাবলীঃ ইমাম তিরমিযী প্রণীত কয়েকটি গ্রন্থের উল্লেখ পাওয়া যায়। সেগুলি হচ্ছেঃ

(১) আল-জামিউছ-ছহীহ (তিরমিযী)

(২) আশ-শামায়িল

(৩) আল-ইলাল

(৪) আত-তারীখ

(৫) আয-যুহদ

(৬) আল-আসমা ওয়াল কুনা[27]

ইন্তেকালঃ

ইমাম তিরমিযীর মৃত্যুকাল সম্পর্কে মতভেদ রয়েছে। সাম’আনী বলেন, তিনি ২৭৫ হিজরী সনে ‘বুগ’ গ্রামে ইন্তেকাল করেন। শায়খ আবিদ আস-সিনদী বলেন, তিনি ২০৯ হিঃ সালে জন্মগ্রহণ করেন, ৬৮ বৎসর জীবনধারণ করেন এবং ২৭৭হিঃ সালে মৃত্যুবরণ করেন।[28] ইবনু খাল্লিকান সাম’আনী থেকে বর্ণনা করেন, তিনি ‘বুগ’ গ্রামে ২৭৯ হিজরীতে মৃত্যুবরণ করেন।[29] তবে সঠিক তারিখ হ’ল তিনি ২৭৯ হিজরী সনের ১৩ই রজব[30] রবিবার দিবাগত রাতে[31] ৭০ বৎসর বয়সে তিরমিয শহরে ইন্তেকাল করেন।[32]

ইমাম তিরমিযী (রহঃ) সম্পর্কে মনীষীদের মতামতঃ

১. আবু হাতিম ইবন হিব্বান স্বীয় ‘আস-সীকাত’ গ্রন্থে বলেন,

کانا آبو عیسی ممن جمع و صنف و هفظ و ذاکر

‘আবু ঈসা (রহঃ) ছিলেন ঐ সকল বিদ্বানগণের অন্তর্ভুক্ত, যারা হাদীছ জমা করেছেন, গ্রন্থ রচনা করেছেন এবং হাদীছ সংরক্ষণ ও মুখস্থ করেছেন’।[33]

২. আবু সাঈদ আল-ইদরীসী বলেন, ‘আবু ঈসা তিরমিযী (রহঃ) ছিলেন এমন ব্যক্তি, স্মৃতিশক্তির ক্ষেত্রে যাকে দিয়ে উদাহরণ দেওয়া হ’ত’।[34]

৩. আবু ইয়ালা আল-খলীলী স্বীয় ‘উলূমুল হাদীছ’ গ্রন্থে বলেন,

‘মুহাম্মাদ ইবনু ঈসা ইবনে সাওরাহ ইবনে শাদাদ যে হাদীছের একজন হাফেয ছিলেন, এ ব্যাপারে সকলে একমত’।[35] অন্যত্র তিনি বলেন, তিনি বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য, এ ব্যাপারে ঐকমত্য হয়েছে।[36]

৪. আবু মাহবুব ও আল-আজলা বর্ণনা করেন, ‘তিনি আমানতদারী (বিশ্বস্ততা), ইমামত ও জ্ঞান-গরিমায় প্রসিদ্ধ ছিলেন।[37]

৫. ইবনু খাল্লিকান বলেন,

আবু ঈসা মুহাম্মাদ ইবনু ঈসা ইবনে সাওরাহ ইবনে মূসা ইবনে যুহহাক আস সুলামী আয-যরীর আল-বুগী আত-তিরমিযী ছিলেন প্রসিদ্ধ হাফিয এবং তিনি ঐ সকল ইমামদের অন্যতম, ইলমে হাদীছে যাদের অনুসরণ করা হয়’।[38]

হাদীছ শাস্ত্রে ইমাম তিরমিযী (রহঃ)-এর অবদানঃ

হাদীছ শাস্ত্রে ইমাম তিরমিযীর অবদান অপরিসীম। ইলমে স্মরণীয় হয়ে আছেন। আল-জামিউছ ছহীহ তার অবদানের সবচেয়ে স্বীকৃতি ও প্রমাণ। জামে’ তিরমিযীর বৈশিষ্ট্যাবলী ও হাদীছ গ্রহণে তার শর্তাবলী আলোচনা করলেই ইলমে হাদীছে ইমাম তিরমিযীর অবদান সুস্পষ্ট রূপে প্রতিভাত হয়ে উঠবে।

আল-জামিউছ ছহীহ সংকলনঃ

‘জামে তিরমিযী’ তার সর্বাধিক প্রসিদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য গ্রন্থ। ইমাম তিরমিযী তাঁর এ গ্রন্থ খানা ইমাম আবু দাউদ ও ইমাম বুখারী (রহঃ)-এর অনুসৃত গ্রন্থ প্রণয়নরীতি অনুযায়ী লিপিবদ্ধ করেছেন। প্রথমত এতে ফিকূহের অনুরূপ অধ্যায় রচনা করা হয়েছ। এতে ব্যবহারিক জীবনের প্র্রয়োজনীয় হাদীছ সমূহ সন্নিবেশিত করেছেন। সে সঙ্গে বুখারীর ন্যায় জীবন চরিত, শিষ্টাচার, তাফসীর, আক্বীদা-বিশ্বাস, বিশৃংখলা, বিপর্যয়, আহকাম, যুদ্ধ-সন্ধি, প্রশংসা ও মর্যাদা ইত্যাদি বিষয়ের হাদীছও সংযোজিত করেছেন।[39] ফলে গ্রন্থখানি এক অপূর্ব সমন্বয়, এক ব্যাপক গ্রন্থে পরিণত হয়েছে। এ কারণে এ গ্রন্থের ‘জামি’ নাম সার্থক হয়েছে। ইমাম তিরমিযী এতে বিভিন্ন বিষয়ের অতি প্রয়োজনীয় হাদীছ সমূহ সুন্দরভাবে সজ্জিত করেছেন। এজন্য হাফিযু আবু জাফর ইবনু যুবাই ‘কুতুবুস সিত্তাহ’ সম্পর্কে আলোচনা প্রসঙ্গে বলেছেন,

ইমাম তিরমিযী ইলমে হাদীছে গ্রন্থ প্রণয়নের ক্ষেত্রে অবিসংবাদিত।[40]

ইমাম তিরমিযী তাঁর এ গ্রন্থ প্রণয়ন সমাপ্ত করে তদানীন্তন মুসলিম জাহানের হাদীছবেত্তাগণের নিকট এটা যাচাই করার জন্য পেশ করেন। এ সম্পর্কে তিনি নিজেই বলেন,

আমি এ সনদযুক্ত হাদীছ গ্রন্থখানি প্রণয়ন করে একে হিজাযের হাদীছবিদদের সমীপে পেশ করলাম। তাঁরা এটা এরপর আমি এ গ্রন্থকে খুরাসানের মুহাদিছগণের খেদমতে পেশ করলাম। তাঁরাও একে অত্যন্ত পসন্দ করেন এবং সন্তোষ প্রকাশ করেন।[41]

জামে’ তিরমিযী সংকলনের উদ্দেশ্যেঃ

শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদেছ দেহলভী স্বীয় হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ গ্রন্থে বলেন, বুখারী ও মুসলিম (রহঃ)-এর গ্রন্থ প্রণয়ন পদ্ধতি ছিল সন্দেহ দূরীকরণ, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ বা শরীআতের আহকাম সুস্পষ্টরূপে বর্ণনা। আর ইমাম আবু দাউদের পদ্ধতি ছিল ফকীহগণ যে সমস্ত হাদীছ দ্বারা প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেন সে সকল হাদীছ বর্ণনা। ইমাম তিরমিযী এই উভয় পদ্ধতির মধ্যে সমন্বয় সাধান করে অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি অবলম্বন করে ‘জামে তিরমিযী’ প্রণয়ন করেছেন। এছাড়া তিনি ছাহাবী, তাবেঈ ও ফকীহগণের মাযহাব (মতামত)-এর প্রতিও ইঙ্গিত করেছেন। তিনি পরিত্যাজ্য মাযহাব সমূহও বর্ণনা করেছেন। যেমন- ইমাম আওযাঈ, সুফিয়ান ছাওরী, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম প্রমুখের মাযহাব। এ গ্রন্থ ছাড়া এসব মাযহাব সম্পর্কে স্বচ্ছ জ্ঞান লাভ অত্যন্ত দুষ্করও বটে। তেমনি এই গ্রন্থ প্রণয়নের মাধ্যমে তিনি আহকাম-এর ক্ষেত্রে মাযহাবী ধারাবাহিকতার অসংখ্য গ্রন্থ অধ্যয়ন করা থেকে মানুষকে অমুখাপেক্ষী করেছেন। এ থেকে অনুধাবন করা যায় যে, তার সবচেয়ে বড় উদ্দেশ্য ছিল ঐ সমস্ত হাদীছ একত্রিত করা, যার দ্বারা কোন মুজতাহিদ দলীল গ্রহণ করেন। এমনকি ইমামগণের অভিমত বর্ণনা ও তার অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল।[42]

হাদীছ গ্রহণে ইমাম তিরমিযীর শর্তাবলীঃ

হাদীছ গ্রহণের ক্ষেত্রে ইমাম তিরমিযী কতিপয় শর্তাবলীর প্রতি তীক্ষ দৃষ্টি রাখতেন। শর্তগুলি নিম্নরূপঃ

(১) ছহীহাইন তথা বুখারী ও মুসলিমে উদ্ধৃত সমস্ত হাদীছই গ্রহণযোগ্য।

(২) প্রধানত ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিমের আরোপিত শর্তে যেসব হাদীছই উত্তীর্ণ ও ছহীত প্রমাণিত হবে তা গ্রহণীয়।

(৩) ইমাম আবু দাউদ ও ইমাম নাসাঈ যেসব হাদীছ গ্রহণ করেছেন এবং তাদের দোষ-ত্রুটি দূর করে দিয়েছেন তাও গ্রহণীয়।

(৪) ফিক্বহবিদগণ যেসব হাদীছ অনুযায়ী আমল করেছেন তাও গ্রহণীয়।

(৫) যেসব হাদীছের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হবে এমন এক নির্দেশ যা সব সময়ই কার্যকর হয়েছে, তাও গ্রহণীয়।

(৬) যেসব ছিক্বাহ বর্ণনাকারীর সমালোচনা করা হযেছে এবং তাদের সম্পর্কে সবকিছু সুস্পষ্টরুপে প্রকাশিত হয়েছে, তাঁদেরর হাদীছ সমূহও গ্রহণীয়।

(৭) যেসব বর্ণনাকারীর বর্ণিত হাদীছ সমূহের সমালোচনা করা হয়েছে এবং তাদের বিশ্বস্ততাও প্রমাণিত হয়েছে তাদের বর্ণিত হাদীছও গ্রহণযোগ্য।[43]

জামে’ তিরমিমীর বৈশিষ্ট্যঃ

ইমাম তিরমিযী প্রণীত ‘আল-জামে কতিপয় অনন্য বৈশিষ্ট্য মণ্ডিত যা তাঁকে হাদীছ শাস্ত্রে এক সুউচ্চ স্থানে অধিষ্ঠিত করেছে এবং তাঁকে এক বিশেষ স্বাতন্ত্র্য দান করেছে।

১. জামে’ তিরমিযীর মধ্যে কোন মাওযু (জাল) হাদীছ নেই।

২. এ গ্রন্থের মধ্যে সন্নিবেশিত সমস্ত হাদীছের মধ্যে মাত্র দু’টি হাদীছ ব্যতীত অন্য হাদীছের উপর উম্মতে মুহাম্মাদীয়ার কেউ না কেউ আমল করে।

৩. জামে’ তিরমিযীতে একটি ছুলাহী হাদীছ আছে।

৪. এ গ্রন্থে ছাহাবী, তাবেঈ এবং বিভিন্ন ফকীহগণের মাযহাব বা মতামত উল্লেখিত হয়েছে।

৫. এতে প্রত্যেক হাদীছ সম্পর্কে সমালোচনা উপস্থাপিত হয়েছে যে, হাদীছটি ছহীহ, হাসান, যঈফ বা মুনকার। সাথে সাথে যঈফ হওয়ার কারণও বর্ণনা করা হয়েছে, যাতে ছাত্ররা এর_প্রতি দৃষ্টি দেয় এবং এর উপর ভিত্তি করে অন্যগুলি সঠিক কি-না তা জানতে পারে।

আল্লামা শাহ আবদুল আযীয বুস্তানুল মুহাদ্দেছীন গ্রন্থে বলেন, ইলমে হাদীছ সম্পর্কে তিরমিযীর অনেক গ্রন্থ আছে। সেগুলির মধ্যে ‘আল-জামে’ সবচেয়ে সুন্দর বরং সেটা সমস্ত হাদীছ গ্রন্থের মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট নিম্নোক্ত দিক থেকেঃ

* এটা সুন্দরভাবে সুবিন্যাস্ত এবং সুসজ্জিত ও পুনরুল্লেখ মুক্ত।

* এতে ফকীহগণের মাযহাব প্রত্যেকের স্ব স্ব দলীলসহ উল্লেখিত হয়েছে।

* এতে হাদীছের প্রকার যেমন ছহীহ, হাসান, যঈফ, গরীব, মু’আল্লাল ইত্যাদি বর্ণিত হয়েছে।

* এতে বর্ণনাকারীদের নাম, উপাধি, উপনাম বর্ণনা করা হয়েছে।

৬. তিরমিযীতে জামে’ ৮ বিষয় তথা জীবন চরিত, শিষ্টাচার, তাফসীর, আক্বীদা-বিশ্বাস, বিশৃঙ্খলা, আহকাম, সন্ধি, মর্যাদা ইত্যাদি সম্পর্কিত হাদীছ থাকায় তাকে জামে’ বলা হয়। আর ফিকহের মত আহকাম সম্পর্কিত হাদীছ বিভিন্ন অধ্যায়ে সজ্জিত বিধায় তাকে সুনানও বলা হয়।[44]

জামে’ তিরমিযীর স্থানঃ

কাশফুয যুনূন গ্রন্থে বলা হয়েছে ছয়টি হাদীছ গ্রন্থের মধ্যে জামে’ তিরমিযী তৃতীয়। অর্থাৎ এর স্থান ছহীহাইন-এর পরে। যাহাবী বলেন, তিরমিযীর স্থান সুনানে আবুদাউদ ও নাসাঈর পরে। তাযকিরাতুল হুফফায গ্রন্থে বলা হয়েছে, তিরমিযীর স্থান আবুদাউদের পরে এবং নাসাঈর আগে। আল্লামা সয়ূতীও এরূপ বলেছেন। মুনাবী ‘ফায়যুল কাদীর’ গ্রন্থে বলেন, মর্যাদার দিক থেকে জামে’ তিরমিযীর স্থান কুতুবুস সিত্তাহ’র মধ্যে তৃতীয়।[45]

জামে’ তিরমিযী সম্পর্কে বিদ্বানগণের অভিমতঃ

ইমাম তিরমিযী স্বয়ং তাঁর গ্রন্থ সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন,

 عرضنت کتابی هذا این کتاب السلنن ۹۹ المكسدسَمى بالجاميع علي علماء الحجاز والعراق والخراسان فرضوا به.

‘আমি জামি’ নামক এই কিতাব হেজায, ইরাক ও খোরাসানের বিদ্বানগণের নিকট পেশ করলে তাঁরা এর প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেন।[46] তিনি আরো বলেন, যার ঘরে এ গ্রন্থখানা থাকবে মনে করা হবে যে, স্বয়ং নবী (ছাঃ) অবস্থান করছেন ও কথা বলছেন।[47]

বস্তুতঃ প্রত্যেক হাদীছগ্রন্থ বিশেষতঃ ছহীহ হাদীছের গ্রন্থ সমূহের এটাই সঠিক মর্যাদা এবং এটা কেবল তিরমিযীর ক্ষেত্রে নয় বরং সকল ছহীহ হাদীছগ্রন্থ সম্পর্কে এ কথা প্রযোজ্য ও অকাট্য সত্য।

তিরমিযী সাধারণ পাঠকদের জন্য একখানা সুখপাঠ্যও সহজবোধ্য হাদীছ গ্রন্থ। শায়খুল ইসলাম হাফিয ইমাম আবু ইসমাঈল আবদুল্লাহ আনছারী তিরমিযী সম্পর্কে বলেন,

‘আমার দৃষ্টিতে জামে’ তিরমিযী বুখারী ও মুসলিম গ্রন্থদ্বয় অপেক্ষা অধিক ব্যবহার উপযোগী। কেননা বুখারী ও মুসলিম এমন হাদীছগ্রন্থ যা হতে কেবল পারদর্শী আলেম ব্যতীত অপর কেউ ফায়দা লাভ করতে সমর্থ হয় না। কিন্তু ইমাম আবু ঈসার গ্রন্থ হ’তে যেকোন লোক উপকারিতা হাছিল করতে পারে’।[48]

হাফিয ইবনুল আছীর জামেউল উছুল গ্রন্থে বলেন, ‘তিরমিযীর কেতাব ‘জামেউছ ছহীহ’ সর্বোৎকৃষ্ট, অধিক ফায়দা দানকারী, অত্যন্ত সুন্দরভাবে সজ্জিত এবং সর্বনিম্ন পুনরুল্লেখিত গ্রন্থ। এতে যা আছে, অন্যান্য গ্রন্থে তা নেই। এতে প্রমাণ সহ বিভিন্ন মাযহাব উল্লেখ করা হয়েছে এবং ছহীহ, যঈফ, গরীব প্রভৃতি হাদীছের অবস্থার সুস্পষ্ট বর্ণনাও এতে স্থান পেয়েছে।[49]

জামে’ তিরমিযীর হাদীছ সংখ্যাঃ ইমাম তিরমিযী তাঁর সংগৃহীত পাঁচ লক্ষ হাদীছের মধ্য হতে মাত্র ১৬০০ হাদীছ নির্বাচন করে জা’মে’ তিরমিযী’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেছেন।[50] এতে ৪৬টি পর্ব এবং ২১১৪টি অধ্যায় আছে।

উপসংহারঃ

পরিশেষে আমরা বলতে পারি হাদীছ শাস্ত্রে ইমাম তিরমিযী ছিলেন এক জ্যোতির্ময় নক্ষত্র। জামে’ তিরমিযী সংকলন করে তিনি যে জ্যোতি বিশ্বময় ছড়িয়ে দিয়েছেন তার আলোকচ্ছটায় সারা বিশ্ব আলোকোদ্ভাসিত। তাঁর এ অনবদ্য অবদানের কারণে ইলমে হাদীছে এক অপরিসীম পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। তাই তাঁর এ অবদানের কথা বিশ্ববাসী আজীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

তথসূত্রসমূহঃ

[1] ইবনু ইমাদ হাম্বলী (মৃত্যুঃ ১০৮৯হিঃ) শাযারাতুয যাহাব ২য় খণ্ড (মিছরঃ মাকতাবাতুল কুদসী: ১৩৫১হিঃ), পৃঃ ১৭৪; আবদুর রহমান মুবারকপুরী, মুকাদ্দামা তুহফাতুল আহওয়াযী (বৈরুতঃ দারুল কুতুবিল ইলমিয়াহ, ১৯৯০/১৪১০হিঃ), পৃঃ ২৬৭, কেউ কেউ তাঁর নসবনামা এভাবে উল্লেখ করেছেন, Abu Isa Muhammad Ibn Sawrah Ibn Shaddad At-tirmidhi. See: The new Encyclopaedia Britanica, V-II, P. 795.

[2] ইবনু খাল্লিকান, (৬০৮-৬৮১হিঃ) অফায়াতুল আ’ইয়ান, ৪র্থ খণ্ড (কুমঃ মানশুরাতুশ শরীফ আরাবী ১৩৬৪হিঃ), পৃঃ ৬১৩, হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ হানীফ গাংগোহী, যাফরুল মুহাচ্ছিলীন (দেওবন্দঃ হানীফ বুক ডিপো, তা.বি), পৃঃ ১৬৭।

[3] ইসলামী বিশ্বকোষ, (ঢাকাঃ ইসলামিক ফাউণ্ডেশন বাংলাদেশ, ১৯৯২/১৪১৩হিঃ), ১২শ খণ্ড, পৃঃ ৫২৭; কেউ কেউ বলেন, The nisba al-Tiamidhi connects him with tirmidh. See: The Encyclopaedia of Islam. (London: Luzac & Co. 1924). V-6, P-796.

[4] যাফরুল মুহাচ্ছিলীন, পৃঃ ১৬৭।

[5] আল-জামিউছ ছহীহ, তাহকীক ও শরাহ, আহমাদ মুহাম্মাদ শাকের, (মিছরঃ মুছতফা আল-বাকী আল-হালাবী ওয়া আওলাদুহ, ১৯৭৮/১৩৯৮হিঃ) ১/৭৭ পৃং ইসলামী বিশ্বকোষ, ১২/৫২৭ পৃঃ ।

[6] ড. শায়খ মুছতফা আস-সাবাঈ, আস-সুন্নাহ ওয়া মাকানাতুহা ফী তাশরীয়ল ইসলামী (বৈরুতঃ আল-মাকতাবুল ইসলামী ১৯৮৫/১৪০৫হিঃ) পৃঃ ৪৫৩, মুকাদামা তুহফাতুল আহওয়াযী, পৃঃ ২৬৭।

[7] আল্লামা শাহ্ আবদুল আযীয মুহাদ্দেছ দেহলভী, বুস্তানুল মুহাদ্দেছীন, উর্দু অনুবাদঃ মাওলানা আব্দুস সামী’ (করাচীঃ আছাহহুল মাতাবি’ ওয়া কারখানায়ে তিজারাতে কুতুব তা.বি.) পৃঃ ১৮৪।

[8] মুকাদ্দামা তুহফাতুল আহওয়াযী, পৃঃ ২৭০।

[9] আল-জামে আত-তিরমিযী, ও সম্পাদনা, মুহাম্মাদ মূসা (ঢাকাঃ বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, ১৯৯৪/১৪১৪হিঃ), ১ম খণ্ড, পৃঃ ২৬। ১০. ঐ পৃঃ ২৬-২৭

[10] ঐ পৃঃ ২৬-২৭।

[11] বুস্তানুল মুহাদ্দেছীন, পৃঃ ১৮৪; The new Encyclopaedia Britanica, V-11, P. 795; The Encyclopaedia of Islam, V-6. P-796.

[12] ইবনু হাজার আসকালানী, তাহযীবুত তাহযীব (বৈরুতঃ দারুল কুতুবিল ইলমিয়াহ, ১৯৯৪/১৪১৫হিঃ), ৯ম খণ্ড, পৃঃ ৩৩৫।

[13] আস-সুন্নাহ ওয়া মাকানাতুহা, পৃঃ ৪৫৩।

[14] অফায়তুল আইয়ান, ৪/৬১৩ পৃঃ বুস্তানুল মুহাদ্দেছীন, পৃঃ ১৮৪।

[15] শাযারাতু্য যাহাব, ২/১৭৫ পৃঃ, তাহযীবুত তাহযীব, ৯/৩৩৫ পৃঃ; The Encyclopaedia of Islam, V-6. P-796; The new Encyclopaedia Britanica, V-II, P. 795.

[16] তাহযীবুত তাহযীব, ৯/৩৩৫ পৃঃ মুকাদামা তুহফাতুল আহওয়ায, পৃঃ ২৬৭।

[17] বুস্তানুল মুহাদ্দেছীন, পৃঃ ১৮৫. আল-জামেউছ হহীহ ১/৮৪০ পৃঃ; শামসুদ্দীন আয-যাহাবী, তাযকিরাতুল হুফফায, ২য় খণ্ড (বৈরুতঃ দারুল কুতুবিল ইলমিয়াহ, তা.বি.), পৃঃ ৬৩৪-৩৫ তাহযীবুত তাহযীব, ৯/৩৩৫-৩৬ পৃঃ।

[18] মুকাদ্দামা আহওয়াযী, পৃঃ ২৬৯।

[19] যাফরুল মুহাচ্ছিলীন, পৃঃ ১৬৯, মুকাদ্দামা তুহফাতুল আহওয়াবী পৃঃ ২৬৮।

[20] তাহযীবুত তাহযীব, ৯/৩৩৫ পৃঃ।

[21] শামসুদ্দীন আয-যাহাবী, সিয়ারু আলামিন-নুবালা, ১৩শ খণ্ড, (বৈরুতঃ মুআস-সাসাতুর রিসালাহ, ১৯৯৬/১৪১৭হিঃ), পৃঃ ২৭৩, তাযকিরাতুল হুফফায, ২/২৩৪ পৃঃ।

[22] যাফরুল মুহাচ্ছিলীন, পৃঃ ১৬৯।

[23] তাহযীবুত তাহযীব, ৯/৩৩৬ পৃঃ সিয়ার আলামিন নুবালা, ১৩/২৭১ পৃঃ।

[24] মুকাদ্দামা তুহফাতুল আহওয়াযী, পৃঃ ২৭২।

[25] বুস্তানুল মুহাদ্দেছীন, পৃঃ ১৮৫;  যাফরুল মুহাচ্ছিলীন, পৃঃ ১৬৯।

[26] মুকাদ্দামা তুহফাতুল আহওয়াযী, পৃঃ ২৭৭।

[27] ইবনু নাদীম, আল-ফিহরিস্ত (বৈরুতঃ মাকতাবাতুল খাইয়াত, ১৯৭২ খৃঃ), পৃঃ ২৩৩; আল-জমিউছ ছহীহ, ১/৯০ পৃঃ অফায়াতুল আইয়ান ৪/৬১৩ পৃঃ।

[28] আল-জামিউছ ছহীহ ১/৯০পৃঃ, মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈল আল-আমীর আল-ইয়ামানী, সুবুলুস সালাম, (বৈরুতঃ দারুল কুতুবিল আরাবী ১৪১০হিঃ) ১/২৯ পৃঃ।

[29] মুকাদ্দামা তুহফাতুল আহওয়াযী, পৃঃ ২৭০ সিয়ার আলামিন নুবালা, ১৩/২৭৫ পৃঃ।

[30] আবু আবদিল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ আয-যাহাবী, মীযানুল ই’তিদাল (বৈরুতঃ দারুল মারিফা, তা.বি), ৩/৬৭৮ পৃঃ; তাহযবুত তাহাব, ৯/৩৩৫ পৃঃ।

[31] অফায়াতুল আ’ইয়ান, ৪/৬১৩ পৃঃ কেউ কেউ বলেন, তিনি ২৯৫ হিঃ সালের ১১ই মুহাররম ইক্তিকাল করেন। দ্রঃ ঐ, ৪/৬১৩ পৃঃ।

[32] আস-সুন্নাহ ওয়া মাকানাতুহা, পৃঃ ৪৫৩।

[33] ইবনু কাছীর, আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ (কায়রোঃ দারুর রাইয়্যান লিততুরাছ, ১ম সংস্করণ, ১৯৮৮/১৪০৮হিঃ) ৬ষ্ঠ খণ্ড, ১১শ জুয, পৃঃ ৭১; সিয়ার আলামিন নুবালা, ১৩/২৭৩ পৃঃ।

[34] ঐ।

[35] আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, ৬ষ্ঠ খণ্ড, ১১শ জুয, পৃঃ ৭১।

[36] তাহযীবুত তাহযীব, ৯/৩৩৫ পৃঃ

[37] আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, ৬ষ্ঠ খণ্ড, ১১শ জুয, পৃঃ ৭১।

[38] শাযারাতু্য যাহাব, ২/১৭৫পৃঃ, তাহযীবুত তাহযীব, ৯/৩৩৫ পৃঃ।

[39] মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম, হাদীস সংকলনের ইতিহাস (ঢাকাঃ ইসলামিক ফাউণ্ডেশন বাংলাদেশ ১৯৯২/১৪১২হিঃ), পৃঃ ৫২৪ ইসলামী সংস্কৃতির ইতিহাস, পৃঃ ৯০; যাফরুল মুহাচ্ছিলীন, পৃঃ ১৭২।

[40] হাদীস সংকলনের ইতিহাস, পৃঃ ৫২৪-২৫, ইসলামী সংস্কৃতির ইতিহাস, পৃঃ ৯০।

[41] তাযকিরাতুল হফফায, ২/১২২-২৩ পৃঃ সিয়ারু আলামিন নুবালা ১৩/২৭৪ পৃঃ মুকাদ্দামা তুহফাতুল আহওয়াযী, পৃঃ ২৮১।

[42] যাফরুল মুহাচ্ছিলীন, পৃঃ ১৭২।

[43] হাদীস সংকলনের ইতিহাস, পৃঃ ৬০৪।

[44] মুকাদ্দামা তুহফাতুল আহওয়াযী, পৃঃ ২৭৬-২৯০; বুস্তানুল মুহাদ্দেছীন, পৃঃ ১৮৫; যাফরুল মুহাচ্ছিলীন, পৃঃ ১৭৩-১৭৬।

[45] মুকাদ্দামা তুহফাতুল আহওয়াযী, পৃঃ ২৮৮।

[46] বুস্তানুল মুহাদ্দেছীন, পৃঃ ১৮৬।

[47] আল-জমিউছ হহীহ ১/৮৮ পৃঃ; মুকাদ্দামা তুহফাতুল আহওয়াযী, পৃঃ ২৮৬।

[48] ঐ; হাদীস সংকলনের ইতিহাস, পৃঃ ৫২৬; আল-জামেউছ ছহীহ, ১/৮৭-৮৮ পৃঃ।

[49] মুকাদ্দামা তুহফাতুল আহওয়াযী, পৃঃ ২৮১।

[50] ইসলামী সংস্কৃতির ইতিহাস, পৃঃ ৯১।

সূত্রঃ মাসিক আত-তাহরীক ৮ম বর্ষ ৫ম সংখ্যা, ফেব্রুয়ারী ২০০৪।

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button
skybet88 skybet88 skybet88 skybet88 mix parlay skybet88 slot bonus new member skybet88 skybet88 skybet88 slot gacor skybet88 skybet88