তাইওয়ানে যেভাবে চলছে মুসলমানদের জীবন
তাইওয়ানে ইসলাম জীবন্ত শক্তি। মুসলমানরা সরকারের প্রতি অনুগত। বহু কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে তাইওয়ানের মুসলমানরা সামনে এগিয়ে চলেছেন। অমুসলিম পরিবেশে ধর্মচর্চা ও প্রচার কঠিন। পর্যাপ্ত মসজিদ না থাকায় অনেক মুসলমানের পক্ষে জুমার নামাজ আদায়ে সমস্যা দেখা দেয়। হালাল খাদ্য সবখানে বিক্রি না করার কারণে দৈনন্দিন জীবনে মুসলমানদের বিপাকে পড়তে হয়। সপ্তম শতাব্দীতে ইসলাম চীনে প্রবেশ করে। মুসলিম ব্যবসায়ীরা চীনে এসে স্থানীয় চীনা মেয়েদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে ‘হুই’ নামক নতুন মুসলিম জাতিগোষ্ঠীর জন্ম দেন। চীন থেকে তাইওয়ানে ইসলাম ছড়িয়ে পড়ে। সাংবিধানিকভাবে তাইওয়ানে যে কোনো মানুষের ধর্ম অনুশীলন, চর্চা ও প্রচারে কোনো বাধা নেই। ইসলামের বিধি-বিধানের পূর্ণাঙ্গ ধারণা ও শিক্ষা তাইওয়ানের মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে এখনও প্রতিফলিত হয়নি। তবে তারা বংশপরম্পরায় ইসলামের বোধ ও বিশ্বাসকে লালন করে চলেছেন। সীমিত আকারে মুসলিম মেয়েরা পর্দা প্রথা মেনে চলে। মুসলমানদের স্বচ্ছ ও সুনিয়ন্ত্রিত জীবনধারা, নৈতিক মূল্যবোধ, পারিবারিক শৃঙ্খলা ও সামাজিক সাম্যের আদর্শ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তাইওয়ানের বহু মানুষ ইসলাম কবুল না করলেও ইসলামকে ভালোবাসেন। পশ্চিমাদের অপপ্রচারের কারণে কিছু মানুষের মধ্যে ইসলাম সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা সৃষ্টি হয়, তবে স্থানীয় মুসলমানদের ইতিবাচক দাওয়াতি প্রচারের কারণে তা দূরীভূত হয়ে যাচ্ছে।
তাইওয়ানের পরিচয়
‘তাইওয়ান’ পূর্ব এশিয়ার পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় একটি দ্বীপ, যা চীনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন। অতীতে পর্তুগিজরা এর নাম দিয়েছিল ‘ফরমোসা’, যার অর্থ ‘সৌন্দর্যমণ্ডিত দ্বীপ’। রাজধানী তাইপে। কাউসিয়াং তাইবু ও তাইচেং অন্যতম শহর। তাইওয়ানের আয়তন ৩৬,১৮৯ বর্গ কিলোমিটার। উত্তরে পূর্ব চীন সাগর, দক্ষিণে দক্ষিণ চীন সাগর, পূর্বে প্রশান্ত মহাসাগর এবং পশ্চিমে তাইওয়ান প্রণালী অবস্থিত। দ্বীপের দুই-তৃতীয়াংশ জুড়ে রয়েছে ৩ হাজার মিটার উচ্চতাসম্পন্ন ১০০টি পর্বত। ২ কোটি ৩০ লাখ জনঅধ্যুষিত তাইওয়ানের সাক্ষরতার হার ৯৭.৭৮ ভাগ (২০০৮)। রাষ্ট্রীয় ভাষা মান্দারিন হলেও তাইওয়ানি ও হাক্কা ভাষা বেশ প্রচলিত। অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ দেশ তাইওয়ান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরপরই তাইওয়ান শিল্পায়নের পধে ধাবিত হয় এবং এশিয়ার সমৃদ্ধ চার দেশের (ঋড়ঁত্ অংরধহ ঞরমবত্ং) মধ্যে অন্যতম স্থান দখল করে নেয়। অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ অন্য তিনটি দেশ হচ্ছে হংকং, সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়া। তাইওয়ানের মাথাপিছু বার্ষিক আয় ১৮.৫৮৮ ডলার (২০১০)। বেকারের সংখ্যা ৮.২৯ ভাগ মাত্র। ইলেকট্রনিক, কেমিক্যাল, পেট্রো কেমিক্যাল, মেশিনারি, দাতব বস্তু, টেক্সটাইল ও পরিবহন যন্ত্রপাতি হচ্ছে তাইওয়ানের আয়ের মূল উত্স। ২০১০ সালে তাইওয়ানের বার্ষিক রফতানি আয় ২৭৪.৬ বিলিয়ন ডলার।
সরকারি স্বীকৃত ধর্ম
তাইওয়ানে সরকারি স্বীকৃত ১৩টি ধর্ম রয়েছে। বৌদ্ধ, তাঈ, রোমান, ক্যাথলিক, প্রোটেস্ট্যন্ট, ইসলাম, লি-ইজম, বাহাই ও থেনকিকিও। অর্ধেক জনগোষ্ঠী বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী তাইওয়ানের নিবন্ধিত মুসলমানের সংখ্যা ৫৩ হাজার। এছাড়া ৮৮,৫০০ ইন্দোনেশীয় মুসলমান তাইওয়ানে কর্মরত রয়েছেন। সব মিলে তাইওয়ানে মুসলমানের সংখ্যা ১ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০। পুরো তাইওয়ানে মসজিদ আছে ৬টি, গণপাঠাগার ৪টি এবং প্রকাশনা সংস্থা রয়েছে ১টি। তাঈপে গ্র্যান্ড মসজিদ হচ্ছে সবচেয়ে বড় মসজিদ। রাজধানী তাইপের দান জেলায় অবস্থিত এ মসজিদের আয়তন ২,৭৪৭ বর্গমিটার। তাইপের নগর প্রশাসন ১৯৯৯ সালের ২৬ জুন ঐতিহাসিক মসজিদ হিসেবে এটিকে তালিকাভুক্ত করে।
মুসলমানদের আগমন
সপ্তদশ শতাব্দীতে মুসলমানরা সর্বপ্রথম তাইওয়ানে বসতি স্থাপন করে। ইতিহাসবিদদের মতে, ১৬৬১ সালে তাইওয়ানের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর থেকে ডাচদের বিতাড়িত করার উদ্দেশে কক্সিঙ্গার নেতৃত্বে বহু মুসলিম পরিবার চীনের উপকূলীয় প্রদেশ কুজিয়ান থেকে তাইওয়ানে আসে। তারাই তাইওয়ানের প্রথম মুসলিম অভিবাসী। ১৯৪৯ সালে চীনে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে ২০ হাজার মুসলিম পরিবার চীনের মূল ভূখণ্ড ত্যাগ করে তাইওয়ানে আশ্রয় নেয়। শরণার্থীর মধ্যে দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের বিশেষত ইউনান, জিংজিয়াং, নিনগক্সিয়া ও গনিচু এলাকা থেকে বিপুল সংখ্যক মুসলিম সেনাসদস্য, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী তাইওয়ানে এসে বসতি স্থাপন করে। ১৯৫০ সালের দিকে চীনের হান মুসলমানদের সঙ্গে তাইওয়ানের মুসলমানদের যোগাযোগ স্থাপিত হয়।
১৯৮০ সালের দিকে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড থেকে উন্নত জীবনের প্রত্যাশায় বিপুলসংখ্যক মুসলমান তাইওয়ানে পাড়ি জমায়। বর্তমানে তাইওয়ানের অধিকাংশ মুসলমান নতুন ধর্মান্তরিত। ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে মহিলাদের সংখ্যা অধিক। তারা ইসলাম কবুল করে মুসলমানদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়। এভাবে মুসলমানদের সংখ্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পেতে থাকে।
কীর্তিমান তাইওয়ানি মুসলিম
তাইওয়ানে জন্মগ্রহণকারী অথবা তাইওয়ানে বসতি স্থাপনকারীদের মধ্যে বহু নামি-দামি মুসলমান আছেন, যারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে অত্যন্ত পরিচিত ও কীর্তিমান। তাদের মধ্যে বাই চংক্সি (১৮৯১-১৯৬৬) অন্যতম, যিনি চীনা সেনাবাহিনীতে জেনারেল (১৯৪৬-১৯০১) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মা বুকিং (১৯০১-১৯৭৭) আরেকজন মুসলিম জেনারেল, যিনি ১৯৪২-৪৩ সালে চীনা সেনাবাহিনীর ৪০তম গ্রুপের ডেপুটি কমান্ডার ইন চিফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মা চেং জিয়াং (১৯১৪-১৯৯১) আরেকজন মুসলিম জেনারেল, যিনি চীন সরকারের অধীনে ন্যাশনাল রিভ্যুলিউশনারি আর্মিতে জেনারেল (১৯৪৪-১৯৬৯) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৪৪ সালে ৫ম ক্যাভালরি ডিভিশনে জেনারেল অফিসার কমান্ডিং ছিলেন। মা চিং চিয়াং নামের এ মুসলিম জেনারেল প্রেসিডেন্ট চিয়াং কাই শেকের উপদেষ্টা ছিলেন। ১৯৭০ সালে কম্বাইন্ড সার্ভিস ফোর্সেসের ডেপুটি কমান্ডার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ইউলবার খান (১৯৫১-১৯৭০) জিংজিয়াং প্রদেশের গভর্নর ছিলেন। গভর্নর হিসেবে যোগ দেয়ার আগে ন্যাশনাল রিভ্যুলিউশনারি আর্মির জেনারেল (১৯৪৪-১৯৫১) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ওয়াং সি মিং নামের আরেকজন মুসলমান তাইওয়ান সরকারের পক্ষ থেকে কুয়েতে রাষ্ট্রদূত ছিলেন। চীনা মুসলিম সমিতির ব্যবস্থাপনায় তাইওয়ানের মেধাবী মুসলিম শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন মুসলিম দেশে বৃত্তি নিয়ে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণে এগিয়ে চলেছে। রাবেতা আল আলম ইসলামীসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইসলামী সংস্থার সঙ্গে তাইওয়ানের মুসলমানদের যোগাযোগ রয়েছে। সরকারি কোটায় মাত্র ৫ জন মুসলমান হজ করার অনুমতি থাকলেও বেসরকারি পর্যায়ে প্রায় ২০-২২ জনের মতো প্রতি বছর মক্কা নগরী সফর করে হজ পালন করেন। তাইওয়ানের রাষ্ট্রপ্রধান হাজীদের মক্কা যাত্রার প্রাক্কালে রাষ্ট্রপতি ভবনে স্বাগত জানান।
তাইপে গ্র্যান্ড মসজিদ
তাইপে মসজিদে বছরে প্রায় ১০০ জন মানুষ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। ২০০০ সালে সৌদি বাদশাহ ফাহাদ ইবনে আবদুল আজিজের আমন্ত্রণে তাইওয়ানের ৩২ জন মুসলমান হজ ও ওমরাহ পালন করেন। তাইপে গ্র্যান্ড মসজিদ তাইওয়ানের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থাপনা। আরবি ও পারস্য স্থাপত্যশৈলীর সংমিশ্রণে তৈরি এ মসজিদে ১ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদ কম্পাউন্ডে রয়েছে ৪০০ আসনের মিলনায়তন, যেখানে সেমিনার, ওয়াজ মাহফিল ও সিরাত কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয় নিয়মিত। নামাজ ও ইবাদতের পাশাপাশি প্রতিটি মসজিদে বিশেষত সাপ্তাহিক বন্ধ ও সাধারণ ছুটির দিনে কোরআন ও ধর্মীয় তালিম চলে।
১৯৬০ সালে স্থানীয় মুসলমান ও বিভিন্ন মুসলিম রাষ্ট্রের আর্থিক সহয়তায় নির্মিত তাইপে গ্র্যান্ড মসজিদ কাম ইসলামিক সেন্টার মুসলমানদের ধর্মীয় ও সামাজিক মিলনকেন্দ্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। সৌদি আরবের বাদশাহ ফয়সাল ইবনে আবদুল আজিজ, জর্দানের বাদশাহ হোসাইন ও মালয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট টুংকু আবদুর রাহমান তাইপে গ্র্যান্ড মসজিদ পরিদর্শন করেন। তাইপে গ্র্যান্ড মসজিদে ৩০ জন নিবন্ধিত কিশোর শিক্ষার্থীকে শনি ও রোববার ২ ঘণ্টাব্যাপী ইসলামের মৌলিক বিষয়াবলীর ওপর পাঠদান করা হয়। তাইওয়ানে মসজিদকেন্দ্রিক যে সমাজ গড়ে উঠেছে সেখানে যে কোনো অপরাধের জন্য বয়োজ্যেষ্ঠদের একটি কাউন্সিল সর্বদা সতর্ক থাকে এবং অপরাধীদের শাস্তি প্রদান করা হয় যাতে সমাজ কলুষিত না হতে পারে। মুসলিম তরুণ-তরুণীরা যাতে শূকরের মাংস ও মাদকের প্রতি আসক্ত না হয়ে পড়ে সেজন্য রয়েছে রীতিমত কাউন্সেলিং ও পারিবারিক দীক্ষা।
মুসলিম দেশের সঙ্গে সম্পর্ক
ক্রমেই মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশের সঙ্গে তাইওয়ানের বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার হচ্ছে। তাইওয়ানের মুসলিম সমাজে আলেমের সংখ্যা একেবারে নগণ্য। উচ্চ পর্যাযের মাদরাসা না থাকায় পর্যাপ্ত আলেম তৈরি হচ্ছে না। ইসলামী সংস্থাগুলোর সহযোগিতায় প্রতি বছর শতাধিক শিক্ষার্থীকে বাইরে পাঠানো হয়, যারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ডিগ্রি নিয়ে আরবি ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করে। তাদের মধ্যে কতিপয় কূটনৈতিক অঙ্গনে দায়িত্ব পালনের সুযোগ লাভ করে। দাওয়াতি তত্পরতা জোরদার করার লক্ষ্যে রাবেতা আল আলম আল ইসলামী ও ওয়ার্ল্ড এসেম্বলি অব মুসলিম ইয়ুথের যৌথ উদ্যোগে মাঝে মধ্যে তরুণদের জন্য ক্যাম্প ও আন্তর্জাতিক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন দেশের স্কলাররা বিভিন্ন প্রবন্ধ পাঠ করে থাকেন। চাইনিজ মুসলিম সমিতির সহায়তায় ইবরাহিম বাও সৌদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়া অনুষদ থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়ে তাইওয়ানে শরিয়া প্রশিক্ষণের কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। তিনি বর্তমানে রাবেতার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।
মান্দারিন ভাষায় ইসলামী গ্রন্থ
তাইওয়ানে চীনা ও মান্দারিন ভাষা প্রচলিত। মা-জুন চীনা ভাষায় পবিত্র কোরআন এবং চেন কি লি মহানবী হজরত মুহাম্মদের (সা.) নির্বাচিত হাদিসগুলো তরজমা করেন। এছাড়া ছোটখাটো দ্বীনি পুস্তিকাগুলো চীনা ও মান্দারিন ভাষায় অনূদিত হয়। চীনা ও মান্দারিন ভাষায় আরও ইসলামী গ্রন্থ বিশেষত পূর্ণাঙ্গ তাফসিরে কোরআন, সিরাতে রাসুল, সাহাবাদের জীবনী, জীবন গঠনে সহায়ক ইসলামী ফিকহ প্রণয়ন এবং অনুবাদ প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের জন্য অন্যান্য দেশের মুসলমানদের এগিয়ে আসতে হবে। সেমিনার, ইসলামী সম্মেলন, ব্যক্তিগত দাওয়াত, সামাজিক জনহিতকর কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তাইওয়ানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ করে কোরআন ও সুন্নাহর আদর্শে গড়ে তোলা হচ্ছে এ মুহূর্তের বড় কাজ। তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে মেহনতি প্রয়াস চালানো হলে আশপাশের দেশে ইসলামের মর্মবাণী পৌঁছিয়ে দেয়া সহজতর হবে।