তওবাকারীদের দুটি ঘটনা

প্রথম ঘটনা:

আবু সাঈদ সাদ বিন মালিক মিন সিনান খুদরী রা. হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

كَانَ فِيمَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ رَجُلٌ قَتَلَ تِسْعَةً وَتِسْعِينَ نَفْسًا فَسَأَلَ عَنْ أَعْلَمِ أَهْلِ الْأَرْضِ فَدُلَّ عَلَى رَاهِبٍ فَأَتَاهُ فَقَالَ إِنَّهُ قَتَلَ تِسْعَةً وَتِسْعِينَ نَفْسًا فَهَلْ لَهُ مِنْ تَوْبَةٍ فَقَالَ لَا فَقَتَلَهُ فَكَمَّلَ بِهِ مِائَةً ثُمَّ سَأَلَ عَنْ أَعْلَمِ أَهْلِ الْأَرْضِ فَدُلَّ عَلَى رَجُلٍ عَالِمٍ فَقَالَ إِنَّهُ قَتَلَ مِائَةَ نَفْسٍ فَهَلْ لَهُ مِنْ تَوْبَةٍ فَقَالَ نَعَمْ وَمَنْ يَحُولُ بَيْنَهُ وَبَيْنَ التَّوْبَةِ انْطَلِقْ إِلَى أَرْضِ كَذَا وَكَذَا فَإِنَّ بِهَا أُنَاسًا يَعْبُدُونَ اللَّهَ فَاعْبُدْ اللَّهَ مَعَهُمْ وَلَا تَرْجِعْ إِلَى أَرْضِكَ فَإِنَّهَا أَرْضُ سَوْءٍ فَانْطَلَقَ حَتَّى إِذَا نَصَفَ الطَّرِيقَ أَتَاهُ الْمَوْتُ فَاخْتَصَمَتْ فِيهِ مَلَائِكَةُ الرَّحْمَةِ وَمَلَائِكَةُ الْعَذَابِ فَقَالَتْ مَلَائِكَةُ الرَّحْمَةِ جَاءَ تَائِبًا مُقْبِلًا بِقَلْبِهِ إِلَى اللَّهِ وَقَالَتْ مَلَائِكَةُ الْعَذَابِ إِنَّهُ لَمْ يَعْمَلْ خَيْرًا قَطُّ فَأَتَاهُمْ مَلَكٌ فِي صُورَةِ آدَمِيٍّ فَجَعَلُوهُ بَيْنَهُمْ فَقَالَ قِيسُوا مَا بَيْنَ الْأَرْضَيْنِ فَإِلَى أَيَّتِهِمَا كَانَ أَدْنَى فَهُوَ لَهُ فَقَاسُوهُ فَوَجَدُوهُ أَدْنَى إِلَى الْأَرْضِ الَّتِي أَرَادَ فَقَبَضَتْهُ مَلَائِكَةُ الرَّحْمَةِ

“তোমাদের আগের উম্মতে এক লোক ছিল। সে নিরানব্বই জন লোক খুন করার পর জিজ্ঞেস করল, দুনিয়ার সবচেয়ে বড় আলেম কে? তাকে এক খৃষ্টান পাদ্রীর সন্ধান দেয়া হল। সে উক্ত পাদ্রীর নিকট গিয়ে জিজ্ঞেস করলো, এ পরিস্থিতিতে তার কি তওবা করার সুযোগ আছে? পাদ্রী জবাব দিল: “না।” এতে সে ক্রুদ্ধ হয়ে পাদ্রীকে হত্যা করে একশ খুন পূর্ণ করলো।

অতঃপর আবার সে দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ আলেম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল। এবার তাকে এক আলেমের সন্ধান দেয়া হল। তাঁর নিকট গিয়ে সে বলল: সে একশ মানুষ খুন করেছ। তার কি কোন তওবার সুযোগ আছে? আলেম বললেন, “হ্যাঁ, তওবার পথ তো খোলা আছে। তওবার সামনে কোন কিছু প্রতিবন্ধক নাই। তবে তুমি অমুক এলাকায় যাও, সেখানে আল্লাহর ইবাদত গুজার কিছু মানুষ বসবাস করে। তাদের সাথে তুমিও আল্লাহর ইবাদত কর। আর তোমার এলাকায় ফিরে এসো না। ওটা খারাপ এলাকা।
এ কথা শুনে সে ব্যক্তি উক্ত এলাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিল। পথের মাঝখানে আসলে সে মৃত্যু বরণ করল। অতঃপর রহমতের ফিরিশতাগণ এবং আজাবের ফিরিশতাগণ এসে তার ব্যাপারে বিবাদে লিপ্ত হল। রহমতের ফিরিশতাগণ বললেন, এই ব্যক্তি যেহেতু তওবা করেছে এবং আল্লাহর প্রতি মন-প্রাণ সমর্পণ করে এসেছে। (সুতরাং আমরা তাকে নিয়ে যাব।)
আজাবের ফিরিশতাগণ বললেন, এ লোকটি কখনো কোন সৎকাজ করে নি। (সুতরাং আমরা তাকে নিয়ে যাব।) এহেন অবস্থায় তাদের নিকট অন্য এক ফিরিশতা মানুষের রূপ ধরে এসে দু দলের মাঝে ফয়সালা করে দিলেন। তিনি বললেন, লোকটি যেখান থেকে এসেছিল এবং যেখানে যাচ্ছিল এই দুই এলাকার দূরত্ব পরিমাপ কর। যে এলাকার নিকটবর্তী হবে তদনুযায়ী সে পক্ষ তাকে নিয়ে যাবে।
তারা দূরত্ব মাপল এবং যে এলাকায় যাওয়ার সে ইচ্ছা করেছিল তার নিকটবর্তী পেল। অতঃপর রহমতের ফিরিশতাগণ তাকে নিয়ে চলে গেল।

[সহীহ মুসলিম। অনুচ্ছেদ: হত্যা কারীর তওবা কবুল হবে যদিও হত্যার সংখ্যা প্রচুর পরিমান হয়। হা/৪৯৬৭]!

সহীহ বুখারীর এক বর্ণনায় রয়েছে, উক্ত লোকটি ভাল গ্রামটির এক বিঘত নিকটে ছিল। বিধায় তাকে সৎলোকদের অন্তর্ভুক্ত করে নেয়া হল। সহীহ মুসলিমের অন্য বর্ণনায় আছে,

فَأَوحَى الله تَعَالَى إِلى هذِهِ أَنْ تَبَاعَدِي ، وإِلَى هذِهِ أَنْ تَقَرَّبِي ، وقَالَ : قِيسُوا مَا بيْنَهُما ، فَوَجَدُوهُ إِلى هذِهِ أَقْرَبَ بِشِبْرٍ فَغُفِرَ لَهُ

“আল্লাহ খারাপ গ্রামটিকে একটু দূরে সরে যাওয়ার এবং ভাল গ্রামটিকে একটু নিকটে আসার নির্দেশ দিয়ে বললেন, দুটি গ্রামের দূরত্ব মাপ। ফিরিশতাগণ দূরত্ব পরিমাপ করে উক্ত লোকটিকে ভালো গ্রামটির এক বিঘত পরিমাণ নিকটে পেলেন ফলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেয়া হল।

২য় ঘটনা:

প্রখ্যাত সাহাবী আবু নহাইদ ইমরান বিন হুসাইন খুযাঈ রা. হতে বর্ণিত। জুহাইনা গোত্রের এক নারী ব্যভিচারের মাধ্যমে গর্ভবতী হয়ে গিয়েছিল। সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল, আমি হদ বা শাস্তির উপযুক্ত হয়ে গেছি। আমার উপর তা কার্যকর করুন।

নবী তার অভিভাবককে ডেকে বললেন, একে নিয়ে যাও। তার সাথে ভাল ব্যাবহার করবে। সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে তাকে আমার নিকট নিয়ে এসো।

মহিলাটির অভিভাবক তাই করলেন। এবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহিলাকে কাপড় দিয়ে বাঁধার নির্দেশ দিয়ে রজম (পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা) কার্যকর করার ফরমান জারি করলেন।

অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহিলার জানাযা পড়ার জন্য অগ্রসর হলে উমর রা. বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, আপনি এ মহিলার জানাযা পড়বেন অথচ সে তো ব্যভিচার করেছে? তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তর দিলেন,

لَقَدْ تَابَتْ تَوْبَةً لَوْ قُسِمَتْ بَيْنَ سَبْعِينَ مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ لَوَسِعَتْهُمْ وَهَلْ وَجَدْتَ تَوْبَةً أَفْضَلَ مِنْ أَنْ جَادَتْ بِنَفْسِهَا لِلَّهِ تَعَالَى

“এ মহিলা এমনভাবে তওবা করেছে যে, তা যদি মদীনার সত্তর জন অধিবাসীর মধ্যে বণ্টন করে দেয়া হয় তবে সকলের জন্য তা যথেষ্ট হবে। যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নিজেকে পবিত্র করল, তার চেয়ে উত্তম আর কাকে পাবে?

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button
skybet88 skybet88 skybet88 skybet88 mix parlay skybet88 slot bonus new member skybet88 skybet88 slot gacor skybet88 skybet88