ইসলামী সমাজ জীবনে মহিলাদের বিধিবদ্ধ অধিকার
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তা’য়ালার জন্য যিনি রব্বুল আলামীন। দুরুদ ও সালাম রসূলুল্লাহ্ সল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি যিনি রহমাতুল্লিল আলামীন, তাঁর পরিবারবর্গ, সাহাবায়ে কিরাম (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) এবং সালেহীন (র)-গণের প্রতি। আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই। আমরা আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর বান্দাহ ও রসূল। নিশ্চয়ই ইহ-পরকালীন কল্যাণ কেবলমাত্র রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, খুলাফায়ে রাশিদীন, আহলে বাইত এবং সাহাবা (রাদিয়াল্লাহু আনহুম)-গণের অনুসৃত কল্যাণময় আদর্শ অনুসরণের মধ্যেই নিহিত রয়েছে।
নারী-পুরুষ সৃষ্টি মহান আল্লাহ তা’য়ালার অন্যতম অনুপম নিদর্শনঃ মহান আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেন : “তাঁর (আল্লাহর) অন্যতম একটি নিদর্শন যে, তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সংগিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে।” -(সূরা রোম: আয়াত ২১)
আল্লাহর দরবারে তাকওয়াসম্পন্ন নারী ও পুরুষের মর্যাদা সমানঃ মহান আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেন : “হে মানবজাতি, আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিতি হও। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত যে সর্বাধিক তাকওয়াসম্পন্ন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন”। – [সূরা হুজুরাতঃ আয়াত ১৩]
জাহিলিয়াতের জামানায় কন্যা সন্তানের জন্মকে অপমান জনক মনে করা হতঃ মহান আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেন : “তাদের কাউকে যখন কন্যা সন্তানের ‘সুসংবাদ’ দেয়া হয় তখন তার চেহারা মলিন হয়ে যায় এবং সে অসহনীয় মনস্তাপে ক্লিষ্ট হয়। সে এ সুসংবাদকে খারাপ মনে করে নিজ সম্প্রদায় থেকে লুকিয়ে বেড়ায় (এবং চিন্তা করে ) হীনতা স্বীকার করে তাকে নিজের কাছে রেখে দেবে,নাকি মাটিতে পুঁতে ফেলবে। কত নিকৃষ্ট ছিল তাদের সিদ্ধান্ত।” -(সূরা নাহলঃ আয়াত : ৫৮-৫৯)
ইসলাম নারীদেরকে দিয়েছে মানবীয় মর্যাদা, মাতৃত্বের সম্মান, জীবন সঙ্গিনী হিসাবে বন্ধুত্ব অর্ধেক দ্বীনদারীর ঘোষণা এবং কন্যা সন্তান লালন-পালনের মাধ্যমে জান্নাত লাভের সুসংবাদ। সাথে সাথে নারীদের জান-মাল-ইজ্জতের নিরাপত্তা বিধান এবং ভরন-পোষণের দায়-দায়িত্ব কখনও পিতার উপর, কখনও স্বামীর উপর এবং কখনও সন্তানের উপর ন্যাস্ত করা হয়েছে। আবার নারীর বেহায়াপনাকে উম্মাহর জন্য সবচেয়ে মারাত্মক ফিতনা হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এ প্রসংগে কুরআন ও হাদীসে বহু দিক-নির্দেশনা রয়েছে। এর ভিতর থেকে বর্তমান প্রবন্ধে কতিপয় দিক-নির্দেশনা সকলের বিবেচনার জন্য পেশ করা হল।
কন্যা সন্তান হিসাবে পিতার নিকট নারীর অধিকারঃ
আকিকা প্রদানঃ হযরত সামুরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সকল নবজাতক তার আক্বিকার সাথে আবদ্ধ। জন্মের সপ্তম দিন তার পক্ষ থেকে জবেহ করা হবে। ঐ দিন তার নাম রাখা হবে। আর তার মাথার চুল কামানো হবে। – [সুনান আবূ দাউদ: ২৮৩৮]
উত্তম লালন-পালনঃ হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: যে ব্যক্তি দুটি মেয়েকে বয়ঃপ্রাপ্ত হওয়া পর্যন্ত লালন-পালন করল, সে কিয়ামতের দিন এরূপ অবস্থায় আসবে যে, আমি ও সে এরূপ একত্রিত থাকব। তিনি তাঁর আংগুলগুলো মিলিয়ে দেখালেন। -(মুসলিম)
স্বাভাবিক ভরণ-পোষণঃ হযরত উম্মে সালামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমি জিজ্ঞাসা করলাম আবূ সালামার সন্তানদের জন্য আমি যদি খরচ করি এতে কি আমার জন্য প্রতিদান রয়েছে? নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ যতদিন তুমি খরচ করবে ততদিন তোমার জন্য প্রতিদান থাকবে। -[সহীহ বুখারী: ৫৩৬৯]
খাঁটি মুসলিমাহ হিসাবে গড়ে তোলাঃ আবু হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : প্রতিটি সন্তানই ইসলামী ফিতরাতের উপর জন্মগ্রহণ করে থাকে।এরপর তার মাতাপিতা তাকে ইয়াহুদী, নাসারা অথবা অগ্নিপূজক বানিয়ে ফেলে, যেভাবে চতুস্পদ জন্তু একটি পরিপূর্ণ জন্তুই জন্ম দিয়ে থাকে।তোমরা এতে কোন কমতি দেখতে পাও কি? তারপর তিনি তিলাওয়াত করলেন: তুমি একনিষ্ঠ ভাবে নিজেকে ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ। এটাই আল্লাহর ফিতরাত, যার উপর তিনি মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সৃষ্টির রহস্যে কোন পরিবর্তন নেই। এটাই সরল ধর্ম। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না। -সূরা রুম আয়াত নং-৩০। -[বুখারী ও মুসলিম]
সক্ষম ও সাবলম্বি হিসাবে গড়ে তোলাঃ হযরত সা‘দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে এভাবে বলেছেন, তোমাদের সন্তান সন্ততিদেরকে সক্ষম ও সাবলম্বি রেখে যাওয়া, তাদেরকে অভাবী ও মানুষের কাছে হাত পাতা অবস্থায় রেখে যাওয়ার চেয়ে উত্তম। -[সহীহ বুখারী : হাদীস নং ১২৯৫]
সন্তানদের মাঝে ইনসাফ বজায় রাখাঃ হযরত নোমান ইবনে বাশীর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে তার পিতা তাকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট নিয়ে আসলেন। তারপর বললেন, আমি আমার এই ছেলেকে একটি গোলাম দান করেছি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার সকল সন্তানকে কি এভাবে একটি করে গোলাম দান করেছ?” তিনি বললেন, না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাহলে তার নিকট থেকে এটা ফিরিয়ে নাও। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, “আল্লাহকে ভয় কর এবং তোমার সন্তানদের মাঝে ইনসাফ কর”। -(সহীহ বুখারী, ফাতহুল বারীঃ ৫/২২১) হযরত নোমান রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, তিনি ফিরে এসে সেই দানটি ফিরিয়ে নিলেন। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: “…অত:এব এ ব্যাপারে আমাকে সাক্ষী রাখিও না। কারণ, আমি জুলুমের সাক্ষী হতে পারি না।” (সহীহ মুসলিমঃ ১২৪৩)
বিবাহ প্রদানঃ মহান আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেন : “তোমাদের মধ্যে যারা অবিবাহিত , তাদের বিবাহ সম্পাদন করে দাও এবং তোমাদের দাস ও দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ন, তাদেরও। তারা যদি নিঃস্ব হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে সচ্ছল করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ”। -(সূরা নূরঃ আয়াত ৩২)
স্ত্রী হিসাবে স্বামীদের কাছে নারীদের অধিকার :
দাম্পত্য জীবনে মুমিন পুরুষ ও নারী একে অপরের অভিভাবক ও বন্ধুঃ মহান আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেন : “মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী একে অপরের অভিভাবক ও বন্ধু। তারা ভাল কাজের আদেশ দেয়, খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে, সালাত কায়িম করে, যাকাত আদায় করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে। আল্লাহ তাদের প্রতি অচিরেই রহমত নাযিল করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাপরাক্রশালী, মহাপ্রজ্ঞাময়। আল্লাহ মুমিন পুরুষ ও নারীদের জন্য এমন জান্নাতের অঙ্গীকার করেছেন যে জান্নাতের নিচ দিয়ে ঝর্ণাসমূহ বয়ে যায়। সেখানে তারা চিরদিন থাকবে। আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেন মহাপবিত্র স্থায়ী বাসস্থান আদন নামক জান্নাতের। বস্তুত আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনই সর্বশ্রেষ্ঠ এবং এটাই সবচেয়ে বড় সফলতা”।- (সূরা তওবাঃ আয়াত ৭১-৭২)
স্বামীর নিকট মোহরানার অধিকারঃ মহান আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেন : “তোমরা স্বেচ্ছায় স্বতঃস্ফুর্তভাবে স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও। তবে তারা যদি খুশি হয়ে মোহরের কিছু অংশ ছেড়ে দেয়, তাহলে তা তোমরা সন্তুষ্টচিত্তে ভোগ কর।” -(সূরা নিসাঃ আয়াত ৪)
সৌজন্যমূলক আচরণঃ হযরত মুয়াবিয়া ইবনে দাইদাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্র্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম হে আল্লাহর রসূল! আমাদের কোন ব্যক্তির উপর তার স্ত্রীর কি কি অধিকার রয়েছে? তিনি বলেন : তুমি যখন আহার কর তাকেও আহার করাও, তুমি যখন পরিধান কর তাকেও পরিধান করাও, কখনও তার মুখমন্ডলে প্রহার করো না, কখনও অশ্লীল ভাষায় গালি দিও না এবং ঘরের মধ্যে ছাড়া তার থেকে বিচ্ছিন্ন (অভিমানমূলক পৃথক বিছানা) হয়ো না। -(আবু দাউদ)
হিংসা-বিদ্বেষ-শত্রুতা পরিহারঃ হযরত আবু হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্র্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : কোন মুসলিম পুরুষ যেন কোন মুসলিম নারীর প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ ও শত্রুতা পোষণ না করে। কেননা তার কোন একটি দিক তার কাছে খারাপ লাগলেও অন্য কোন একটি দিক তার পছন্দ হবে। অথবা তিনি (নবী) অনুরূপ কথা বলেছেন। -(মুসলিম)
উত্তম ব্যবহারঃ হযরত আবু হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্র্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তির চরিত্র ও ব্যবহার সবচেয়ে উত্তম, ঈমানের দিক থেকে সেই পরিপূর্ণ মুমিন। তোমাদের মধ্যে তারাই উত্তম যারা তাদের স্ত্রীদের কাছে উত্তম। -(তিরমিযী: হাসান ও সহীহ)
স্বাভাবিক খোরপোষঃ হযরত জাবির (রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা স্ত্রীদের বিষয়ে আল্লাহকে ভয় কর। কারণ তারা তোমাদের আশ্রিতা, তাদের তোমরা গ্রহণ করেছ আল্লাহর নিরাপত্তা দ্বারা এবং তাদের লজ্জাস্থানকে হালাল করেছ আল্লাহর কালিমা দ্বারা। তাদের স্বাভাবিক খোরপোষ তোমাদের উপর অপরিহার্য। -{সহীহ মুসলিমঃ ২/৮৮৯-৮৯০; জামে তিরমিযীঃ ১১৬৩}
দাম্পত্য সম্পর্কের গোপনীয়তা রক্ষাঃ হযরত আবূ সা’ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: কিয়ামতের দিন আল্লাহর নিকট মার্যাদার দিক থেকে নিকৃষ্টতম হবে ঐ ব্যক্তি যে তার স্ত্রীর সাথে শয্যা গ্রহণ করে এবং তার স্ত্রীও তার সাথে শয্যা গ্রহণ করে, তারপর তাদের পরস্পরের মিলন ও সহবাসের গোপন কথা লোকদের নিকট প্রকাশ করে । – [মুসলিম-১৪৩৭]
আপোষ-নিস্পত্তির অধিকারঃ মহান আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেন : “যদি কোন নারী স্বীয় স্বামীর পক্ষ থেকে অসদাচরণ কিংবা উপেক্ষার আশংকা করে, তবে পরস্পর কোন মীমাংসা করে নিলে তাদের উভয়ের কোন গোনাহ নাই। মীমাংসা উত্তম।” –[সূরা আন নিসাঃ আয়াত১২৮]
পবিত্রতা রক্ষার অধিকারঃ মহান আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেনঃ আর তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে হায়েয (ঋতু) সম্পর্কে। বলে দাও, এটা অশুচি। কাজেই তোমরা হায়েয অবস্থায় স্ত্রীগমন থেকে বিরত থাক। তখন পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হবে না, যতক্ষণ না তারা পবিত্র হয়ে যায়। যখন উত্তম রূপে পরিশুদ্ধ হয়ে যাবে, তখন গমন কর তাদের কাছে, যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে হুকুম দিয়েছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারী এবং অপবিত্রতা থেকে যারা বেঁচে থাকে তাদেরকে পছন্দ করেন। -(সূরা বাক্কারাহঃ আয়াত ২২২)
স্ত্রীদের সঙ্গে যিহার করা যাবে না, তাহলে কাফফারা দিতে হবেঃ যিহারের মাধ্যমে নারীদের উপর বড় যুলুম ও অত্যাচার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে যিহার একটি জঘন্য অমানবিক কাজ। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ “তোমাদের মধ্য হতে যারা নিজেদের স্ত্রীদের সঙ্গে যিহার করে তারা যেন জেনে রাখে যে, তারা তাদের মা নয়। তাদের মা তো তারাই যারা তাদেরকে প্রসব করেছে। তারা তো কেবল অবৈধ ও মিথ্যা কথা বলে। আর নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ ক্ষমাশীল ও মার্জনাকারী।” [ সূরা আল-মুজাদালাহঃ আয়াত ২]
মহান আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেন : “যারা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে যিহার করে, তারপর তারা তাদের উক্তি ফিরিয়ে নেয়, তাদের জন্য একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একজন দাস মুক্তির বিধান দেয়া হলো। এটা তোমাদের জন্য নির্দেশ। আর তোমরা যা কিছুই করনা কেন, সে সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা সবই জানেন। এ ছাড়া যে ব্যক্তি গোলাম অর্থাৎ দাস আজাদ করার ক্ষমতা রাখে না তারজন্য একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একটানা ২মাস রোযা রাখতে হবে। আর যে ব্যক্তি এটারও সামর্থ্য রাখে না, তাহলে তাকে ৬০জন মিসকিন অর্থাৎ গরীব মানুষকে খানা খাওয়াতে হবে। এই বিধান এ জন্য যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপরে তোমরা ঈমান রাখ। এটা আল্লাহর সীমারেখা। আর কাফিরদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।” -[সূরা আল-মুজাদালাহঃ আয়াত ৩-৪]
স্বামীর সংসার ও সন্তানদের উপর ব্যবস্থাপনার অধিকারঃ হযরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি : তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেককে তার অধীনস্তদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আমির বা শাসক তার অধীনস্থ লোকদের দায়িত্বশীল, তাকে তার দায়িত্ব পালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ব্যক্তি তার পরিবার পরিজনের দায়িত্বশীল, তাকে তার দায়িত্ব পালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। স্ত্রী তার স্বামীর সংসারের দায়িত্বশীল, তাকে তার দায়িত্ব পালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। খাদেম তার মনিবের ধন- সম্পদের হেফাজতকারী, তাকে তার দায়িত্ব পালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। কাজেই তোমরা সবাই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেককে তার দায়িত্ব পালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। -(বুখারী ও মুসলিম)
দুনিয়ার বুকে মুমীনের জন্য সর্বোত্তম সম্পদঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্র্ণিত। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : সমগ্র পৃথিবীটাই সম্পদ। আর পৃথিবীর সর্বোত্তম সম্পদ হল সৎকর্মপরায়ণা স্ত্রী। -(মুসলিম)
নেককার স্ত্রীর বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদাঃ হযরত আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ কোনো মুমিনের জন্য আল্লাহর তাকওয়া অর্জনের পর নেককার স্ত্রীর চেয়ে কল্যাণকর কিছু নেই। কারণ স্বামী তাকে আদেশ করলে সে আনুগত্য করে, তার দিকে দৃষ্টিপাত করলে সে (স্বামী) মুগ্ধ হয়। তাকে নিয়ে শপথ করলে সে তা (শপথকৃত কর্ম) পূরণ করে। স্বামীর অনুপস্থিতিতে নিজেকে (অন্যায়-অপকর্ম থেকে) এবং স্বামীর সম্পদ সংরক্ষণ করে। -{সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ১৮৫৭}
মা হিসাবে সন্তানদের কাছে নারীর অধিকারঃ
মহান আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেন : “আমি মানুষকে তাদের পিতা-মাতার সাথে সদাচারণের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্ট সহ্য করে গর্ভে ধারণ করেছে আর তাকে একাধারে দুই বছর দুধ পান করিয়েছে। কাজেই তোমরা আমার প্রতি এবং তোমার মাতাপিতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। তোমাদের ফিরে আসা তো আমার নিকটেই।” (সূরা লুকমানঃ আয়াত ১৪)
তিনি আরও বলেন : “আপনার প্রভু নির্দেশ দিচ্ছেন, তোমরা কেবলমাত্র তাঁরই ইবাদাত করবে এবং মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করবে। মাতা-পিতার মধ্যে একজন অথবা উভয়ই বৃদ্ধ হয়ে গেলে তোমরা তাদেরকে ‘উহ’ পর্যন্ত বলবে না, তাদেরকে ধমক দিবে না বরং তাদের সঙ্গে সম্মানের সাথে কথা বলবে, বিনয় ও নম্রতা সহকারে তাদের সামনে অবনত থাকবে এবং তাদের জন্য প্রার্থনা করতে থাকবে- হে আমাদের রব! আমার মা-বাবার উপর দয়া করুন, যেভাবে শৈশবে তারা আমার উপর দয়া করেছিলেন।” -(সূরা বানী ইসরাঈল : ২৩ -২৪)
তিনি আরও বলেন : “আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার জননী তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস। অবশেষে সে যখন শক্তি-সামর্থের বয়সে ও চল্লিশ বছরে পৌছেছে, তখন বলতে লাগল, হে আমার পালনকর্তা, আমাকে এরূপ ভাগ্য দান কর, যাতে আমি তোমার নেয়ামতের শোকর করি, যা তুমি দান করেছ আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে এবং যাতে আমি তোমার পছন্দনীয় সৎকাজ করি। আমার সন্তানদেরকে সৎকর্মপরায়ণ কর, আমি তোমার প্রতি তওবা করলাম এবং আমি আজ্ঞাবহদের অন্যতম।”– (সূরা আহকাফঃ ১৫)
হযরত বাহয ইবনে হাকিমের দাদা মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি কার সাথে সদ্ব্যবহার করব? তিনি বললেন : তোমার মায়ের সাথে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরপর কার সাথে? তিনি বললেন : তোমার মায়ের সাথে। আমি পুনরায় জিজ্ঞেস করলাম, এরপর কার সাথে? তিনি বললেন : তোমার মায়ের সাথে। আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, এরপর কার সাথে? তিনি বললেন : অতঃপর তোমার পিতার সাথে, অতঃপর নিকট আত্মীয়তার ক্রমানুসারে সদ্ব্যবহার করবে। -(তিরমিযীঃ ১৮৪৬)
হযরত আবুদ্দারদা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। এক ব্যক্তি তার নিকট এসে বললেন, আমার স্ত্রীকে আমার মা তালাক দেয়ার জন্য আদেশ দিচ্ছেন, তখন আবুদ্দারদা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বর্ণনা করতে শুনেছি, পিতা-মাতা জান্নাতের মধ্যবর্তী দরজা। এখন তোমাদের ইচ্ছে, এর হেফাজত করো অথবা একে বিনষ্ট করে দাও। -(তিরমিযী শরীফঃ ২/১২)
হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা হতেই বর্ণিত। তিনি বলেন, একজন লোক নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এসে বললো, আমার মা হঠাৎ মার যান। আমার ধারণা, যদি তিনি কথা বলার সযোগ পেতেন, তাহলে সাদ্কা দিতেন, এখন আমি যদি তার পক্ষ তেকে সাদ্কা দেই, তাহলে আমি প্রতিদান পাবো কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ পাবে। -[ সহিহ মুসলিম : হাদিস ৪০০২]
সন্তানদের কাছে অমুসলিম মায়ের অধিকারঃ হযরত আসমা বিনতে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার মা মুশরিক অবস্থায় আমার নিকট আসলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমার মা আমার নিকট দেখা করতে আসেন, আমি কি তার সাথে সদাচরণ করতে পারবো? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হ্যাঁ! তার সাথে সদ্ব্যবহার করো। -(বুখারী শরীফঃ ২/৮৮৪)
মানুষ হিসাবে সমাজের কাছে নারীদের অধিকারঃ
জোর করে নারীদেরকে অধিকারভূ্ক্ত করা যাবে নাঃ মহান আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেন : “হে মুমিনগণ, তোমাদের জন্য হালাল নয় যে, তোমরা জোর করে নারীদের ওয়ারিশ হবে। আর তোমরা তাদেরকে আবদ্ধ করে রেখো না, তাদেরকে যা দিয়েছ তা থেকে তোমরা কিছু নিয়ে নেয়ার জন্য, তবে যদি তারা প্রকাশ্য অশ্লীলতায় লিপ্ত হয়। আর তোমরা তাদের সাথে সদ্ভাবে বসবাস কর। আর যদি তোমরা তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে এমনও হতে পারে যে, তোমরা কোন কিছুকে অপছন্দ করছ আর আল্লাহ তাতে অনেক কল্যাণ রাখবেন।”- [সূরা নিসা: ১৯]
নিজেদের চারিত্রিক পবিত্রতা হেফাজতের অধিকারঃ মহান আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেন : “যারা বিবাহে সামর্থ নয়, তারা যেন সংযম অবলম্বন করে যে পর্যন্ত না আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেন। তোমাদের অধিকারভুক্তদের মধ্যে যারা মুক্তির জন্য লিখিত চুক্তি করতে চায়, তাদের সাথে তোমরা লিখিত চুক্তি কর যদি জান যে, তাদের মধ্যে কল্যাণ আছে। আল্লাহ তোমাদেরকে যে, অর্থ-কড়ি দিয়েছেন, তা থেকে তাদেরকে দান কর। তোমাদের দাসীরা নিজেদের পবিত্রতা রক্ষা করতে চাইলে তোমরা পার্থিব জীবনের সম্পদের লালসায় তাদেরকে ব্যভিচারে বাধ্য কারো না। যদি কেহ তাদের উপর জোর-জবরদস্তি করে, তবে তাদের উপর জোর-জবরদস্তির পর আল্লাহ তাদের প্রতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” -[সূরা আন-নূরঃ আয়াত ৩৩]
অমুসলিম নারীদের বিবাহের ক্ষেত্রে ধর্মীয় স্বকীয়তা রক্ষার অধিকারঃ মহান আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেন : “মুমিন না হওয়া পর্যন্ত কোন মুশরিক নারীকে বিয়ে কর না, যদিও সে তোমাদেরকে মুগ্ধ করে; মুশরিক নারীর চেয়ে মুমিন দাসীরা উত্তম। আর তোমরা মুশরিক পুরুষকে বিয়ে কর না যতণ না তারা ঈমান আনে, যদিও সে তোমাদেরকে মুগ্ধ করে; মুমিন দাস তাদের চেয়ে উত্তম। মুশরিক নারী ও পুরুষ তোমাদেরকে জাহান্নামের দিকে ডাকে আর আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তোমাদেরকে জান্নাত ও মার প্রতি আহ্বান করেন। তিনি মানুষের জন্য তাঁর বিধানসমূহ সুস্পষ্ট ভাবে বর্ণনা করেন, যেন তারা তা স্মরণ রাখে ও মেনে চলে।” – (সূরা বাকারাহঃ আয়াত ২২১)
পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে গায়রে মাহরামদের থেকে সম্মান ও ইজ্জতের নিরাপত্তার অধিকারঃ হযরত ওকবা ইবনে আমের জুহানী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ তোমরা নারীদের নিকট যাওয়া থেকে বিরত থাক। এক আনসারী সাহাবী আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! স্বামী পক্ষীয় আত্মীয় সম্পর্কে আপনি কী বলেন? তিনি বললে, সে তো মৃত্যু। -[ বুখারীঃ ৯/২৪২, মুসলিমঃ ২১৭২, তিরমিযীঃ ১১৭১ ও মুসনাদে আহমাদঃ ৪/১৪৯, ১৫৩]
কুদৃষ্টি থেকে নিরাপত্তার অধিকারঃ হযরত আবু রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ইরশাদ করেন, যে মুসলমানের প্রথম দৃষ্টি (অর্থাৎ অনিচ্ছাকৃত) কোন মহিলার সৌন্দর্যের প্রতি পড়ে আর সে সাথে সাথে দৃষ্টি ফিরিয়ে নেয় আল্লাহ তাআলা তাকে এমন এক ইবাদতের তাওফীক দান করেন যার স্বাদ সে অন্তরে অনূভব করতে থাকে। -(মুসনাদে আহমাদঃ ৫/ ২৬৪, মেশকাতঃ ২৭০ ও তারগীবঃ ৩/২৩)
অশ্লীলতা থেকে হেফাজতের অধিকারঃ মহান আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেন : “যারা পছন্দ করে যে, মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার ঘটুক তাদের জন্য পৃথিবীতে ও আখিরাতে রয়েছে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি। আর আল্লাহ্ জানেন, তোমরা জান না।” – [সূরা আন-নূরঃ আয়াত ১৯]
পোষাক-পরিচ্ছদে নারীদের স্বকীয়তার অধিকারঃ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই সব পুরুষের উপর লানত করেছেন, যারা নারীদের সাদৃশ্য গ্রহণ করে (তাদের মতো আকৃতি, তাদের পোশাক ও তাদের চাল-চলন গ্রহণ করে); আর সেই সব নারীর উপরও লানত করেছেন, যারা পুরুষের সাদৃশ্য গ্রহণ করে। – [সহীহ বুখারী]
পরিশ্রমের মাধ্যমে সম্পদ অর্জন ও মালিকানার অধিকারঃ ইসলামের নির্ধারিত সীমারেখার মধ্যে থেকে নারী ও পুরুষ উভয়েরই পরিশ্রম, ব্যবসা, চাকুরী, পেশা, মেধা ও বিনিয়োগ ইত্যদির মাধ্যমে সম্পদ অর্জন ও মালিকানার সমান অধিকার রয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে যার যার পছন্দ, পরিবেশ, যোগ্যতা, শারীরিক ও মানসিক সামর্থ ও দক্ষতার পার্থক্য থাকতে পারে বিধায় ত্রেও ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। এ প্রসংগে আল্লাহ তা’য়ালা বলেন-
-“আর তোমরা আকাঙ্খা কোরো না এমন সব বিষয়ে যাতে আল্লাহ তোমাদের একের উপর অপরের শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। পুরুষ যা অর্জন করবে সেটা তার অংশ আর নারী যা অর্জন করবে সেটা তার অংশ। আর আল্লাহর কাছে অনুগ্রহ প্রার্থনা কর। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তায়ালা সর্ব বিষয়ে জ্ঞাত।” -(সূরা নিসা : আয়াত ৩২)
পর্দার বিধান পালন ও শালীনতার অধিকারঃ মহান আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেন : “মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।” – {সূরা নূরঃ আয়াত-৩০-৩১}
তিনি আরও বলেনঃ “হে নবী, তুমি তোমার স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে ও মুমিনদের স্ত্রীদেরকে বল, তারা যেন তাদের জিলবাবের কিছু অংশ নিজেদের উপর ঝুলিয়ে দেয়। তাদেরকে চেনার ব্যাপারে এটাই সবচেয়ে কাছাকাছি পন্থা হবে। ফলে তাদেরকে কষ্ট দেয়া হবে না। আর আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়াময়।” -[সূরা আহযাবঃ ৫৯]
তিনি আরও বলেনঃ “হে মুমিনগণ! তোমাদের দাসদাসীরা এবং তোমাদের মধ্যে যারা প্রাপ্ত বয়স্ক হয়নি তারা যেন তিন সময়ে তোমাদের কাছে অনুমতি গ্রহণ করে, ফজরের নামাযের পূর্বে, দুপুরে যখন তোমরা বস্ত্র খুলে রাখ এবং এশার নামাযের পর। এই তিন সময় তোমাদের দেহ খোলার সময়। এ সময়ের পর তোমাদের ও তাদের জন্যে কোন দোষ নেই। তোমাদের একে অপরের কাছে তো যাতায়াত করতেই হয়, এমনি ভাবে আল্লাহ তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ বিবৃত করেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। তোমাদের সন্তান-সন্ততিরা যখন বায়োপ্রাপ্ত হয়, তারাও যেন তাদের পূর্ববর্তীদের ন্যায় অনুমতি চায়। এমনিভাবে আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহ তোমাদের কাছে বর্ণনা করেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।” -(সূরা আন-নূরঃ আয়াত ৫৮-৫৯)
শালীনতার সাথে পথ চলার অধিকারঃ হযরত আবু উসাইদ আনসারী রাদ্বিয়াল্লা-হু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদ হতে বের হচ্ছিলেন, এ সময় রাস্তায় পুরুষগণ মহিলাদের সাথে মিশে চলছিল। এমতাবস্থায় তিনি শুনেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাদের উদ্দেশ্যে বললেন, তোমরা পুরুষদের পেছনে চল। রাস্তার মধ্যখান দিয়ে চলা তোমাদের জন্য সমীচীন নয়। এ কথা শুনে মহিলারা প্রাচীর ঘেঁষে চলতে লাগল। ফলে কখনও কখনও তাদের কাপড় প্রাচীরের সাথে আটকে যেত।-(আবু দাউদ,বায়হাকী, মেশকাত হাদিস নং -৪৫১৯)
সশস্ত্র সংগ্রামে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকার অধিকারঃ হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমরা তো দেখেছি জিহাদই হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ আমল, তাহলে আমরা (মেয়েরা) জিহাদ করবো না কেনো? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জবাব দিলেনঃ মাবরূর হজ্জই হচ্ছে (মেয়েদের জন্য) শ্রেষ্ঠ জিহাদ। -[সহীহ বুখারী]
মৃত্যের পরিত্যক্ত সম্পদে মিরাসের অধিকারঃ
পিতা-মাতা ও নিকটাত্মীয়গণের ত্যাজ্য সম্পত্তিতে আলাহর নির্ধারিত বিধান মোতাবেক নারী ও পুরুষের অধিকার রয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের অধিকার সমান নয়, বরং পার্থক্য রয়েছে। এ ব্যাপারে নারী ও পুরুষের অধিকার সমান করা আল্লাহর নির্ধারিত বিধানের পরিপন্থী। এ প্রসংগে মহান আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেন : “পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনের পরিত্যাক্ত সম্পত্তিতে পুরুষদেরও অংশ আছে, নারীদেরও অংশ আছে, অল্প হোক কিংবা বেশি; এ অংশ নির্ধারিত”। -(সূরা নিছা : আয়াত ০৭)
মিরাসের বিধানাবলীঃ মহান আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেন : “আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের সন্তানদের সম্পর্কে আদেশ করেন- একজন পুরুষের অংশ দুইজন নারীর অংশের সমান। অতঃপর যদি শুধু নারীই হয় একাধিক, তবে তাদের জন্য ঐ সম্পদের দুই-তৃতীয়াংশ যা ত্যাগ করে মারা যায় এবং যদি একজনই হয়, তবে তার জন্য অর্ধেক। মৃতের পিতা-মাতা প্রত্যেকের জন্য ত্যাজ্য সম্পত্তির ছয় ভাগের একভাগ, যদি পুত্র থাকে। যদি পুত্র না থাকে আর পিতা-মাতাই ওয়ারীস হয় তবে মাতা পাবে তিন ভাগের একভাগ। অতঃপর যদি মৃতের কয়েকজন ভাই থাকে তবে তার মাতা পাবে ছয় ভাগের এক ভাগ মৃতের অছিয়ত আদায় এবং ঋণ পরিশোধের পর। তোমাদের পিতা ও পুত্রের মধ্যে কে তোমাদের জন্য অধিক উপকারী তোমরা তা জান না। এটা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত অংশ। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাজ্ঞানী ও প্রজ্ঞাময়”। – (সূরা নিসাঃ আয়াত ১১)
– “আর তোমাদের হবে অর্ধেক সম্পত্তি যা ছেড়ে যায় তোমাদের স্ত্রীগণযদি তাদের কোন সন্তান না থাকে। যদি তাদের সন্তান থাকে, তবে তোমাদের হবে ত্যাজ্য সম্পত্তির এক চতুর্থাংশ তাদের কৃত অছিয়ত আদায় ও ঋণ পরিশোধের পর। স্ত্রীদের জন্য এক চতুর্থাংশ হবে ঐ সম্পত্তির যা তোমরা ছেড়ে যাও যদি তোমাদের কোন সন্তান না থাকে। আর যদি তোমাদের সন্তান থাকে, তবে তাদের জন্য হবে তাদের ত্যাজ্য সম্পত্তির এক-অষ্টমাংশ; তোমাদের কৃত অছিয়ত আদায় ও ঋণ পরিশোধের পর। আর তোমাদের কেহ, যাহার ওয়ারিস অন্য হবে, মূল ও শাখা বিহীন হয়, (মাতা-পিতা, সন্তান বা স্ত্রী না থাকে) এবং মৃতের এক ভাই কিংবা এক বোন থাকে তবে উভয়ের প্রত্যেকে এ ষষ্ঠাংশ পাবে আর যদি ততোধিক থাকে তবে সবাই মিলে এক তৃতীয়াংশের অংশীদার হবে; মৃতের কৃত অছিয়ত আদায় এবং ঋণ পরিশোধের পর এমতাবস্থায় যে, (অছিয়ত) অপরের তি না করে। এ বিধান আলাহর প থেকে নির্ধারিত। আল্লাহ মহাজ্ঞানী ও প্রজ্ঞাময়।” – (সূরা নিসাঃ আয়াত ১২)
– “এগুলো আলাহর নির্ধারিত সীমা। যে কেহ আল্লাহ ও তার রসুলের আদেশমত চলে, তিনি তাকে জান্নাতসমূহে প্রবেশ করাবেন, যার তলদেশ দিয়ে স্রোতস্বিনী প্রবাহিত। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে আর এ হল বিরাট সফলতা। আর যে কেহ আল্লাহ ও তার রসূলের অবধ্যতা করে এবং সীমা অতিক্রম করে, তিনি তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন। সেখানে সে চিরকাল থাকবে। আর তার জন্য রয়েছে অপমানজনক শাস্তি।” –(সূরা নিসাঃ আয়াত ১৩-১৪)
মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে নারীদের অবস্থানঃ
মহান আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেনঃ নিশ্চয় মুসলমান পুরুষ, মুসলমান নারী, ঈমানদার পুরুষ, ঈমানদার নারী, অনুগত পুরুষ, অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ, সত্যবাদী নারী, ধৈর্য্যশীল পুরুষ, ধৈর্য্যশীল নারী, বিনীত পুরুষ, বিনীত নারী, দানশীল পুরুষ, দানশীল নারী, রোযা পালণকারী পুরুষ, রোযা পালনকারী নারী, যৌনাঙ্গ হেফাযতকারী পুরুষ, যৌনাঙ্গ হেফাযতকারী নারী, আল্লাহর অধিক যিকরকারী পুরুষ ও যিকরকারী নারী-তাদের জন্য আল্লাহ প্রস্তুত রেখেছেন ক্ষমা ও মহাপুরষ্কার। -[সূরা আল-আহযাবঃ আয়াত ৩৫ ]
অশালীন নারীগণ জান্নাতে প্রবেশ করবে নাঃ হযরত আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘জাহান্নামবাসী দুটি দল রয়েছে। যাদেরকে আমি এখনো দেখিনি। একদল এমন লোক যাদের হাতে গরুর লেজের মত লাঠি থাকবে যা দিয়ে তারা লোকদেরকে প্রহার করবে। আর অন্য দল এমন নারী যারা পোশাক পরেও উলঙ্গ থাকে। তারা অন্যদের তাদের প্রতি আকৃষ্ট করবে নিজেরাও অন্যদের প্রতি ঝুঁকবে। তাদের মস্তক উটের পিঠের কুঁজের মত হবে। তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। এমনকি জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। অথচ এর ঘ্রাণ এত এত দূর থেকেও পাওয়া যায়।’ – [মুসলিমঃ হাদীস নং ২১২৮]
চরিত্রহীনা নারীদের জন্য চরিত্রহীন পুরুষদের জুটি নির্ধারিতঃ আল্লাহ তা’য়ালা বলেন : “দুশ্চরিত্রা নারীকূল দুশ্চরিত্র পুরুষকুলের জন্যে এবং দুশ্চরিত্র পুরুষকুল দুশ্চরিত্রা নারীকুলের জন্যে। সচ্চরিত্রা নারীকুল সচ্চরিত্র পুরুষকুলের জন্যে এবং সচ্চরিত্র পুরুষকুল সচ্চরিত্রা নারীকুলের জন্যে। তাদের সম্পর্কে লোকে যা বলে, তার সাথে তারা সম্পর্কহীন। তাদের জন্যে আছে ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা” [সূরা আন-নূরঃ আয়াত ২৬]
দুনিয়ার ফিতনাঃ হযরত আবূ সাইদ খুদরী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, ”নিশ্চয় দুনিয়া মধুর ও সবুজ (সুন্দর আকর্ষনীয়)। আর নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে এর প্রতিনিধি নিয়োজিত করে দেখবেন যে, তোমরা কিভাবে কাজ করছ? অতএব তোমরা যদি সফলকাম হতে চাও তাহলে দুনিয়ার ধোঁকা থেকে বাঁচ এবং নারীর ফিতনা থেকে বাঁচ। কারণ, বনী ইসরাঈলের সর্বপ্রথম ফিতনা নারীকে কেন্দ্র করেই হয়েছিল।” -[মুসলিম: ২৭৪২, তিরমিযী: ২১৯১, ইবনু মাজাহ: ৪০০০, আহমাদ: ১০৭৫৯]
অনুরূপ বর্ণনাঃ হযরত উসামা ইবনে যায়িদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্র্ণিত। তিনি বলেন, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : আমার পরে আমি পুরুষদের জন্য নারীদের চেয়ে অধিক ক্ষতিকর কোন ফিতনা রেখে যাইনি। -(ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন)
নারীদের মধ্যে যারা জাহান্নামী হবেঃ হওহযরত আব্দুল্লাহ ইবন ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “হে মহিলাগন! তোমরা দান কর ও বেশি বেশি ইস্তেগফার কর। কেননা আমি দেখেছি জাহান্নামীদের অধিকাংশই মহিলা। তাদের মধ্য হতে একজন বলল, দোযখবাসীদের অধিকাংশই আমরা মহিলা তার কারণ কি? উত্তরে তিনি বললেন, তোমরা অধিক মাত্রায় লানত/অভিসম্পাত করে থাক এবং স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞ ও অবাধ্য হও। জ্ঞান বুদ্ধি ও দ্বীনের ব্যপারে ক্রুটি থাকা সত্ত্বেও তোমাদের যে কোন নারী যে কোন বুদ্ধিমান ও চতুর পুরুষকে যেভাবে হতবুদ্ধি করে দেয় তা আমি আর কোথাও দেখিনি। মহিলাটি পুনরায় জিজ্ঞাস করেন, জ্ঞান বুদ্ধি ও দ্বীনের ব্যপারে আমাদের ত্রুটি অপূর্ণতা কি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, দুজন স্ত্রী-লোকের সাক্ষ্য একজন পুরুষ ব্যক্তির সমান আর ঋতুকালীন সময়ে কয়েকদিন তোমরা সালাত কায়েম করতে পার না”। -(সহীহ মুসলিম)
নারীদের মধ্যে যারা জান্নাতী হবেঃ হযরত আবু হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে মহিলা পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করে, রমযান মাসে রোযা রাখে, স্বীয় লজ্জা-স্থান সংরক্ষণ করে, স্বীয় স্বামীর অনুগত থাকে, কিয়ামতের দিন তাকে বলা হবে যে, জান্নাতের যে দরজা দিয়ে খুশি তুমি জান্নাতে প্রবেশ কর। -[ইবনে হিব্বান, সহীহ জামে আসসগীরঃ হাদিস নং-৬৭৩]
আল্লাহ তা’য়ালা আমাদের সবাইকে তাঁর দ্বীনের খেদমতের জন্য কবুল করুন! রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবা (রাদিয়াল্লাহু আনহুম)-গনের আদর্শের উপর সর্বদা কায়েম রাখুন! তাঁদের বরকতময় জামাআতের সংগে আমাদের হাশর করুন! আ-মী-ন।
লেখকঃ ডাঃ গাজী মুহাম্মাদ নজরুল ইসলাম