লুত সম্প্রদায়ের প্রেতাত্মারা এবার বাংলাদেশে!
লুত সম্প্রদায়ের প্রেতাত্মারা এবার বাংলাদেশে!
সমকামিতার শাস্তি আল্লাহর ভয়াবহ গজব- যার পরিনতি জাতি ধংস হওয়া।
ইয়া আল্লাহ, আমাদের রক্ষা করুন এ ভয়াবহ বিপদ থেকে। আমরা কওমের লুতের মত গযব চাই না।
বাংলাদেশে এই প্রথম সমকামী বিষয়ক ম্যাগাজিন ‘রূপবান’ এর গজব শুরু হলো। সমকামিতার মত বিকৃত যৌনচর্চার জন্য কওমে লুতকে মহান আল্লাহ আজাব দিয়ে সমূলে ধংস্ব করেছিলেন। সমকামিতা হল কুকুর-শূকরের মত নিকৃষ্ট জন্তু-জানোয়ারের যৌনাচারের চেয়েও নোংরা এক বিকৃত যৌনচর্চা!
( ছবি বড় করে দেখতে ছবিরউপর ক্লিক করুন )
[পবিত্র কোরআনে লুত (আঃ) এর কওম কতৃক ব্যাপকভাবে সমকামিতার জন্য আল্লাহ গজব সম্পর্কে মানবজাতিকে হুশিয়ার করা হয়েছে। কওমে লূত-এর বর্ণিত ধ্বংসস্থলটি বর্তমানে ‘বাহরে মাইয়েত’ বা ‘বাহরে লূত’ অর্থাৎ ‘মৃত সাগর’ বা ‘লূত সাগর’ নামে খ্যাত। যা ফিলিস্তীন ও জর্ডান নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে বিশাল অঞ্চল জুড়ে নদীর রূপ ধারণ করে আছে।[সর্বশেষ হিসাব মতে উক্ত অঞ্চলটির আয়তন দৈর্ঘ্যে ৭৭ কিলোমিটার (প্রায় ৫০ মাইল), প্রস্থে ১২ কিঃ মিঃ (প্রায় ৯ মাইল) এবং গভীরতায় ৪০০ মিটার (প্রায় কোয়ার্টার মাইল)। -ঢাকা, দৈনিক ইনকিলাব ২৮ এপ্রিল ২০০৯ পৃঃ ৮।] যেটি সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে বেশ নীচু। এর পানিতে তৈলজাতীয় পদার্থ বেশী। এতে কোন মাছ, ব্যাঙ এমনকি কোন জলজ প্রাণী বেঁচে থাকতে পারে না। এ কারণেই একে ‘মৃত সাগর’ বা ‘মরু সাগর’ বলা হয়েছে। সাদূম উপসাগর বেষ্টক এলাকায় এক প্রকার অপরিচিত বৃক্ষ ও উদ্ভিদের বীজ পাওয়া যায়, সেগুলো মাটির স্তরে স্তরে সমাধিস্থ হয়ে আছে। সেখানে শ্যামল-তাজা উদ্ভিদ পাওয়া যায়, যার ফল কাটলে তার মধ্যে পাওয়া যায় ধূলি-বালি ও ছাই। এখানকার মাটিতে প্রচুর পরিমাণে গন্ধক পাওয়া যায়। Natron ও পেট্রোল তো আছেই। এই গন্ধক উল্কা পতনের অকাট্য প্রমাণ।[স্রষ্টা ও সৃষ্টিতত্ত্ব, পৃঃ ২৫৮।] আজকাল সেখানে সরকারী প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের পক্ষ হ’তে পর্যটকদের জন্য আশপাশে কিছু হোটেল-রেস্তোঁরা গড়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু এ ঘটনা থেকে শিক্ষা হাছিলের জন্য কুরআনী তথ্যাদি উপস্থাপন করে বিভিন্ন ভাষায় উক্ত ঘটনা লিপিবদ্ধ করে তা থেকে উপদেশ গ্রহণের জন্য পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করাই হ’ত সবচাইতে যরূরী বিষয়। আজকের এইড্স আক্রান্ত বিশ্বের নাফরমান রাষ্ট্রনেতা, সমাজপতি ও বিলাসী ধনিক শ্রেণী তা থেকে শিক্ষা গ্রহণে সক্ষম হ’ত। কেননা এগুলি মূলতঃ মানুষের জন্য শিক্ষাস্থল হিসাবে আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত হয়েছে।
যেমন আল্লাহ বলেন,
إِنَّ فِىْ ذَالِكَ لَآيَاتٍ لِّلْمُتَوَسِّمِيْنَ، … إِنَّ فِىْ ذَلِكَ لَاَيَةً لِّلْمُؤْمِنِيْنَ-
‘নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন সমূহ রয়েছে চিন্তাশীলদের জন্য’ … এবং বিশ্বাসীদের জন্য’ (হিজর ১৫/৭৫, ৭৭)। একই ঘটনা বর্ণনা শেষে অন্যত্র তিনি বলেন, وَلَقَدْ تَّرَكْنَا مِنْهَآ آيَةً بَيِّنَةً لِّقَوْمٍ يَّعْقِلُوْنَ- ‘জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য আমরা অত্র ঘটনার মধ্যে স্পষ্ট নিদর্শন রেখে দিয়েছি’ (আনকাবূত ২৯/৩৫)।
লুত সম্প্রদায়ের বদভ্যাসের প্রতি ইঙ্গিত ‘বিশ্ববাসীর মধ্যে কেন তোমরাই কেবল পুরুষদের নিকটে (কুকর্মের উদ্দেশ্যে- আ‘রাফ ৭/৮১) এসে থাক’? ‘আর তোমাদের স্ত্রীগণকে বর্জন কর, যাদেরকে তোমাদের জন্য তোমাদের পালনকর্তা সৃষ্টি করেছেন? নিঃসন্দেহে তোমরা সীমা লঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়’ [শো‘আরা ২৬/১৬৫-১৬৬]
‘তোমরা এমন অশ্লীল কাজ করছ, যা তোমাদের পূর্বে পৃথিবীর কেউ কখনো করেনি’। ‘তোমরা কি পুংমৈথুনে লিপ্ত আছ, রাহাজানি করছ এবং নিজেদের মজলিসে প্রকাশ্যে গর্হিত কর্ম করছ’? জবাবে তাঁর সম্প্রদায় কেবল একথা বলল যে, আমাদের উপরে আল্লাহর গযব নিয়ে এসো, যদি তুমি সত্যবাদী হও’।. তিনি তখন বললেন, ‘হে আমার পালনকর্তা! এই দুষ্কৃতিকারী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে তুমি আমাকে সাহায্য কর’ [আনকাবূত ২৯/২৮-৩০; আ‘রাফ ৭/৮০]
আল্লাহ বলেন,‘অবশেষে যখন আমাদের হুকুম এসে পৌঁছল, তখন আমরা উক্ত জনপদের উপরকে নীচে করে দিলাম এবং তার উপরে ক্রমাগত ধারায় মেটেল প্রস্তর বর্ষণ করলাম’। ‘যার প্রতিটি তোমার প্রভুর নিকটে চিহ্নিত ছিল। আর ঐ ধ্বংসস্থলটি (বর্তমান আরবীয়) যালেমদের থেকে বেশী দূরে নয়’ [হূদ ১১/৮২-৮৩]
এটা ছিল তাদের কুকর্মের সাথে সামঞ্জস্যশীল শাস্তি। কেননা তারা যেমন আল্লাহর আইন ও প্রাকৃতিক বিধানকে উল্টিয়েছিল অর্থাৎ স্ত্রীসঙ্গ বাদ দিয়ে মানুষের স্বভাববিরুদ্ধ ভাবে পুংমৈথুনে ও সমকামিতায় লিপ্ত হয়েছিল, ঠিক তেমনি তাদেরকে মাটি উল্টিয়ে উপুড় করে শাস্তি দেওয়া হ’ল।
ডঃ জামু বলেন, তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন আকারের এক হাযার উল্কাপিন্ড সংগ্রহ করেন। তন্মধ্যে সবচেয়ে বড়টির ওযন ছিল ৩৬ টন। এর মধ্যে অনেকগুলি আছে নুড়ি পাথর, যাতে গ্রানাইট ও কাঁচা অক্সাইড লৌহ মিশ্রিত। তাতে লাল বর্ণের চিহ্ন অংকিত ছিল এবং ছিল তীব্র মর্মভেদী। বিস্তর গবেষণার পরে স্থির হয় যে, এগুলি সেই প্রস্তর, যা লূত জাতির উপরে নিক্ষিপ্ত হয়েছিল’ (সংক্ষেপায়িত)।[মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম, স্রষ্টা ও সৃষ্টিতত্ত্ব পৃঃ ২৫৬।] ইতিহাস-বিজ্ঞান বলে, সাদূম ও আমুরার উপরে গন্ধক (Sulpher)-এর আগুন বর্ষিত হয়েছিল।[স্রষ্টা ও সৃষ্টিতত্ত্ব, পৃঃ ২৫৮।]
হযরত লূত (আঃ)-এর নাফরমান কওমের শোচনীয় পরিণতি বর্ণনা করার পর দুনিয়ার অপরাপর জাতিকে সতর্ক করার জন্য আল্লাহ পাক এরশাদ করেন, وَمَا هِىَ مِنَ الظَّلِمِيْنَ بِبَعِيْدٍ، ‘(জনপদ উল্টানো ও প্রস্তর বর্ষণে নিশ্চিহ্ন ঐ ধ্বংসস্থলটি) বর্তমান কালের যালেমদের থেকে খুব বেশী দূরে নয়’ (হূদ ১১/৮৩)।. মক্কার কাফেরদের জন্য উক্ত ঘটনাস্থল ও ঘটনার সময়কাল খুব বেশী দূরের ছিল না। মক্কা থেকে ব্যবসায়িক সফরে সিরিয়া যাতায়াতের পথে সর্বদা সেগুলো তাদের চোখে পড়ত। কিন্তু তা থেকে তারা শিক্ষা গ্রহণ করতো না। বরং শেষনবী মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে অবিশ্বাস করত ও তাঁকে অমানুষিক কষ্ট দিত। আনাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন,
إذا استحلت أمتي خمسا فعليهم الدمار: إذا ظهر التلاعن وشربوا الخمور ولبسوا الحرير واتخذوا القيان واكتفى الرجال بالرجال والنساء بالنساء، رواه البيهقي-
‘যখন আমার উম্মত পাঁচটি বিষয়কে হালাল করে নেবে, তখন তাদের উপর ধ্বংস নেমে আসবে। (১) যখন পরস্পরে অভিসম্পাৎ ব্যাপক হবে (২) যখন তারা মদ্যপান করবে (৩) রেশমের কাপড় পরিধান করবে (৪) গায়িকা-নর্তকী গ্রহণ করবে (৫) পুরুষ-পুরুষে ও নারী-নারীতে সমকামিতা করবে’।[বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, ত্বাবারানী, সনদ হাসান; আলবানী, ছহীহুত তারগীব হা/২৩৮৬।]
আল্লাহ তা‘আলা ঐ ব্যক্তির প্রতি ফিরে তাকাবেন না, যে ব্যক্তি কোন পুরুষ বা নারীর মলদ্বারে মৈথুন করে’। [তিরমিযী, মিশকাত]
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, অভিশপ্ত ঐ ব্যক্তি, যে লূতের কওমের মত কুকর্ম(সমকামিতা) করে।[মিশকাতঃ ৩৫৮৩]
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, আমি আমার উম্মতের জন্য সবচেয়ে (ক্ষতিকর হিসাবে) ভয় পাই লূত জাতির কুকর্মের’। [তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, মিশকাত]
ইসলামী শরী‘আতে এই সমকামিতার একমাত্র শাস্তি হ’ল উভয়ের মৃত্যুদন্ড (যদি উভয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে একাজ করে) [তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, মিশকাত: ৩৫৭৫, সনদ হাসান ‘দন্ডবিধি সমূহ’ অধ্যায়]
লুত (আ) এর সম্প্রদায়ের ঘটনা জানতে ।
==============================================
#বাংলাদেশের আইনে সমকামিতাঃ বর্তমান বিশ্বে অনেক দেশেই এই নোংরা বিকৃত যৌনচর্চা সমকামিতাকে বৈধতা দিলেও বাংলাদেশ রয়েছে শক্ত অবস্থানে। এই নোংরা যৌনচর্চাটি প্রকৃতি বিরুদ্ধ বলে, বাংলাদেশের আইনে সমকামিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের শাস্তি প্রদান করে। বাংলাদেশ দন্ডবিধির ৩৭৭ ধারায় বলা হয়েছে যে, যে ব্যক্তি স্বেচ্ছাকৃতভাবে কোনো পুরুষ, নারী বা জন্তুর সাথে প্রকৃতিক নিয়মের বিরুদ্ধে যৌন সহবাস করেন, সেই ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ডে বা দশ বছর পর্যন্ত কারাদন্ডে দন্ডিত হবেন এবং তদুপরি অর্থদন্ডেও দন্ডিত হবেন। এ ধারায় বর্ণিত অপরাধীরূপে গণ্য হবার জন্য যৌন সহবাসের নিমিত্তে অনুপ্রবেশই যথেষ্ট বিবেচিত হবে।