পূজার প্রসাদ খাওয়ার হুকুম কি ?

পূজার প্রসাদ খাওয়ার হুকুম কি ?

– ফজলে রাব্বী ।

পুজার সময় অনেক মুসলিমকেই দেখা যায়, হিন্দুদের এই পুজায় তারা যায়, তাদের প্রস্বাদ খুব মজা করে খায়।

পরে ফিরে এসে সকলকে বলে বেড়ায়- পুজায় গিয়েছিলাম, খুব মজা করেছি, ওদের প্রস্বাদ খেয়েছি, বেশ মজা পেয়েছি ইত্যাদি।

 

এখন প্রশ্ন হল-

এই প্রস্বাদ নামক খাবারটা কি খাওয়া হালাল নাকি হারাম?

এই প্রস্বাদ নামক খাবারটা দেওয়া হয় হিন্দু মনগড়া নকল ঈশ্বরের উদ্দেশ্য। অর্থাৎ হিন্দুরা নিজের হাতে নির্মিত বিভিন্ন মূর্তির, যার কোন ক্ষমতাই নেই, সেই নকল ঈশ্বরের উদ্দেশ্য প্রসাদ দেয়।

মহান আল্লাহ্‌ পবিত্র ক্বুর’আনের মোট চার জায়গায় উল্লেখ করেছেন-

সূরাহ বাকারার ১৭৩ নং আয়াতে, সূরাহ মায়িদাহ’র ৩ নং আয়াতে, সূরাহ আন’আমের ১৪৫ নং আয়াতে, এছাড়াও সূরাহ নাহলের ১১৫ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে,

 

“আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য হারাম করেছেন মৃত জন্তু, রক্ত, শূকরের মাংস খাওয়া। আর যে পশু জবাই করার সময় আল্লাহ্‌ ব্যতীত অন্য কারো নাম নেয়া হয়েছে”

 

অর্থাৎ যা আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কারো নামে উৎসর্গ করা হয় সেটা আমাদের জন্য আল্লাহ্‌ হারাম করে দিয়েছেন। আর এই কারনেই পূজার প্রস্বাদ খাওয়া হারাম।

 

এখন আসি পূজার অনুষ্ঠানে মুসলিমদের যাওয়ার বিষয়ে-

আমাদের দেশে যখন হিন্দুদের পূজার উৎসব চলতে থাকে তখন অনেক মুসলিম-ই তাদের ঐ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করে। ঐ অনুষ্ঠানে উপভোগ করে। অনেকে উৎসুক ভাবেই যায়।

ঐ সমস্ত মুসলিমদের যদি বলি- ভাই হিন্দুদের পূজায়অংশগ্রহন করো না, উৎসুক ভাবেও যেও না, তাদের দেব-দেবীর নামে উৎসর্গকৃত প্রসাদও খেওনা।

তখন তারা উত্তরে খুব বুক ফুলিয়েই বলে- গেসি তো কি হয়েছে? গেলেই কি আমি হিন্দু হয়ে যাব? আমার ঈমান ঠিক আছে।

এখন একটু ভেবে দেখুন,

মূর্তিপূজা হচ্ছে আল্লাহ্‌র সাথে শির্ক করা। আর শির্কহচ্ছে সবচেয়ে বড় অন্যায়, সবচেয়ে বড় অপরাধ।

মহান আল্লাহ্‌ বলেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌র সাথে শির্ক হচ্ছেসবচেয়ে বড় অন্যায়। (সুরা লুকমানঃ ১৩)

আর শির্কের অপরাধ আল্লাহ্‌ কখনো ক্ষমা করবেন না।

মহান আল্লাহ্‌ বলেনঃ “নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সাথে অংশী স্থাপন করলে তাকে ক্ষমা করবেন না, কিন্তু এর চেয়ে ছোট পাপ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন, এবং যে কেউ আল্লাহর অংশী স্থির করে, সে মহাপাপে আবদ্ধ হয়েছে। (সূরা নিসাঃ ৪৮)।

 

এখন দেখুন, সবচেয়ে বড় অন্যায় আপনার সামনে হচ্ছে। আর রাসুল(সাঃ) বললেন- তোমাদের কেউ কোন গর্হিত/অন্যায় কাজ হতে দেখলে সে যেন নিজের হাতে(শক্তি প্রয়োগে)  তা সংশোধন করে দেয়, যদিতার সে ক্ষমতা না থাকে তবে যেন মুখ দ্বারা তা সংশোধন করে দেয়, আর যদি তাও না পারেতবে যেন সে ঐ কাজটিকে অন্তর থেকে ঘৃণা করবে। আর এটা হল ঈমানের নিম্নতম স্তর। [সহিহ মুসলিম, ঈমান অধ্যায়, হাদিস নং ৭৮]

অথচ আপনি ঐ অন্যায়কে বাঁধা তো দেনই না, মনথেকেও ঘৃণা করেন না বরং ঐ  অনুষ্ঠানেঅংশগ্রহন করে

মনে মনে উপভোগ করেন। অন্তত মন থেকে ঘৃণাকরলেও দুর্বলতম ঈমানদার হিসেবে আপনার ঈমান থাকত কিন্তু ঐ  অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করে তাদের অনুষ্ঠান মনে মনেউপভোগ করার পরেও কি আপনি দাবী করবেন যে- আপনার ঈমান ঠিক আছে?

 

তাই হিন্দুদের পূজার উৎসবে কোন মুসলিমের যাওয়া হারাম।

 

সূত্র

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
kiw kow kan