ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থা
রচনায়: নুরুল ইসলাম
শিক্ষা মানব জীবনের অন্যতম মৌলিক প্রয়োজন। শিক্ষাই মানুষকে অন্যান্য জীব থেকে স্বাতন্ত্র্য দান করে। শিক্ষার মাধ্যমেই মানুষের সুপ্রবৃত্তির উন্মেষ ঘটে। ফলে মানুষ ভালমন্দ বিচার-বিবেচনা করতে সক্ষম হয় এবং পাপের কাজ পরিহার করে চলে। অপরপক্ষে অশিক্ষা বা অজ্ঞতার ফলে মানুষের কুপ্রবৃত্তির উন্মেষ ঘটে। ফলে সে মানুষ হয়েও মানুষ নামের অযোগ্য হয়ে পড়ে। সে সততই পাপের পথে ধাবমান হয়। এ জন্য দার্শনিক সক্রেটিস বলেছেন, “From knowledge come virtue and goodness; from ignorance comes all that is evil, No man willingly chooses what is evil, he does evil out of ignorance” অর্থ্যাৎ “জ্ঞান বা শিক্ষা থেকেই আসে পূণ্য এবং কল্যাণ; অজ্ঞতা থেকে আসে যা কিছু পাপ। কোন লোকই স্বেচ্ছায় যা কিছু খারাপ তা পছন্দ করে না, সে পাপ করে অজ্ঞতার কারণে “
আমরা মুসলিম। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা হওয়া উচিত ইসলামী। কারণ ইসলামী শিক্ষাই বর্বর মানুষকে সোনার মানুষে রূপান্তরিত করতে পারে।
ইসলামী শিক্ষা কি?
শব্দের ব্যুৎপত্তিবিজ্ঞান অনুযায়ী Education শব্দটি ল্যাটিন ‘Edex’ এবং ‘ducer-Dur’ শব্দগুলো থেকে এসেছে। শাব্দিকভাবে এটি দাঁড়ায় Pack the information in and draw talents out, মূলত এর অর্থ হচ্ছে অবগতি ও জ্ঞান প্রদান এবং জ্ঞেয় বিষয়ে সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ।
শিক্ষার সংজ্ঞায় বিভিন্ন মনীষীর বিভিন্ন মত পরিলক্ষিত হয়। আমাদের আলোচ্য বিষয় ইসলামী শিক্ষা। কাজেই ইসলামী শিক্ষার সংজ্ঞায় বলা যায়- ইসলাম সম্পর্কে প্রয়োজনীয় জ্ঞান লাভ করার শিক্ষাই হল ইসলামী শিক্ষা। অর্থাৎ যে জ্ঞান দ্বারা সত্য-মিথ্যা, হালাল-হারাম, ন্যায়-অন্যায়, ভাল-মন্দ ইত্যাদি সম্পর্কে জানা যায় এবং যে শিক্ষালব্ধ জ্ঞানের মাধ্যমে মানুষ তার স্বীয় আত্মাকে ও মহান স্রষ্টা আল্লাহকে জানতে ও চিনতে পারে তাই হল ইসলামী শিক্ষা।
ইসলামী শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
মানুষ হিসাবে মানবিক গুণাবলীর বিকাশ সাধনের মাধ্যমে আল্লাহর সাথে সুদৃঢ় সম্পর্ক স্থাপন করতঃ তার প্রদত্ত বিধান অনুযায়ী জীবন যাপন করে পার্থিব জগতে সুখ-শান্তি ও স্থিতিশীলতার পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং পরকালে চিরসুখের আধার জান্নাত লাভ করার জন্য ইসলামী শিক্ষা অত্যন্ত আবশ্যক। ইসলামী শিক্ষা তথা শিক্ষার সর্বাধিক গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তার কারণেই মহান আল্লাহ তার সৃষ্ট প্রথম মানব হযরত আদমকে (আ) সর্বপ্রথম শিক্ষাদান করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন,
وَعَلَّمَ آدَمَ الْأَسْمَاءَ كُلَّهَا ثُمَّ عَرَضَهُمْ عَلَى الْمَلَائِكَةِ فَقَالَ أَنبِئُونِي بِأَسْمَاءِ هَٰؤُلَاءِ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ
‘এবং তিনি আদমকে যাবতীয় বস্তুর নাম শিক্ষা দিলেন………………… (আল বাকারাহ ৩১),
আমাদের নবী (সা) হেরা গুহায় প্রথম যে প্রত্যাদেশ বা আহি প্রাপ্ত হন তাও কিন্তু পড়া দিয়ে আরম্ভ। তাছাড়া সহীহ হাদীসে শিক্ষার গুরুত্ব ও মর্যাদা সম্পর্কে অনেক বর্ণনা বিধৃত রয়েছে। যেমন এক হাদীসে রাসূল (সা) বলেছেন, আল্লাহ যার দ্বারা কল্যাণ কামনা করেন, তাকে দ্বীনের জ্ঞান দান করেন। (বুখারী ও মুসলিম) এথেকে ইসলামী শিক্ষার গুরুত্ব সহজেই অনুমেয়।
আর ইসলাম যেহেতু একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান, সেহেতু তাতে মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সহ সকল বিষয়ের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ দিক নির্দেশনা রয়েছে। তাই সঠিক সুনিয়ন্ত্রিত ও শান্তিপূর্ণ জীবন পরিচালনার জন্য ইসলামী শিক্ষা অপরিহার্য।
ইসলামী শিক্ষার উৎস
কুরআন ও হাদীস এ দু’টি ইসলামী শরীয়তের মৌল উৎস। রাসূল (সা) বলেছেন, আমি তোমাদের মাঝে দুটি জিনিস রেখে যাচ্ছি। যতক্ষণ তোমরা এ দুটিকে আঁকড়ে ধরে থাকবে, ততক্ষণ পথভ্রষ্ট হবে না। বস্তু দুটি হচ্ছে কুরআন ও হাদীস (মুয়াত্তা, মিশকাত বৈরুত ছাপা হা/১৮৬) সুতরাং ইসলামী শিক্ষার উৎস হবে পবিত্র কুরআন ও রাসূল (সা)-এর সুন্নাত তথা হাদীস ।
ইসলামী শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
কুরআন মাজীদে শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যেমন সূরা তাওবার ১২২ নং আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন,
فَلَوْلَا نَفَرَ مِن كُلِّ فِرْقَةٍ مِّنْهُمْ طَائِفَةٌ لِّيَتَفَقَّهُوا فِي الدِّينِ وَلِيُنذِرُوا قَوْمَهُمْ إِذَا رَجَعُوا إِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُونَ
‘তাদের অধিবাসীদের প্রত্যেক অংশ থেকেই যেন কিছু লোক দ্বীনের জ্ঞান লাভের জন্য বেরিয়ে পড়ে, অতঃপর ফিরে গিয়ে যেন নিজ নিজ এলাকার লোকদেরকে সতর্ক করে, যাতে করে তারা (ইসলাম বিরোধী কাজ থেকে) বিরত থাকতে পারে।‘
এছাড়া কুরআনের অন্যান্য স্থানে শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে যে আলোচনা পেশ করা হয়েছে তার আলোকে বলা যায়, কুরআনের দৃষ্টিতে শিক্ষার মৌল লক্ষ্য হল আল্লাহকে জানা, আল্লাহর দাসত্ব ও প্রতিনিধিত্ব করার যোগ্যতা অর্জন করা, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও পরকালের মুক্তির জন্য নিজেকে তৈরি করা। শারীরিক, মানসিক, নৈতিক, আত্মিক ও প্রযুক্তিগত যোগ্যতা অর্জনের মাধ্যমে নিজেকে সৎকর্মশীল রূপে গড়ে তোলা এবং মানবতাকে সত্য ও সুবিচারের উপর প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আল্লাহ প্রদত্ত জীবন বিধানের ভিত্তিতে সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করা।
ইসলামী শিক্ষানীতির মৌলিক বৈশিষ্ট্য
১. জ্ঞানের মূল উৎস ওহি। অর্থাৎ কুরআন-সুন্নাহর মুলনীতি ও মানদন্ডের ভিত্তিতে সাজানো শিক্ষা ব্যবস্থাই কেবল মানবতার জন্য কল্যাণ বয়ে আনতে পারে। কারণ তা জ্ঞানের মূল সূত্র থেকে উৎসারিত। আর এটাই ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার প্রধান ও মূল বৈশিষ্ট্য।
২. মাতৃভাষা তথা জাতীয় ভাষা হবে শিক্ষার মাধ্যম। কারণ মাতৃভাষায় সহজেই সবকিছু বুঝা যায়। তবে সব ভাষা থেকেই জ্ঞানার্জন করতে হবে। কিন্তু তা বুঝতে ও বুঝাতে হবে জাতীয় ভাষায়। নবী-রাসূলগণ প্রত্যেকেই জাতির জনগণের ভাষায় তথা মাতৃভাষায় শিক্ষাদান করেছেন। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন,
وَمَا أَرْسَلْنَا مِن رَّسُولٍ إِلَّا بِلِسَانِ قَوْمِهِ لِيُبَيِّنَ لَهُمْ
আমি যখনই কোন রাসূল পাঠিয়েছি সে রিসালাতের দায়িত্ব পালন করেছে স্বজাতির ভাষায়, যেন সে সমস্ত উপদেশ আহবান তাদের খুলে বলতে পারে। (ইবরাহীম : ৪)
৩. যেহেতু ইসলামী শিক্ষার মূল উৎস আল কুরআন আরবী ভাষায় অবতীর্ণ ও সংরক্ষিত হয়েছে, তাই আরবী ভাষাকে দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে শিক্ষাদান করতে হবে। প্রাথমিক স্তরেই কুরআন পড়া শিখাতে হবে।
৪. প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে সরাসরি দ্বীনের মৌলিক বিষয়সমূহ শিক্ষাদান করতে হবে।
৫. দ্বীনি ও জাগতিক শিক্ষার মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে হবে।
৬. শিক্ষা হবে সার্বজনীন, সহজলভ্য ও উন্মুক্ত।
৭. প্রাথমিক শিক্ষা হবে বাধ্যতামূলক।
৮. শিক্ষা হবে প্রয়োগমুখী ও কর্মমুখী।
৯. শিক্ষকদের নৈতিক ও প্রায়োগিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ হবে বাধ্যতামূলক।
১০.পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যসূচীতে সমকালীন জ্ঞান-বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, তথ্য সম্ভার ও বিশ্ব দৃষ্টিভঙ্গি (World outlook) সৃষ্টির সহায়ক বিষয়াবলী অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
১১. প্রাথমিক স্তর থেকেই সুন্দর আচার-আচরণ তথা শিষ্টাচার শিক্ষাদানের ব্যবস্থা থাকবে। শিষ্টাচারের জন্য আলাদা মার্কস থাকবে।
১২. প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে স্বাস্থ্য ও সামরিক শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
১৩. পুরুষদের মতো নারীদের শিক্ষাও হবে বাধ্যতামূলক।
১৪. অবাধ সহশিক্ষা বন্ধ করে মেয়েদের জন্য পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
১৫. মসজিদসমূকেও শিক্ষায়তনে পরিণত করা হবে।
১৬. নৈশকালীন বয়স্ক শিক্ষা ক্লাস চালু করতে হবে।
১৭. সর্বোচ্চ শ্রেণী পর্যন্ত সকল বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিশুদ্ধ তাফসীরসহ কুরআনের নির্বাচিত অংশ এবং নির্বাচিত সংখ্যক হাদীস শিক্ষা রাধ্যতামূলক থাকবে
১৮. উচ্চ শিক্ষা হবে গবেষণা ও বিশ্লেষণধর্মী।
১৯. সকল বিভাগের ছাত্রদেরকে ইসলামের মৌলিক ইবাদতসমূহ অনুশীলন করে শিখাবার ব্যবস্থা থাকবে।
২০. ছাত্রদের গড়ে তোলা হবে মর্দে মুজাহিদ রূপে।
২১. শিক্ষা প্রশাসন হবে দুনীতিমুক্ত, সহজ, গতিশীল ও শিক্ষা উন্নয়নের সহায়ক।
২২. দেশের বিশেষজ্ঞ পন্ডিত ও বিজ্ঞ ইসলামী চিন্তাবিদদের সমন্বয়ে শিক্ষার মানোন্নয়নকমিটি গঠিত হবে।
২৩. সর্বোপরি শিক্ষানীতি হবে ইসলামী সংস্কৃতির উৎসস্থল। শিক্ষার সকল স্তরে ও সকল বিভাগে ইসলামী সংস্কৃতির বাপক চর্চা ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে।
বস্তুবাদী শিক্ষা ও ইসলামী শিক্ষা
পৃথিবীব্যাপী যে সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়, অবনতি এবং দুর্দশ আমরা লক্ষ্য করছি তা বস্তুবাদী শিক্ষার অশুভ পরিণতির ফল। কারণ যে শিক্ষা আল্লাহ বিমুখ তথা নাস্তিক্যবাদের উপর প্রতিষ্ঠিত, ঈমানী দর্শনবর্জিত, জীবন পদ্ধতি সম্পর্কে নির্দেশনা দিতে ব্যর্থ, প্রকৃত লক্ষ্য বিবর্জিত ও নৈতিক মূল্যবোধ সৃষ্টিতে ব্যর্থ তা কোনদিন কল্যাণকামী ও বিশ্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থা হতে পারে না।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটা সুস্পষ্টরূপে প্রতীয়মান হয় যে, ধর্মবিবর্জিত তথা অনৈসলামী শিক্ষার অনিবার্য কুফল হিসাবেই সারা পৃথিবীতে ক্রমে নৈতিক অবক্ষয়ের বিষবাষ্প ছড়িয়ে পড়ছে। কারণ Secular Education Body, mind and soul- এর সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হচ্ছে। বরং এই শিক্ষা যা দিচ্ছে তা দিয়ে শুধু শারীরিক উন্নতিই সম্ভব। আর শুধুমাত্র শারীরিক উন্নয়নের ফল মহাকবি ইকবালের ভাষায়
‘জ্ঞান যদি নিয়োজিত হয় তোমার দেহের সমৃদ্ধির জন্য তবে এ জ্ঞান হবে এক বিষধর সর্প’।
এক্ষণে এই মন ও আত্মার সমন্বিত উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন আদর্শ শিক্ষা ব্যবস্থা তথা ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার। এই পৃথিবীতে বস্তুবাদী শিক্ষার কবর রচনা করে তদস্থলে ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। তাহলেই পৃথিবীতে শান্তির ঝিরঝরে সমীরণ প্রবাহিত হবে ইনশাআল্লাহ।
বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা
১৭৫৭ সালে ইংরেজরা যখন ভারতবর্ষ দখল করে নেয়, তখন থেকে তারা এদেশে এমন একটি শিক্ষা-ব্যবস্থা চালু করে, যে শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে শিক্ষা লাভকারীরা তাদের গোলাম হিসাবে তৈরি হবে। ১৯৩৬ সালে লর্ড মেকলের বক্তব্যে এ মনোভাবের প্রমাণ মেলে। তিনি বলেছিলেন- “We must at present do our best to form a class, who may be interpreters between us and millions, whom we govern, a class of persons, Indian in blood and colour but English in taste, in opinion, in moral and intellect” অর্থাৎ ‘বর্তমানে আমাদের সর্বাধিক চেষ্টা করতে হবে যাতে এমন একটি গোষ্ঠী সৃষ্টি করা যায়, যারা আমাদের ও আমাদের লক্ষ লক্ষ প্রজার মধ্যে দূত হিসাবে কাজ করতে পারে। এরা রক্তে ও বর্ণে হবে ভারতীয়। কিন্তু মেজাজে, মতামতে, নৈতিকতা ও বুদ্ধিবৃত্তিতে হবে ইংরেজ’।
বৃটিশ মন্ত্রী গ্লাডস্টোন স্পষ্ট করেই বলেছিলেন, “So long as the Muslims have the Quran, we shall be unable to dominate them, We must either take it from them or make them lose their love for it”
অর্থ্যাৎ ‘যতক্ষণ পর্যন্ত মুসলমানরা কুরআনকে আঁকড়ে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদেরকে দমানো বা পরাভূত করা সম্ভব হবে না। তাই তাদের থেকে কুরআনকে কেড়ে নিতে হবে, না হয় তাদের হৃদয় থেকে মুছে দিতে হবে কুরআনের প্রেম ও ভালবাসা’।
মুসলমানের ঈমানী শক্তির মূল উৎস তারা বুঝতে পেরেছিল বলেই তাদের গোলাম বানানোর ও জাতিকে স্থায়ীভাবে বিভক্ত করার জন্য ধর্মীয় ও সাধারণ শিক্ষা নামে তারা দ্বিমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করেন। যা আজও এদেশে চালু আছে।
এক্ষণে জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে জাতিকে সমৃদ্ধশালী ও নৈতিক মূল্যবোধে উজ্জীবিত করতে হলে ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে হবে। অন্যথায় জাতি দিন দিন ধ্বংসের অতল গহবরে নিমজ্জিত হতে থাকবে।
শেষ কথা
জাতির নৈতিক উন্নতি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন শিক্ষা ব্যবস্থা আমূল পরিবর্তন ও সংস্কার। নৈতিকতা বর্জিত নিছক বস্তুবাদী শিক্ষা ব্যবস্থায় কখনোই সুনাগরিক সৃষ্টি হতে পারে না। বরং উক্ত শিক্ষাকেই সে পরোপকার বা জাতির কল্যাণে না লাগিয়ে নিজের হীন ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারের জন্য নিয়োজিত করে, যার তিক্ত অভিজ্ঞতা অফিস-আদালতে রাস্তাঘাটে এমনকি পারিবারিক জীবনেও আমরা আজ হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করছি।
বর্তমানে প্রচলিত সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থায় দক্ষ কর্মী তৈরির কিছু প্ল্যান থাকলেও আল্লাহর জবাবদিহিতার দায়িত্বানুভূতি সম্পন্ন খাটি ঈমানের বলে বলীয়ান দক্ষ ও আদর্শ কারিগর তৈরির কোন পরিকল্পনা নেই। ফলে যথেষ্ট যোগ্য লোক থাকা সত্ত্বেও দেশ আজ ক্রমেই গভীর অরাজকতার দিকে এগিয়ে চলেছে। অন্যদিকে মাদরাসা শিক্ষিতরাও সমাজের যোগ্য নাগরিক হিসাবে বেরিয়ে আসতে পারছে না। তাই উপরোক্ত দ্বিমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তন করে সারাদেশে একটি সুমাঞ্জস্যপূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থা চালু একান্ত প্রয়োজন ও সময়ের অনিবার্য দাবী।
সূত্র: মাসিক পৃথিবী পুরনো সংখ্যা
আমি কুরআন শিক্ষা সম্পর্কিত সঠিক ব্যাখ্যাটি অনুসন্ধান করছিলাম এই বিষয়ে এ জাতীয় চমৎকার সামগ্রী ভাগ করার জন্য অ্যাডমিনকে ধন্যবাদ । এটি সম্পর্কে আমার যা প্রয়োজন তা এখন পেয়েছি। এখানে. কুরআন শিক্ষা এ সম্পর্কিত আরও একটি তথ্যবহুল সামগ্রী আপনার সম্পর্কে ভাল গবেষণা করা তথ্য পাবেন।