ধর্মহীন শিক্ষার কুফল : পরিত্রাণের উপায়
ভূমিকা :
মানব আকৃতি নিয়ে জন্মগ্রহণ করলেই একজন মানুষ যেমন পুরোপুরি মানুষ হতে পারে না, তেমনিভাবে উচ্চশিক্ষা অর্জন করলেই একজন মানুষ সুশিক্ষিত আদর্শবান মানুষ হতে পারেনা। এক্ষণে প্রশ্ন হ’ল, কিসের দ্বারা একজন মানুষ প্রকৃত মানুষে পরিণত হতে পারে? সেটা কি ধর্ম নয়? যা তার মন-মগজে সৃষ্টি করে এমন কিছু, তার কর্মের মধ্য দিয়ে যার বহিঃপ্রকশ ঘটে। সেই অন্তর্নিহিত শক্তির, সেই প্রতিভার, সেই আবেগ, অনুভূতি, আনন্দ-বেদনা, কৌতূহলের স্বতঃস্ফূর্ত প্রকাশ ঘটে বিভিন্ন মাধ্যমকে অবলম্বন করে, ভাষা, সাহিত্য, কাব্য, সঙ্গীত, স্থাপত্য, আচার-আচরণ ইত্যাদির আধারে। তার দ্বারা অন্তরে যে বোধ-বিশ্বাস সৃষ্টি হয় তাতে অংকিত হয় তার সৃষ্টি ছাপ। জীবনাচারের প্রতিটি ক্ষেত্রে তা প্রতিফলিত এবং প্রতিবিম্বিত হয়। আর এভাবেই একজন মানুষ তার সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরিচিতি লাভ করে একজন আদর্শবান মানুষ রূপে এবং এভাবেই একটা জাতির নিজ পরিচয় সু্স্পষ্ট হয়ে উঠে। গড়ে উঠে নিজ বৈশিষ্ট্য। অর্ধশতাধিক বছর পূর্বে আমরা বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদীদের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছি। তখন শিক্ষা-দীক্ষায় আমরা অনেক অনুন্নত ছিলাম। আমাদের এত দালান-কোঠা, রাস্তাঘাট, স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি, রেডিও, টিভি, কম্পিউটার, ইন্টারনেট ছিলনা; অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির সাজ-সরঞ্জামও ছিলনা। সেই গোলামীর যুগের তুলনায় আমরা এখন অনেক উন্নত হয়েছি। কিন্তু সেই সাথে কি আমাদের চরিত্রের উন্নতি হয়েছে? আমরা কি নিষ্ঠুরতা, নির্মমতা, স্বার্থবাদিতা, শঠতা, লোভ-লালসা, হিংসা-বিদ্বেষ,পরশ্রীকাতরতা, মিথ্যা, প্রবঞ্চনা ইত্যাদি মন্দ কাজ সমূহ পরিহার করে সেণহমমতা, উদারতা, মহানুভবতা, আমানতদারিতা ইত্যাদি উত্তম বৈশিষ্ট্যমন্ডিত হতে পেরেছি। আমাদের মধ্যে শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে কিন্তু আদর্শবান, নৈতিক গুণাবলীতে বলীয়ান মানুষ হরাস পেয়েছে। অত্র নিবন্ধে আমরা এর কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
শিক্ষা ক্ষেত্রে :
আমাদের দেশের অনেকেই শিক্ষা থেকে ধর্মকে অত্যন্ত সুকৌশলে বিতাড়িত করতে চান। কিন্তু এ বিষয়ে অন্যান্য মনীষীগণ কি বলছেন, ধর্মভিত্তিক শিক্ষার ব্যাপারে তাদের মতামত কি? সেটা ভেবে দেখা দরকার। এক্ষেত্রে জিবি গানউ ব্রেজেনস্কির বক্তব্য প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেন, ‘মানুষের মধ্যে তার অতিপ্রিয় কোন কিছুর সংস্পর্শে আসার আকাংখা রয়েছে। যা হচ্ছে ঈশ্বর। কমিউনিজম এই আকাংখাকে দমন ও পরিত্যাগ করতে চেয়েছিল। ফলে মানুষের মধ্যে আধ্যাত্মিক শুন্যতার সৃষ্টি হয় এবং এটাই কনিউনিজমের পতনকে ত্বরান্বিত করে’। রুশ প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলিৎসন আমেরিকা যাওয়ার প্রাক্কালে প্রাচীন নগরী মারগেইভপোমাদ-এর ট্রিনটি ক্যাথেড্রালে বলেন, ‘আমি এখানে এসেছি আত্মশুদ্ধির জন্য। ঈশ্বরের আশীর্বাদ পেলে আমার ঐ সফর সফল হবে’। তিনি আরও বলেন, ‘একমাত্র ঈশ্বরই আমাকে পদত্যাগ করাতে পারেন’। তিনি রুশ টেলিভিশন এবং ইজভেস্তিয়া পত্রিকার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি মাসে অন্তত একবার চার্চে হাজিরা দিব। চার্চে এলে আমি নিজেকে পবিত্র বোধ করি। চার্চের এই অনুভূতি প্রকাশ সম্ভব নয়’। তিনি দ্বার্থহীন ভাষায় ঘোষণা করেন, ‘ব্যক্তিগত ও আধ্যাত্মিক কারণে তো বটেই রাজনৈতিক কারণেও চার্চের প্রয়োজন রয়েছে’ (নির্বাচিত কলাম, রূহুল আমীন, বিষয় : ধর্মহীনতার জ্বালা পৃঃ ২০০)। এই হচ্ছে সেই রাশিয়ান প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, ধর্মকে আফিমের নেশা বলে যে রাশিয়ার উপর চরম আঘাত হানা হয়েছিল, গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল হাযার হাযার মসজিদ ও গীর্জা। কুরআন বাইবেল ও অসংখ্য ধর্মীয় গ্রন্থকে নিয়ে করা হয়েছিল বহ্নি উৎসব; উন্নতি অগ্রগতির পথে অন্তরায় বলে ঘোষণা করা হয়েছিল, এই সমস্ত পদ্ধতির মাধ্যমে ধর্ম চর্চার পথে প্রবল অন্তরায় সৃষ্টি করা হয়েছিল। আর এখাবে পূর্ণ দাপটে পনে একশ বছর শাসন করার পর তার মধ্যকার সব অসারতা নগ্নভাবে প্রকাশ পেতে শুরু করে।
ধর্মভিত্তিক শিক্ষার ব্যাপারে যারা ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন, যারা ধর্ম ভিত্তিক শিক্ষার পক্ষাবলম্বন করেছেন তাদের মধ্যে প্রথমে যার নাম উল্লেখ করা যরূরী তিনি হলেন স্টানলি হল (Stanly Hall)। শিশুদের শিক্ষাদানের বিষয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন : If you teach them there the R’s Reading, writing and arithmetic and don’t teach the frouth R Religin they are sure to become fifth R Rascal. ড. কাজী দ্বীন মুহাম্মাদ তাঁর ‘জীবন সৌন্দর্য’ নামক প্রবন্ধে বলেন, ‘ছাত্র-ছাত্রীদের শুধু পড়তে, লিখতে এবং অংক কষতে শিখালেই চরিত্রবান হয় না বরং তাদেরকে ধর্ম না শিখালে তারা নিশ্চিত দুষ্ট হয়ে পড়বেই’। তার এ কথাটা যে কতটা বাস্তবসম্মত তা আমরা বর্তমান সেক্যুলার শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে তাকালে সহজেই বুঝতে পারব। শিক্ষার সংজ্ঞা দিতে গিয়ে কবি মিলটন বলছেন, Education is the development of body, mind and soul. অর্থাৎ ‘শিক্ষা হ’ল শরীর, মন ও আত্মার সুষম বিকাশের নাম’। Liberal Education-এর প্রবক্তা মার্কিন যুক্তরাষ্টের বিখ্যাত দার্শনিক ও শিক্ষাবিদ Albert Schezer তাঁর প্রখ্যাত The teaching of Reverence for life গ্রন্থে বলেন, There kinds of progress are significant progress in knowledge and technology. progress in socialization of man and progress in spirituality. the last one is most important. অর্থাৎ ‘তিন প্রকার জিনিসের অগ্রগতি খুবই যরূরী (১) জ্ঞান এবং প্রযুক্তির উন্নতি (২) মানুষের সামাজিকীকরণের উন্নতি (৩) ধর্মের ক্ষেত্রে অগ্রসরতা। আর শেষেরটাই হচ্ছে সবচেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ’। তিনি আরো বলেছেন, Our age must achieve spiritual renewal, A new renaissance must come the renaissance in which man kind discovered that ethical action is supreme truth and the supreme utilitarianism by which mankind will be liberated Albert schezer the teaching of Reverence for life. পাশ্চাত্য শিক্ষাবিদ prof দ্ব্যর্থহীন কন্ঠ উচ্চারণ করেন, Education is the eternal process and mentally developed free and conscious human being to god as intellectual emotional and volition environment of man. ‘শিক্ষা হচ্ছে শারীরিক ও মানসিক দিক দিয়ে বিকশিত ও মুক্ত মানব সত্তাকে স্রষ্টার সাথে উন্নত ও ঐচ্ছিকভাবে সমন্বিত করার একটি চিরন্তন প্রক্রিয়া। যেমনি সুস্পষ্টভাবে প্রকাশিত রয়েছে মানুষের বুদ্ধির আবেগগত ও ইচ্ছাশক্তি সম্পর্কীয় পরিবেশ’। ‘জাতীয় শিক্ষা সেমিনার সংকলন ১৯৯৭’ জাতীয় অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান বলেছেন, ‘ধর্মের একটা বিশেষ উদ্দেশ্য আছে। আর তা হচ্ছে মানুষকে পরিপূর্ণ করা, মানুষকে তার জীবন সম্পর্কে সচেতন করা। ধর্ম সংস্কার নিয়ে নয় বরং ধর্ম হচ্ছে বিশেষ বিশ্বাস ও আদর্শকে নিয়ে’। তিনি আরো বলেন, ‘শিক্ষার একটি আদর্শগত ভিত্তি আছে। সেই আদর্শগত ভিত্তিই হল ধর্মের ভিত্তি’। উপরোক্ত মনীষীদের কথার আলোকে নিশ্চিত করে বলা যায় যে, ধর্মভিত্তিক শিক্ষাই শিক্ষার একমাত্র স্বয়ংসম্পূর্ণ রূপ। ধর্ম ছাড়া শিক্ষার কথা ভাবাই যায়না। আর এ কারণে মুসলিম শাসন আমলে ভারতীয় উপমহাদেশে শিক্ষার হাতে খড়িই ছিল মক্তবে। ফলশ্রুতিতে দেখা যায় স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের জন্য একটি শিক্ষা নীতি প্রণয়ন করা হয়েছিল। যা বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ড. কুদরত-ই-খুদার নেতৃত্বে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয়েছিল। সে কমিশনের জরীপ রিপোর্টে ২৮৬৯ জন মতামত দানকারীর মধ্যে ২২৮৫ জন মতামত দেন ধর্মভিত্তিক শিক্ষার পক্ষে, যার শতকরা হার দাঁড়ায় ৭৯.৬৪% (কুদরত-ই-খোদা শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট ১৯৭৪)। তাইতো বিশ্ব নন্দিত কবি আল্লামা ইকবাল বলেন,
জ্ঞান যদি নিয়োজিত হয় তোমার দেহের সমৃদ্ধির জন্য
তবে এ জ্ঞান হবে বিষধর স্বর্প
জ্ঞান যদি হয় তোমার আত্মার মুক্তির জন্য বিবেদিত
তবে এ জ্ঞান হবে তোমার পরম বন্ধু তোমার গর্ব।
ধর্মহীন শিক্ষার পরিণতি :
আমরা ইতিপূর্বে শিক্ষা ক্ষেত্রে ধর্মের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছি। কিন্তু ধর্মহীন শিক্ষার পরিণতি কি? যারা ধর্মহীন শিক্ষার ব্যাপারে বুলি আওড়িয়ে চলেছেন এবং যারা এর মদদদাতা, যারা এর বাহক সেই পাশ্চাত্য দেশগুলির পরিণতি কি? ধর্মহীন শিক্ষা এবং সংস্কৃতির ফলে সেখানকার অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে তা প্রকাশ করতে কিছু পরিসংখ্যানই যথেষ্ট। সেখানকার মানুষদের অপরাধ প্রবণতার ব্যাপারে FBI-এর রিপোর্ট হ’ল, Official figures completed by the federal bureau of investigation indicate that the crime rate is higher in the united states if than more other countries and that the continuing to rise (Abnormal and psychology and modern life, page no-396)। ১৯৭৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১০ মিলিয়নের বেশী অপরাধ সংঘঠিত হয়। ১৯৯২ সালে ১৮ বছরের ব্যবধানে যার সংখ্যা দাঁড়ায় ১৪ বিলিয়নে’ (সাপ্তাহিক বিচিত্রা, ১৭ মার্চ ১৯৯৫)। আমরিকাতে প্রতি বার সেকেন্ডে কোন না কোন অপরাধ সংঘটিত হয়। সেখানে প্রতি ঘণ্টায় ১ জন খুন, প্রতি ২৫ মিনিটে একটি নারী ধর্ষণ, ৫ মিনিটে একটি ডাকাতি, প্রতি মিনিটে ১ টি চুরির ঘটনা ঘটে’ (তারেক মাহমুদ, সুন্নাতে রাসূল ও আধুনিক বিজ্ঞান, ‘নারী ও ইসলাম’ অনুবাদ : আব্দুলস্নাহ, পৃঃ-২২৭)। ১৯৯১ সালে সেখানে বার লাখ অবৈধ সন্তান জন্মগ্রহণ করে। ১৯৯০ সালে নিউজ উইকের এক জরিপে দেখা যায়, সেখানে প্রতি ১৮ সেকেন্ডে ১ জন ধর্ষিত হয়। প্রতিবছর ১৫-১৭ বছর বয়সী অবিবাহিতা ৫০ হাযার গর্ভধারণ করে’ (দৈনিক ইনকিলাব, ৫ এপ্রিল ২০০৮, পৃঃ-১৪)। FBI-এর রিপোর্ট অনুসারে ১৯৯০ সালে ১০ হাযার ২৫৫ জন নারীর সঙ্গে ব্যভিচার করা হয়েছে। এ রির্পোট অনুসারে সেখানে দৈনিক ১৭৫৬ টি ব্যভিচারের ঘটনা ঘটেছে (জাকির নায়েক, ইসলামের উপর ৪০টি অভিযোগ ও তার দলীল ভিত্তিক জওয়াব, পিস পাবলিকেশন্স, পৃঃ ৩২)। অন্যদিকে বৃটেনে ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত নারী পুরুষের অবৈধ মেলামেশার কারণে ৪ লাখ জারজ সন্তান জন্মগ্রহণ করে। তাহলে ২০ বছর পর আজকে প্রায় এক কোটি জারজ সন্তান বাস করছে ইংল্যান্ডে (নূরুল ইসলাম, পরিবার ও পারিবারিক জীবন, ঢাকা : বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, পৃঃ ৭৪)। রাশিয়ায় বার্ষিক দশ লাখ লোক আত্মহত্যার চেষ্টা করে এবং ৬০ হাজার কৃতকার্য হয়। অথচ রাশিয়ার উত্তর ককেশিয়া এলাকায় আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেনা বললেই চলে। কেননা সেখানে ৯০% মানুষ মুসলিম ও ধর্মভীরু (দাওয়াতে দিল্লী, ১০ নভেম্বর ১৯৯২)। জাপানে ১৯৮৩ সালে ২৫২০৭ জন আত্মহত্যা করে (দৈনিক জং, পাকিস্তান, ২০ আগষ্ট ১৯৯৪)। এছাড়াও আমেরিকায় সরকারী হিসাব মতে ২২% ছাত্রের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র আছে (New later, vol-17,August ১৯৯৫)। মার্কিন নিউইয়র্ক নগরীতে প্রতিদিন শত শত ইভটিজিংয়ের ঘটনা ঘটছে। এক হিসাব মতে, আমেরিকায় অপরাধ দমনে ১৯৯২ সালে ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ৪২৫ মিলিয়ন ডলার। যা ঐ সময়ের ডলারের মূল্যমান অনুযায়ী ১৭ লক্ষ কোটি টাকার সমান। সুতরাং দেখা যাচ্ছে ব্যক্তি স্বাধীনতার কথা বলে ধর্মকে বিকিয়ে দেওয়ার ফলে উদারপন্থী ও ধর্ম বিবর্জিত শিক্ষা ব্যবস্থার বদৌলতে পশ্চিমা ঐ সকল উন্নত দেশে আজ নৈতিকতার লেশ মাত্র নেই। তাসলিমা নাসরিনের মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে অবাধ যৌনাচারের বিষাক্ত ছোবলে অনৈসলামী বিশ্ব জর্জরিত। পারিবারিক শৃংখল তাদের ভেংগে খান খান হয়ে গেছে। সন্তানের দায়দায়িত্ব নেওয়ার মানসিকতা বিদায় নিয়েছে। গণোবিয়া, সিফিলিসের মত ভয়ঙ্কর রোগের আতংকে দিশেহারা হয়ে মুক্তির দিগন্ত খুঁজে হয়রানি হচ্ছে। কিন্তু ওরা সাবধান হচ্ছে না। বরং এর পরিবর্তে প্রদর্শন করছে ঔদ্ধত্য। যে ব্যাধিতে ওরা আক্রান্ত। যে অশান্তিতে ওরা আকন্ঠ নিমজ্জিত। তাই আজ ওরা অবাধ যৌনাচার ছড়িয়ে দিতে চায় সর্বত্র, সারা দুনিয়ায়। শুধু ব্যক্তি উদ্যোগে নয়, জাতীয় উদ্যোগে নয়, আন্তর্জাতিক উদ্যোগে খোদ জাতিসংঘের সহায়তায়। জাতিসংঘের মাধ্যমে প্রস্তাব পাশ করিয়ে আন্তর্জাতিক আইন বানিয়ে ওদের সেই নষ্টামী, বিকৃত যৌন চর্চা ছড়িয়ে দিতে চায় বিশ্বময়। জাতিসংঘের কাঁধে সওয়ার হয়ে ওরা ইতিপূর্বে অনেক মুসলিম দেশে বুলেট বোমার আগ্রাসী হামলায় ধ্বংস করে দিয়েছে। বিরান করে দিয়েছে অনেক মুসলিম জনপদ। এবার ওরা ঐ সংস্থার ঘাড়ে চড়ে ধ্বংস করে দিতে চায় আমাদের চারিত্রিক সূচী-শুভ্রতা ও পবিত্রতা। ধর্মহীনতার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত নোংরা অপসংস্কৃতির মহাসয়লাবে মোদের বিশ্ব নন্দিত। মানবতার মুক্তির মহানায়কের পক্ষ হতে প্রাপ্ত শান্তিপূর্ণ সাফল্যের একমাত্র মাধ্যম। মহা আদর্শ কে মোদের হতে ছিনিয়ে নিতে চায়। আর তাদের এই কুটিল চক্রান্ত, মুসলিম আদর্শ বিধ্বংসী ধর্মহীন শিক্ষা বাস্তবায়ন করতে চায় আমাদের দেশেরই তথাকথিত বাম বুদ্ধিজীবিরা। কলমের কোদাল হাতে এক শ্রেণীর পত্রিকার উপর ভর করে ময়দানে অবতীর্ণ হয়েছে তারা। পাশ্চাত্য হতে আমদানিকৃত বস্তাপঁচা সংস্কৃতির শুরুতেই আমাদের সমাজে মহাপ্রলয়ের যে অশনি সংকেত দেখা দিয়েছে তা কত ভয়ানক রূপ ধারণ করতে পারে! বাংলাদেশের ভাগ্যাকাশে ধর্মহীন শিক্ষার উদয় লগ্নেই আমাদের যে দশা তা ভবিষ্যতে কত মহামারী আকার ধারণ করতে পারে তা ভাবতেই গা শিউরে উঠে! নিম্নে বর্তমানে ধর্মহীন শিক্ষার ধ্বংসাত্মক তান্ডবের যে বাতাস লেগেছে তার সামান্য ফলাফল তুলে ধরা হ’ল। জুলাই ২০০০ সাল থেকে মার্চ মাসের ১ তারিখ পর্যন্ত ধর্ষণ ৫৭০ টি, ধর্ষণের চেষ্টা ১৫ টি (নারী ও রাজনীতি, ঢাকা অবসর প্রকাশনী, এপ্রিল ২০০৬, পৃঃ ১০৩)। ১৯৯৮ সালে যৌতুক ১৪৯ টি, ১৯৯৯ সালে ১৫২ টি, ২০০০ সালে ১৪৮ টি, ২০০১ সালে ১০৯ টি ও ২০০২ সালে ১৫৪ টি (নারী ও রাজনীতি পৃঃ ১২৩)। ২০০৯ সালে ১ম ৬ মাসে ধর্ষণ ২৩৫ টি, যৌতুক ৯৬ টি। ২০১০ সালে ১ম ৬ মাসে ধর্ষণ ৭৯৫ টি, যৌতুক ১১৫ টি (আমার দেশ, ৩০ নভেম্বর, ২০১০ পৃঃ ৩; নয়া দিগন্ত ২৮ ডিসেম্বর পৃঃ ৯)। ধর্ষণ ৪৫ টি, গণধর্ষণ ৮২ টি, ধর্ষণের পর হত্যা ৫২ টি, শ্লীলতাহানী ১১৩ টি, যৌতুকের কারণে ১১৩ টি আত্মহত্যা, ৩৫৭ টি হত্যা ৮৮০ (আমার দেশ, ৩০ নভেম্বর ২০১০, পৃঃ ৩; নয়া দিগন্ত, ২৮ ডিসেম্বর ২০১০, পৃঃ ৯)। চাইল্ড পার্লামেন্ট পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, ৬২ ভাগ স্কুলের ছাত্রী ইভটিজিংযের শিকার (আমার দেশ, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১০, পৃঃ ৩)। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত হওয়া এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, মাদকের যে মহাসয়লাব দেখা দিয়েছে তা আমাদের হৃদয় প্রকম্পিত করে তুলেছে। ২০১১ সালে মোট রোগী ২৫৮ জন, ২০১২ সালে ১২৩০৪ জন, ২০১২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ৩১৭৮ জনসহ আরো অনেকে (নয়া দিগন্ত, ২৭ আগষ্ট ২০১৩)।
ধর্মহীন শিক্ষার বাস্তবায়ন কাদের পরিকল্পনার প্রতিফলন :
শক্তির জোরে, ক্ষমতার জোরে দাপটের পাশবিক উন্মাদনায় যে সীমালংঘন করে তখন তার বিদায় ঘন্টা বেজে উঠে। সীমালংঘনকারী কাউকেই আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখেনি। কালের গর্ভে তারা বিলীন হয়ে গেছে। আজ তারা ক্ষমতার দাপটে মদমত্ত হয়ে দাম্ভিকতার মাতাল অশ্বে আরোহণ করে নিজেদের নীতি নৈতিকতা বির্সজন ও বুদ্ধি বিবেক জলাঞ্জলি দিয়েছে। ধর্মহীন শিক্ষা বাস্তবায়ন করার দ্বারা বিভিন্ন সাবজেক্ট বৃদ্ধি করে অপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পরীক্ষার হঠাৎ আগমন ঘটিয়েছে। ইসলামী শিক্ষার একমাত্র ধারক ও বাহক মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা তথা ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার হীন অপচেষ্টা করা হচ্ছে। ফলে এর দ্বারা আমরা যে স্বেচ্ছাচারিতার চরম পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করেছি তা ইহুদী ও খৃষ্টানদের তৈরীকৃত পরিকল্পনারই বাস্তব ফল মাত্র। এটি বিজ্ঞানসম্মত শিক্ষা দেওয়ার আড়ালে ইসলাম ধ্বংসের এক মহা পরিকল্পনা নয় কি? ১৮৩৬ সালে মহারাণী ভিক্টোরিয়া বৃটেনের সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন। সে সময় ভারতবর্ষের দাখিলকৃত শিক্ষা কমিশনের রিপোর্ট প্রসঙ্গে কমন সভায় ব্যাপক আলোচনা হয়। তৎকালীন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী গ্লাডষ্টোন একটি পবিত্র কুরআন শরীফ হাতে নিয়ে উঁচু করে ধরে কমন্স সভায় বলেছিলেন, ‘এটা মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ আল-কুরআন। বৃটিশরা বর্তমানে অনেকগুলো মুসলিম দেশ দখল করে নিয়েছে। যদি এই দেশগুলোর উপর বিনা বাধায় বৃটিশদের আধিপত্য বজায় রাখতে হয় তাহলে এই কুরআন শিক্ষা থেকে তাদেরকে দূরে রাখতে হবে’ (সরকার শিহাবুদ্দিন আহমাদ, বিভ্রান্তির বেড়াজালে মুসলমান, পৃঃ-৫)। ইংরেজদের শাসনামলে কুরআন ও হাদীছ চর্চা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। যুগে যুগে মুসলমানদের মেরুদন্ড ভাঙ্গা জাতিতে পরিণত করে রাখার জন্য এটি ছিল ইংরেজদের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত চক্রান্ত। আজও আমরা এই জাল হতে মুক্ত হতে পারিনি বরং তা আরও ভয়াল আকৃতিতে ঘরের শত্রুরাই অক্টোপাসের আকৃতি নিয়ে ঘিরে ধরেছে। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার প্রচলিত ধারা দু’টি। যথা : একটি আধুনিক শিক্ষা, অপরটি ধর্মীয় শিক্ষা। এ শিক্ষা ব্যবস্থার প্রবর্তক ছিলেন ইংরেজ শিক্ষাবিদ লর্ড মেকলে ১৮৩৯ সালে তিনি বলেছিলেন, We must at present do our best to form a class, who may be interpreters between us and millions. Whom we govern a class of persons. Indian in blood and color, but English in taste, in open ion, in moral and in intellect. ‘বর্তমানে আমাদের সর্বাধিক প্রচেষ্টা হবে, এমন একটি গোষ্ঠী সৃষ্টি করা, যারা আমাদের ও আমাদের লক্ষ লক্ষ প্রজার মধ্যে দূত হিসাবে কাজ করতে পারে। এরা রক্তে ও বর্ণে হবে ভারতীয়। কিন্তু মেযাজে, মতামতে, নৈতিকতা ও বুদ্ধিবৃত্তিতে হবে ইংরেজ’ (বিভ্রান্তির বেড়াজালে মুসলমান, পৃঃ ১৩)। উপরোল্লেখিত দু’টি প্রস্তাবনার দিকে তাকিয়ে বর্তমানে আমাদের সমাজে যারা ধর্মকে সভ্যতার পথের কাঁটা হিসেবে মনে করে এবং শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ধর্মকে বাদ দিতে চান তাদের এই স্বপ্নের আড়ালে তারা কি চান তা আমাদের নিকট এখন পুরোপুরি স্পষ্ট।
ইসলামে নৈতিক শিক্ষা :
উপরের আলোচনা থেকে একথা সুস্পষ্ট যে, ধর্ম ছাড়া শিক্ষা ব্যবস্থা বৈঠাবিহীন নৌকার মত। এক্ষণে এখন দেখা যেতে পারে কুরআন-সুন্নাহ নৈতিক শিক্ষার ব্যাপারে কিরূপ সমৃদ্ধশালী। যেমন মহান আল্লাহ বলেন,
وَالْأَرْضِ وَمَا طَحَاهَا- وَنَفْسٍ وَمَا سَوَّاهَا- فَأَلْهَمَهَا فُجُورَهَا وَتَقْوَاهَا- قَدْ أَفْلَحَ مَنْ زَكَّاهَا- وَقَدْ خَابَ مَنْ دَسَّاهَا- كَذَّبَتْ ثَمُودُ بِطَغْوَاهَا ‘শপথ পৃথিবীর, যিনি তা বিস্তৃত করেছেন’। ‘শপথ প্রাণের এবং যিনি তা সুবিন্যস্ত করেছেন, অতঃপর তাকে সৎকর্ম এবং অসৎ কর্মের জ্ঞান দান করেছেন’। যে নিজেকে শুদ্ধ করে সে সফলকাম হয় আর যে নিজেকে কুলষিত করে সে ব্যর্থ মনোরথ হয়’ (শামস ৯১/৬-১১)।
এখানে আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে বিবেকবান করে সৃষ্টি করেছেন এ কথা উল্লেখ করার পাশাপাশি ভাল ও মন্দ উভয় প্রকারের পরিণাম উল্লেখ করেছেন এবং নৈতিকতা সম্পন্ন হওয়ার প্রতি আহবান করেছেন। তিনি অন্যত্রে বলেন,
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنْزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِنَ الْهُدَى وَالْفُرْقَانِ ‘রামাযান মাস হ’ল সেই মাস যাতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথের যাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথনিদের্শ আর ন্যায়-অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী’ (বাকারাহ ২/১৮৫)।
অর্থাৎ মহান আল্লাহ আল-কুরআনের মধ্যে ন্যায়-অন্যায়, আলো-অন্ধকারকে স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করেছেন এবং তাকে পার্থক্যকারী মানদন্ডও দান করেছেন। সুতরাং ইসলামের আলোকে নৈতিক দর্শন বলতে যা বোঝায় তা হ’ল আল-কুরআন এবং ছহীহ হাদীছ ভিত্তিক নৈতিকতা। পবিত্র কুরআন যে নৈতিকতার বিবরণ দিয়েছে তা এত ক্ষুদ্র পরিসরে বুঝানো সম্ভব নয়। নিম্নে উল্লেখযোগ্য কিছু আলোচনা করা হ’ল।
(১) আল্লাহর ইবাদত করতে হবে। যেমন আল্লাহর বাণী, وَقَضَى رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ ‘তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করনা’ (বনী ইসরাইল ১৭/২৩)।
(২) পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ বার্ধক্যে উপনীত হলে তোমরা তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলনা এবং তাদের ধমক দিওনা বরং শিষ্টাচারপূর্ণ কথা বলা’ (বনী ইসরাঈল ১৭/২৩)।
(৩) আত্মীয়-স্বজন, অভাবগ্রস্থ ও মুসাফিরদের তাদের প্রাপ্য দিয়ে দিবে।
(৪) কিছুতে অপব্যয় করা যাবে না।
(৫) কৃপণ হয়োনা এবং সম্পূর্ণ প্রসারিতও করনা। তাহলে তুমি নিন্দিত এবং নিঃস্ব হয়ে পড়বে।
(৬) তোমরা সন্তানদেরকে দারিদ্রে্যর ভয়ে হত্যা করনা। আমি তাদের এবং তোমাদের রিযিক প্রদান করে থাকি।
(৭) আল্লাহ যাকে হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে তাকে হত্যা করনা।
(৮) ইয়াতীম বয়োঃপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত সৎ উপায় ছাড়া তার সম্পত্তির নিকটবর্তী হয়ো না।
(৯) প্রতিশ্রুতি পালন কর, প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে কৈফিয়ত তলব করা হবে।
(১০) মেপে দিবার সময় পূর্ণমাত্রায় দাও এবং ওযন কর সঠিক দাড়ি পাল্লায়।
(১১) যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নেই তার অনুসরণ করনা।
(১২) যমীনে অহংকার করে চলনা (বনী ইসরাঈল ১৭/২৪-২৮)।
এছাড়াও অসংখ্য আয়াতে মহান আল্লাহ নৈতিকতার সম্পর্কে প্রয়োজনীয় নির্দেশদান করেছেন। যেমন মায়েদার ৯০ নং আয়াতে মদ, জুয়া সুরাপান; আন‘আমের ১৫১, আ‘রাফের ৩৩ নং আয়াতে অশ্লীলতা, ইউনুস ১৩ নং আয়াতে যুলুম, মায়িদার ৩৩ এবং ৩৮ নং আয়াতে অশান্তি সৃষ্টি, চুরি নিষিদ্ধ করণ, বাকারাহ ১৮৮ নং আয়াতে সম্পদ আত্মসাতের ব্যাপারে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে, নিসা ৩৬ নং আয়াতে মাতা-পিতা, প্রতিবেশী মুরুববীদের সাথে সদাচরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং পাশাপাশি তার অমান্যকারীর জন্য ভয়াবহ শাস্তির বিধান জারি করতঃ তা পূর্ণকারীর জন্য জান্নাতের বিবরণ দেওয়া হয়েছে। যা একজন মানুষকে নীতি সম্পন্ন আদর্শবান হয়ে চলতে উদ্বুদ্ধ করে। এছাড়াও আল্লাহ তা‘আলা মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর চরিত্রের শ্রেষ্ঠত্বের ঘোষণা দিয়েছেন। সুতরাং এ কথা নি©র্র্দ্বধায় বলা যায় যে, ইসলামই একমাত্র শান্তিপূর্ণ সমাজের বার্তাবাহক।
উপসংহার :
পাশ্চাত্য হতে আমদানিকৃত বস্তাপঁচা সংস্কৃতির ভয়াবহতার দিকে তাকিয়ে এবং তাদের সমাজের ধর্মহীন শিক্ষার ফলে অশান্তির যে ঝড় উঠেছে তা দেখে আমাদের দেশেও ১০ নম্বর সর্তকতা সংকেত জারি করা যরূরী। ঐশির দ্বারা শুরু হওয়া ধর্মহীন শিক্ষার প্রলয়ংকরী ঝড় থামানোর প্রক্রিয়া শুরু করা সরকার সহ আমাদের প্রত্যেকের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য। নইলে সবেমাত্র শুরু হওয়া অনৈতিকতার এই ভয়াবহ দাবানল কোথায় গিয়ে শেষ হবে তা বলা বড় দায়। আল্লাহ আমাদের ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার তাওফীক দান করুন। আমীন!