ব্রিটেনে নও-মুসলিমদের সংখ্যা বাড়ছে : ইসলাম দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম

খৃষ্টান ধর্মের পরই ইসলাম ধর্ম ব্রিটেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। দেশের ২৭ লাখ মুসলমানের শতকরা ৪০ ভাগেরই বাস লন্ডনে। এক ব্রিটিশ জরীপ অনুসারে ২০০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে মুসলিম জনসংখ্যা ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বৃদ্ধির প্রধান কারণ অভিবাসীদের সংখ্যা বৃদ্ধি হলেও, ইসলাম ধর্ম গ্রহণ বৃদ্ধি ও যুক্তরাজ্যে ইসলামকে সবচেয়ে বেশী বৃদ্ধিশীল ধর্মে পরিণত করেছে।
.
মসজিদ থেকে সংগৃহীত উপাত্ত থেকে বুঝা যায়, বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠী থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী নও-মুসিলমদের সংখ্যা ১ লাখেরও বেশী। ২০১২ সালে ৫ হাজার ব্যক্তি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। এর এক তৃতীয়াংশ মহিলা।


.
সম্প্রতি ‘মেইক মি এ মুসলিম’ অর্থাৎ ‘আমাকে মুসলমান করো’ নামে একটি ডকুমেন্টারি সম্প্রচারিত হয়েছে বিবিসি ওয়ার্ল্ডে। এর শুরু হয়েছে ব্রিটিশ শ্বেতাঙ্গিনী নও মুসলিমদের বক্তব্য দিয়ে। তাদের প্রশ্ন করা হয়, কেনো তারা তাদের উদার, স্বাধীন জীবন যাপন পদ্ধতির সমাজের সকল স্বাধীনতা ত্যাগ করেছেন। ব্রিটিশ মহিলাদের ইসলাম ধর্ম গ্রহণের বিভিন্ন কারণ রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে মুসলিম বন্ধু বা স্বামীকে কিংবা মুসলিম শ্বশুর শাশুড়ী ননদ জা’দের সন্তুষ্ট করতে অথবা একটি ধর্ম বিশ্বাসে সন্তানদের গড়ে তুলতে তাদের ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে দেখা গেছে।
.
তবে ইসলাম ধমেৃর প্রতি তাদের আকৃষ্ট হওয়ার সবচেয়ে বড়ো কারণ হচ্ছে, ইসলাম নারীদের নিজেদের মানসিক ও দৈহিক দিক দিয়ে মর্যাদাশীল ও মূল্যবান ভাবার অনুভূতি দিয়েছে। বিশেষভাবে যেখানে একটি বড়ো মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে সেখানে অনুভূতি স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়। এছাড়া ইসলাম তাদেরকে জীবন যাপনের একটি ছক বা কাঠামো প্রদান করে, প্রদান করে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার অনুভূতি। ইসলাম সম্পর্কে পাশ্চাত্যের পরিবারগুলোতে ভুল ধারণা থাকায় অধিকাংশ নও মুসলিমদের তাদের পরিবারকে তাদের সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করতে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। অমুসলিম পরিবারের ধারণা ইসলাম এমন একটি ধর্ম যা মহিলাদের নিপীড়ন করে।
.
এছাড়া দেখা গেছে, অধিকাংশ নও মুসলিম মহিলা অন্যান্য মুসলিম মহিলাদের চেয়ে বেশী রক্ষণশীল হয়ে থাকে। অনেকে বেশী উৎসাহের কারণে, আবার অনেকে তারা যথেষ্ট মুসলিম আবার আচরণ করছে কি-না এমন সংশয় থেকেই এমন রক্ষণশীল হয়ে উঠে।
নও-মুসলিম হওয়ায় মহিলাদের বেশ চ্যালেঞ্জেরও মোকাবেলা করতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে বয় ফ্রেন্ডরা তাদের ছেড়ে যায়, কারণ তারা আগের মতো তাদের সাথে মিশতে পারে না, অবাধ যৌন আচরণ করতে পারে না।
.
অনেক সময় নও মুসলিম মেযেদের পিতামাতাকে বন্ধুরা জিজ্ঞেস করে ‘তোমার মেয়েটা এখনো মাথায় ঐ জিনিসটা পরে?’ অনেক ক্ষেত্রে মুসলিম পরিবারের পিতামাতা চান না তাদের ছেলে কোন নও মুসলিম মেয়েকে বিয়ে করুক। এ অবস্থায় ফ্রি মিক্সিংয়ের সুযোগ না থাকায় সঙ্গী জোগাড় করতে পারে না, আবার পারিবারিক ভাবে অ্যারেনজড্ ম্যারেজ বা প্রস্তাবের মাধ্যমে বিয়ের সুযোগ না থাকায় তাদের সমস্যায় পড়তে হয়। এতো চ্যালেঞ্জ সত্বেও ব্রিটিশ সমাজে ইসলাম ধর্ম গ্রহণে ভাটা পড়েনি। বরং সব প্রতিকুলতা অতিক্রম করে নও-মুসলিমদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। কিছুকাল ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের শ্যালিকা লোরেন বুথ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলে শুধু ব্রিটেন বা ইউরোপের নয় গোটা বিশ্বের বিশ্বাস জগতে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
.
লোরেন বুথ বলেন, ‘আমার ইসলাম ধর্ম গ্রহণের বিষয়টি আকস্মিক কিছু নয়। এটা ধীর প্রক্রিয়ায় সংঘটিত হয়েছে। ভোগবাদ, বস্তুবাদ, মাদক এবং যৌনতা সুখ দেয় বটে, তবে মুসলমানরা প্রকৃত প্রার্থনার মাধ্যমে যা পায় তা হচ্ছে মধুর ঐক্যের ঝলকানি এবং আনন্দের কম্পন। আমার যা আছে তাতে আমি কৃতজ্ঞ এবং নিশ্চিতভাবেই প্রার্থনার প্রশান্তি ও নিরাপত্তার চেয়ে বেশী কিছু আমার প্রয়োজন নেই।’

উৎসঃ ফেসবুক

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button
skybet88 skybet88 skybet88 skybet88 mix parlay skybet88 slot bonus new member skybet88 skybet88 skybet88 slot gacor skybet88 skybet88