কুরবানীর প্রারম্ভিক ইতিহাস

কুরবানীর ইতিহাস খুবই প্রাচীন। সেই আদি পিতা আদম (আলাইহিস সালাম)-এর যুগ থেকেই কুরবানীর বিধান চলে আসছে। আদম (আলাইহিস সালাম)-এর দুই ছেলে হাবীল ও কাবীলের কুরবানী পেশ করার কথা আমরা মহাগ্রন্থ আল-কুরআন থেকে জানতে পারি। মহান আল্লাহ বলেন,

{وَاتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ ابْنَيْ آدَمَ بِالْحَقِّ إِذْ قَرَّبَا قُرْبَاناً فَتُقُبِّلَ مِنْ أَحَدِهِمَا وَلَمْ يُتَقَبَّلْ مِنْ الآخَرِ قَالَ لأَقْتُلَنَّكَ قَالَ إِنَّمَا يَتَقَبَّلُ اللهُ مِنْ الْمُتَّقِينَ}

   অর্থাৎ, আদমের দুই পুত্রের (হাবিল ও কাবিলের) বৃত্তান্ত তুমি তাদেরকে যথাযথভাবে শুনিয়ে দাও, যখন তারা উভয়ে কুরবানী করেছিল, তখন একজনের কুরবানী কবুল হল এবং অন্য জনের কুরবানী কবুল হল না। তাদের একজন বলল, আমি তোমাকে অবশ্যই হত্যা করব। অপরজন বলল, আল্লাহ তো সংযমীদের কুরবানীই কবুল করে থাকেন।[1]   

কুরবানীর বিধান প্রত্যেক জাতির জন্যই ছিল।

মহান আল্লাহ বলেন,

{وَلِكُلِّ أُمَّةٍ جَعَلْنَا مَنْسَكاً لِيَذْكُرُوا اسْمَ اللهِ عَلَى مَا رَزَقَهُمْ مِنْ بَهِيمَةِ الأَنْعَامِ فَإِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ فَلَهُ أَسْلِمُوا وَبَشِّرْ الْمُخْبِتِينَ – الَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ اللهُ وَجِلَتْ قُلُوبُهُمْ وَالصَّابِرِينَ عَلَى مَا أَصَابَهُمْ وَالْمُقِيمِ الصَّلاةِ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنْفِقُونَ}

অর্থাৎ, আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য কুরবানীর বিধান দিয়েছি; যাতে আমি তাদেরকে জীবনোপকরণ সবরূপ যে সব চতুষ্পদ জন্তু দিয়েছি সেগুলির উপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে। তোমাদের উপাস্য একমাত্র উপাস্য। সুতরাং তোমরা তাঁরই নিকট আত্মসমর্পণ কর। আর সুসংবাদ দাও বিনীতগণকে; যাদের হূদয় ভয়ে কম্পিত হয় আল্লাহর নাম স্মরণ করা হলে, যারা তাদের বিপদ-আপদে ধৈর্যধারণ করে, নামায কায়েম করে এবং আমি তাদেরকে যে রুযী দিয়েছি তা হতে ব্যয় করে[2]

ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-এর কুরবানীর আদর্শ হওয়ার ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন,

{فَلَمَّا بَلَغَ مَعَهُ السَّعْيَ قَالَ يَا بُنَيَّ إِنِّي أَرَى فِي الْمَنَامِ أَنِّي أَذْبَحُكَ فَانظُرْ مَاذَا تَرَى قَالَ يَا أَبَتِ افْعَلْ مَا تُؤْمَرُ سَتَجِدُنِي إِن شَاء اللهُ مِنَ الصَّابِرِينَفَلَمَّا أَسْلَمَا وَتَلَّهُ لِلْجَبِينِوَنَادَيْنَاهُ أَنْ يَا إِبْرَاهِيمُقَدْ صَدَّقْتَ الرُّؤْيَا إِنَّا كَذَلِكَ نَجْزِي الْمُحْسِنِينَإِنَّ هَذَا لَهُوَ الْبَلَاء الْمُبِينُوَفَدَيْنَاهُ بِذِبْحٍ عَظِيمٍوَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِي الْآخِرِينَ}

   অর্থাৎ, অতঃপর সে (ইসমাঈল) যখন পিতা (ইবরাহীমের)র সাথে চলা-ফিরার (কাজ করার) বয়সে উপনীত হল, তখন ইবরাহীম তাকে বলল, ‘হে বেটা! আমি সবপ্নে দেখি যে, তোমাকে যবেহ করছি; এখন তোমার অভিমত কি দেখ।’ সে বলল, ‘আববা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, আপনি তা পালন করুন। ইনশাআল্লাহ, আপনি আমাকে ধৈর্যশীলরূপে পাবেন।’ অনন্তর পিতা-পুত্র উভয়েই যখন আনুগত্য প্রকাশ করল এবং ইবরাহীম তাকে যবেহ করার জন্য অধোমুখে শায়িত করল, তখন আমি ডেকে বললাম, ‘হে ইবরাহীম! তুমি তো স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করে দেখালে। আমি এভাবেই সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি। নিশ্চয় এটা এক সুস্পষ্ট পরীক্ষা। আর আমি তার পরিবর্তে যবেহ করার জন্য এক মহান জন্তু দিয়ে তাকে মুক্ত করে নিলাম। আর তার জন্য এ বিষয়টি পরবর্তীদের জন্য স্মরণীয় করে রাখলাম।[3]

   প্রকাশ যে, স্বপ্ন দেখে ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-এর ৩ সকাল উঁট কুরবানী করার কথা শুদ্ধ নয়।

‘‘ওরে হত্যা নয় আজ ‘সত্য-গ্রহ’ শক্তির উদ্বোধন!

এই দিনই মিনা-ময়দানে

পুত্র-স্নেহের গর্দানে

ছুরি হেনে খুন ক্ষরিয়ে নে’

রেখেছে আববা ইবরাহীম সে আপনা রুদ্র পণ!’’

[1] (সূরা মাইদাহ ২৭ আয়াত)

[2] (সূরা হাজ্জ ৩৪-৩৫)

[3] (সূরা সাফফাত ১০২-১০৮)

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

১টি মন্তব্য

  1. Dear Brother Assalamuwalaikum, can you know me that Name of Ismail alahiwasallam where mentioned. I have seen sura as- saffat ayat no 102-108 but i dont found the name of Ismail Alahiwasallam. there mentioned only the word ‘SON’. After these ayat the name mention Ishaq alahiwasallam.
    Dont mid brother i asked only for knowing.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button
skybet88 skybet88 skybet88 skybet88 mix parlay skybet88 slot bonus new member skybet88 skybet88 slot gacor skybet88 skybet88