“একটি অনন্ত জীবনের সন্ধান পেয়েছি”
বিষয়: ‘কেন আমি ইসলামকে ভালোবাসি…..’
লিখেছেন: তানজীর আলম (ছাত্র)
_______
“একটি অনন্ত জীবনের সন্ধান পেয়েছি”
.
ইসলামকে ভালোবাসার পেছনে আমার রয়েছে শতশত অনুভূতি । যার কিছু প্রকাশ করা গেলেও অনেকগুলোই প্রকাশ করা যায় না । তবুও কিছু অনুভূতি প্রকাশ করতে চাচ্ছি, যেগুলো হয়তো অন্য কারোর ভাবনার খোরাক হবে । ইন শা আল্লাহ্।
.
ইসলাম যে সঠিক জীবন বিধান তা আমি জীবনের প্রতিটি ধাপেই উপলব্ধি করি । এছাড়া এই ইসলামই কেবল অনন্ত জীবনের আশা দেখায়। তবে তা দুনিয়ার জীবন নয়, সে জীবন দুনিয়ার জীবনের পরই শুরু হয়।
.
মহান আল্লাহ তাআ’লা বলেন,
“তোমরা জেনে রাখ, তোমাদের পার্থিব জীবন ক্রীড়া-কৌতুক, সাজ-সজ্জা, পারস্পরিক গর্ব-অহংকার এবং ধন ও জনের প্রাচুর্য ছাড়া আর কিছুই না। (দুনিয়ার জীবনের উপমা হচ্ছে) যেমন এক বৃষ্টির অবস্থা, যার সবুজ ফসল কৃষকদেরকে চমৎকৃত করে, এরপর তা শুকিয়ে যায়, ফলে তুমি তাকে পীতবর্ণ দেখতে পাও, এরপর তা খড়কুটা হয়ে যায়। আর পরকালে আছে কঠিন শাস্তি এবং আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। (সাবধান!) পার্থিব দুনিয়ার জীবন প্রতারণাপূর্ণ ক্ষণস্থায়ী ভোগের সম্পদ ছাড়া আর কিছুই না।” [সুরা আল-হাদীদঃ ২০]
.
আল্লাহ কাউকে স্বাস্থ্য, সম্পদ, সৌন্দর্য, স্ত্রী-সন্তান দিয়ে পরীক্ষা করেন, আবার কাউকে এগুলো না দিয়ে পরীক্ষা করেন। এটা আল্লাহর ‘সুন্নাহ’ বা নীতি, যা দিয়ে তিনি মানুষদেরকে বিভিন্নভাবে পরীক্ষা করেন। তবে এই পরীক্ষা আমাদের হতাশার জন্য নয় বরং আমাদের পুরস্কার দেওয়ার জন্য।
.
স্বাভাবিকভাবেই আমরা যদি আমাদের স্কুল, কলেজ কিংবা মাদ্রাসার দিকে খেয়াল করি দেখবো পরীক্ষায় পাশ করার পরই কেবল সার্টিফিকেটে দেওয়া হয়। আর এই সার্টিফিকেটে দিয়েই সে তার পরবর্তী জীবনে স্বচ্ছলতা অর্জনের চেষ্টা করে। তদ্রূপভাবে আল্লাহর পরীক্ষায় পাশ করতে পারার মধ্যেও রয়েছে বিরাট পুরস্কার। আর এ পুরস্কার না পাওয়ার কোন সম্ভাবনাও নেই। কারণ দুনিয়াতে যেকোন সময় মৃত্যু আসতে পারে কিন্তু আখিরাতে মৃত্যুর কোন সম্ভাবনাই নেই।
.
তবে দুনিয়ায় পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে অনিশ্চিতভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হলেও আখিরাতের ক্ষেত্রে তেমন কোন অনিশ্চয়তা নেই। অর্থাৎ আখিরাতের পরীক্ষায় পাশ করার সকল প্রকার প্রশ্নপত্র ইসলাম দুনিয়াতেই দিয়ে দিয়েছে । আর এ বিষয়টা ভাবতেই ইসলামের প্রতি ভালোবাসা জেগে উঠে। কারণ ইসলাম থেকেই আমি একটি অনন্ত জীবনের সন্ধান পেয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ্।
.
আমাদের উদ্দেশ্যে মহান আল্লাহ তাআ’লা বলেনঃ
আ’উযু বিল্লাহিমিনাশ-শাইতানির রাযীম।
১৫২. সুতরাং তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদের স্মরণ রাখবো এবং আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর; অকৃতজ্ঞ হয়ো না।
১৫৩. হে মুমিন গন! তোমরা ধৈর্য্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চিয়ই আল্লাহ ধৈর্য্যশীলদের সাথেই আছেন।
১৫৪. আর যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়, তাদেরকে তোমরা মৃত বলো না। বরং তারা জীবিত, কিন্তু তোমরা তা বুঝতে পারোনা।
১৫৫. এবং অবশ্যই আমি তোমাদিগকে পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও ধৈর্যশীলদেরকে।
১৫৬. (ধৈর্যশীল হচ্ছে তারাই) যখন তারা বিপদে পড়ে, তখন বলেঃ “ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন” – নিশ্চয় আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তাঁরই কাছে ফিরে যাবো।
১৫৭. তারাই সে সমস্ত লোক, যাদের প্রতি আল্লাহর অফুরন্ত অনুগ্রহ ও রহমত রয়েছে এবং এসব লোকেরাই হচ্ছে হেদায়েত প্রাপ্ত।
[সুরা আল-বাক্বারাহঃ ১৫২-১৫৭]
.
স্বয়ং আল্লাহ যেখানে আমাদেরকে সব কিছু জানিয়ে দিয়েছেন এবং জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে তা প্রমানিত, সেখানে তাঁর মনোনীত একমাত্র দ্বীন ইসলামকে ভালোবাসা তো আমাদের জন্য অত্যাবশ্যক । আল্লাহ ইসলামের প্রতি আমাদের ভালোবাসা বৃদ্ধি করুন, আমাদেরকে ইসলাম পালনে সাহায্য করুন এবং জান্নাতীদের অন্তর্ভুক্ত করুন । (আমিন)