কুরআন, হাদীছ এবং হাদীছে কুদসীর মধ্যে পার্থক্য।

#কুরআন, হাদীছ এবং হাদীছে কুদসীর মধ্যে পার্থক্য*

—————————————————

কুরআন, হাদীছ এবং হাদীছে কুদসী সবগুলোই মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা ওয়াহী। তবে প্রত্যেকটির মাঝে কিছু পার্থক্য রয়েছে।

কুরআন ও হাদীছে কুদসীর মধ্যে পার্থক্য:

১. কুরআনের শব্দ ও অর্থ উভয়টিই মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে। হাদীছে কুদসীর অর্থ মহান আল্লাহর কিন্তু শব্দ রাসূল (ছাঃ)-এর।

২. সম্পূর্ণ কুরআন মুতাওয়াতির তথা রাসূলের পক্ষ থেকে সন্দেহাতীত ভাবে প্রতি যুগে হাজার হাজার মানুষ তা রিওয়ায়েত করেছে। হাদীছে কুদসী মুতাওয়াতির নয়; বরং হাদীছে কুদসী ছহীহ, জঈফ ও জাল সবই হতে পারে।

৩. কুরআন তিলাওয়াত করলে প্রতি হরফে দশ নেকী হবে কিন্তু হাদীছে কুদসী পাঠের নির্ধারিত কোনও নেকী নাই।

৪. কুরআন তিলাওয়াত একটি ইবাদাত যা ব্যাতীত ছালাত বিশুদ্ধ হয়না। হাদীছে কুদসী পাঠ করা এই রকম কোন ইবাদাত নয়।

৫. পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন সূরা ও আয়াত রয়েছে। হাদীছে কুদসীর কোন আয়াত ও সূরা নাই।

৬. পবিত্র কুরআনের ভাষা মুজিযা। কিয়ামাত পর্যন্ত দুনিয়া বাসীর জন্য চ্যালেঞ্জ। হাদীছে কুদসীর ভাষা মুজিযা নয়।

৭. আল কুরআনের কোন আয়াতই ভাবার্থের দৃষ্টিকোণ থেকে বর্ণিত হয়নি; বরং এর ভার্বাথ নকল করাকে নিষেধ করা হয়েছে। সুন্নাহর ক্ষেত্রে ভাবার্থ নকল করার অনুমতি দেয়া হয়েছে।

হাদীছ ও হাদীছে কুদসীর মধ্যে পার্থক্য:

১. হাদীছে কুদসীকে রাসূল (ছাঃ) মহান আল্লাহর দিকে নিসবাত করে বর্ণনা করেন। পক্ষান্তরে হাদীছকে মহান আল্লাহর দিকে নিসবাত করে বলেন না।

২. হাদীছে কুদসী সর্বদা কওলী হয়। হাদীছে কুদসী হচ্ছে রাসূলের মুখ দিয়ে নি:সৃত মহান আল্লাহর কথা। কিন্তু হাদীছ কওলী, ফে‘লী ও তাকরীরী হয়। তথা রাসূলের কথা যেমন হাদীছ তেমনি তার দৈনন্দিন কাজ ও মৌন সম্মতিও হাদীছ।

৩. হাদীছে কুদসী সাধারণত ভয়, আশা, মহান আল্লাহর সাথে বান্দার কথা ইত্যাদী বিভিন্ন গায়বী বিষয় নিয়ে হয়। হুকুম আহকাম নিয়ে হাদীছে কুদসী নাই বললেই চলে। পক্ষান্তরে হুকুম আহকাম হিসেবে হাদীছের বর্ণনা বেশী।

আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাযযাক
মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়, সউদি আরব।

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button