
বিয়ের অনুষ্ঠানে নাচ-গানের পরিণাম
বিয়ের অনুষ্ঠানে নাচ-গানের পরিণাম
অনুলীখন: মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী
ওয়েব সম্পাদনা : সম্পাদনা পরিষদ
বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা আমি খুব ভালবাসতাম। আমি এক ধার্মিক মহিলা ছিলাম এবং আমার স্বামীও খুবই পরহেযগার ছিল। সে আমাকে বিয়ের লাগামহীন আনন্দ উল্লাসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে নিষেধ করত এবং পরপুরুষের সাথে মিশতেও নিষেধ করত আর আমাকে আল্লাহর অসন্তুষ্টির বিষয় থেকে দূরে থাকতে বলত।
কিন্তু আমি একদিন কোন ভাবে এক অনুষ্ঠানে চলে গেলাম। অনুষ্ঠানে মেয়েরা, মহিলারা সুন্দর সুন্দর পোশাক পরিহিতা ছিল। তারা নাচ-গান করছিল। হৃদয়-কাড়া অঙ্গভঙ্গিতে ব্যস্ত ছিল। আমিও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারিনি। বোরকা খুলে নাচ-গানে অংশ নিলাম। আমি যেহেতু সুন্দরী-রূপসী ছিলাম এজন্য আমি চেয়েছিলাম সেখানের মহিলারা যাতে আমার প্রশংসা করে আর বাস্তবে তাই হল এবং তারা বলতে লাগল যে, আমি নববধূ থেকেও বেশি সুন্দরী। তাদের প্রশংসায় আমার ভেতরে সৌন্দর্যের অহংকার জন্ম নিল।
আজ আমি আমার স্বামীর কথা মানতে প্রস্তুত ছিলাম না। আমার স্বামী আমাকে এই হাদীসও শোনাতঃ
“যে মহিলা নিজের স্বামীর ঘর ছাড়া অন্য কোথাও নিজের পোশাক খুলবে সে তার এবং তার প্রভুর মাঝে যে পর্দা তা নষ্ট করল।” (আহমদঃ ৬/৪১, আবূ দাউদঃ ৩৭৫০, মুসতাদরেকে হাকিম, দারেমী ইত্যাদি।)
একদিন আমার স্বামী আরব উপসাগরীয় কোন দেশে ভ্রমণে গেল। সেখানে কোন এক অফিসে দুই যুবকের মাঝে এই বিষয়ে মতবিরোধ সৃষ্টি হল যে, এই অঞ্চলের দেশগুলোতে সবচেয়ে বেশি সুন্দরী মেয়ে কে?
এক যুবক তৎক্ষণাৎ এক ভিডিও ক্যাসেট উপস্থিত করল যা সে আমার দেশের কোন ব্যক্তি থেকে গোপনে অধিক দাম দিয়ে ক্রয় করেছিল। সেই ক্যাসেটে সেই অনুষ্ঠানের ভিডিও ছিল যাতে আমি অংশ নিয়েছিলাম। যখন যুবক ভিডিও ক্যাসেট চালু করল তখন আমার স্বামীর পায়ের নীচ থেকে মাটি সরে গেল। যাতে আমি নাচ-গান করছিলাম। আমার চুল এলোমেলো ছিল। আর আমার অর্ধবুক শুন্য ছিল। অফিসের লোকজন আমার সৌন্দর্য দেখে পাগল পারা হয়ে ইস-ইস করছিল এবং বিভিন্ন ধরনের কথা বলতে থাকে।
আর আমার স্বামীর ভিতর-ভিতর জ্বলে ছারখার হচ্ছিল, তার অভ্যন্তরীণ রাগ আরো ভয়ানক হচ্ছিল সে তৎক্ষণাৎ সফরের অন্য কাজ স্থগিত রেখে নিজ দেশে ফিরে এলো। বাড়ি এসে আমার সাথে প্রচন্ড লড়াই শুরু হল। এর ফল তাই হল, যা যে কোন নারীর জন্য খুবই দুঃখজনক ও কষ্টকর।
এখন আমি তালাকপ্রাপ্তা। আমার জীবন কঠিন সংকটাপন্ন অবস্থায় অতিবাহিত হচ্ছে। আমাকে পতিত হতে হয়েছে চির লাঞ্ছনা ও অপমানের জিন্দেগীতে। আর এখন আমি একা জীবনের কঠিন সময় অতিক্রম করছি। আমার মুহূর্তের ভুল সারা জীবনের আনন্দ ছিনিয়ে নিয়েছে।
একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে।