মহিলার কী অপূর্ব আল্লাহভীতি:
মহিলার কী অপূর্ব আল্লাহভীতি
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে তিনি বলেন, এক দুইবার বা পাঁচ – সাতবার নয়; বরং এর চেয়েও বেশিবার আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, বনী ইসরাঈলে কিফ্ল নামে এক ধনাঢ্য ব্যক্তি ছিল। সে কোনোরূপ গুনাহের কাজ ছাড়ত না। একবার এক মহিলা (অভাবে পড়ে) তার কাছে এল, সে ব্যভিচারের শর্তে তাকে ষাট দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) দিতে রাজী হল। (নিরুপায় হয়ে মহিলাটিও রাজী হয়ে গেল) কিফ্ল যখন (নির্জনে) ঐ মহিলার সাথে তার শর্ত পূরণে উদ্যত হল তখন মহিলাটি (আল্লাহর ভয়ে) প্রকম্পিত হয়ে কেঁদে ফেলল। লোকটি বলল, কাঁদছ কেন? তোমাকে কি আমি জবরদস্তি করছি? মহিলা বলল, না, তবে এ গুনাহের কাজ আমি কখনো করিনি। আজ শুধু অভাবের তাড়নায় এতে বাধ্য হয়েছি। লোকটি বলল, অভাবের তাড়নায় পড়ে এসেছ, অথচ কখনও তা করনি? যাও, তোমাকে ছেড়ে দিলাম। দিনারগুলোও তোমারই। সে আরো বলল, আল্লাহর কসম, ভবিষ্যতে আমিও কখনও আল্লাহর নাফরমানী করব না। সে রাতেই কিফ্ল মারা গেল। সকালে দেখা গেল তার ঘরের দরজায় লেখা –
أن الله قد غفر للكفل
আল্লাহ তাআলা কিফ্লকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। – (সুনানে তিরমিযী ২/৭৬)
সুবহানাল্লাহ একারণেই হাদীস শরীফে বলা হয়েছে, তাকওয়া হল অন্তরের বিষয়। অন্তরে খোদাভীতি থাকলে কর্মে তার প্রভাব পরিলক্ষিত হবেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ উম্মতকে এ প্রসঙ্গে একটি দু ’ আ শিখিয়েছেন- অর্থ হে আল্লাহ! আমার ভিতরকে আমার বাইরের চেয়েও সুন্দর করে দাও, আর আমার বাহিরকেও ভাল করে দাও।
এ পর্যায়ে আমরা হাদীসে বর্ণিত আরেকটি ঘটনা স্মরণ করতে পারি, যাতে আমাদের কাছে তাকওয়ার স্বরূপ আরো ভালভাবে স্পষ্ট হয়ে উঠে। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘পূর্বেকার যামানায় এক ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তি হতে এক খন্ড জমি ক্রয় করেছিল। জমি ক্রয় করে বুঝে নেওয়ার পর ক্রেতা ঐ জমিতে মাটির নীচে স্বর্ণ ভর্তি একটি কলসী পেল। তৎক্ষণাৎ ক্রেতা বিক্রেতাকে তা ফেরত নিতে অনুরোধ করে বললো, আমি তোমার থেকে শুধু জমি ক্রয় করেছি, স্বর্ণ ক্রয় করিনি। বিক্রেতা বলল, আমি জমি বিক্রয় করলেও তাতে বিদ্যমান সব কিছু এর অন্তর্ভুক্ত ছিল বিধায় সেগুলোতেও বিক্রির হুকুম সাব্যস্ত হয়ে গেছে। অতএব এ মাল আমার জন্য ফেরত নেওয়া বৈধ হবে না। অতঃপর তারা উভয়েই তৃতীয় এক ব্যক্তির দারস্থ হল এবং নিজেদের সমস্যার সমাধান চাইল। তিনি বললেন, তোমাদের কি ছেলে মেয়ে আছে ? একজন বলল, আমার একটি ছেলে আছে। অপরজন বলল, আমার একটি মেয়ে আছে। মীমাংসাকারী বললো, তোমার মেয়েকে তোমার ছেলের সাথে বিবাহ দিয়ে দাও আর প্রাপ্ত স্বর্ণের মধ্যে কিছু তাদের বিবাহে ব্যয় কর এবং অবশিষ্ট অংশ তাদেরকে বণ্টন করে দাও। – (সহীহ বুখারী ১ / ৪৯৪) কিতাবুল আম্বিয়া
আল্লাহ আমাদেরকে জাহেরী – বাতেনী সব ধরনের তাকওয়া দান করুন। আমীন ইয়া রাব্বুল আলামিন।
Inspireable