শবে বরাত সম্পর্কিত প্রচলিত ভ্রান্ত বিশ্বাস ও আমলঃ
শবে বরাত সম্পর্কিত প্রচলিত ভ্রান্ত বিশ্বাস ও আমলঃ
শবে বরাত যারা পালন করেন তারা শবে বরাত সম্পর্কে যে সকল ধারণা পোষণ করেন ও উহাকে উপলক্ষ করে যে সকল কাজ করে থাকেন তার কিছু নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ
তারা বিশ্বাস করে যে, শবে বরাতে আল্লাহ তা’আলা সকল প্রাণীর এক বছরের খাওয়া দাওয়া বরাদ্দ করে থাকেন। অর্থাৎ এই রাতে রিজিক লিল্পবদ্ধ করা হয়।
এই বছর যারা মারা যাবে ও যারা জন্ম নিবে তাদের তালিকা তৈরী করা হয়।
এ রাতে বান্দার পাপ ক্ষমা করা হয়।
এ রাতে ইবাদাত-বন্দেগী করলে সৌভাগ্য অর্জিত হয়।
এ রাতে কুরআন মাজীদ লাওহে মাহফুজ হতে প্রথম আকাশে নাযিল করা হয়েছে।
এ রাতে গোসল করাকে সওয়াবের কাজ মনে করা হয়।
মৃত ব্যক্তিদের রূহ এ রাতে দুনিয়ায় তাদের সাবেক গৃহে আসে।
এ রাতে হালুয়া রুটি তৈরী করে নিজেরা খায় ও অন্যকে দেয়া হয়।
বাড়ীতে বাড়ীতে এমনকি মসজিদে মসজিদেও মীলাদ পড়া হয়।
আতশবাযী করা হয়।
সরকারী- বেসরকারী ভবনে আলোক সজ্জা করা হয়।
সরকারী ছুটি পালিত হয়।
পরের দিন সিয়াম (রোযা) পালন করা হয়।
কবরস্থানগুলো আগরবাতি ও মোমবাতি দিয়ে সজ্জিত করা হয়।
লোকজন দলে দলে কবরস্থানে যায়।
মাগরিবের পর থেকে মাসজিদগুলি লোকে পরিপূর্ণ হয়ে যায়।
যারা পাঁচ ওয়াক্ত সালাতে ও জুমু’আয় মাসজিদে আসেনা তারাও এ রাতে মাসজিদে আসে। মাসজিদগুলিতে মাইক চালু করে ওয়াজ নাসীহাত করা হয়।
শেষ রাতে সমবেত হয়ে দু’আ-মুনাজাত করা হয়।
বহু লোক এ রাতে ঘুমানোকে অন্যায় মনে করে থাকে।
সারা রাত নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে একশত রাকাত, হাজার রাকাত ইত্যাদি সালাত আদায় করা হয়, কুরআন তিলাওয়াত করা হয়। ইত্যাদি।
লোকজন ইমাম সাহেবকে জিজ্ঞেস করে ‘হুজুর! শবে বরাতের সালাতের নিয়ম ও নিয়্যতটা একটু বলে দিন।’ ইমাম সাহেব আরবী ও বাংলায় নিয়্যাত বলে দেন। কিভাবে সালাত আদায় করবে, কোন্ রাকা’আতে কোন্ সূরা তিলাওয়াত করবে তাও বলে দিতে কৃপণতা করেননা।
যদি এ রাতে ইমাম সাহেব বা মুয়াজ্জিন সাহেব মাসজিদে অনুপস্থিত থাকেন তাহলে তাদের চাকুরী যাওয়ার উপক্রম হয়।
এই প্রচলিত আমল গুলোর মধ্যে কিছু কিছু আমল ভাল তবে ভ্রান্ত বিশ্বাসের কারনে ঐ আমল গুলো বিদআতে পরিনত হয়েছে। যেমন সারা রাত সালাত আদায় করা একটি ভাল কাজ কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এই ভাল কাজটি শুধু ঐ রাতে কেন? অন্য কোন সাধারন রাতে কেন করা হবে না?