
ভোগবাদ ও মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয়
পশুও তার বাচ্চাকে তার জীবন দিয়ে রক্ষা করে কিন্তু মানুষ কেন তার সন্তানকে হত্যা করবে? তাহলে প্রশ্ন জাগে মানুষ কি তাহলে পশুর থেকে অধম হয়ে গেছে? কেন এই অবস্থা ?
এসব জাহিলীয়াতের অনেক কারণ তার মধ্যে সবচেয় বড়টা হলো ভোগবাদীতা। ভোগবাদীতা মানুষকে পশু থেকে নিচে নামিয়ে দেয়। এই ভোগবাদীতার কারণে মানুষ এতই স্বার্থপর হয় যে দু টাকার জন্য বন্ধু বন্ধকে হত্যা করছে। সামান্য না পাওয়ার কারণে স্বামী স্ত্রীকে, বাবা মা সন্তানকে, সন্তান বাবা মাকে হত্যা করতে দ্বিধা করছে না । এই ভোগের আনন্দ আমাদেরকে পশু বানিয়ে দিয়েছে। তারপরও আমারা বলি আমরা সভ্য হচ্ছি। আসলে আমরা দিন দিন অসভ্য হচ্ছি সেই আদিম যুগে ফিরে যাচ্ছি । ভোগবাদি আনন্দ হলো পশুত্বের আনন্দ ।
এতে আছে শুধু নিজে খাও নিজে ভোগ কর । তুমি যদি পহেলা বৈশাখে আমাকে শাড়ি কিনে দিতে না পার তাহলে আমাকে দড়ি কিনে দিবা – কি বর্রতা ? আমরাও বানিজ্যিক স্বার্থপর মানুষ গুলোর স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে দেশ জাতি সমাজকে ধ্বংস করছি । আনন্দ, ভালোবাসা, ফুর্তির নামে আমরা বিভিন্ন দিবসের আয়োজন করে ভোগের আনন্দে মেতে উঠি । আমরা দেখায় পশ্চিমারা এগুলো করে সভ্য হয়েছে । আসলে এগুলো করে তারা সভ্য হয়নি ওরা (পশ্চিমারা) সভ্য হয়েছে মানবতার কারণে, ন্যায় বিচারের কারণে , গণতন্ত্রের কারণে, মানবাধিকারের কারণে ।
ওরা কর্ম করে কর্মে ফাঁকি দেয়না,। ওরা মানুষের হক আদায় করে, ওদের অনেক কারণে আল্লাহ ওদের নিয়ামত দিয়েছে। আর ওদের খারাপ দিক গুলো হলো মাদকতা, অশ্লিলতা এই কারণ গুলোতে তারাও ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আমরা ওদের অসভ্যতাকে সভ্যতার নামে নিচ্ছি আর অরিজিনাল সভ্যতা গুলোকে নিচ্ছিনা । সেগুলো কোন প্রচার নেই, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, মানুষের অধিকার, ন্যায় বিচার সেগুলোকে আমরা নিচ্ছি না আমাদের মিডিয়া গুলো সেুগুলো ততটা প্রচার করছে না। ওদের প্রেসিডেন্টের ছেলেও যদি অন্যায় করে তাহলে তাকে কোর্টে দাড়াতে হয়। কিন্তু আমাদের দেশে চামচার চামচা ও দশটা খুন করে ফেলে তার বিচার হয় না। দুর্নীতিতে সয়লাব কোন বিচার নাই । মিডিয়ায় সমাজপতি নীতিবিদরা বলেনা। তারা আমাদের সভ্য বানাচ্ছে ভেলেনটাইন ডে দিয়ে !! ভোগবাদীর মাধ্যমে পশুত্ব আসে, আমরা স্বার্থপর হয়ে যাই।
খুন, দুর্নীতি করে মানুষের উপর অত্যাচার চলে – একটা সরকারী চাকরির জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা ঘোষ দিতে হচ্ছে মানুষ এখন অসহায় । এটা হয়েছে ভোগবাদীতার কারণে আমাদের সভ্য মানুষেরা সমাজপতিরাও এখন দুর্নীতির বিরোদ্ধে বলে না । কারণ আদিপত্য বাদীরা সমাজ পতিদের ভোগের ব্যবস্থা করে দিয়েছে ফলে তারা ভাবছে আমিত আরামেই আছি কথা বলে লাভ কি ভোগ বিলাস গাড়ি বাড়িত পেয়েছি । ভোগবাদীতা যত বাড়বে আমাদের ঈমান তত দুর্বল হবে। গরুকে যেমন খাবার দিলে এরচেয়ে শান্তি প্রিয় নিরীহ প্রাণী আর হয়না ঠিক আমাদের অবস্থা এখন তাই হতে চলেছে।
এখন দুর্নীতি, ইসলাম, অশ্লীলতা অন্যায়, এগুলো তার চোখে পড়ে না। নো প্রবলেম ও খায় আর বলে আইম অল রাইট । আর ঈমানদার খায় আর খায় না ও ঈমানি চেতনা উজ্জিবিত করে অন্যায় দেখলে ব্যথা লাগে, দুর্নীতি দেখলে ব্যথা লাগে, ঈমানদার শুধু খাওয়া না, ওর অন্তরের শান্তি চায়। কাজেই এই ঈমান যেন বের হয়ে যায় এজন্য সাম্রাজ্যবাদী/আধিপত্য বাদীরা মুসলিমদের মাঝে খাও দাও র্ফুঁতি কর নীতি ও বিভিন্ন দিবসের নামে তাদের ঈমানি চেতনাকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
ইসলাম মানুষকে ভোগের আগে ত্যাগ করতে শিখায় । ত্যাগের আনন্দ বড় আনন্দ। আত্মতৃপ্তি আসে ত্যাগের মাধ্যমেই ভোগে নয়। আপনি যদি আপনার পাওয়া গুলো নিয়ে সন্তুষ্ট না হতে পারেন তাহলে আপনি হতাশ হবেন আর বিনিময়ে নিজেকে অশান্তির আগুনে পুড়াবেন। তাই আসুন আমরা আমাদের সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ দেই । বন্ধুরা আসুন আমরা সচেতন হই ও আমাদের চারপােশের মানুষকে এসব বিষয়ে সচেতন করি। আল্লাহ সুবাহানাহু তায়ালা সবাইকে হেফাজত করুন । (আমিন)
ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর লেকচার অবলম্বনে ও নিজে থেকে কিছু
লিখেছেনঃ বাকির হোসেন