দাড়ি রাখার পার্থিব ও দৈহিক উপকারিতা
এ প্রসঙ্গে মাওলানা আশেকে ইলাহী মিরাঠী (রহঃ) তাঁর স্বরচিত গ্রন্থ “ডারহী কী কদর ও হিকমত” এ চমৎকার লিখেছেন। তিনি বলেন, এখন দাড়ির ব্যাপারে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ধারণার প্রতিলক্ষ্য করুন । ইউনানী চিকিৎসা তো আগের থেকেই এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, দাড়ি পুরুষ জাতির জন্য সৌন্দর্য বর্ধক। গলা ও বক্ষকে ঠান্ডা ও গরম থেকেরক্ষাকারী । বর্তমানে ডাক্তারগণ আরো অন্য কথাও বলেছেন । একজন ডাক্তারলিখেছেন, সর্বদা দাড়িতে খুর চালালে চোখের শিরাগুলোর উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এতে চোখের জ্যোতি ক্রমশঃ ক্ষীণ হয়ে আসে। অন্য এক ডাক্তার লিখেছেন, নিম্নমুখী দাড়ি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর জীবানুকে দাড়ির ভিতরেঢুকতে প্রতিবন্ধতার সৃষ্টি করে, তাকে গলা বক্ষ পর্যন্ত অতিক্রম করতে বাধাদেয়।
যৌনশক্তি শুন্যের কোঠায় পৌঁছে
এক ডাক্তার লিখেছেন, যদি সাত সিড়ি পর্যন্ত কোন বংশের পুরুষদের মধ্যেদাড়ি মুন্ডানোর অভ্যাস চালু থাকে, তাহলে অষ্টম স্তরের সন্তান দাড়ি বিহীন হবে। এর কারণ, এর ফলশ্রুতিতে প্রত্যেক প্রজন্মে যৌনশক্তি হ্রাস পেতে পেতে অষ্টম জেনারেশনে একেবারে শূন্যের কোঠায় পৌঁছে যাবে ।
এটা কোন ডাক্তারের ভবিষ্যৎ বাণী নয় যে, জ্যোতিষ শাস্ত্রের সাথে সম্পর্কিত । বরং এটি একটি স্বাভাবিক নীতি । স্পষ্টভাষী শব্দ উচ্চারণ করতে সক্ষম কোন বাচ্চায দি বারবার কোন তোতলা ব্যক্তির অনুসরণ করতে থাকে, তাহলে অল্প কিছু দিনের মধ্যেই সে শিশু ও তোতলায় পরিণত হবে। তারপর সে যত চেষ্টা করুক না কেন কখনো তোতলামী ছাড়া কথা বলতে সক্ষম হবে না ।
আমেরিকান ডাক্তার চার্লচ হোমারের মন্তব্য
এ বিষয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত একটি চমকপ্রদ লেখা হচ্ছে আমেরিকার ডাক্তার চার্লচ হোমারের । তিনিবলেছেন, এক ব্যক্তি দাড়ি কামানোর জন্য বৈদ্যুতিক সুঁইজ আবিস্কার করার জন্য আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে শশ্র্যু মুন্ডাতে অযথা সময় ব্যয় না হয়। কিন্তু এ কথা আমার বুঝে আসে না, দাড়ির নামে মানুষ এতো ভীত সন্ত্রস্ত হয় কেন? এানুষ যখন মাথায় চুল রাখে, সাথে সাথে মুখে দাড়ি রাখতে অসুবিধা কি। মাথার কোন স্থান থেকে যদি চুল পরে যায় তাহলে মানুষ মাথায় টাক পড়ার জন্য লজ্জা বোধ করে। কিন্তু এটা খুবই হাস্যকর যে, সে নিজের সম্পুর্ণ চেহারাকে ইচ্ছাকৃত ভাবেই টাক বানাচ্ছে, বঞ্চিত করছে নিজেকে দাড়ি হতে।
এটা কতইনা লজ্জার বিষয়! দাড়ি পুরুষের জন্য সবচেয়ে উজ্জল চিহ্ন । পুরুষের চেহারায় দাড়ি চরিত্রে দৃঢ়তা, ব্যক্তিত্বে পূর্ণতা এবং নর-নারীর মাঝে ব্যবধান সৃষ্টি করে। এ দাড়ি ধীরতা ও বীরত্বের সাক্ষ্য বহন করে । কারণ, দাড়ি ছাড়া অন্যান্য চুল ও পশম মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে সবারই হয়ে থাকে। নারী জাতি দাড়িকে অত্যন্ত সম্মানের সাথে দেখে আন্তরিকভাবে । মানসিকভাবে দাড়িবিহীন পুরুষ অপেক্ষা দাড়িওয়ালা পুরুষদেরপ্রতি তারা বিশেষ অনুরক্ত। বাহ্যতঃ হয়তো তাদের নিকট দাড়ি ভাল লাগে না।কিন্তু এর কারণ শুধু এটিই যে, তারা ফ্যাশনের দাসী আধুনিক পোশাকের বাতিকগ্রস্তা। দুর্ভাগ্যবশতঃ বর্তমানে দাড়ি ফ্যাশনের দরবার হতে বিদায় নিচ্ছে।
গলাকে ঠান্ডা-গরমের আক্রমন থেকে রক্ষা করে
নাকেরমধ্যকার ও মুখের সামান্য পশমগুলো সুন্দর চালনির কাজ দেয় ক্ষতিকর ধূলা বালিমাটি এবং অনেক জীবানু নাকে মুখে এর কারণে প্রবেশ করতে পারে না। লম্বা ঘন দাড়ি গলাকে ঠান্ডা ও গরমের আক্রমন থেকে রক্ষা করে । অতঃপর ডাক্তার সাহেবআরো লিখেছেন যে, দাড়ি পুনরায় পৃথিবীতে ফিরে আসবে। সাথে সাথে ঐ প্রাধান্যমর্যাদাও ফিরে আসবে যা আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নর-নারী উভয়কে প্রদানকরেছেন। দাড়ি বিশিষ্ট ব্যক্তি আপন স্ত্রীকে খুব কমই পরিত্যাগ করে থাকে।শশ্র্যমন্ডিত ব্যক্তি সর্বদা আপন দাড়ির মর্যাদা রক্ষার চেষ্টা করে।
দাড়িতে এমন এক শান-শওকাত ও গাম্ভীর্য রয়েছে যা কেবল পুরুষদের জন্যই শোভাপায়। দাড়ি পুরুষের মান-মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখে এবং উন্নত করে । যে দাড়িনিয়ে ঠাট্রা করল সে যেন হযরত ঈসা (আঃ) এর প্রতিই ঠাট্রা করল। কারণ তিনিও দাড়ি রাখতেন ।
দাড়ি রাখার উপকারিতা
(১) দৃষ্টি শক্তি ঠিক তাকে।
(২) মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকা সহজ হয় । দাড়ির কারণে অবৈধ কাজে অংশ গ্রহণে লজ্জা বোধ হয় ।
(৩) একজন মুমিন হিসাবে পরিচিত হওয়া যায়। নতুবা মুমিন আর কাফির পার্থক্য করা মুশকিল হয়ে যায় ।
(৪) রাস্তা-ঘাটে বা অপরিচিত স্থানে মারা গেলে মুসলিম হিসাবে সসম্মানে তার গোসল ও দাফন কাফন নছীব হয়।
(৫) হাশরের ময়দানে রাসূলের উম্মত দাবি করা সহজ হবে এবং তাঁর সুপারিশ লাভের অছিলা হবে। এছাড়া আরো অনেক উপকার রয়েছে।
দাড়ি না রাখার ক্ষতিসমূহ
১.দৃষ্টি শক্তি হ্রাস পায় ।
২.সূরা কিরাআত সহীহ থাকলেও আযান ইকামতের যোগ্যতা থাকে না।
৩.নবীজীর অন্তরে আঘাত দেয়া হয়।
৪. অন্যান্য গুনাহ একবার করলে একবারই গুনাহ লেখা হয়। কিন্তু দাড়ি না রাখলে সর্বদাই গুনাহ লেখা হতে থাকে। কেননা এটা গুনাহে জারিয়ার অন্তর্ভুক্ত।
৫. কবরে মুনকার নাকিরের সওয়াল জাওয়াব কঠিন হয়ে দাড়ায় ।