ফরয সাওমের নিয়ত
হাফসা বিনতে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«مَنْلميُجْمِعِالصِّيامَقَبلَالفَجْرِفَلاصِيامَلَه»
“যে ফজরের পূর্বে সওমের নিয়ত করল না, তার সওম নেই”।
ইমাম নাসায়ি এভাবে বর্ণনা করেছেন:
«مَنْلميُبَيِّتْالصِّيامَقَبْلَالفَجْرِفَلاصِيامَلَهُ».
“যে ফজরের পূর্বে রাত থেকে সওম আরম্ভ করল না, তার সওম নেই”।[1]
আব্দুল্লাহ ইব্ন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বলতেন:
«لايَصُومُإِلَّامَنْأَجْمَعَالصِّيامَقَبْلَالفَجْرِ»رواهمالك.
“সওম রাখবে না, তবে যে ফজরের পূর্ব থেকে সওম আরম্ভ করেছে”।[2]
রাত থেকে সওম আরম্ভ করার অর্থ হচ্ছে: রাত থেকে সওমের দৃঢ় ও চূড়ান্ত নিয়ত করা, যে ফজরের পূর্বে সওমের দৃঢ় নিয়ত করল না, তার সওম হবে না।[3]
ইমাম তিরমিযি রহ. বলেন: আলেমদের নিকট এ হাদিসের অর্থ হচ্ছে: রমযান মাসে ফজরের পূর্বে যে সওম আরম্ভ করল না, অথবা রমযানের কাযা অথবা মান্নতের সওমে যে রাত থেকে নিয়ত করল না, তার সওম শুদ্ধ হবে না। হ্যাঁ, নফল সওমের নিয়ত ভোর হওয়ার পর বৈধ। এটা ইমাম শাফেয়ী, আহমদ ও ইসহাকের অভিমত।[4]
শিক্ষা ও মাসায়েল:
এক. সিয়ামে ইবাদতের নিয়ত করা জরুরী, যদি কেউ স্বাস্থ্য রক্ষা, ডাক্তারের পরামর্শ, পানাহারের প্রতি অনীহা বা অন্য কারণে খাদ্য ও স্ত্রীগমন থেকে বিরত থাকে, তার এ বিরত থাকা শরয়ি সওম গণ্য হবে না, সে এ কারণে সওয়াব পাবে না।
দুই. নিয়ত অন্তরের আমল, অতএব যার অন্তরে এ ধারণা হল যে, আগামীকাল সে সওম রাখবে, সে নিয়ত করল।
তিন. ওয়াজিব সওম যেমন রমযান, মানত ও কাফফারার ক্ষেত্রে পূর্ণ দিন তথা সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সওমের নিয়তে থাকা জরুরী। যে ব্যক্তি দিনের কোন অংশে সওমের নিয়ত করল, তার সওম পূর্ণ দিন ব্যাপী হল না, তাই তার সওম শুদ্ধ হবে না। এ জন্য ওয়াজিব সওমে সুবহে সাদিকের পূর্ব থেকে নিয়ত করা জরুরী।
চার. রাতের যে কোন অংশে ফরয বা নফল সওমের নিয়ত করা বৈধ। নিয়ত করার পর সওম পরিপন্থী কোন কাজ করলে নিয়ত নষ্ট হবে না, নতুন নিয়তের প্রয়োজন নেই।
তথ্যসুত্র :
[1] আবু দাউদ: (২৪৫৪), তিরমিযি: (৭৩০), নাসায়ি: (৪/১৯৬), ইব্ন মাজাহ: (১৭০০), আহমদ: (৬/২৮৭), সহিহ ইব্ন খুযাইমাহ: (১৯৩৩), এ হাদিসটি মওকুফ ও মারফূ উভয়ভাবে বর্ণিত আছে, তবে মওকূফ বর্ণনা অধিক বিশুদ্ধ।
[2] মুয়াত্তা মালেক: (১/২৮৮)
[3] তুহফাতুল আহওয়াযি: (৩/৩৫২)
[4] জামে তিরমিযি: (৩/১০৮)