দাওয়াতী কাজ না থাকার সমাজে কুপ্রভাব: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ
দাওয়াতী কাজ না থাকার সমাজে কুপ্রভাব প্রেক্ষিত বাংলাদেশ
গত পর্বগুলোতে আমরা দাওয়াতী কাজ করার সুফল ও দাওয়াতী কাজ করার গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচিত হয়েছে। এই দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ না থাকায় আমাদের সমাজে এর কুপ্রভাব ধরা পড়ছে। এছাড়াও যেটুকু দাওয়াতের কাজ হচ্ছে তাও তাওহীদের দাওয়াত না হয়ে বরং বিদআতের প্রচার কোন ক্ষেত্রে শিরকেরও দাওয়াত হচ্ছে। দাওয়াত কাজ না থাকায় সমাজের যে কুপ্রভাব চলছে তা সহজেই অনুমেয়।
দাওয়াতী কাজের অভাবে বর্তমানে আমাদের দেশে শতকরা ৯০ ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত হলেও এ দেশে ইসলামী হুকুম মেনে চলা হচ্ছে না শিক্ষায়, ব্যবসায়, অনুষ্ঠানে, দিবসে,লেন-দেনে, রাষ্ট্র ও সমাজ পরিচালনায়, আইনে, বিচারে, সাহায্যে, সেবায়,দানে, জবানে, আত্মীয়তায়,রাজনীতিতে, অর্থনীতিতে, সংস্কৃতিতে, নাটকে, সিনেমায়, গানে, রেডিওতে , টিভিতে, পত্র-পত্রিকায়, চাকুরীতে, বিয়েতে, ঘর-সংসারে, সন্তান পালনে, পোষাক-পরিচ্ছদে, আখলাক-চরিত্রে,যাকাতে,হাজ্জে, ঈমানে, আমলে প্রভৃতিতে। অথচ এসব বিষয় অবশ্যই ইসলামী বিধানুযায়ী করার জন্য অসংখ্য আয়াত ও হাদীসে জোর তাগিদ দেয়া হয়েছে।
আবার ইসলামের দাওয়াত দেয়া হলেও তা বিশেষ স্বার্থ বিষয়ে এবং তাওহীদের দাওয়াত না হওয়ায় আজ আমাদের দেশে প্রতিটি কোনায় রয়েছে শিরক ও বিদআতের চিহ্ন।
যেমন এদেশে রয়েছে লক্ষ লক্ষ মাজার, হাজার হাজার ভন্ড পীর, যেখানে সেখানে বেশ্যালয়, যুব সমাজ হয়েছে চরিত্রহীন, নেশার ছোবলে যুব সমাজ ধ্বংসের পথে, শতকরা ৯০ ভাগই বেনামাযী। শতকার ৯৫ ভাগ মুসল্লীরই সঠিকভাবে সলাতের (নামাযের) মাসআলা-মাসায়িল জানা ননেই। সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য নয় বরং ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিস্ঠানের জন্য ভিক্ষা করতে হয়। চোর ডাকাত-টাউট লোকদের নেতৃত্ব সব জায়গায় যুব সমাজকে সত ও ভবিষ্যতের যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য রাষ্ট্রীয়, সামাজিক এমনকি পারিবারিকভাবেও সঠিক তত্পরতা ও কর্মসূচী নেই। ঘুষ ছাড়া অফিসিয়াল কাজ হয না। সূদ ছাড়া বড় ব্যবসা করা যায় না। লাইসেন্স দিয়ে যিনাহ ও মদ বিক্রি হয়। তাই বর্তমান সমাজ নানা রকম পাপের কালিমায় কলূষিত ও বিজাতীয় কর্ম-কান্ডের সয়লাবে নিমজ্জিত। এমতাবস্থায় প্রতি নর-নারীর কর্তব্য ইসলামের নির্দেশকে অনুসরণ করা এবং তার প্রচার কাজ জোরেশোরে অবিরাম গতিতে চালিয়ে যাওয়া। অন্যথায় এ সমস্যাগুলি কি আপনা আপনিই ঠিক হয়ে যাবে ?