বই : তাওহীদ ও ঈমানের আসল রুপ
ইসলামের প্রধান রুকন বা ভিত্তি “তাওহীদ” তথা আল্লাহর একত্ব। এই বইটিতে তাওহীদের বিষয়াবলী লিপিবদ্ধ করা হলো কুরআন ও বিশুদ্ধ হাদীছের আলোকে। ইতোপূর্বে এ ধরনের তাওহীদী বই পুস্তক বাংলা ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে বলে আমার জানা নেই। যদিও ইসলামের অন্যান্য প্রসঙ্গে অনেক বই পুস্তক বিজ্ঞ আলিম-উলামাদের দ্বারা লিখিত রয়েছে যদিও সেগুলোও প্রমাদশূন্য নয়।
তাওহীদ বিষয়ক গ্রন্থাদি না থাকার কতিপয় কারণ নিম্নরূপ :
১। ভারত উপমহাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় তাওহীদ বা বিশুদ্ধ আক্বীদার নির্ভরযোগ্য বই পুস্তকের অপ্রতুলতা।
২। আল কুরআনের বিশুদ্ধ ব্যাখ্যা তথা ছহীহ তাফসীর গ্রন্থের যথেষ্ট অভাব। পক্ষান্তরে আক্বীদাগত, আশআরী ও মু’তাযিলী লেখকদের তাফসীর পাঠ্যতালিকাভুক্ত থাকা। যেমন: তাফসীর জালালাইন, বায়যাবী ও আল কাশশাফ প্রভৃতি।
৩। এ বিশাল এলাকার সিংহভাগ মুসলিম জনগণ আশআরী ও মাতুরূদী আক্বীদায় শিক্ষিত। ফলে অধিকাংশ সরকারী বেসরকারী মাদরাসায় “শারহু আক্বাইদ আন নাসাফীয়া” নামক একটি আকীদার গ্রন্থ সিলেবাসভুক্ত থাকে যার লেখক একজন আক্বীদতাগত আশআরী মতবাদের অনুসারী।
৪। হাদীসের জ্ঞান অন্বেষণে এবং শিক্ষাদানের ব্যক্তিগণ বিনা যাচাই বাছাই-এ তথা ছহীহ ও যঈফের তারতম্য না করে হাদীছ গ্রহণে অভ্যস্ত হওয়ায় ইসলামী আক্বীদায় বহু জাল বা বানোয়াট হাদীছের অনুপ্রবেশ ঘটে।
৫। এ বিশাল এলাকায় যুগ যুগ ধরে ছুফীবাদ বা পীরতন্ত্রের ব্যাপক প্রভাবের ফলে ইসলামী আক্বীদার আসল রূপরেখায় পরিবর্তন আসে। ফলে স্বচ্ছ ও নির্ভেজাল আক্বীদাধারী অপেক্ষা ভেজাল ও ত্রুটিপূর্ণ আকীদাধারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
উপরোক্ত কারণসমূহের প্রতি লক্ষ রেখে আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রয়াস। আশা করি গ্রন্থটি উপমহাদেশের বাংলা ভাষাভাষী বিপুল মুসলিম জনগোষ্ঠীর সঠিক ইসলামী আকীদা-বিশ্বাসে এক যুগান্তকারী ভূমিকা পালনে সহায়ক হবে ইনশাআল্লাহ।
বইটিতে ইসলামের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তাওহীদ বা খাটি ঈমানের উপর নাতিদীর্ঘ আলোচনা করা হয়েছে। যেহেতু আমাদের দেশে এ বিষয়ে লেখা পুস্তককাদীর সংখ্যা নিতান্তই অপ্রতুল, সেহেতু সর্ব শ্রেণীর মানুষ তথা ইসলামী শিক্ষিত, সাধারণ শিক্ষিত এবং স্বল্পশিক্ষিত লোক যেন ধর্মীয় মৌলিক বিষয়ে জ্ঞানার্জন করতে পারেন সেদিকে যথাযথ দৃষ্টি রাখা হয়েছে।
গ্রন্থটি প্রণয়নে যে সকল নিয়ম নীতির প্রতি মনোনিবেশ করা হয়েছে তা নিম্নরূপঃ
প্রথমতঃ তথ্যাদি সন্নিবেশের পর দলীল ও প্রমাণাদি উপস্থাপনের ক্ষেত্রে মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের বাণীকে সর্বোচ্চ স্থান দেয়া হয়েছে। ঐ সকল কুরআনী বাণীর প্রকৃত মর্ম ও উদ্দেশ্য নিরূপণে নির্ভরযোগ্য ও সঠিক তাফসীরসমূহের খণ্ড ও পৃষ্ঠা উল্লেখ করা হয়েছে।
দ্বিতীয়তঃ দলীল উপস্থাপনের ক্ষেত্রে পবিত্র কুরআনের পরই রাসূল (সাঃ)-এর সহীহ হাদীস উল্লেখ করা হয়েছে।
তৃতীয়তঃ আল-কুরআনুল কারীম ও সহীহ হাদীসের পর সাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈন, ইমাম চতুষ্টয় ও মুহাদ্দিসীনসহ প্রাচীন এবং নবযুগের ইসলামী মনীষীবৃন্দের উক্তি ও অভিমত উল্লেখ করা হয়েছে।
চতুর্থতঃ কোন বিষয়ে প্রয়োজনে একাধিক অভিমত উল্লেখ করে তাতে মাযহাব, দল ও মত নির্বিশেষে নিরপেক্ষভাবে কেবল দলীল প্রমাণ যাচাই সাপেক্ষে যে মতটি সঠিক ও গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে তাকেই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।
পঞ্চমতঃ বইটির ভাষা সহজ, সাবলীল এবং প্রাঞ্জল করার চেষ্টা করা হয়েছে। যাতে সর্বস্তরের লোক বইটি পাঠ করে সহজেই বুঝে উপকৃত হতে পারেন।
উল্লেখ্য যে, মুসলিম নর-নারী তাওহীদ পরিপন্থী কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে ক্ষণে ক্ষণে তারা বিভিন্ন বালা-মুসীবতে ও রোগে-শোকে আক্রান্ত হয়। সে কারণে তাদের করণীয় কার্যাবলী প্রাসঙ্গিকভাবে অত্র বইতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এক নজরে বইটি :
তাওহীদ ও ঈমানের আসল রুপ
রচনায় : যাকারিয়া বিন আলী
প্রকাশনায় : তাওহীদ পাবলিকেশন্স
পৃষ্ঠা : ৪৮০
সাইজ : ১৮ মেগাবাইট
ডাউনলোড করতে নিচের যেকোন একটি লিংক এ ক্লিক করুন