স্রষ্টার অস্তিত্ব

সৃষ্টিকর্তা কি সত্যিই আছেন ?

নাস্তিক: আপনি কি সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বে বিশ্বাসী !

মুসলিম: অবশ্যই ! কেননা পবিত্র কোরআন আমাদেরকে মহান সৃষ্টিকর্তার ব্যাপারে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে এভাবে,

ذٰلكم الله ربكم، لا اله الا هو، خٰلق كل شيء فاعبدوه، وهو علي كل شيء وكيل٥

“তিনিই আল্লাহ, তোমাদের ‘রব’ ৷ তিনি ছাড়া সত্য কোন ইলাহ নেই ! তিনিই সবকিছু সৃষ্টি করেছেন, সুতরাং কেবল তারই ইবাদত কর ৷ তিনিই সবকিছুর কার্যনির্বাহি ৷”( সূরা আন’য়াম ৬:১০২)

নাস্তিক: এমন কি হতে পারে না যে বিলিয়ন বিলিয়ন বছর সময়ের ব্যবধানে একটি অতীব ক্ষুদ্র জড় বস্তু থেকে একটি অতীব সরল কোষ, অতঃপর তা থেকে প্রাণের উদ্ভব হয়েছে ৷ আর এমনটিই আমার কাছে যৌক্তিক মনে হয় কারণ আমরা তাঁর প্রমাণ পাচ্ছি বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে সাদৃশ্য দেখে ৷ (দাবী-১)

মুসলিম: হা হা হা !

নাস্তিক: আপনি হাসছেন কেন ?

মুসলিম: আচ্ছা ভাই ! তুমিই বল, যদি কেউ বলে কাঠের পুতুল Store house এ পরে থাকতে থাকতে কালক্রমে বিশাল কর্মদক্ষতা সম্পন্ন রোবটে পরিণত হয়েছে তাহলে না হেসে কি করে পারি !

নাস্তিক: কি !

মুসলিম: ভাই ! রাগ করো না ৷ Just fun করলাম ! আসল ব্যাপার হলো কোষের গঠন অত্যন্ত জটিল যা নির্দেশ করে এটি কখনও অনিয়ণ্ত্রীত বিবর্তনবাদের মাধ্যমে স্রষ্টার কোনরকম হস্তক্ষেপ ছাড়া সৃষ্টি হতে পারে না।

নাস্তিক: যেমন ! ?

মুসলিম: যেমন আমরা যদি কেবল, কোষের গঠন (structure) ও এর প্রতিটি System এর কার্যকারিতা নিয়ে কথা বলি তাহলে বুঝা যাবে এটি একটি অতীব সুনিয়ন্ত্রিত পরিকল্পনার কৌশল যা অবনত মস্তকে একজন মহান সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বকে মেনে নিতে বাধ্য করে !

নাস্তিক: বুঝিয়ে বলুন !

মুসলিম: প্রাণীকোষ মূলত প্রধানত নিম্নোক্ত অংশগুলো নিয়ে গঠিত হয় ৷

১৷ প্লাজমা মেমব্রেন বা কোষঝিল্লি (plasma membrane)

২৷ সাইটোপ্লাজম (cytoplasm)

৩৷ নিউক্লিয়াস ( nucleus)

এর প্রতিটি অংশ অত্যন্ত জটিল ও সুপরিকল্পিত কাজের যোগান দিয়ে থাকে ৷ আবার প্রাণীভেদে রয়েছে এদের অবস্হা, গঠন ও কার্যাবলির ভিন্নতা ৷ এ ব্যাপারে সামান্য আলোচনা করলেই বুঝে আসবে ৷ যেমন—

প্লাজমা মেমব্রেন (plasma membrane):— কোষের বাইরের দিকে যে সূক্ষ্ম স্হিতিস্হাপক, প্রভেদ্য, লিপোপ্রোটিন নির্মিত যে পর্দা দ্বারা আবৃত থাকে তাকে প্লাজমা মেমব্রেন বা কোষঝিল্লি বলে ৷

কাজ: ১ ৷ কোষকে আবৃত রাখা ২৷ কোষের সজীব অংশকে রক্ষা করা ৩৷ কোষকে আকৃতি প্রদান করে ৪৷ কোষের ভেতরে ও বাইরে অংশের মধ্যে অভিস্রবনীয় প্রতিবন্ধকরূপে কাজ করে ৷ ৫৷ বিভিন্ন কোষাঙ্গাণু যেমন— মাইটোকন্ড্রিয়া, গলজি বডি ইত্যাদি সৃষ্টিতে সহায়তা করা ৬৷ এনজাইম ও অ্যান্টিজেন ক্ষরণ করা ৭৷ কোষের বাইরে থেকে নিউরোট্রেন্সমিটার, হরমোন প্রভৃতি রাসায়নিকরূপে তথ্য সংগ্রহ করা ৮ ৷ স্নায়ু উদ্দীপনা সংবহন করা ৷

এই প্লাজমা মেমব্রেন (plasma membrane) আবার কিছু বিশেষ অবস্হায় থাকতে পারে ৷ যেমন—

মাইক্রোভিলাই (Microvilli): কিছু প্রাণীকোষের বহিঃস্হ ঝিল্লি বর্ধিত হয়ে আঙ্গুলের মত অভিক্ষেপ তৈরি করে ৷ এই অবস্হাকেই মাইক্রোভিলাই বলা হয় ৷ একবচনে বলা হয় মাইক্রোভিলাস (Microvillas) ৷ প্রতি কোষে এদের সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার দেখা যায় ৷ বিশেষ করে অণ্ত্রের এপিথেলিয়াল কোষ ও বৃক্কের নেফ্রণে এগুলো দেখা যায় ৷ ফলে কোষের শোষণতল প্রায় ২৫ গুন বেড়ে যায় ৷ প্রতিটি মাইক্রোভিলাস অ্যাকটিন ও মায়োসিন তন্তুগুচ্ছ নিয়েসগঠিত হয় ৷

ডেসমোসোম (Desmosome): এপিথেলিয়াল টিস্যুতে দুটি ঘনসংলগ্ন কোষের প্লাজমামেমব্রেনের মাঝখানে সৃষ্ট টোনোফ্রাইবিল (tonofibril) নামক তন্তুসমৃদ্ধপ্লেটকে ডেসমোসোম (Desmosome) বলে ৷ ডেসমোসোম কোষ দুটিকে পরস্পর সংযুক্ত রাখতে সাহায্য করে ৷

ফ্যাগোসোম (phagosome): প্লাজমা মেমব্রেন থেকে সৃষ্ট ও বিচ্যুত এবং গৃহীত কঠিন বস্তুসহ আবরণীবদ্ধ সাইটোপ্লাজমীয় কণাকে ফ্যাগোসোম বলে ৷ প্রকৃতপক্ষে কিছু বিশেষ ধরনের কোষ (যেমন— লিউকোসাইট) কঠিন খাদ্যবস্তু গ্রহণ ও পরিপাক করে কোষকে সুস্হ রাখে ৷ এই প্রক্রিয়াকে ফ্যাগোসাইটোসিস (phagositosis) বলে ৷ আর এই প্রক্রিয়া প্রদর্শনকারী কোষকে ফ্যাগোসাইট (phagosite) বলে ৷

পিনোসোম (pinosome): প্লাজমা মেমব্রেন থেকে সৃষ্ট ও বিচ্যুত এবং গৃহীত তরল বস্তুসহ আবরণীবদ্ধ সাইটোপ্লাজমীয় কণাকে পিনোসোম বলে ৷ কিছু বিশেষ ধরনের কোষে (যেমন—মানুষের ডিম্বকোষ) পিনোসোম সংগঠিত হয় ৷ এসব কোষ প্লাজমা মেমব্রেন থেকে সৃষ্ট থলিকার ভেতর প্রয়োজনীয় তরল কণা গ্রহণ করে এবং পরে বিচ্যুত হয়ে সাইটোপ্লাজমে প্রবেশ করে ৷ এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় পিনোসাইটোসিস (pinositosis) বলে বলা হয় ৷ আর এই কোষগুলোকে বলে পিনোসাইট (pinosite ) ৷

২৷ সাইটোপ্লাজম (cytoplasm): প্লাজমা মেমব্রেনের ভেতরকার গোলাকার অংশটিব় বাদে ঈষৎ সচ্ছ, দানাদার ও সজীব বস্তুটির নাম হলো সাইটোপ্লাজম (cytoplasm) ৷

এটিও কোষের আরেকটি অন্যতম প্রধান অঙ্গ ৷ এর কার্যাবলির কথা না বলে শুধুমাত্র এর গঠন নিয়ে কথা বললেও বুঝে আসে তা কত বেশী জটিল !

কোষের এই অংশটি মূলত ২টি প্রধান অংশ নিয়ে গঠিত হয় ৷ যথা: ১৷ সাইটোসোল (cytosol) বা হাইয়াপ্লাজম (Hyaplasm) ২৷ অঙ্গাণু (organelles)

ঘনত্ব অনুযায়ী সাইটোসোল আবার ২ ধরনের তথা ১৷ এক্টোপ্লাজম (ectoplasm) ২৷এন্ডোপ্লাজম (endoplasm)

সাইটোপ্লাজমের অঙ্গাণুগুলো আবার প্রধানত ২ রকম ৷ যথা: ১৷ ঝিল্লিবদ্ধ কোষীয় অঙ্গাণু ২৷ ঝিল্লিবিহীন কোষীয় অঙ্গাণু ৷

ঝিল্লিবদ্ধ কোষীয় অঙ্গাণু আবার আবার ৭ প্রকার ৷ যথা:∇

১৷ মাইটোকন্ড্রিয়া (Mitochondria)

২৷ এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম (Endoplasmic Reticulam)

৩৷ গলগি বডি বা কম্প্লেক্স (Golgi Body or Golgi Complex)

৪৷ লাইসোসোম (Lysosome)

৫৷ ভ্যাকুওল (Vacuoles)

৬৷ পারক্সিজম (Peroxisome)

৭৷ ভেসিকল (Vasicles)

ঝিল্লিবিহীন কোষীয় অঙ্গাণু আবার ৬ প্রকার ৷ যথা: ∇

১৷ রাইবোসোম (Ribosome)

২৷ প্রোটিয়েসম (Proteasome)

৩৷ সেন্ট্রিওল (centriole)

৪৷ মাইক্রোফিলামেন্ট (Microfilaments)

৫৷ ইন্টারমিডিয়েট ফিলামেন্ট (Intermediate filaments)

৬৷ মাইক্রোটিউবিউল্স (Microtubules)

এছাড়া কোষের আরও একটি প্রধান ও জটিল গঠন ও কার্যাবলি সম্পন্ন নিউক্লিয়াস তো আছেই ৷

(☞বিস্তারিত পড়ুন: উচ্চ মাধ্যমিক জীববিজ্ঞান ২য় পত্র (প্রাণীবিজ্ঞান): গাজী আজমল ও গাজী আসমত , একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণী, অধ্যায় ২, পৃষ্ঠা ১১-৩১, ১৫ তম সংস্করণ: ২০১১ ইং )

এভাবে কোষের গঠন ও কার্যাবলি সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা বর্ণনা করলেও শেষ হবার নয় ৷ এই জটিলতাই সাক্ষ্য দিচ্ছে এর পেছনে রয়েছে এক মহান সৃষ্টিকর্তার সুপরিকল্পিত ও সুনিপুন কৌশল ৷ তাইতো মহাপবিত্র কোরআন বলছে,

ذلكم الله ربكم خٰلق كل شيء لا اله الا هو، فاني تؤفكون

“তিঁনিই সেই আল্লাহ, তোমাদের রব ৷ তিঁনিই সবকিছু সৃষ্টি করেছেন ৷ তিনি ছাড়া সত্য কোন ইলাহ নেই ৷ অতএব, তোমরা কোথায় বিভ্রান্ত হচ্ছো !?:”( সূরা গাফির ৪০:৬২)

(বিবর্তনবাদ সম্পর্কে আরও জানুন ‘বিবর্তনবাদ ও তাঁর সমস্যা’ নামক বইতে, বইটি প্রকাশ করেছে ইসলামিক অনলাইন মিডিয়া অথবা দেখতে পারেন Vance ferrel এর Science Vs Evolution নামক বইটি যেখনে তিনি বিবর্তনের বিপক্ষে প্রায় ৩০০০ টি প্রমাণ লিপিবদ্ধ করেছেন )

নাস্তিক: তাহলে সৃষ্টিকর্তা Appendix এর মত একটি অকেজো বস্তু কিভাবে সৃষ্টি করলেন যদি তাঁর অস্তিত্ব বিদ্যমান থাকে? (দাবী-২)

মুসলিম: তোমার কথার উত্তর দেওয়ার আগে বলে নেই যে, আমরা মুসলিমরা এটা কোনভাবেই মানিনা যে সৃষ্টিকর্তা অনর্থক কিছু করতে পারেন ৷ কেননা পবিত্র কোরআন বলছে:

ما خلقنهما الا بالحق ولكن اكثرهم لا يعلمون٥

“আসমান, যমীন ও এদুয়ের মধ্যবর্তী কোন কিছুই তিঁনি অনর্থক সৃষ্টি করেন নি ৷ কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না”( সূরা দূখান ৪৪:৩৯)

সুতরাং এই আয়াত খুব সুস্পষ্টভাবেই ব্যক্ত করছে যে সৃষ্টিকর্তা কখনই অনর্থক কিছু সৃষ্টি করতে পারেন না ৷ কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তাঁর জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারণে বিষয়টি বুঝতে সক্ষম হয় না ৷

এমন অনেক কিছুকেই মানুষ আপাত দৃষ্টিতে অকেজো জ্ঞান করে যেমন পরে থাকা গাড়ি, ঘরি, মেশিন ইত্যাদি ৷ কিন্তু জ্ঞানী যে সে ঠিকই একে কাজে লাগাতে পারে , এর ব্যবহার বুঝতে পারে ৷

যেমন তুমি Appendix এর ব্যাপারে বললে ৷ অথচ বর্তমান গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে এটি কিছু বিশেষ প্রাণীদেহে বিরাজ করে ৷ যার রয়েছে অত্যন্ত সুন্দর একটি কাজ ৷

মানুষের পরিপাকতণ্ত্রে হজমের জন্য প্রয়োজনীয় উপকারি ব্যাকটেরিয়াগুলো সরবরাহ করে এই Appendix ৷ কারও যদি বড় ধরনের ডাইরিয়া, কলেরা হওয়ার কারণে পরিপাকতণ্ত্র থেকে উপকারি ব্যাকটেরিয়াগুলো হারিয়ে যায় তখন Appendix সেই ব্যাকটেরিয়াগুলো পুনরায় জমা করে ৷ (☞ বিস্তারিত : প্রমাণসহ দেখুন Wikipedia তে ও Encyclopedia of Britanica র Anatomy বিভাগে)

(☞এছাড়াও দেখুন, বিবর্তনবাদ ও তাঁর সমস্যা, পৃষ্ঠা ১৭৭-১৭৮, প্রকাশনা: ইসলামিক অনলাইন মিডিয়া)

সুতরাং—

فباي الاء ربكما تكذبٰن ٥

” অতএব, তোমরা তোমাদের রবের কোন কোন অনুগ্রহকে অস্বীকার করবে ৷ “(সূরা রহমান ৫৫:১৩)

নাস্তিক: আচ্ছা ! তিনি যদি থেকেই থাকেন তাহলে মানুষ কেন নির্যাতিত হয় ? (দাবী— ৩)

মুসলিম: তার মানে তুমি বলতে চাচ্ছ স্রষ্টা জুলুম করে থাকেন ! তাহলে বলব তুমি ভূলের মধ্যে ডুবে আছো ! স্রষ্টার ব্যাপারে তোমার ধারণা একেবারেই শুদ্ধ নয় ৷

পবিত্র কোরআন বলছে, মহান আল্লাহ তাআলা বলেন,

ان الله لا يظلم مثقال ذرة ٥

” নিশ্চয়ই আল্লাহ কারও প্রতি বিন্দুমাত্রও জুলুম করেন না ৷”(সূরা নিসা ৪:৪০)

তোমাকে বুঝতে হবে এ পৃথিবীটা পরীক্ষার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে ৷ যেমন পবিত্র কোরআন বলছে, মহান আল্লাহ বলেন,

الذي خلق الموت والحياة ليبلوكم ايكم احسن عملا، وهو العزيز الغفور ٥

” তিনিই সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন যেন তোমাদেরকে পরীক্ষা করি কে তোমাদের মধ্যে কর্মে শ্রেষ্ঠ ৷ তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল ৷”(সূরা মূলক ৬৭:২)

সেজন্যই এই পরীক্ষার কেন্দ্রে যেমন জালিমের জুলুম করার স্বাধীনতা রয়েছে, ঠিক তেমনি ভাল লোকের ভাল কাজেরও স্বাধীনতা রয়েছে ৷

তবে এখানে জালিমকে স্বাধীনতা দেওয়ার অর্থই হচ্ছে ঢিল দেওয়া যেন তাঁর অপকর্ম আখিরাতে তাকে এক ভিষণ শাস্তির সম্মুখীন করে !

তুমি কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, সৃষ্টিকর্তা একদিন এইসব জালিমদের অত্যন্ত ভয়ংকর বিচারের সম্মুখীন করবেন এবং তাতে বিন্দুমাত্রও ছাড় দেয়া হবে না যেমন আমাদের নবী (صلي الله عليه وسلم) বলেছেন,

لتؤدن الحقوق الي اهلها يوم ااقيامة حتي يقاد الشاة الجلحاء من الشاة.القرناء—

“নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন প্রত্যেক হক্বদারের হক্ব আদায় করা হবে ৷ এমনকি শিংযুক্ত ছাগল থেকে শিংবিহীন ছাগলকে বদলা দেওয়া হবে ৷”( সহীহ মুসলিম, পর্ব ৪৬, অনুচ্ছেদ ১৫, হাদীস ২৫৮২)

সুতরাং

اليس الله باحكم.الحكمين ٥

“আল্লাহ কি বিচারকদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ নন ৷”(সূরা ত্বীন ৯৫:৮)

নাস্তিক: আচ্ছা ! আপনার কোরআন তো বলছে আল্লাহ কাফের অন্তরে মোহর মেরে দিয়েছেন, তাই না !

মুসলিম: Absolutely Right !

নাস্তিক: তাহলে সৃষ্টিকর্তা মানুষকে তাঁর পাপের জন্য কেন পাঁকড়াও করবেন যখন তিনিই তাঁর বোঁধশক্তিকে নষ্ট করে দিয়েছেন ? (দাবী-৪)

মুসলিম: খুবই সুন্দর প্রশ্ন ! তবে তুমি যদি ভাল করে কোরআন বুঝে পড়তে তাহলে এর উত্তর পেয়ে যেতে ৷

তুমি যে আয়াতটির ইঙ্গিত দিকে করলে সে আয়াতটি হলো:

ان الذين كفروا سواء عليهم اانذرتهم ام لم تنذرهم لا يؤمنون ٥ ختم الله علي قلوبهم وعلي سمعهم وعلي ابصارهم غشوة، ولهم عذاب عظيم ٥

“নিশ্চয়ই যারা কাফের তাদেরকে তুমি সতর্ক কর বা নাই কর তাদের জন্য উভয়ই সমান ৷ সুতরাং তারা ইমান আনবে না ৷

আল্লাহ তাদের অন্তর ও কানে মোহর মেরে দিয়েছেন এবং তাদের দৃষ্টির ওপর আবরণ রয়েছে ৷ আর তাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি ৷”( সূরা বাক্বারাহ ২:৬-৭)

এই আয়াত দুটিতেই তোমার উত্তর রয়ে গেছে ৷ যাদের অন্তর মোহর করে দেওয়ার কথা তুমি বলছ তাদের স্তর সম্পর্কে বলা হচ্ছে

سواء عليهم اانذرتهم ام لم تنذرهم

অর্থাৎ তাদেরকে বোঝানে বা না বোঝনো উভয়ই সমান ৷

সুতরাং এখানে কাফের মাত্রই অন্তরকে মোহর করে দেওয়ার কথা বোঝনো হয়নি বরং যাদের ব্যাপারে মহান আল্লাহ জানেন যে এদেরকে বোঝানো বা না বোঝনো উভয়ই সমান ,উক্ত আয়াতে তাদের অন্তরকেই মোহর করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ৷

ব্যাপারটা আরও ভাল করে বোঝা যায় নিম্নোক্ত আয়াতটি সামনে রাখলে

افرايت من اتخذ الهه هوه واضله الله علي علم وختم علي قلبه وسمعه وجعل علي بصره غشوة، فمن يهديه من بعد اللهّ افلا تذكرون ٥

“তুমি কি তাকে দেখেছ যে নিজ প্রবৃত্তিকে নিজের উপাস্য বানিয়ে নিয়েছেন আর (ফলে) আল্লাহ তাকে মূল জ্ঞান থেকে বঞ্চিত করেন আর তার অন্তর ও কানকে মোহর করে দিয়েছেন আর তাদের চোখের উপর পর্দা ফেলে দিয়েছেন ৷ অতএব আল্লাহর পর কে তাকে পথ দেখাবে ৷ তারা কি ভেবে দেখে না ৷”(সূরা জাসিয়াহ ৪৫:২৩)

নাস্তিক: সৃষ্টিকর্তা থাকলে কেন তিনি সবাইকে বিভিন্ন ধর্মে বিভক্ত করলেন? (দাবী- ৫)

মুসলিম: দেখ ভাই ! তোমাকে আগেই বলে রাখি, আমরা এটা মানিনা যে সৃষ্টিকর্তা মানুষকে বিভিন্ন ধর্মে বিভক্ত করেছেন ৷ কারণ পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলছেন,

ان الدين عند الله الاسلام—

” নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে একমাত্র গ্রহণযোগ্য দ্বীন হলো ইসলাম ৷ “(সূরা ইমরান ৩:১৯)

ومن يبتغ غير الاسلام دينا فلن يقبل منه، وهو في الاخرة.من الخسرين ٥

“আর যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোন জীবন ব্যবস্হ গ্রহণ করবে কাস্মীণকালেও তার কাছে থেকে তা গ্রহণ করা হবে না ৷ আর আখিরাতে সে হবে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভূক্ত ৷ “( সূরা ইমরান ৩:৮৫)

এছাড়া কোরআন আরও বলছে

فويل للذين يكتبون الكتٰب بايديهم ثم يقولون هذا من عند الله ليشتوا به ثمنا قليلا فويل لهم مما كتبت ايديهم وويل لهم مما يكسبون ٥

“আর দুর্ভোগ তাদের জন্য যারা নিজ হাতে কিতাব লিখে আর বলে এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত যাতে এর মাধ্যমে তুচ্ছমূল্য প্রাপ্তি হয় ৷ দুর্ভোগ যা তারা লেখে তার জন্য এবং দুর্ভোগ যা তারা উপার্জন করে তার জন্য ৷”( সূরা বাক্বারাহ ২:৭৯)

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বলেন,

يا معشر المسلمين كيف تسألون اهل الكتاب عن شيء وكتابكم الذي انزل الله علي نبيكم صلي الله عليه وسلم احدث الاخبار بالله محضا لم يشب وقد حدثكم الله ان اهل الكتاب قد بدلوا من كتب الله وعيروا فكتبوا بايديهم الكتب قالوا هو.من عند الله ليشتروا.بذالك ثمنا قليلا اولا ينهاكم ما جائكم من العلم عن مسألتهم فلا والله ما راينا يسألكم عن الذي انزل عليكم—

” হে মুসলিম সমাজ ! কিভাবে তোমরা আহলে কিতাবের কাছে জিজ্ঞেস কর ৷ অথচ তোমাদের নবী (صلي الله عليه وسلم) এর কাছে আল্লাহ যে কিতাব নাযিল করেছেন তা আল্লাহর সবচেয়ে উত্তম সংবাদ দেয় ৷ এই কিতাব সনাতন এবং সম্পূর্ণ নির্ভেজাল ৷ আর আল্লাহ তোমাদেরকে আহলে কিতাবদের ব্যাপারে জানিয়ে দিয়েছেন যে, তারা আল্লাহর কিতাবকে পরিবর্তন করেছে ৷ তারা নিজ হাতে কিতাব লেখে বলে ‘এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিল হয়েছে’ যেন এর মাধ্যমে তারা তুচ্ছমূল্যপ্রাপ্ত হতে পারে ৷ তোমাদের কাছে যে জ্ঞান এসেছে তা কি তোমাদেরকে তাদের কাছে (আল্লাহর) দ্বীনের ব্যাপারে জানতে নিষেধ করছে না ৷ আল্লাহর শপথ করে বলছি ! তাদের কাউকে আমি দেখি না যে তোমাদেরকে তোমাদের প্রতি নাযিলকৃত বিষয়ে প্রশ্ন করছে ৷ “(সহীহ বুখারী, অধ্যায় ৯৭: তাওহীদ পর্ব, অনুচ্ছেদ ৪২, হাদীস ৭৫২৩)

সুতরাং পবিত্র কোরআন ও হাদীস খুবই স্পষ্টভাবেই ব্যাক্ত করছে যে, আল্লাহর দ্বীন একটিই ৷ তবে কালক্রমে মানুষ আল্লাহর নাযিলকৃত বিষয় বা কিতাবকে পরিবর্তন করে দিয়েছে ৷ ফলে আল্লাহ যুগে যুগে নবী ও কিতাব পাঠিয়েছেন এবং সর্বশেষ নবী মুহাম্মদ (صلي الله عليه وسلم) এর মাধ্যমে তা পূর্ণতা দান করেছেন আর মহান আল্লাহ এই পরিপূর্ণ দ্বীনকে কিয়ামত পর্যন্ত হেফাজতের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন,

انا نحن نزلنا الذكر وانا له لحفظون ٥

“আমি নিজেই এই উপদেশ নাযিল করেছি এবং আমি নিজেই এর হেফাজতকারি ৷”( সূরা হিজর ১৫:৯)

ইসলামের সমালোচক হয়েও প্রায় ২০০ বছর আগে William Muir একথা স্বীকার করেন

“There is probably in the world no other work which has remained twelve centuries with so pure a text. The various readings are wonderfully few in numbers and are chiefly confined to difference in the vowel points and diacritical signs”

—এটি খুবই সম্ভাব্য একটি ঘটনা যে, পৃথিবীতে এমন কোন কাজ দেখতে পাও যায় না যা কোরআনের মত বিগত ১২০০ বৎসর যাবৎ খুবই মজবুতভাবে নিজ বিশুদ্ধতাকে ধরে রেখেছে ৷ বৈচিত্রময় পঠনের এক অপূর্ব সন্নিবেশ রয়েছে এতে, যার কিছু আছে ক্রমিক ধারায় এবং যার একটি বড় অংশ রয়েছে এর স্বরধ্বণীর ও বিরামচিহ্ণের বিভিন্নতাকে ঘিরে ৷

( ☞THE LIFE OF MAHOMET,London Edition: 1861, Volume:1, chapter 1: The Coran:—Introduction, page: 14-15 )

তাইতো কোরআন বলছে,

ذٰلك الكتب لا ريب فيه، هدي للمتقين ٥

“এটা সেই কিতাব যার মধ্যে কোন সন্দেহ নেই ৷ এটা মুত্তকীদের জন্য পথপ্রদর্শক ৷”( সূরা বাক্বারাহ ২:২)

নাস্তিক: আপনার কোরআন যদি এতই বিশুদ্ধ হয় বা (অন্যভাবে বললে) সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বকে প্রমাণ করে তাহলে পরস্পর বিরোধী কথা কিভাবে বলে ?

মুসলিম: যেমন ?

নাস্তিক: যেমন কোরআন বলছে ১ দিন সমান ৫০০০০ হাজার বছর এবং অন্য স্হানে বলছে ১০০০ বছর ! (দাবী—৬)

মুসলিম: আমি বুঝতে পারছি তুমি আসলে দুটি আয়াতের কথা বলছ ৷ আয়াত দুটি হল:

১ম আয়াত:

تعرج الملئكة والروح اليه في يوم كان مقداره خمسين الف سنة ٥

“ফেরেশতা ও রূহ আল্লাহর দিকে উর্ধ্বগামী হয় এমন এক দিনে যার পরিমাণ ৫০ হাজার বছরের সমান ৷”( সূরা মা’আরিজ ৭০:৪)

২য় আয়াত:

يدبر الامر من السماء الي الارض ثم يعرج اليه في يوم كان مقداره الف سنة مما تعدون ٥

“তিঁনি আকাশ থেকে পৃথিবী পর্যন্ত সমস্ত কার্য পরিচালনা করেন অতঃপর তা তাঁর দিকে উর্ধ্বগামী হয় এমন এক দিনে যার পরিমাণ তোমাদের গণনায় ১ হাজার বছরের সমান ৷ “(সূরা সেজদাহ ৩২:৫)

এ ব্যাপারে আলোচনা করার পূর্বে একটি হাদীসও উল্লেখ করা যাক ৷

সাহাবীগণ রাসূল (صلي الله عليه وسلم) কে দাজ্জ্বালের অবস্হানকালের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছিলেন ৷

নাওয়াস ইবনে সামআন (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,

……قلنا يا رسول الله صلي الله عليه وسلم وما لبثه في الارض قال اربعون يوما يوم كسنة ويوم كشهر ويوم كجمعة وسائر ايام كايامكم…

“আমরা বললাম: হে আল্লাহর রাসূল (صلي الله عليه وسلم) ! দাজ্জ্বাল পৃথিবীতে কতদিন অবস্হান করবে ? তিনি বললেন: ৪০ দিন পর্যন্ত ৷ যার একটি দিন হবে ১ বছরের সমান এবং ১টি দিন হবে ১ মাসের সমান এবং ১ টি দিন হবে এক সপ্তাহের সমান ৷ আর অবশিষ্ট দিনগুলোর তোমাদের দিনের মতই হবে ৷ “

(সহীহ মুসলিম, অধ্যায় ৫৪: বিভিন্ন ফিতনা ও কিয়ানতের লক্ষণসমূহ, অনুচ্ছেদ ২০, হাদীস ২৯৩৭, অধ্যায় ও হাদীসের নম্বর যুক্ত করেছেন ফুয়াদ আব্দুল বাক্বী)

সময়ের পার্থক্য নিয়ে বলা পবিত্র কোরআন ও হাদীসের এই কথাগুলো পরস্পর বিরোধী নয় বরং তা এক মহাসত্যকে নির্দেশ করে !

নাস্তিক: সেটা কেমন !?

মুসলিম: তরল গ্যাস দিয়ে তৈরি একটি একটি গ্রহের নাম হচ্ছে ইউরেনাস (URANAS) ৷ একে দেখতে হালকা নীল বর্ণের ংত দেখায় ৷ এর প্রায় ২২ টি চাঁদ রয়েছে ৷

এর ব্যাস: ৫১০০০ কি:মি:

সূর্য থেকে দূরত্ব: ২৯৫৮৬৯০০০০০ কি: মি:

এর বৎসর: পৃথিবীর ৮৪ বছরে

এর দিন: পৃথিবীর ১৭ ঘণ্টা ১৪ মিনিটে

একইভাবে বুধ গ্রহের (MURCURY) ১দিন হচ্ছে পৃথিবীর ৫৮ দিন ১৬ ঘণ্টা , শুক্র গ্রহের (VENUS) ১ দিন ২৪৩ দিন ৪ ঘণ্টা , বৃহস্পতি গ্রহের (JUPITER) ১ দিন পৃথিবীর গণনায় ৯ ঘণ্টা ৫০ মিনিটে ৷

(⇨বিস্তারিত দেখুন Wikipedia তে)

(⇨অথবা বিস্তারিত পড়ুন, আল কোরআন দ্যা ট্রু সাইন্স সিরিজ— ৪: কুরআন, মহাবিশ্ব, মহাধ্বংস, মুহাম্মদ আন্ওয়ার হুসাইন, পৃষ্ঠা ৮৪-১১৮, প্রকাশনা: রিসার্চ একাডেমী ফর কুরআন এন্ড সাইন্স, অনলাইন বুক: www.pathagar.com )

এই সমস্ত তত্ত্ব-উপাত্তের উপর ভিত্তি করে বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী আলবার্ট আইন্সটাইন সময়ের আপেক্ষিক তত্ত্ব প্রদান করেছেন যা Theory of Relativity নামে স্কুল ও কলেজের বইগুলোতে পড়ানো হয় ৷ যার গাণিতিক রূপ E=mc² ৷ (☞এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানুন Albert Einstein এর Relativity: The Special and General Theory নামক বই থেকে)

এই Theory of Relativity আজ একটি প্রতিষ্ঠিত সত্য যা গত শতাব্দীতে বিজ্ঞান আবিস্কার করেছে ৷ তাহলে কেন এমন জগত বা ঘটনা হওয়া সম্ভব নয় যার একদিন হবে পৃথিবীর গণনায় ৫০০০০ বছরের সমান বা ১০০০ বছরের সমান বা অনুরূপভাবে তা পৃথিবীর ১ বছর, ১ মাস ও ১ সপ্তাহের সমান হবে !

সুতরাং সময় নিয়ে বলা পবিত্র কোরআন ও হাদীসের উক্ত কথা গুলো মোটেও পরস্পর বিরোধী নয় বরং তা বিজ্ঞান আবিস্কারের অনেক আগে তথা ১৪০০ বছর আগে এক মহাসত্যের দিকে ইঙ্গিত দেয় এবং তা আরও ব্যাক্ত করে এই কথাগুলো একমাত্র তিনিই বলতে পারেন যিনি মহাপ্রজ্ঞাময়, যিনি আগে থেকেই সবকিছু জানতেন !

তিনি আর কেউ নন, বরং তিনি হলেন আমাদের একমাত্র মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তাআলা ৷

افلا يتدبرون القران ولو كان من غير الله لوجدواْ فيه اختلٰفا كثيرا ٥

” তবে কি তারা কোরআন নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করে দেখে না !? যদি এটা আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন কারও কাছ থেকে আসত তবে এতে অবশ্যই অনেক অসঙ্গতি থাকত !” (সূরা মায়িদাহ ৫:৮২)

নাস্তিক: আচ্ছা ! তাহলে আপনার কোরআন কি সুনির্দিষ্টভাবে সৃষ্টিকর্তার পরিচয় সম্পর্কে বলতে পারবে ? (দাবী – ৭)

মুসলিম: অবশ্যই ! পবিত্র কোরআন বলছে:

قل هو الله احد ٥ الله الصمد ٥ لم يلد ولم يولد ٥ ولم يكن له كفوا احد ٥

“বল, তিঁনিই আল্লাহ যিনি একক ও অদ্বিতীয় ৷ আল্লাহ কারও মুখাপেক্ষী নন ৷ তিঁনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কারও দ্বারা জন্মপ্রাপ্ত হননি ৷ এবং তাঁর সমতুল্য কেউ নেই ৷”( সূরা ইখলাস ১১২: ১-৪)

নাস্তিক: আচ্ছা ! সৃষ্টিকর্তা যদি সবকিছু সৃষ্টি করে থাকে তাহলে তাকে কে সৃষ্টি করল ? (দাবী- ৮)

মুসলিম: হা হা হা ……. ! তার মানে তুমি বলতে চাচ্ছ যদি আগুন গরম করে তবে আগুন কে হিটার দিয়ে গরম করল কে ?

অথচ তোমাকে একটু আগেই বলা হল যে

الله الصمد ٥

“আল্লাহ কারও মুখাপেক্ষী নন ৷ “(সূরা ইখলাস ১১২:২)

আর সৃষ্টি হতে গেলে অবশ্যই কারও না কারও মুখাপেক্ষী হতে হয় ৷

তোমাকে বুঝতে হবে যে, সৃষ্টিকর্তা এমন এক সত্তা যিনি তাঁর সৃষ্টি থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ৷

তাই তাঁর ব্যাপারে আরও বলা হয়েছে

ليس كمثله شيء

“তাঁর মত কোন কিছুই নেই ৷ “(সূরা শূরা ৪২:১১)

সুতরাং তোমার প্রশ্নটাই অযৌক্তিক !

আর এমন প্রশ্ন সম্পর্কে প্রায় ১৪৫০ বছর আগে রাসূল (صلي الله عليه وسلم) সতর্ক করে গেছেন আর সবচেয়ে উত্তম কথা শিক্ষা দিয়ে গেছেন !

আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (صلي الله عليه وسلم) বলেছেন,

لا يزال الناس يتساءلون حتي يقال هذا خلق الله الخلق فمن خلق الله فمن وجد من ذلك شيئا فليقل اٰمنت بالله—

” মানুষের মনে নানা প্রশ্নের উদয় হতে থাকে ৷ এমনকি এই প্রশ্নেরও সৃষ্টি হয় যে, এই বিশ্বজগত আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন তাহলে আল্লাহকে কে সৃষ্টি করল ৷ তোমাদের কারও ধারণা যখন এই পর্যন্ত পৌছে সে যেন বলে আমি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্হাপন করলাম ৷”(সহীহ মুসলিম, অধ্যায় ১: ইমান পর্ব, অনুচ্ছেদ ৬০, হাদীস ১৩৪)

অন্য বর্ণনায় আছে,

فاذا بلغ من شيئا ذلك فليستعذ بالله والينته

“যখন কারও ধারণা এ পর্যন্ত পৌছে সে যেন আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থণা করে এবং এমন ধারণা থেকে বিরত হয় ৷” (সহীহ মুসলিম, অধ্যায় ১: ইমান পর্ব, অনুচ্ছেদ ৬০, হাদীস ১৩৪, ২১৪/……)

সূত্র : http://peacemediafunction.blogspot.com

মেরাজুল ইসলাম প্রিয়

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button