মাদরাসা শিক্ষার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও সেগুলোর জবাব

মাদরাসা শিক্ষার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও সেগুলোর জবাব

– শাহাদাত হুসাইন

ইসলাম একমাত্র দ্বীন যেটি শিক্ষার ব্যাপারে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে। ইসলামী শিক্ষার পাশাপাশি জ্ঞান বিজ্ঞান শিক্ষাকেও গুরুত্ব দিয়েছে যা অন্য সকল ধর্মের থেকে আলাদা। মহানবী (সা)-এর উপর প্রথম যে আয়াত নাযিল হওয়ার মাধ্যমে নবুওয়্যাতের সূচনা হয় সেটি হলো “পড়”। এরপর ক্রমান্বয়ে ইসলামের প্রচার ও প্রসার হওয়ার সাথে সাথে ইসলামী শিক্ষার প্রসার ঘটে। এটা কখনোই থেমে থাকে নি। বরং উত্তোরত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। তার প্রতিশ্রুতিতে যুগে যুগে এমন সব জ্ঞানী ব্যক্তির আবির্ভাব ঘটেছে তা কল্পনাই করা যায় না। অন্য সব জাগতিক বুদ্ধিজীবীদের হার মানিয়েছে। ইসলামী শিক্ষার সমষ্টিগত শিক্ষার সূচনা হয়েছিল নবী (সা)-এর যুগে দারুল আরকামের মাধ্যমে। অনেকে একে প্রথম প্রতিষ্ঠিত মাদরাসা বলে থাকেন । এখানে নবী (সা) নারী-পুরুষ নির্বিশেষে ইসলামের প্রাথমিক ধারণার শিক্ষা দেন যেগুলোর উত্স ছিলো আল্লাহ প্রদত্ত ওয়াহী। এরপর ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকে। যারা শিক্ষা অর্জন করতো তারা শুধুমাত্র শিক্ষা গ্রহণ করেই চলে যেত না। সেই সাথে সেগুলো বাড়ীতে চর্চ্চা করতো এবং পরষ্পরকে শিক্ষা দান করা হতো। এর প্রমাণ উমার (রা) যখন ইসলাম গ্রহণ করেন তখন তিনি মুহাম্মাদ (সা)কে হত্যা করতে উদ্দত হন। এরপর পথে বেরিয়ে যান কিন্তু পথিমধ্যে জানতে পারেন যে, তাঁর বোন ও ভগ্নিপতি ইসলাম গ্রহণ করেছেন । তারপর তাদের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের মারধর করেন। তখন তারা কুরআনের আয়াত পড়ছিল। তাঁদের শিক্ষা দান করতে ছিলেন অন্য একজন সাহাবী। দেখুন, ইসলামের জ্ঞান অর্জনে তাদের স্পৃহা।

এরপর মদীনায় ইসলামী জ্ঞানের চর্চ্চার প্রধান কেন্দ্র হয় মাসজিদে নববী । মসজিদের নববী থেকে ওয়াহীর প্রচার ও প্রচার শুরু হয়। সেই সাথে সেগুলো পরষ্পরের মধ্যে বিনিময় হয়। শুধু জ্ঞান অর্জন নয়, সামগ্রিক সমস্যা সমাধানের বিষয়গুলোর উত্স ছিলো মাসজিদে নববী । কৃষি,বাণিজ্য, যুদ্ধ, ভ্রমণ, রাষ্ট্রচিন্তা, রাজনীতি প্রভৃতি শিক্ষার উত্স ছিলো মাসজিদে নববী।

ইসলামের শুরুতে মাসজিদ ভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা বিদ্যমান ছিলো । এই মাসজিদ ভিত্তিক ব্যবস্থা মক্তব নামে পরিচিত ছিলো। উনবিংশ শতাব্দীর আগ পর্যন্ত এই মক্তব শিক্ষা ব্যবস্থা ছিলো। পরবর্তীতে বৃটিশ আগ্রাসনে এই শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করার প্রচেষ্টা করা হয়। তবুও থেমে থাকেনি। তবে এই দুইয়ের মাঝামাঝি সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি একটি শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে উঠে সেটি হলো মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা। মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা সাধারণত তিনভাগে বিভক্ত।

  • ইসলামী শিক্ষার পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থা যেখানে প্রধানত  ইবতেদায়ী (১ম-৫ম শ্রেণী), দাখিল (৬ষ্ঠ – ১০ম শ্রেণী ), আলিম ( উচ্চমাধ্যমিক সমমান ), ফাযিল ( স্নাতক বা অনার্স সমমান ), কামিল ( স্নাতকোত্তর বা মার্স্টাস সমমান )।
  • ফুরকানিয়া মাদরাসা : এটা পরিপূর্ণ শিক্ষা ব্যবস্থা নয়। এটি অন্যান্য লেখাপড়ার পাশাপাশি কুরআন পড়তে শিখার জন্য এই ব্যবস্থা । এটি সাধারণ ছোট মাদরাসা বা মসজিদ ভিত্তিক হয়ে থাকে ।
  • ক্বাওমী মাদরাসা : এটা ইসলামের সাদৃশ্যপূর্ণ সর্বাধিক উত্তম শিক্ষা ব্যবস্থা। নূরানী, ক্বারীআনা, হিফজ থেকে দাওরায়ে হাদীস পর্যন্ত এই শিক্ষা ব্যবস্থায় ইসলামী শিক্ষার পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থা ।

 

এসব শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে শুধুমাত্র প্রথমটিতে সরকারের সহযোগীতা রয়েছে। তাও সম্পূর্ণ নয়। অন্যান্যগুলো সরকারীভাবে অনুমোদন নেই। ব্যক্তি ও সংগঠন পর্যায়ে সহযোগীতার মাধ্যমে কাজ চলছে।

ইসলামী শিক্ষা বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ইসলামের শুরুতেই ইয়াহুদী খৃষ্টান, পৌত্তলিক ও মূর্তিপূজকরা শুরু করেছে। তাদেরই প্ররোচনা অব্যাহতভাবে চলছে। যুগে যুগে এটা নতুন রুপ নিয়েছে। ইসলামের প্রাথমিক যুগে তারা বেশী সাফল্য অর্জন করতে না পারলেও তাদের এই অপপ্রচেষ্টা কখনোই থেমে থাকেনি। সেজন্যই এই ইয়াহুদী খৃষ্টান দ্বারা ইসলামের প্রথম যুগে ইসলামের অপব্যাখ্যা দাড় করিয়ে খারেজী, শিয়া, কাদরিয়া, জাবরিয়া, মুরজিয়া, জাহমিয়া, মুতাযিলী প্রভৃতি ভ্রান্ত দল সৃষ্টি করেছে। যারা ইসলামের সাথে নিজেদের দর্শনকে একীভূত করে নতুন মতবাদ তৈরী করেছে। পরবর্তীতে সূফিবাদের নামেও ইসলামকে বিকৃত করার প্রয়াস চলেছে যা এখনও বিদ্যমান । ইসলামী শিক্ষার বিরুদ্ধে তাদের এই যুদ্ধ দুই ভাবে চালিয়েছে তারা ইসলামী শিক্ষা সরাসরি বিরোধিতা করে নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা সৃষ্টি করেছে যা অত্যন্ত চাকচিক্যময়। এই চাকচিক্যতায় বিভ্রান্ত হয়েছে আমাদের মুসলিমরা ।আরেকভাবে তাদের এই সংগ্রাম চালিয়েছে তারা ইসলামী শিক্ষার মধ্যেই অনৈসলামিক শিক্ষা ঢুকিয়ে দিয়েছে। যা তারা জাল হাদীস, বিকৃত ব্যাখ্যা, সূফীবাদ এর মাধ্যমে প্রসার ঘটিয়েছে। কিন্ত এসবের বিরুদ্ধে একদল আল্লাহর সৈনিক সংগ্রাম চালিয়ে ইসলামী শিক্ষাকে অটুট রেখেছে।

তেমনই ইসলামী শিক্ষার বিরুদ্ধে একদল বুদ্ধিজীবী ( ?) ও তাদের সাথে সংযুক্ত ইয়াহুদী খৃষ্টানদের দালালরা ইসলামী শিক্ষার অন্যতম মাধ্যম মাদরাসার বিরুদ্ধে তাদের ষড়যন্ত্র শুধু গোপনে নয় প্রকাশ্যেও চালিয়ে যাচ্ছে । তারা আজ দাম্ভিকতার সাথে প্রচার করছে যে তারা মাদরসা শিক্ষার বিরুদ্ধে লেগে পড়েছে। তারা মাদরাসা ছাত্র কমানোর সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের এই জঘন্য কাজকে বৈধতা দেয়ার জন্য তারা বেশ কিছু অপপ্রচার ও অভিযোগ দাখিল করছে যেগুলোর কোন ভিত্তি নেই।  আজকের এই প্রবন্ধ তাদের এই অপপ্রচারগুলোর প্রতিবাদ ও সমুচিত জবাব দেবার প্রচেষ্টা।

তারা মাদরাসা শিক্ষার বিরুদ্ধে যেসব অপপ্রচার করছে সেগুলোর জবাব নিচে দেয়া হলো :

  1. আধুনিক শিক্ষার সাথে সামঞ্জস্যহীনতার অভিযোগ: এইসব নাস্তিক্যবাদী বুদ্ধিজীবীদের অভিযোগ যে, মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারছে না।  এটি যুগের সাথে বেমানান। এটা একটি মূর্খের মতো অভিযোগ। মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা সবসময়ই আধুনিক। কেননা এটা ওয়াহী ভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা যা নাযিল হয়েছে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে। এই ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার নীতিমালা এতোটাই আধুনিক যে, ৭ম-১২শ শতাব্দী পর্যন্ত মুসলিম বিজ্ঞানীরা যেসব আবিষ্কার করেছে বা যেসব তত্ত্ব দিয়েছে তা ইউরোপ আমেরিকার আবিষ্কার করতে ১৬-১৯শ শতাব্দী লেগেছে। শুধু তাই নয়, এই অসভ্য জাতিগুলো সভ্য হয়েছে এই মুসলিমদের বই পড়েই। যেসব তত্ত্বও আবিষ্কার করেছে তা মুসলিমদের থেকেই ধার করে। অথচ তারা ইসলামী শিক্ষা ব্যতীত ভিন্ন কোন শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষা অর্জন করে নি। তারা এই কুরআনকে গবেষণা করেই বিজ্ঞানের এই উন্নয়ন করেছিল। পরবর্তীতে যখন মুসলিমরা কুরআনকে ছেড়ে দিয়েছে সুন্নাহকে পরিত্যাগ করেছে তারা শুধু লাঞ্জিতই হয় নি তারা তাদের গর্বিত আসন হারিয়েছে। তারাই আজ সবচেয়ে অধপতিত জাতি।  তারা যদি আবার কুরআন সুন্নাহকে বুকে ধারণ করতো !
  2. মাদরাসা শিক্ষা সম্পূর্ণ সরকারী নিয়ন্ত্রিত নয় : এটা অভিযোগ রয়েছে যে এই শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ সরকারী অন্তর্ভূক্ত না হওয়ায় তা কিভাবে চলছে তা মনিটরিং করা সম্ভব হয় না। এই অভিযোগের জবাবে বলা যায় যে, এই দায় মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থার নয়, বরং সরকারের। কারণ সরকারেরই উচিত একটি নিরপেক্ষ বোর্ড গঠন করে সকল মাদরাসাকে আয়তাভূক্ত করা । এক্ষেত্রে সাধারণ মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে একীভূত করে একটি বোর্ডের আওতায় আনা হয়েছে। কিন্তু ক্বাওমী মাদারাসা ব্যাপারে সরকারের অনীহা।  এ ব্যাপারে আলেমগণের বোর্ডই সিদ্ধান্ত নেয়। সরকার এটাকে স্বীকৃতি দিয়ে মনিটরিং করতে পারে। কিন্তু মনিটরিং এর নামে এটাকে নিয়ন্ত্রিত করে অনৈসলামিক করার অপপ্রচেষ্টা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। যেমনটা সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থায় একটু একটু করে প্রবেশ করানো হয়েছে। যেমন সহশিক্ষা চালুকরণ, মাদরাসায় অমুসলিমদের চাকরি প্রদান, মাদরাসায় ছবি ঝুলানো বাধ্যতামূলক প্রভৃতি।
  3. বিজ্ঞানের সাথে দ্বন্দ্ব: এটা একটি বড় অভিযোগ যে, মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় বিজ্ঞান তেমন চর্চ্চা হয় না। এটারও দায় সরকারের। সরকার মাদরাসা নিয়ন্ত্রণের নামে এই সিলেবাসকে যখন তখন সংকুচিত করেছে আবার প্রসারিত করেছে। বিজ্ঞানের বিষয় থাকলেও শিক্ষক নিয়োগে তেমন এগিয়ে আসে নি। এমনকি বিদ্যালয়গুলোতে যেভাবে বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ করেছে তার তুলনায় মাদরাসায় এই সরবরাহ খুবই কম। মাদরাসা ছাত্ররা বিজ্ঞান চর্চ্চা বিমুখ নয় । বরং উত্সাহী । কিন্তু পর্যাপ্ত সুযোগ নেই।  গত কয়েকদিন আগে বার্ষিক স্কুল-মাদরাসা বিজ্ঞান বিষয়ক এক প্রতিযোগীতা রাজশাহীতে হয়ে গেলো। সেখানে যেসব প্রজেক্ট এসছিল তাদের মধ্যে একটি মাদরাসার প্রজেক্ট অনেক বেশী আকর্ষণ করেছে। তাই সরকার ও সংশ্লিষ্টদের সহযোগীতাই এই বিজ্ঞান মনষ্কতার বিকাশ করতে পারে। মুসলিম বিজ্ঞানীদের জীবনী যদি তাদের সিলেবাসে বেশী করে যুক্ত করা যায় এবং পড়ানো হয় তবে তারা আরও বেশী আগ্রহী হবে। সেই সাথে বিজ্ঞানের প্রসারও হবে।  কিছু কিছু বিষয়ে বিজ্ঞানের সাথে ইসলামের দ্বন্দ্ব আছে ঠিকই কিন্তু একটি কথা প্রাণিধানযোগ্য যে, বিজ্ঞানই চূড়ান্ত নয়, বরং ইসলামই চূড়ান্ত। ইসলাম অপরিবর্তনীয় , পক্ষান্তরে বিজ্ঞানের তত্ত্ব পরিবর্তনশীল যা এখনও চলছে।
  4. মৌলবাদ ও জঙ্গীবাদের অভিযোগ : যতগুলো অভিযোগ আছে তার মধ্যে এটা সবচেয়ে বেশী। এই অভিযোগটি মারাত্মক। অথচ এটা অপপ্রচার ছাড়া আর কিছু নয়। মাদরাসা শিক্ষা ইসলামী শিক্ষার রুপ। যেহেতু ইসলাম জঙ্গীবাদ সমর্থন করে না তাই এটা মাদরাসা শিক্ষা থেকেও আসা অসম্ভব। শুধুমাত্র একটি উদাহরণ থেকেই এই জঘন্য অভিযোগের অসারতা প্রমাণ করা সম্ভব। উপমহাদেশে ব্রিটিশদের মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার চালু করার আগে মক্তব ভিত্তিক শিক্ষা চালু ছিল। অথচ একটি দাঙ্গাও সারা ভারতবর্ষে সংগঠিত হয় নি। বরং এরপর প্রায় প্রতি বছর দাঙ্গা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।কারণ ইংরেজী শিক্ষায় শিক্ষিত ও আধুনিক হয়ে উভয় ধর্মের মানুষ বুঝতে শিখেছে যে, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ধর্মের সম্মান বাড়ে  (?) সে সাথে অন্যান্য লাভের সম্ভাবনা থাকে।  কওমী মাদরাসার দিকে যারা আঙ্গুল তুলেন তাদের বলছি, কওমী মাদরাসাগুলো সর্বদা ধর্মশিক্ষার পাশাপাশি অসাম্প্রদায়িক চেতনা লালন করে আসছে। ফলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সাথে তাদের কানেকশন থাকর প্রমাণ মেলা ভার। বরং সাম্প্রদায়িকতার কুতসিত খেলা ভারত উপমহাদেশে শুরু করেছে ইংরেজী শিক্ষিত আধুনিক লোকেরা। আর এ থেকে নোংরা ফায়দা নেয় রাজনীতিকরা ।  কওমী মাদরাসাগুলোতে ইসলামী শিক্ষার পাশাপাশি অন্য যে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে শেখানো হয় তা হচ্ছে নম্রতা-ভদ্রতা, শালীনতা-শিষ্টাচার। এ কারণে বর্তমান অবক্ষয়ের যুগেও কওমী মাদরাসার ছাত্রদের বখাটেপনার কোন দৃষ্টান্ত নেই। কওমী মাদরাসার যারা চরম বিরোধী তারাও স্বীকার করবেন যে, এ মাদরাসাগুলো কঠোর নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে পরিচালিত হয়ে থাকে।  সুতরাং এসব মাদরাসার কোন ছাত্রের পক্ষে জঙ্গী হওয়া অসম্ভব। তারা হালাল ইনকামের শিক্ষা পেয়ে থাকে।  তাই সুদ-ঘুষ, দুর্নীতি, অবৈধ উপার্জন, আত্মসাত, প্রতারণা প্রভৃতি অপরাধ তাদের মধ্যে সহজে গড়ে উঠে না। অথচ তারা অস্বচ্ছল পরিবার থেকে আসে। দেশের শীর্ষস্থানীয় কওমী মাদরাসা যেমন হাটহাজারী, পটিয়া, লালবাগ, যাত্রাবারী, বড়কাটরা, দক্ষিণ যাত্রাবাড়ী, ছারছিনা, গহরডাঙ্গা প্রভৃতি মাদরাসায় হাজার হাজার ছাত্র লেখাপড়া করে। এরা যদি জঙ্গী তত্পরতায় জড়িত থাকতো, তাহলে দেশে জঙ্গীর সংখ্যা হতো কয়েক লাখ। কিন্তু বাস্তবে এদের সংখ্যা অত্যন্ত নগণ্য।  সুতরাং কওমী মাদরাসার সাথে জঙ্গী কানেকশন খোঁজা হাস্যকর বৈকি ?   দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় দৈনিকের সহকারী সম্পাদক জনাব মেহেদী হাসান পলাশ একটি গবেষণামূলক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছিলেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, জেএমবি’র গ্রেফতারকৃত ৭২০ জন সদস্যের মধ্যে ৭% অশিক্ষিত এবং ৯৩% শিক্ষিত।  এই ৯৩% শিক্ষিত জেএমবির সদস্যদের মধ্যে আবার ৫৩% সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত ও ৪০% মাদরাসা শিক্ষায়। এই পরিসংখ্যান প্রমাণ করেনা যে, জঙ্গীবাদ উত্থানে মাদরাসা শিক্ষা দাযী। পেশাগতভাবে মাত্র ১৯% ইমাম, মুয়াযযিন ও মাদরাসা শিক্ষক, যা অন্যান্য পেশার থেকে অনেক কম।আবার মাদরাসা শিক্ষিত জেএমবি ছাত্রদের মধ্যে ৭৩% আলিয়া ধারা থেকে, কওমী ধারা থেকে ১৫% ও হাফেী ধারা থেকে মাত্র ১২%। ( দৈনিক ইনকিলাব, ১১মার্চ ২০০৭।পৃ:১ ) যারা কওমী মাদরাসাকে জঙ্গীবাদের আতুঁর ঘর বলে দাবী করে থাকেন, তারা যে বিভ্রান্তির মধ্যে আছেন তা সহজেই অনুমেয়। যদি বন্ধই করতে হয় তবে আগে সাধারণ শিক্ষার প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে হবে। কোন পাগলেও এই দাবী করবে না । এছাড়াও জেএমবির সাথে জড়িতদের মধ্যে ৬৫.২১ ভাগ মূলধারার ইহজাগতিক বা সেক্যুলার শিক্ষায় শিক্ষিত। এর মধ্যে ৩৬.৭৫ শতাংশ নিম্ন মাধ্যমিক স্তর অতিক্রম করেছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায় পার করেছে ১৯৩১৬ শতাংশ  এবং ৯.২৮ শতাংশ স্নাতক ও তদুর্ধ পর্যায় উর্ত্তীর্ণ হয়েছে। এর মধ্যে ৩৪ শতাংশ মাদরাসা শিক্ষিত। এদের মধ্যে মাত্র ৩.৭৫ ভাগ কওমী মাদরাসায় পড়েছে। ( দৈনিক যায় যায় দিন, ২৬ আগস্ট, ২০০৬খৃ: পৃষ্ঠা ১ ) এছাড়া বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্ররাজনীতির নাম করে যে দলাদলি ও পরষ্পর খুনাখুনি হয় তার মধ্যে কতগুলো মাদরাসায় ঘটেছে ? জঙ্গীবাদের নামে যত মানুষ মারা গেছে তার চেয়ে অন্তত কয়েকশ গুন মারা গেছে এই নোংরা রাজনীতি আর দলাদলি তে । যদি বন্ধ করতে হয় তবে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোকে আগে বন্ধ করতে হবে। বর্তমানে ছাত্র রাজনীতির নামে অপরাজনীতি এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অস্ত্রের কারখানা আর মাদকের অভয়ারণ্য বানিয়ে দিয়েছে। এ থেকেও কি সমালোচকদের শিক্ষা হবে না !
  5. মাদরাসায় পাশ করতে বেশী পড়তে হয় না : আরো একটি কমন অভিযোগ যে মাদরাসায় পাশ করা ছাত্র স্কুলের ছাত্রদের সাথে তাল মিলাতে পারে না। কারণ তারা কম পড়ে পাশ করে আসে। আসলে না জেনে শুনে কথা বললে যে ভুল বলা হয় তারা তাও ভুলে যান। মাদরাসায় বাংলা ইংরেজীর পাশাপাশি আরবী পড়তে হয়। আরবী সংক্রান্ত বই আরবী প্রথম পত্র, দ্বিতীয় পত্র, হাদীস, কুরআন মাজীদ । চারটি বিষয় বেশী পড়তে হয়।  অভিযোগ যে, ইংরেজী শুধুমাত্র ১০০ নম্বরের পরীক্ষা দিতে হয়। অথচ এতে প্রথম পত্র ও দ্বিতীয় পত্র দুটিই পড়া হয় । তবুও মাদরাসা ছাত্ররা ইংরেজীতে দুর্বল নয় ।কারণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা বাংলা, ইংরেজী,সাধারণ জ্ঞানে পরীক্ষা দিয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায়। এতে এই নাস্তিক্যবাদীরা হা হুতাশ করে মাদরাসা ছাত্রদের ঠেকানোর জন্য নতুন নিয়ম করে তাদের বাদ দেয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ এই বামপন্থী ও নাস্তিক্যবাদীদের পূর্বপুরুষরা  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্টার বিরোধিতা করেছিল। অথচ তারাই এখন হর্তাকর্তা হয়ে ইতিহাস ভুলে গিয়েছে। ভুলে গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি কে দান করেছিল ? তাদের অনুরোধ করবো ইতিহাস আবার পড়ুন। লজ্জা থাকলে ওই বামপন্থী ও নাস্তিক্যবাদীদের গোলামী বাদ দিন ।
  6. ইংরেজী ও গণিতে দুর্বল মাদরাসা ছাত্ররা : এই অভিযোগের জবাব ৫নং পয়েন্টে দিয়েছি। আরো বিশদভাবে বলছি যে, এটা শুধুমাত্র মাদরাসার ছাত্রদের দুর্বলতা নয়। আমি  নিজেও মাদরাসা ছাত্র নই। আমি জানি বাংলাদেশের অধিকাংশ ছাত্রেরই এই সমস্যা। কারণ এর পিছনে রয়েছে ভালা শিক্ষকের অভাব। একটি স্কুল বা মাদরাসায় দেখা যায় ভালো ইংরেজী বা গণিত শিক্ষক থাকলেও একজন বা দুজন। এমনকি অনেক গ্রামের এলাকা রয়েছে যে, পুরো ইউনিয়ন জুড়ে মাত্র একজন ভালো শিক্ষক। ছাত্ররা বহুদুর হতে ওই শিক্ষকের কাছে পড়তে যায় । আমি নিজেও গিয়েছি। মাদরাসায় ভালো শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয় না সরকারের পক্ষ থেকে । যেহেতু মাদরাসা শিক্ষা প্রতি তাদের শ্যেন দৃষ্টি। অতএব শুধু মাদরাসার দিকে আঙ্গুল না দিয়ে ভালো শিক্ষক নিয়োগের পাশাপাশি উত্তম প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হোক তা সকল প্রতিষ্ঠানেই। এক্ষেত্রে মাদরাসা বা স্কুল নিয়ে বিভাজন করা উচিত হবে না। তবেই উত্তম শিক্ষকের মাধ্যমে একটি সুন্দর ও অভিজ্ঞ প্রজন্ম পাওয়া যাবে।
  7. মৌলবাদের অভিযোগ : মৌলবাদ বা চরমপন্থার অভিযোগ জঙ্গীবাদের অভিযোগের মতোই । ইসলাম আমাদের মধ্যপন্থা অবলম্বন করতে শেখায় । তাই ইসলামে চরমপন্থা গ্রহণ নয় বরং মধ্যমপন্থী হয়ে ইসলাম পালন করতে হয়। তবে যখন কঠোর হতে হবে তখন এথেকে পিছু হটতে শেখায় না। মৌলবাদ বলতে এইসব বামপন্থীরা কি বুঝায় তা তারা নিজেরাও স্পষ্ট নয়। যদি মৌলবাদ খারাপই হয়ে থাকে তবে তারা বামপন্থী কমিউনিস্টদের বিরোধিতা করে না কেনো ? তারা তাদেরকে জঙ্গী বলে না। যাদের আদর্শ একই।  এসব ক্ষেত্রে তাদের মাথাব্যথা নেই । মৌলবাদ বলতে যদি মূল বিষয়কে আকড়ে ধরাকে বুঝায়, তবে মুসলিম মাত্রই মৌলবাদী। ইসলামে নিজের সুবিধার জন্য কোন কিছু ছাড় দেয়ার অবকাশ নেই। যদি সমস্যা থাকে তবে সেক্ষেত্রে কিছু অবকাশ রয়েছে। কিন্তু নিজেদের স্বার্থে দ্বীনকে বদলানোর  কোন অবকাশ নেই। ঈমান আক্বীদার ক্ষেত্রে অবশ্যই আমরা মৌলবাদী  আপনাদের উদারপন্থা অবলম্বন করতে গিয়ে নিজেদের ঈমানকে হারানোর কোন ইচ্ছা নেই ।
  8. দুনিয়া সম্পর্কিত জ্ঞানের অভাব : সাধারণত স্বল্পশিক্ষিতরা এই ধরণের অভিযোগ করে। যারা দ্বীনকে বাদ দিয়ে শুধুমাত্র দুনিয়া নিয়ে পড়ে আছে তাদের কাছ থেকে এরকম অভিযোগ অমূলক নয় । মাদরাসার ছাত্ররা শিখে যে, এই দুনিয়াই শেষ কথা নয়, এরপরেও জীবন আছে। তাঁকে ইহকালীন ও পরকালীন জীবন উভয়ক্ষেত্রে তাকে পাশ করতে হবে।  তাই দ্বীনকে দুনিয়ার চেয়ে প্রাধান্য দেয়ার শিক্ষা ইসলামেরই শিক্ষা । কিন্তু তাই বলে দুনিয়ার জীবনকে উপেক্ষা করার শিক্ষা দেয়া হয় না। দুনিয়াবী জীবনে সফল হয়েছেন মাদরাসা পড়ুয়া ব্যক্তিরা এমন ব্যক্তি অসংখ্য। আশেপাশে তাকালেই দেখা যাবে।
  9. ইসলাম পন্থী ও ডান পন্থী দলের সমর্থক : এই মন্তব্যটি অসত্য নয়। মাদরাসায় শিক্ষিতদের মধ্যে ডানপন্থীদল বা ইসলাম পন্থীদলের অনুসারী হওয়ার প্রবণতা বেশী। আসলে এই বিষয়টিই বামপন্থী ও ইয়াহুদীবাদীদের দালালদের গা জ্বলার কারণ। তাদের যত আক্রোশ এর মূল কারণ এটা। অথচ তাদের জানা উচিত ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বামপন্থী তথা নাস্তিক্যবাদী হবে এটা ভাবা কি বোকামী নয় ? যদিও আমাদের সমাজে ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েও দেখা যায় যে, ডানপন্থীদের বিরুদ্ধেও তারা অবস্থান করে । নতুবা বারবার আমাদের  দেশে ক্ষমতার পালাবদল হয় কিভাবে ? ইসলামী শিক্ষা মধ্যেও ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষা ঢুকিয়ে দেয়ার কারণে আমাদের সমগ্র সমাজই বিভ্রান্ত হয়ে বিজাতীয় মতবাদ তথা গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ, সমাজতন্ত্র, পূঁজিবাদ প্রভৃতি রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়েছে।  যা আসলেই হতাশা জনক। প্রকৃত ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত হলে এই সব বিজাতীয় মতবাদ এতো ছড়িয়ে পড়তো না।  সেই সাথে আমাদের জাতীয় বিভিন্ন ভ্রান্ত মতবাদ তো আছেই ।
  10. নৈতিকতা বিষয়ক প্রশ্ন : মাদরাসা শিক্ষায় শিক্ষিতদের নৈতিকতা বিষয়েও প্রশ্ন তুলা হয় । অথচ জরিপ করলে দেখা যাবে তাদের নৈতিকতার প্রভাব বেশী। তারা কম অপরাধ প্রবণ হয়ে থাকে।  কিন্তু মাদরাসা শিক্ষায় শিক্ষিত হলে সেটিকে বেশী ঢালাওভাবে প্রচার করা হয়।  যা সমাজের মানুষের মাঝে বাজে মনোভাব গড়ে উঠে । আজপর্যন্ত কওমী মাদরাসায় শিক্ষিত ছাত্রের বিরুদ্ধে ইভটিজিং এর অভিযোগ অপ্রতুল। অথচ সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিতদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ অহরহ।

যারা মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে শুনেই নাক ছিটকান বা সুস্পষ্ট ধারণা নেই। তাদের ধারণা দিতেই মাদরাসা শিক্ষার কিছু বৈশিষ্ট্যগুলো ( এখানে প্রধানত মাদরাসা ভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থার কথা তুলে ধরা হয়েছে যা দাখিল, আলিম, ফাযিল ও কামিল-এ বিভক্ত ) তুলে ধরা হলো :

  1. মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা হলো ইহকালীন ও পারলৌকিক জীবনের উপর আলোকপাত করে শিক্ষা ব্যবস্থা যা অন্য শিক্ষা ব্যবস্থায় পাওয়া যায় না।
  2. মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা হলো একই সাথে আরবী, বাংলা, ইংরেজী শিক্ষার সমন্বয়।
  3. জ্ঞান বিজ্ঞানের পাশাপাশি ইসলামী শিক্ষা সমন্বয়ে আধুনিক শিক্ষাপদ্ধতি ।
  4. রাজনীতিমুক্ত ও দলীয় আওতামুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাসে দলীয় কোন্দল বা অন্যদলের প্রতি আক্রমণ করার কোন নজির নেই মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থায়।
  5. সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিকতা, শিষ্টাচার, আদব-কায়দা প্রভৃতি শিক্ষার সুব্যবস্থা।
  6. অসাম্প্রদায়িক শিক্ষার ব্যবস্থা। কিন্তু এর নামে ইসলাম বিরোধীদের তাবেদারীর কোন ব্যবস্থা নেই।
  7. ইভটিজিং মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা।
  8. ঈমান ও আমলের বাস্তব প্রয়োগ ভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম।
  9. শুধু পারলৌকিক নয়, ইহকালীন জীবিকার জন্য তৈরী করার ব্যবস্থা।
  10. মুসলিম ভাতৃত্ত্ববোধ ও দেশপ্রেমের আদর্শে বলীয়ান ।

পরিশেষে, মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা ত্রুটি মুক্ত নয়। তবে এই সমস্যা সমাধানের উপায় বের করতে হবে। এসব সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে সরকার ও নেতৃত্ত্বস্থানীয়দেরই এগিয়ে আসতে হবে। মাথাব্যথা হলে মাথা কাটার প্রশ্নই আসে না। তেমনি মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।  যারা জঙ্গীবাদের ধূয়া তুলে মাদরাসা ছাত্র কমানোর আন্দোলনে নেমেছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলি, বাংলাদেশের তাওহীদী জনতা আপনাদের রুখে দিবে। যুগে যুগে যেভাবে এই ওয়াহীর দাওয়াতকে বেগবান করা হয়েছে সেভাবেই চলবে। আপনারা ইয়াহুদীবাদীদের দালালি করে কোন লাভ করতে পারবেন না। বরং ইহকাল ও পরকালই হারাবেন। এখনও সময় আছে তাওবাহ করে ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে প্রকৃত মুসলিমের মতো জীবন যাপনা করুন। যে ব্যক্তি এই কথা জোর গলায় বলেছেন দু:খের বিষয় হলো এটা তার প্রথম কথা নয় , এর আগেও একজন ইয়াহুদীর সাথে একটি রিসার্চ পেপারেও একই রকম মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন। জানিনা, তারা কি উদ্দেশ্যে কাজ করছেন আর কিইবা লাভ আমাদের দেশকে আন্তর্জাতিক সমাজে জঙ্গীবাদী দেশ হিসেবে প্রমাণ করার । আল্লাহ তাদের হিদায়াত দান করুন নতুবা তাদের ধ্বংস করুন। পরিশেষে এতোটুকু বলবো যে, ইসলাম শিখার জন্য মাদরাসায় পড়া অত্যাবশ্যক নয়। এটা একটি ব্যবস্থা যা শিশু থেকেই একটি সুন্দর পরিবেশ পাবে। মাদরাসা শিক্ষার আদলে স্কুল প্রতিষ্ঠাও হতে পারে। এরকম বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। আধুনিক শিক্ষা শিক্ষিতদের প্রতি আমার আহবান আপনারা এগিয়ে আসুন এমন প্রতিষ্ঠান গড়তে যার আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি ইসলামী শিক্ষাতেও দীক্ষিত করবে। অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ নিজের সন্তানকে সুশিক্ষিত করতে  ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থায় ভর্তি করে দিন। নিজের সবচেয়ে দুর্বল বা দুষ্ট সন্তানকে মাদরাসায় না দিয়ে মেধাবী সন্তানদেরকেও ভর্তি করে দিন। যা আপনার দ্বীন ও দুনিয়ার জন্য অধিক কল্যাণকর হবে । আল্লাহ আমাদের হাক্ব পথ দান করুন।

 

তথ্য ও উত্স :

 

আরো যারা সহযোগীতা করেছেন :

  1. শহীদুল্লাহ আল ফারুকী
  2. সাদমান চৌধুরী
  3. শোয়াইব আহমাদ  প্রমুখ ।

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button