মোহর পরিশোধ না করা এবং স্ত্রীর সংগে মিলনের প্রসঙ্গ
মোহর পরিশোধ না করে স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হলে সেটা কি যিনা হবে?
সংকলেন : মুহাম্মাদ আনিসুর রাহমান
বিবাহ মূলত একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি। এই চুক্তিতে নারীকে মোহর প্রদান করা পুরুষের জন্য জরুরি। মোহর প্রদান করা স্বামীর জন্য বাধ্যতামূলক, তবে বিয়ের আসরেই তাৎক্ষনিক মোহর পরিশোধ করা বিয়ে শুদ্ধ বা বৈধ হওয়ার জন্য শর্ত নয়।
বিয়ের মোহর তাৎক্ষনিক পরিশোধ করা যায়, সম্পূর্ণ বাকিতে পরিশোধ করা যায়, কিছু নগদ কিছু বাকি এভাবেও পরিশোধ করা বৈধ। মোট কথা, বিবাহের মোহর পরিশোধের সময়সীমার ব্যাপারে ইসলামী শরীয়তে বৈচিত্র্য ও প্রশস্ততা রয়েছে। তবে প্রায় সকল আলিমগণের মতে তাৎক্ষনিক মোহর প্রদান করাই হচ্ছে সবচেয়ে উত্তম পন্থা।
বিবাহের সময় যদি মোহরের পরিমাণ নির্ধারণ করা নাও হয়, তবুও বিবাহ শুদ্ধ বা বৈধ হিসাবে গণ্য হবে, আলহামদুলিল্লাহ। এখানে একটা বিষয় স্মরণে রাখতে হবে, যে বিয়েতে মোহরের পরিমাণ অনির্ধারিত; এরূপ বিয়েতে পরবর্তীতে উভয় পক্ষের সম্মতি ও সামাজিক রীতি অনুযায়ী মোহর নির্ধারণ করতে হবে এবং তা আদায় করে দিতে হবে।
মোহর স্ত্রীর অধিকার। তবে স্ত্রী সন্তুষ্টচিত্তে ও স্বেচ্ছায় স্বামীকে ছাড় দিলে সেই ছাড় গ্রহণ করা স্বামীর জন্য বৈধ। সুতরাং পারস্পরিক সম্মতিতে যদি মোহরের পুরোটাই নগদ কিংবা পুরোটাই বাকি অথবা মোহরের কিছু অংশ নগদ আর কিছু অংশ বাকি রাখতে সম্মত হয়, এতে শরিয়তের দৃষ্টিতে কোনো আপত্তি নেই।
তবে যেটা বাকি রাখা হবে, সেটা পরিশোধ করা ফরয। কারণ মোহর এক দিকে স্ত্রীর অধিকার (পাওনা), অন্যদিকে চুক্তি। কোনো স্বামী যদি তার স্ত্রীকে মোহর প্রদান না করে, তাহলে পরকালে সে ঋণের বোঝা নিয়ে উপস্থিত হবে। তবে বিবাহের বৈধতার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না। বৈবাহিক সম্পর্ক এবং এই বিবাহের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া সন্তানাদি বৈধ বলেই গণ্য হবে।
সাহল বিন সা’দ আস সাঈদী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট জনৈক মহিলা এসে বললো, হে আল্লাহর রাসুল! আমি নিজেকে আপনার নিকট (বিবাহের উদ্দেশ্যে) সমর্পণ করলাম। এরপর সে দীর্ঘক্ষণ দাড়িয়ে রইল (কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নীরব রইলেন)।
অতঃপর জনৈক ব্যক্তি দাড়িয়ে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আপনার যদি বিয়ের প্রয়োজন না থাকে, তবে তাকে আমার সাথে বিয়ে দিন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, তাকে মোহরানা দেয়ার জন্য তোমার নিকট কিছু আছে কি? সে বলল, আমার এই পরিধেয় বস্ত্র ছাড়া আমার কাছে আর কিছুই নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমার পরিধেয় বস্ত্র তাকে দিয়ে দিলে তো তোমাকেই ঘরে বসে থাকতে হবে, যেহেতু তোমার কাছে অন্য কোনো বস্ত্র নেই।
সুতরাং খুঁজে দেখ, কিছু পাও কিনা? সে বলল, আমি কিছুই পাচ্ছি না। তিনি আবার বললেন, খুঁজে দেখ, যদিও একটা লোহার আংটিও হয়। সে খোঁজ করল, কিন্তু কিছুই পেল না। এরপর সে ব্যক্তি বসে রইল। অনেকক্ষণ বসে থাকার পর উঠে গেল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন তাকে ডেকে পাঠালেন।
অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমার কি কুরআনের কিছু মুখস্থ আছে? সে বলল হ্যাঁ, আমার অমুক অমুক সূরা মুখস্থ আছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি কুরআনের যেটুকু মুখস্থ জানো, তা শিক্ষা দেওয়ার বিনিময়ে আমি তোমার সঙ্গে তাকে বিয়ে দিলাম। তুমি তাকে কুরআন শিক্ষা দাও। [শব্দ ও বর্ণনার পার্থক্য সহকারে বুখারী, ২৩১০, ৫০২৯, ৫০৩০, ৫০৮৭, ৫১২১, ৫১২৬, ৫১৩২, ৫১৩৫, ৫১৪১, ৫১৪৯, ৫১৫০, ৫৮৭১, ৭৪১৭; মুসলিম, ২৫৫৪-(ক)-(৭৬/১৪২৫); তিরমিযি, ১১১৪; আবু দাউদ, ২১১১; নাসায়ী, ৩২৮০, ৩৩৩৯, ৩৩৫৯; ইবন মাযাহ, ১৮৮৯; মুয়াত্তা মালিক, ১১১৮]
নোট: কুরআন শিক্ষা দেওয়াকে মোহর হিসাবে নির্ধারণ করা আলিমদের নিকট বাকিতে মোহর হিসাবে গণ্য। কারণ বিষয়টা সহজেই অনুমেয় যে, বিবাহ সংঘটিত হওয়ার সাথে সাথেই কুরআন শিক্ষা দেওয়া সম্ভব নয় বরং এর জন্য কিছুটা সময় প্রয়োজন। যখন মোহর হিসাবে কুরআন শিক্ষা দেওয়া শেষ হবে তখনই মোহর আদায় করা হয়েছে বলে গণ্য হবে।
ইমাম মালিক রাহিমাহুল্লাহ হাদীসটিকে ‘মোহর ও উপঢৌকন’ অধ্যায়ে নিয়ে এসেছেন। পর্ব ২৮ বিবাহ; অধ্যায় ৩ [তাওহীদ পাবলিকেশন্স]
ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ হাদীসটিকে ‘কুরআন শিক্ষা দেওয়ার বিনিময়ে এবং মোহর ছাড়া বিয়ে’ অধ্যায়ে বর্ণনা করেছেন। অধ্যায় ৬৭ বিয়ে; অনুচ্ছেদ ৫১ [হাদীস পাবলিকেশন্স]
এছাড়া ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ এই হাদীসটিকে ‘দরিদ্র ব্যক্তির বিয়ে করা বৈধ’ অধ্যায়েও বর্ণনা করেছেন। অধ্যায় ৬৭ বিয়ে; অনুচ্ছেদ ১৫ [হাদীস পাবলিকেশন্স]
ইমাম নববী রাহিমাহুল্লাহ সহীহ মুসলিমে ‘মোহর-কুরআন শিক্ষা, লোহার আংটি ইত্যাদি বস্তু কম বা বেশি মোহর হতে পারে এবং যার জন্য কষ্টকর না হয় তার জন্য পাঁচশত দিরহাম মোহর দেওয়া মুস্তাহাব’ অধ্যায়ে বর্ণনা করেছেন। পর্ব ১৬ বিবাহ; অধ্যায় ১২ [হাদীস একাডেমী]
ইমাম তিরমিযি রাহিমাহুল্লাহ এই হাদীসটিকে ‘মহিলাদের মোহরানার বর্ণনা’ অধ্যায়ে নিয়ে এসেছেন। অধ্যায় ৯ বিবাহ; অনুচ্ছেদ ২৩ [হুসাইন আল মাদানী প্রকাশনী]
ইমাম আবু দাউদ রাহিমাহুল্লাহ এই হাদীসটি ‘কাজের বিনিময়ে বিয়ে’ অধ্যায়ে বর্ণনা করেছেন। অধ্যায় ৬ বিবাহ; অনুচ্ছেদ ৩১ [হাদীস পাবলিকেশন্স]
ইমাম নাসায়ী রাহিমাহুল্লাহ হাদীসটিকে কুরআনের সূরা (শিক্ষা দেওয়ার) শর্তে বিবাহ দেওয়া’ অধ্যায়ে নিয়ে এসেছেন। পর্ব ২৬ বিবাহ; অধ্যায় ৬২ [হাদীস একাডেমী]
ইমাম ইবন মাযাহ রাহিমাহুল্লাহ এই হাদীসটিকে ‘মহিলাদের মোহর’ অধ্যায়ে নিয়ে এসেছেন। পর্ব ২৩ বিবাহ; অধ্যায় ১৭ [তাওহীদ পাবলিকেশন্স]
ইমাম ইবন হাজার আসকালানী রাহিমাহুল্লাহ ‘বুলুগুল মারামে’ এই হাদীসটিকে ‘কী দ্বারা বিবাহ সংঘটিত হয়?’ অধ্যায়ে নিয়ে এসেছেন। পর্ব ৮ বিবাহ [তাওহীদ পাবলিকেশন্স]
মোহরের পুরো অংশ অথবা কিছু অংশ নগদ বা বাকিতে প্রদান করা জায়েয। এটা সামাজিক প্রচলন এবং আচার-আচরণের উপর নির্ভর করে। তবে শর্ত হলো, বাকিতে আদায় করার সময়টা একেবারে অজানা হতে পারবে না। এবং সময়টা বেশি দীর্ঘও হতে পারবে না। কেননা এতে মোহর হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। [আল ফিকহুল মুয়াসসার, পৃষ্ঠা নং ৪৭১]
শাইখ মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম আত্তুয়াইজিরী বলেন: মোহরানা নগদ প্রদান করাই উত্তম। কিন্তু বাকি রাখাও জায়েয আছে। অথবা কিছু নগদ আর কিছু বাকি রাখাও জায়েয। যদি আকদের সময় মোহর পরিশোধ করা না হয়, তাহলে বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যাবে। নারী আকদের দ্বারা মোহরের মালিক হয় এবং পূর্ণতা লাভ করে স্বামীর সঙ্গে নির্জনে অন্তরঙ্গ হলে। [ইসলামী ফিকাহ, ১/৪৪৬ (সৌদি ছাপা]
নোট: উল্লিখিত বক্তব্যে আলিমগণের কেউই এ কথা বলেননি যে, বিবাহের মোহর তাৎক্ষনিকভাবে পরিশোধ করতে হবে কিংবা মোহর প্রদান ব্যতিরেকে স্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়া যিনা হিসাবে গণ্য হবে।
মোহর নির্ধারণ না করে সহবাসের পূর্বেই মারা গেলে সেই নারীকে স্বামীর সম্পদ হতে মোহর প্রদান করতে হবে: একদা জনৈক ব্যক্তি ইবন মাস’উদ রাদিয়াল্লাহু আনহুকে জিজ্ঞেস করলেন, এক ব্যক্তি মোহর নির্ধারণ না করে বিয়ে করেছে এবং স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হওয়ার পূর্বেই মৃত্যুবরণ করেছে, শরীয়তে এর বিধান কী?
তিনি বললেন: এমতাবস্থায় সেই নারী তার পরিবারের অন্যান্য নারীদের সমপরিমাণ মোহর পাবে, সে ইদ্দত পালন করবে এবং স্বামীর সম্পদের উত্তরাধিকারিণী। এমন সময় মাকিল ইবন সিনান রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বিরওয়া বিনতু ওয়াশিক রাদিয়াল্লাহু আনহা সম্পর্কে অনুরূপ ফয়সালা দিতে শুনেছি। [তিরমিযি, ১১৪৫; আবু দাউদ, ২১১৪, ২১১৬; নাসায়ী, ৩৩৫৪, ৩৩৫৫, ৩৩৫৬, ৩৩৫৮; ইবন মাযাহ, ১৮৯১; বুলুগুল মারাম, ১০৩১; আল আলবানী সহীহ বলেছেন]
ইমাম তিরমিযি রাহিমাহুল্লাহ এই হাদীসটিকে ‘বিয়ের পরে সহবাস ও মোহর নির্ধারণের আগে স্বামী মৃত্যুবরণ করলে’ অধ্যায়ে নিয়ে এসেছেন। অধ্যায় ৯ বিবাহ; অনুচ্ছেদ ৪৪
ইমাম আবু দাউদ (রহ,) হাদীসটিকে ‘কেউ মোহর নির্ধারণ ছাড়া বিয়ে করার পর মারা গেলে’ অধ্যায়ে বর্ণনা করেছেন। অধ্যায় ৬ বিবাহ; অনুচ্ছেদ ৩২
ইমাম নাসায়ী রাহিমাহুল্লাহ এই হাদীসটিকে ‘মোহর ছাড়া বিবাহের বৈধতা প্রসঙ্গ’ অধ্যায়ে নিয়ে এসেছেন। পর্ব ২৬ বিবাহ; অধ্যায় ৬৮
ইমাম ইবন মাযাহ রাহিমাহুল্লাহ এই হাদীসটিকে ‘কোনো ব্যক্তি বিবাহ করার পর মোহর ধার্য করার পূর্বে মারা গেলে’ অধ্যায়ে নিয়ে এসেছেন। পর্ব ৯ বিবাহ; অধ্যায় ১৮
ইমাম ইবন হাজার আসকালানী রাহিমাহুল্লাহ ‘বুলুগুল মারামে’ এই হাদীসটিকে ‘স্ত্রীর মোহরানা নির্ধারণের পূর্বে স্বামী মারা গেলে’ অধ্যায়ে নিয়ে এসেছেন। পর্ব ৮ বিবাহ
মোহর নির্ধারণ ব্যতিরেকেই এক সাহাবী রাদিয়াল্লাহু আনহু বিয়ে করেছিলেন এবং মোহরানাস্বরূপ কিছুই পরিশোধ করেননি। পরবর্তীতে জীবনের শেষ মুহূর্তে তিনি মোহর পরিশোধ করেছেন:
উকবাহ বিন আমির রাদিয়াল্লাহু আনহুর সুত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন: একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তিকে বললেন, আমি তোমার সঙ্গে অমুক মহিলার বিয়ে দিতে চাই, তুমি কি এতে রাজি আছ? সে বলল, হ্যাঁ। এরপর তিনি উক্ত মহিলাকে বললেন, আমি তোমাকে অমুক লোকের সঙ্গে বিয়ে দিলে তুমি কি রাজি হবে? সে বলল, হ্যাঁ। অতঃপর তারা বিবাহ সম্পন্ন হলো। কিন্তু তার জন্য কোনো মোহর নির্ধারণ করেননি এবং তাকে কিছু প্রদানও করেননি।
সেই সাহাবী রাদিয়াল্লাহু আনহু হুদায়বিয়াতে উপস্থিত ছিলেন। হুদায়বিয়ায় উপস্থিত সকলকে খায়বারের এক এক অংশ দেওয়া হয়েছিল। অতঃপর লোকটির মৃত্যুর সময় উপস্থিত হলে সে বলল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে অমুক নারী সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন, অথচ আমি তার জন্য কোনো মোহর নির্ধারণ করিনি এবং তাকে কিছুই প্রদান করিনি।
সুতরাং আমি আপনাদের সাক্ষী রেখে বলছি যে, আমার খায়বারের অংশটুকু আমি তাকে মোহরানা বাবদ প্রদান করলাম। অতঃপর ঐ মহিলাটি তা গ্রহণ করে এবং তা এক লক্ষ মুদ্রার বিনিময়ে বিক্রয় করেন। [আবু দাউদ, ২১১৭; আল আলবানী সহীহ বলেছেন]
ইমাম আবু দাউদ রাহিমাহুল্লাহ হাদীসটিকে ‘কেউ মোহর নির্ধারণ ছাড়া বিয়ে করার পর মারা গেলে’ অধ্যায়ে বর্ণনা করেছেন। অধ্যায় ৬ বিবাহ; অনুচ্ছেদ ৩২
মোহরের পরিমাণ নির্ধারণ ব্যতিরেকেই বিবাহ শুদ্ধ: তোমাদের প্রতি কোনো গুনাহ নেই, যদি তোমরা তোমাদের স্ত্রীদেরকে স্পর্শ না করে, কিংবা তাদের মোহর ধার্য না করে তালাক দাও। এবং তোমাদের স্ত্রীদের জন্য খরচের সংস্থান করবে। অবস্থাপন্ন ব্যক্তি তার সাধ্যমত বিধি অনুযায়ী খরচপত্রের ব্যবস্থা করবে। পুণ্যবানদের জন্য এটা দায়িত্ব। [আল বাকারাহ, ২/২৩৬]
নোট: এই আয়াতের তাফসীরে মুফাসসিরগণ তালাকপ্রাপ্তা নারীদের বিভিন্ন অবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। সেসব আমাদের আলোচনার বিষয় নয়। বরং মোহর নির্ধারিত না করেই বিবাহের শুদ্ধতার সুস্পষ্ট প্রমাণ হিসাবে আয়াতটি পেশ করা হলো। বরং আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে এটা প্রমাণ করা যে, বিয়ের আসরে তাৎক্ষনিকভাবে মোহর প্রদান করা জরুরি নয়।
আর মোহর প্রদানের সময়সীমার ক্ষেত্রে ইসলামী শরীয়তে অবকাশ রয়েছে। এই ব্যাপারে কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াতসমূহ ও তাফসীর গ্রন্থ সমূহ দেখা যেতে পারে। কলেবর বৃদ্ধির আশংকায় আমরা সেগুলো উল্লেখ করা হতে বিরত থাকলাম। বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন, আল বাকারাহ, ২/২৩৭; আন নিসা, ৪/২৪; আল আহযাব, ৩৩/৪৯; তাফসীর ইবন কাসীর, তাফসীর যাকারিয়া প্রভৃতি।
অতএব আমরা বলতে চাই, মোহর প্রদান করা ব্যতিত স্ত্রীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করা হারাম ও এমনটি করলে তা যিনা হবে, এমন বক্তব্য কুরআন, হাদীস, মুফাসসির ও মুহাদ্দিসগণের বুঝ অনুযায়ী বাতিল ও ভ্রান্ত কথা মাত্র।
জুন ১৩, ২০২২