আমার আরবী শেখাঃ ধৈর্যের গল্প সুখের অনুভূতি
রচনায় : মোঃ আবু সুফিয়ান সুফি
গল্পটার শুরু ২০১২ এর প্রথমদিকে খুব সম্ভবত। আমি তখন ক্লাস ১০ এ পড়ি। হেদায়েতের আলোর পথে হাঁটা শুরু করেছি খুব বেশি সময় পেরোয়নি। তখন ইন্টারনেটভিত্তিক বাংলায় ইসলামিক জ্ঞানার্জন খুব একটা সহজ ছিল না। ভাল ভাল ইসলামিক লেকচারগুলো তখন ইংরেজিতে এ ছিলো। বয়স কম তখন,ইংরেজি কি বাংলা সাহিত্য বুঝতেই তখন গলদঘর্ম অবস্থা। তবুও আল্লাহর প্রতি তাওয়াক্কুল (ভরসা) করে শুরু করেছিলাম। আপনি যখন আল্লাহর পথে হাঁটতে শুরু করবেন তখন আল্লাহই আপনাকে হেদায়েতের পথে চলতে সাহায্য করবেন। “If you make effort Allah will help you” (উস্তাদ আসিফ মেহের আলী থেকে শেখা প্রিয় বাক্যটি)
তো একদিন Abdurrahman.org ওয়েবসাইটটি রেন্ডমলি ব্রাউজ করছিলাম।
কিভাবে যে ওয়েবসাইটটি পেয়েছিলাম তা জানি না,তবে তা যে আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশাল অনুগ্রহ ছিল তা ক্ষণে ক্ষণে হৃদয়ের গভীরে অনুভব করি। সেখানে হটাৎ করেই একটি লিংক চোখে পড়ল, যেখানে লেখা Learn Arabic (এই টাইপ কিছু)। আমি তো মহোৎসাহে লিংকে ক্লিক দিলাম। গিয়ে দেখি এ এক এলাহি কাণ্ড। ভিডিও এর কোন শেষ নেই। আমি শুধু ব্রাউজ করেই যাচ্ছি, করেই যাচ্ছি; ভিডিও এর সংখ্যার আর শেষ দেখি না। পরে বসে গুণা শুরু করলাম। চোখের সামনে যা পেলাম প্রায় ৪০০ এর মতো ভিডিও।
এত ভিডিও কখন দেখবো কিভাবে দেখবো এইসব গুরুগম্ভীর চিন্তা করার আগে ওয়েবসাইট ঘেটে ঘেটে বের করলাম কি কি বই আর রিডিং ম্যাটেরিয়াল আছে সেখানে। সব খুঁজে বের করার পর এখন ভিডিও দেখার পালা…
বিসমিল্লাহ্…… স্প্লিট স্ক্রীন করে একদিকে টেক্সট বুক আর অন্যদিকে ভিডিও। ভেবেছিলাম ইংরেজি তো কিছুই বুঝি না তেমন। কিভাবে যে শিখবো! পরে দেখি উস্তাদ যিনি শিখাচ্ছেন (আসিফ মেহের আলী) উনি পাকিস্তানি আর উনার উচ্চারণ স্টাইল খুবই সহজ এবং অত্যন্ত ধীরগতিসম্পন্ন। তাই আমার মতো কম জানা ব্যক্তির জন্য আল্লাহ সহজ করে দিলেন, আলহামদুলিল্লাহ্।
পরে নিয়মিত ভিডিও দেখতে লাগলাম আর খুব যত্নের সাথে নোট তুলতে লাগলাম। নিয়মিত অনুশীলন গুলো করতাম।একটি অনুশীলনী শেষ না হলে অন্যটিতে যেতাম না। আর কোন টপিক বুঝতে কষ্ট হলে সলাতে আল্লাহর কাছে দু’আ করতাম। সিজদায় দু’আ করতাম। আল্লাহ যাতে মুদ্বাফ-মুদ্বাফ ইলাইহি কে আমার জন্য সহজ করে দেন। আল্লাহ জন্য ফা’ইল কোনটা আর ফি’ল কোনটা সহজে বুঝিয়ে দেন। এভাবে সুবহানআল্লাহ, প্রথমে দূর্বোধ্য লাগলেও আল্লাহর রহমতে ধীরে ধীরে আগাতে লাগলাম।
কিন্তু শাইত্বন তো আর বসে নেই। এই নিয়ামত ওর সহ্য হলো নাহ… আমাকে বিভিন্নভাবে ওয়াসওয়াসা দিয়ে, ক্লাস পরীক্ষার দোহাই দিয়ে বুক ১ এর অর্ধেক করে থামিয়ে দিল। সেই কলেজে উঠার আগ পর্যন্ত আর ধরা হলো না… আল্লাহুল মুস্তা’আন (আল্লাহই সর্বশেষ আশ্রয়স্থল)।
কলেজে উঠে ভালো ভার্সিটিতে চান্স পেয়ে তারপর সব কিছু শুরু করবো এই নিয়তে আর কন্টিনিউ করতে পারলাম না। কিন্তু মাঝে কি এক জোশ এসেছিল মনে, ফলে মনে হয় তখন কিছুটা সময় নিয়ে বুক ১ শেষ করে ফেলেছিলাম,আলহামদুলিল্লাহ্।
এরপর আল্লাহর রহমতে ইউনিভার্সিটি তে চান্স পাওয়ার পর প্রথমদিকে আবার নতুন উদ্যমে শুরু করলাম বুক ২। আলহামদুলিল্লাহ ধীরে ধীরে বুক ২ অনেক কষ্টে ক্লাস পরীক্ষা ল্যাব এর মাঝেও কমপ্লিট করলাম। কিন্তু সমস্যা হল আমাদের ডিপার্টমেন্টে যেই মিডটার্ম পরীক্ষাগুলো হয় তা প্রায় প্রতি সপ্তাহেই থাকে। ফলে আমাদের প্রতি সপ্তাহেই পড়ালেখা নিয়ে অনেক ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই সত্যিকার অর্থে তখন বুক ২ খুব ভালোভাবে কমপ্লিট করতে পারিনি।
এরপর আমার দ্বিতীয় বর্ষ রেজাল্ট খারাপ হওয়ার পর আমি একটু হতাশ হয়ে যাই। ফলে এক থেকে দেড় বছরের মত আমার আরবি শিখার মাঝে গ্যাপ পড়ে যায়। আর সবচাইতে কষ্টের ব্যাপার হচ্ছে যখন আপনি আরবি শিখার মাঝে অনেকদিন গ্যাপ দিবেন তখন প্রায় অনেক কিছুই আপনি ভুলে যাবেন। ফলে যখন আবার অনেকদিন পরে আপনি নতুন উদ্যমে শুরু করতে যাবেন তখন আপনাকে পূর্বের সকল পড়া রিভাইজ করতে হবে যা কিনা খানিকটা নয় অনেকটাই কষ্টের…
এরপর এই কথা সেই কথা ভেবে আমার আর কন্টিনিউ করা হচ্ছে না। এদিকে মাঝে মাঝেই বিভিন্ন লেকচার শোনার সময় কিংবা কোরআন তেলাওয়াতের সময় অথবা সালাতে তারাবিহ এর সময় আমার পূর্বের সেই আরবি শিক্ষার কথা মনে পড়ে যেত এবং আমি যে আরবি শিখতে পারছি না কিংবা শেখার চেষ্টা করছি না তা আমার মাঝে প্রায়ই কষ্টের অনুভূতি দিয়ে ব্যথা দিত। ফলে আমি মনে মনে সংকল্প নিয়ে ফেললাম যে আমি আমার তৃতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার পর খুব ভালোভাবে নতুন উদ্যোমে আরবি শিখা শুরু করবো। এবার যত বাধাই আসুক আমি ইনশাআল্লাহ আরবি যেভাবেই হোক শিখব।
এখানে একটা কথা বলে রাখি, আরবী শিখার জন্য, অন্তরে জোয়ার আনার জন্য প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার টাকার আরবী বই কিনেছিলাম। যাতে করে এগুলো আমার চোখের সামনে থাকে আর তা দেখে আমি উৎসাহ পাই…
আল্লাহর রহমতে আমার সংকল্প এতটাই দৃঢ় ছিল যে আমি মনে মনে চিন্তা করে রেখেছিলাম যে যদি আমার সিরিয়াস কোন রোগ হয় কিংবা যদি আমার রক্ত ঝড়তে থাকে তাও আমি আমার আরবি শিখা মোটেই বন্ধ করব না। ফলে আমার পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরপরই আমি বুক ২ এর সমস্ত ভিডিও একনাগাড়ে দেখে রিভিশন শেষ করে ফেললাম আলহামদুলিল্লাহ। এরপর বুক ৩ যা কিনা পূর্বের দুইটি বই থেকে আরো অনেক অনেক বড় এবং অনেক কঠিন ছিলো… কিন্তু আমি যে আল্লাহর উপরে ভরসা করেছি… তাই আমি বিশ্বাস করি যত কঠিন-ই হোক না কেন আল্লাহ আমাকে সাহায্য করবেন। এরপর আমি প্রত্যেকদিন তিনটি করে ভিডিও দেখা শুরু করলাম। কিন্তু যখন বুঝলাম যে কেবল তিনটি করে ভিডিও দেখলে আমার দেখা শেষ হবে না কিংবা আমার জন্য কম হয়ে যাচ্ছে, তখন আমি প্রত্যেকদিন ৬ টি করে ভিডিও দেখা শুরু করলাম। এখানে একটি জিনিস বলে রাখা আবশ্যক বলে মনে করছি যে, উস্তাদ ধীরে ধীরে কথা বলেন যা কিনা অনেকের জন্য বিরক্তিকর লাগতে পারে কিন্তু যারা ইংরেজি কম বুঝেন, হয়তোবা তাদের জন্য এই কথা বলার স্টাইল অনেকটাই সহজ হবে। কিন্তু আপনি যদি প্রতিদিন ৬ টি করে ভিডিও দেখতে চান তবে আপনাকে অবশ্যই ভিডিও এর স্পিড বাড়িয়ে দেখতে হবে। ভিডিও এর স্পিড ২০০ পার্সেন্ট বাড়িয়ে দেখা শুরু করলাম। ডেইলি ৬ টি করে ভিডিও দেখতাম এবং বইয়ের অনুশীলন গুলো আর খাতায় না লিখে মুখে মুখে প্র্যাকটিস করতাম। তখন আমি বুঝে গিয়েছিলাম যে আমার খাতায় না লিখলেও চলবে, আমার এখন দরকার আরবি শিখাটা কমপ্লিট করা।
আলহামদুলিল্লাহ প্রতিদিন ৬ টি করে ভিডিও দেখতে দেখতে আস্তে আস্তে আমি শেষের দিকে এগিয়ে গেলাম। মাঝে হয়তো কিছুদিন বাদ পড়ে গিয়েছিল বিভিন্ন কারণে কিন্তু আমি যখনই সময় পেতাম যেভাবেই হোক আমি আমার সবটুকু উজার করে ৬ টি করে ভিডিও দেখতাম এবং অনুশীলন গুলো কমপ্লিট করতাম। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তাআলার বরকতে যা আমি তিনবছরেও শিখতে পারিনি তা আমি মাত্র এক মাস ১২ দিনের মাথায় সম্পূর্ণ বুক ৩ কমপ্লিট করে ফেললাম। যা কিনা অনেকটাই অসম্ভব মনে হতে পারে অনেকের কাছে। কিন্তু আপনি যদি আল্লাহ তাআলার বারাকাত এর কথা চিন্তা করে তাহলে আপনার কাছে ব্যাপারটা বুঝা অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। বুক ১ এবং বুক ২ যা কিনা বুক ৩ এর অর্ধেকও হবে না হয়তো এবং কাঠিন্যের দিক দিয়ে এর ধারে কাছেও থাকবে না… তবুও বুক ৩ এর তুলনায় এই বইগুলো (বুক ১+২) আমার কমপ্লিট করতে অনেক অনেক গুণ সময় লেগেছে।
কিন্তু সবকিছু কমপ্লিট করার পরে দেখলাম যে আমি আরবী বই এর এখনো মূল টেক্সট বুঝতে পারছিনা। আমি আরবি বই এর লেখা বুঝতে পারছিনা। Sentence স্ট্রাকচার বুঝতে আমার কষ্ট হচ্ছে। আমি বেশ হতাশ হয়ে গেলাম! তাহলে যে এতদিন স্বপ্ন দেখেছি যে বুক ফ্রী কমপ্লিট করার পরে আমি আরবীতে বড় বড় বই পড়তে পারব তা কি সব ধুলোয় পরিণত হতে যাচ্ছে? আমার এতদিনের স্বপ্ন কি তাহলে এ ভাবেই ঝড়ে যাবে?
আর কিছু দিন পরই রমজান মাস এসে গেল। রমজান মাসের মাঝে কোন একটি দিনে আমি যোহরের সালাত পড়ে বিছানায় শুয়ে মোবাইল এর ইউটিউব ব্রাউজিং করছিলাম কোন ইসলামিক লেকচার শোনার আশায়। হঠাৎ করে একটি চ্যানেল চোখে পড়ল। ওই চ্যানেলের মধ্যে একটি ভিডিও ছিল যা কিনা রেন্ডমলি ব্রাউজ করতে করতে হঠাৎ করেই পেয়ে গেলাম একটি ভিডিও। সেখানে লেখা ছিল যে ৩০ টিরও বেশি তাফসির একটি সাইটে(furqan.co) পাওয়া যাবে। আমার বেশ আগ্রহ হলো…ভিডিওটিতে ক্লিক দেওয়ার পরে দেখলাম সাইটটি আরবিতে। তো যাই হোক আমি ওই সাইটটিতে ঢোকার পরে রেন্ডমলি একটি তাফসীরে (القرآن – تدبر وعمل) ক্লিক করে একটি সূরার তাফসীর পড়া শুরু করলাম। আরেহ অবাক কান্ড তো! আমি তো কিছু কিছু আয়াতের তাফসীরের অর্থ বুঝতে পারছি।
আমার আগ্রহ অনেক বেড়ে গেল। ভাবলাম কিভাবে কি শুরু করা যায়। তখন চিন্তা করলাম যে এমনটা করলে কেমন হয় যদি আমি এই তাফসিরটা বাংলায় অনুবাদ করে ফেলি? তাফসীরটি আমার দেখে বেশ ভালো লেগেছিল। কারণ এই তাফসিরের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এখানে প্রত্যেক আয়াতের পরে ঐ আয়াতের উপর কি কি আমল রয়েছে তা খুব সুন্দর করে পয়েন্ট আকারে দেওয়া আছে।
এর পরের দিন বেশ জুত করে কম্পিউটারে বসলাম তাফসীর এর অনুবাদ করার জন্য। এর জন্য অনলাইন আরবি ডিকশনারি(almaany.com) এবং মোবাইলের আরবি ডিকশনারি(Verbace) এর সাহায্য নিলাম। এভাবে অনেক কষ্টে একটি একটি করে শব্দ বুঝে অনুবাদ করতে গিয়ে আমার একটি পেইজ এর অনুবাদ করতে প্রায় ৪ ঘন্টা লেগে গেল, সুবহানাল্লাহ। এর পরের দিন থেকে একইভাবে আমি আরেকটি পেইজ অনুবাদ করা শুরু করলাম। এদিনও প্রায় ৪ ঘন্টা লাগল। এর পরের দিন যখন আমি আরবি তাফসীরের পেইজগুলো দেখছিলাম তখন আমার কাছে মনে হচ্ছিল, আরেহ কি সুন্দর! যে শব্দগুলো পূর্বের দিন ডিকশনারিতে খুঁজে খুঁজে শিখেছিলাম সেই শব্দগুলোই দেখি আবার রিপিট হয়েছে। অর্থাৎ আমার সেই শব্দগুলো যেহেতু আগেই মনের ভেতর গেঁথে রয়েছে তাই নতুন করে আবার খুঁজা লাগছে না। আমার ওই পেইজের আরবি বুঝা অনেকটাই সোজা হয়ে গেল। ফলে এবার অনুবাদ করতে আরও সহজ হয়ে গেল এবং আমি এতে বেশ মজা পাচ্ছিলাম। এরপর প্রায় পুরো মাস ধরে আমি সেই তাফসীরটির অনুবাদ করেছিলাম আলহামদুলিল্লাহ। অনুবাদ করার ফলে আমার বই বুঝার সে বাধা রয়েছিল তা নিমিষেই আল্লাহর রহমতে দূর হয়ে গেল। ফলে আমি সহজ সহজ আরবী বাক্য গুলো খুব সহজেই বুঝতে পারছিলাম। আমার যে কত আনন্দ লাগছিল তা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না…
এরপর আলহামদুলিল্লাহ আমি ধীরে ধীরে আরবীতে বিভিন্ন বই পড়া শুরু করলাম। তবে আমার একটি জিনিস ভুল হয়েছিল না সঠিক হয়েছিল আমি বলতে পারব না কিন্তু আমি প্রথমে খুব কঠিন কঠিন আরবি সাহিত্যের বই দিয়ে শুরু করেছিলাম। যেমন ইমাম ইবনুল ক্বয়্যিম (রহ) এর যে কঠিন ভাষা এবং অলংকার সমৃদ্ধ আরবি বইগুলো রয়েছিল তা পড়া শুরু করেছিলাম। প্রত্যেকটা পেইজ বুঝতে প্রায় এক ঘণ্টার মতো সময় লাগছিল কিন্তু পুরো পেইজ বুঝার পরে এত আনন্দ লাগছিল তার তুলনায় সেই এক ঘন্টা কিংবা দেড় ঘন্টার পরিশ্রম আমার কাছে খুবই তুচ্ছ মনে হচ্ছিল। দেখা গিয়েছে একটি বাক্য কিংবা একটি শব্দ আমি সহজে বুঝতে পারছিলাম না, তখন আমি সেই শব্দ কিংবা ঐ বাক্যটি নিয়ে সারাটা সময় চিন্তা করে কাটিয়ে দিতাম। এর অনুবাদ কি হতে পারে? এর অর্থ কি হতে পারে?
আমি রাস্তায় যখন হাঁটতাম তখনও এই নিয়ে চিন্তা করতাম। হঠাৎ করেই আল্লাহতালা আমার কাছে সেই শব্দ কিংবা বাক্যের অর্থ আমার মনের ভেতর উদ্ভাসিত করে দিতেন! যখন কোন বাক্য বুঝতাম না তখন আল্লাহর কাছে দোয়া করতাম আর সেই বাক্য নিয়ে চিন্তা ভাবনা করতাম। এভাবে মাথা খাঁটাতে খাঁটাতে আমার এমন অবস্থা হয়ে গেল যে সারাটা দিন আমার মাথায় শুধু একটা বাক্য কিংবা দুটো বাক্য ঘুরতে লাগলো যে, তার অর্থ কি হতে পারে? তার অর্থ কিভাবে আমি আরেকজনকে বুঝাতে পারি? এ নিয়ে চিন্তা করতে করতে আমার কাছে কঠিন আরবি বইগুলো ধীরে ধীরে সহজ হয়ে যেতে লাগল। আর আমি আল্লাহর কাছে নিয়মিত দোয়া করতাম আল্লাহ যাতে আমাকে ইমাম ইবনুল ক্বয়্যিম (রহ) এর বই আমার জন্য সহজ করে দেন। উনার আরবি গ্রামার এর ব্যাখ্যা আমার কাছে যত সহজ হয়ে যায়। আমি আল্লাহর কাছে নিয়মিত দোয়া করতাম এবং এখনও করি আল্লাহ যাতে আমাকে বাংলা সাহিত্যের চাইতেও আরবি ভাষাকে সহজ করে দেন এবং আরবি ভাষায় বই পড়া যেন আমার বাংলা ভাষায় বই পড়ার চাইতেও অনেক বেশী আনন্দদায়ক হয় ও অনেক বেশি সহজ হয়ে যায়! আলহামদুলিল্লাহ আমি সেই দোয়ার ফল প্রতিটা ক্ষণে প্রতিটা মুহূর্তে অনুভব করতে পারছি…