ইসলামে দীক্ষিত হলো চীনা নারী – চীনের হান জাতিগোষ্ঠীর সদস্য আয়শা এক্সজিয়ন (২৩)

চীনের হান জাতিগোষ্ঠীর সদস্য আয়শা এক্সজিয়ন (২৩)। স্কুলজীবন থেকেই ধর্মীয় বই পড়ার মাধ্যমে ইসলাম সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে ওঠেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সময় তার সেই আগ্রহ পূর্ণতা পায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে তার মুসলিম বান্ধবীর মাধ্যমে ইসলামে ধর্মান্তরিত হন।

আয়শা এক্সজিয়নের জন্ম ও বেড়ে ওঠা ইউয়ান প্রদেশের বিনচোয়ান শহরে। শহরটির বাসিন্দাদের অধিকাংশই হান জাতিগোষ্ঠীর। প্রদেশটিতে অধিক সংখ্যক জাতিগত সংখ্যালঘুদের বাসস্থান।

আয়শা জানান, তিনি সবসময় ইসলামকে সম্মান করে আসছেন এবং স্কুলজীবনে এ সম্পর্কে বই পড়েছেন। হাইস্কুলে ‘হুই’ জাতিগোষ্ঠীর সহপাঠীদের কাছ থেকে ইমলাম ধর্ম সম্পর্কে আরো জানার পর তিনি ইসলামে ধর্মান্তর সম্পর্কে ভাবতে শুরু করেন।

এক্সজিয়ন ইউনান প্রদেশের রাজধানী কুনমিং বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সময় হুই জাতির একজন ছাত্রীর সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। ওই ছাত্রীর একজন চাচাতো ভাই ছিলেন স্থানীয় একটি মসজিদের একজন ইমাম।

এক্সজিয়ন তার বান্ধবীর মাধ্যমে ইসলামে ধর্মান্তরের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। বিষয়টি ওই বান্ধবী তার ইমাম ভাইকে জানালে তিনি ধর্মান্তর অনুষ্ঠান আয়োজন করতে রাজি হন।

২০১৩ সালের নভেম্বরের এক শুক্রবারে এক্সজিয়ন কুনমিং মসজিদে প্রায় ১০০ জন মুসল্লিকে সাক্ষী রেখে আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলাম গ্রহণ করেন।পরে ইমাম তাকে মুসলিম নাম ‘আয়শা’ রাখেন।

তিনি বলেন, ‘আমার বাবা চিন্তিত ছিল যে আমি ইসলাম গ্রহণের মাধ্যমে প্রতারণার শিকার হয়েছি এবং একটি ভুল পথ বেছে নিয়েছি।’

যদিও তার মা তার সিদ্ধান্তকে সহজেই মেনে নিয়েছেন। কিন্তু তার বাবা এখনো মনে করেন তার ইসলাম ধর্ম থেকে বের হয়ে আসা উচিৎ।

আয়েশা বলেন ‘তিনি (বাবা) সরাসরি আমার কাছে কখনো এটি বলেননি কিন্তু আমি জানি তিনি মনে মনে ভীষণ চিন্তিত। ইসলাম ছাড়ার জন্য আমাকে প্ররোচিত করতে তিনি প্রায়ই আমার মাকে বলেন।’

তিনি যখন নিজের গ্রামে যেতেন তখন বাবার কথা ভেবে তিনি মাথায় হিজাব বা নামাজ পরতেন না বলে জানান।

তিনি বলেন, ‘আমি আমার বাবাকে কোনো চাপ দিতে চাই নি। আমি চেয়েছি তাকে কিছুটা স্বস্তি দিতে।’

চলতি বছরের শুরুর দিকে তিনি মুসলিম সংস্থার একটি ফার্মে একজন অ্যাকাউন্টেন্ট হিসেবে চাকরি পান। সেখানে তিনি মাথায় হিজাব পরে কাজ করতে পারেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আমার কঠোর পরিশ্রমের দ্বারা কোন এক সময়ে আমার বিশ্বাসের স্বাধীনতা অর্জন করতে পারব বলে আমি বিশ্বাস করি।’

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট অবলম্বনে

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button