ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ ও আল-ইস্তিগাসা

তার সমসাময়িক একজন আলেম ছিলেন। আলী ইবন ইয়াকূব আল-বাকরী। তিনি ইবন তাইমিয়্যাহকে তাকফীর করলেন। তাকে কুফরীর অভিযোগে অভিযুক্ত করলেন। কথায়-কাজে তাকে বেশ কষ্ট দিলেন। সাধারণ জনতাকে খেপিয়ে তুললনে তার বিরুদ্ধে। শাসকশ্রেণি ও সেনাবাহিনীকে লেলিয়ে দিলেন তার বিপক্ষে।

৭০৭ হিজরীতে তার অনুসারী আরও কিছু আলেম দাবি জানাল তাকে শাস্তি প্রদানের। কিন্তু শাইখ বাকরী এক ধাপ এগিয়ে তাকে হত্যা করার দাবি পেশ করলেন। ৭১১ হিজরীতে সাধারণ কিছু মানুষ নিয়ে তাকে প্রহার করলেন। অন্য একদিন ইবন তাইমিয়্যাকে একা পেয়ে তার উপর চড়াও হলেন তিনি। জামা-কাপড় পর্যন্ত ছিঁড়ে ফেললেন।

পরে লোকজন জড়ো হয়ে যখন দেখতে পেল ইবন তাইমিয়্যার এ অবস্থা, তখন তারা বাকরীর খোঁজে বের হল। কিন্তু তিনি পলাতক। রাষ্ট্রও তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করল। লোকে তার কাছে উপযুক্ত প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানাতে লাগল।

তিনি কী বললেন?

তিনি বললেন, ‘আমি কখনো নিজের জন্য প্রতিশোধ নিই না।’

তারপরও লোকে অনেক চাপ সৃষ্টি করলে তিনি বললেন,

“হয় এটা আমার অধিকার, নতুবা তোমাদের, নতুবা আল্লাহর। যদি আমার হয়ে থাকে, তাহলে আমি সে ব্যাপারটা ছেড়ে দিলাম। আর তোমাদের অধিকার হলে তোমরা যদি আমার কথা না শুনো, তাহলে আমাকে জিজ্ঞাসা করবে না। আর যদি আল্লাহর হয়ে থাকে, তাহলে তিনি যেভাবে চান, যখন চান তা নিবেন।”

এরপর?

এরপর যখন বাকরীর খোঁজ করছে রাষ্ট্র, সবদিকে তার নামে হুলিয়া জারী; তখন তিনি গিয়ে আশ্রয় নিলেন।

কার কাছে?

ইবন তাইমিয়্যার কাছেই! অবশেষে ইবন তাইমিয়্যা তার পক্ষ থেকে শাসকের কাছে গিয়ে সুপারিশ করলে তাকে ক্ষমা করা হল।

যে মানুষটা ইবন তাইমিয়্যার সাথে সব সময় খারাপ ব্যবহার করেছে, তাকে সুযোগ পেলেই ঘায়েল করার চেষ্টা করেছে, তাকে তিনি নিমিষে ক্ষমা করে দিলেন, স্থাপন করলেন সহিষ্ণুতার অনন্য দৃষ্টান্ত!

রাহিমাহুল্লাহ! আল্লাহ তাকে জান্নাতে উচ্চ মাকাম নসীব করুন!