বই: কালিমার মর্মকথা
বাংলা ভাষায় রচিত ও অনুবাদিত সালাত, সিয়াম প্রভৃতি বিষয়ের উপর বইয়ের অভাব নেই। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য মু’মিন হওয়ার চাবি “কালিমায়ে তাইয়েবাহ বা তাওহীদ” এর সঠিক অর্থ, রুকন, শর্তাবলী, ব্যাখ্যা, ঈমানের রুকন, ঈমানভঙ্গের কারণসমূহ, ত্বগূত ইত্যাদি বিষয়াবলীর উপর তেমন কোন উল্লেখযোগ্য বই অনুবাদিত বা রচিত হয়নি। দু-একটি বিচ্ছিন্ন বিষয়ে ছোট ছোট পুস্তিকা পাওয়া যায়। “কালিমার মর্মকথা” বইটি বাংলা ভাষায় রচিত একমাত্র গ্রন্থ যা উল্লেখিত সব বিষয়ে সংক্ষিপ্ত কিন্তু পূর্নাঙ্গ বই যা ক্বুরআন, সহীহ হাদীছ ও নির্ভরযোগ্য ওলামায়ে কেরামের বই থেকে সংকলিত। বইটিতে ক্বুরআন, সহীহ হাদীছ ও সালাফে সালেহীনের বুঝ অনুসারে প্রতিটি বিষয় উপস্থাপন করা হয়েছে।
কালিমাহ বলতে উদ্দেশ্য দ্বীন ইসলামের পাঁচটি রুকনের প্রথম রুকন। ইলম অর্জনের পর ইসলামের প্রথম ফরয হল এই কালিমা।এই ফরয জ্ঞান প্রচারের জন্য ১২ বছর বরাদ্দ করা হয়েছিল।পুরো কুরআনের মধ্যে সূরা আল-ফাতিহা যেমন মূল তেমনি কালিমা হল পুরো ইসলামের মূল।এই কালিমাটিই হলো মুসলিম ব্যক্তির আকীদার উৎস এবং সৃষ্টি জগতের অস্তিত্ব লাভের আসল রহস্য।কাজেই প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর আকিদাগত উন্নয়ন এবং বিভ্রান্তি নিরসণে এই তাওহীদি বাণী তথা কালিমা বিষয়ক সঠিক জ্ঞান অর্জন করা আবশ্যক।
বাজারে কালিমা সংক্রান্ত বেশ কিছু বই থাকলেও কালিমার মর্ম এবং এর বেঠিক ও সঠিক অর্থের উপর তুলনামূলক পর্যালোচনা বেশিরভাগ লেখায় অনুপস্থিত।শাইখ আকরামুজ্জামান বিন আব্দুস সালাম সংকলিত “কালিমার মর্মকথা” বইটিতে কালিমা ত্বাইয়্যিবাহ এর সঠিক শব্দাবলী নিয়ে যেসকল বিভ্রান্তি রয়েছে তার এক দলিলভিত্তিক জবাব দেয়ার পাশাপাশি কালিমার সঠিক অর্থ ও এর দাবী এবং চাহিদাসমূহ উপর বিশ্লেষণমূলক আলোচনা পেশ করা হয়েছে। বইটির প্রকাশক ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতি ইনষ্টিটিউট এবং বইটি প্রকাশ করেছে এই সাইট। আমরা এটাতে ইন্টারেকটিভ লিংক ও কভার যুক্ত করেছি।
বইটির অনন্য বৈশিষ্ট্য:
- সম্পূর্ণ বইটিকে দুইটি পৃথক অংশে ভাগ করা হয়েছে।
- বইয়ের পরিশিষ্টাংশে কালিমার শুদ্ধ/অশুদ্ধ বাক্যের পর্যালোচনা সংযুক্ত করা হয়েছে।
- বিভিন্ন বিষয়ের ব্যখ্যার ক্ষেত্রে সকল দলীল আলিমদের উদ্ধৃতিসহ উল্লেখ করা হয়েছে।
- বিশেষ ক্ষেত্রে পাঠকেদের বুঝার সুবিধার জন্য টীকা উল্লেখিত হয়েছে।
- বইটিতে ইন্টারেকটিভ লিংক যুক্ত করা হয়েছে।
বইটির প্রধান আলোচ্য বিষয়বস্তু:
- কালিমার পরিচিতি,সংখ্যা,প্রভাব,পরিবেশ এবং এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য।
- ইসলামের মূলমন্ত্র “কালিমা ত্বইয়্যিবাহ” কোন বাক্যটি তার একটি দলিল ভিত্তিক পর্যালোচনা।
- ঈমানের প্রতিটি রুকনের উপর বিশদ আলোচনা।
- আমল-ইবাদত কবুলের শর্তাবলী এবং ইসলাম বিনষ্টকারী বিষয়সমূহের ব্যখ্যা
- কাফির আখ্যদানের ফিতনাহ ও তার নিয়মাবলী এর উপর বিস্তারিত আলোচনা।
এক নজরে বইটি :
কালিমার মর্মকথা
রচনায়: আকরামুজ্জামান বিন আব্দুস সালাম
প্রকাশনায়:ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতি ইনষ্টিটিউট।
পৃষ্ঠা: ৩৫৩
সাইজ: ৩ মেগাবাইট।
পিডিএফ মূল বইয়ের বিকল্প নয়। পছন্দ হলে নিকটস্থ লাইব্রেরী থেকে বইটি কিনুন।
..
.
“ওয়াআন্না” বাদ দিয়ে “আল্লাহ মুহাম্মাদ” পাশাপাশি অর্থাৎ “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ”(নাউযুবিল্লাহ) লেখা হাদিসগুলো যে জাল ও যঈফ তা প্রমান করার জন্য কুরআন মাজীদ যথেষ্ঠ। কাফের, মুশরিকরা কুরআনের স্পষ্ট নিদর্শনগুলোর বিরুদ্ধাচরন করে। কাফের, মুশরিকরা কুরআনের স্পষ্ট নিদর্শনগুলোর বিপক্ষে ওদের বাপ-দাদা, পীর-ঠাকুরদের দেওয়া বিভিন্ন যুক্তি উপস্থাপন করে। পক্ষান্তরে, মুসলিম ব্যক্তি কুরআনের কথার বিপক্ষে কথা বলার দুঃসাহস দেখায়না। মুসলিম ব্যক্তি কুরআনের কথা সন্তুষ্টির সাথে মেনে নিয়ে হৃদয়ের মনিকোঠায় স্থান দেয়। কুরআনে “আল্লাহু ওয়া রসুলুহু” প্রায় একশত বার আছে। কিন্তু “ওয়া” বাদদিয়ে “আল্লাহু রসুলুহু”(নাউযুবিল্লাহ) একবারও নেই। তাহলে “ওয়া” বাদ দিয়ে “আল্লাহু রসুলুহু” “আল্লাহু মুহাম্মাদ” পাশাপাশি লিখা/বলা হালাল নাকি হারাম? যে সমস্ত হাদিসে “ওয়া” বাদ দিয়ে “আল্লাহু রসুলুহু” “আল্লাহু মুহাম্মাদ” পাশাপাশি উল্লেখ রয়েছে অর্থাৎ কুরআন বিরোধী কথা সেই হাদিসকে কি সহীহ হাদীস বলা যাবে?
বুখারী, মুসলিম, তিরমিজী, মুয়াত্তা মালেক, আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ তে “গুপ্ত ধন” “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ” কি “গুপ্ত” করে শয়তানের দিকে নিক্ষেপ করেছে? এসব গ্রন্থে ইসলামের ৫টি ভিত্তির শেষ ৪টি সলাত, যাকাত, সাওম, হ্বজ সবই আছে। কিন্তু ১ম ভিত্তি “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ”(নাউযুবিল্লাহ) নাই কেন??? এসব গ্রন্থে ১ম ভিত্তি হিসাবে “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ”(নাউযুবিল্লাহ) এর কথা না বলে “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াআন্না মুহাম্মাদার রসুলুল্লাহ” সাক্ষ্য দিতে বলা হল কেন?
ইসলাম গ্রহন ও ঈমান।
প্রত্যেক মানুষ পৃথিবীতে জন্মগ্রহন করে ইসলাম নিয়ে মুসলিম হিসাবে(আরাফ-১৭২, রুম-৩০, তাগাবুন-২)। এরপর মানুষ তার বাপ-দাদার ধর্মের অন্ধ অনুসরন করে(আরাফ-১৭৩, মায়েদা-১০৪, বাকারা-১৭০)। এরপর আল্লাহ যাকে চান তাকে হেদায়েত দান করেন, ফলে ঐ মানুষটি পুনরায় ইসলাম গ্রহন করে নিজেকে মুসলিম বলে প্রকাশ করে(আল কাসাস-৫৬)। ইসলাম গ্রহনের জন্য মানুষকে সর্বপ্রথম আল্লাহ ও আল্লাহর রসুলের প্রতি (এক আল্লাহর প্রতি) ঈমান আনতে হয়(সফ-১১, হুজুরাত-১৫, নুর-৬২, মোমেন-৮৪)। নবী মুহাম্মাদ (স) বলেন তোমরা কি জান এক আল্লাহর প্রতি ঈমান কি? সাহাবারা বললেন আল্লাহ ও আল্লাহর রসুল ভালো জানেন। তখন নবী মুহাম্মাদ (স) বললেন এক আল্লাহর প্রতি ঈমান হলো “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াআন্না মুহাম্মাদার রসুলুল্লাহ” (আল্লাহ্ ছাড়া আর কোন সত্য ইলাহ্ নেই এবং নিশ্চই মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল) এই সাক্ষ্য দেয়া(বুখারী ইফা-৫১, মুসলিম ইফা-২৪)। জিব্রাঈল (আঃ) নবী মুহাম্মাদ (স) এর কাছে এসে বসে, নিজের হাঁটু তাঁর হাঁটুর সঙ্গে মিলিয়ে নিজের হাত তাঁর উরুতে রেখে বললেন “হে মুহাম্মাদ, আমাকে ইসলাম সম্পর্কে বলুন”। নবী মুহাম্মাদ (স) বললেন: “ইসলাম হচ্ছে এই- তুমি সাক্ষ্য দাও, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াআন্না মুহাম্মাদার রসুলুল্লাহ, সালাত প্রতিষ্ঠা কর, যাকাত আদায় কর, রমজানে সওম সাধনা কর এবং সামর্থ হলে (আল্লাহর) ঘরের হ্বজ্জ কর”( মুসলিম ইফা-০১)। ইসলামের ৫টি ভিত্তির ১ম ভিত্তি “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াআন্না মুহাম্মাদার রসুলুল্লাহ” এই সাক্ষ্য দেয়া(বুখারী ইফা-০৭, মুসলিম ইফা-০১, তিরমিজী ইফা-২৬১০)। আমরা মানুষকে সাধারনত দৈনিক ৫ ওয়াক্ত সলাত কায়েমের জন্য দাওয়াত দেই। কিন্তু এটা ইসলামের ২নং ভিত্তি। তাই ইসলামের ১নং ভিত্তির দাওয়াত আগে দিতে হবে । “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াআন্না মুহাম্মাদার রসুলুল্লাহ” এই সাক্ষ্য দেওয়ার মাধ্যমে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহন করতে হবে। তারপর সলাত, যাকাত, সাওম, হ্বজ (বুখারী ইফা-৪০০৬, মুসলিম ইফা-২৯)। ইসলাম গ্রহন, হ্বজ, হিজরত দ্বারা পুর্বের সব গুনা মাফ হয়(মুসলিম ইফা-২২১)। আল্লাহ যাকে চান তাকে “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াআন্না মুহাম্মাদার রসুলুল্লাহ” এই সাক্ষ্য দেওয়ার মাধ্যমে ইসলাম গ্রহনের সুযোগ দিবেন।
“ওয়াআন্না” বাদ দিয়ে “আল্লাহ মুহাম্মাদ” পাশাপাশি অর্থাৎ “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ”(নাউযুবিল্লাহ) ইহা পড়তে কে বলেছেন? ইহা আল্লাহ্ বলছেন? নবী মুহাম্মদ (স) বলছেন? মনিষীরা বলছেন? …. …. শয়তান বলছেন? সুস্পষ্ট দলীলসহ জানতে চাই।
কুরআনে “আল্লাহু ওয়া রসুলুহু” প্রায় একশত বার আছে। কিন্তু “ওয়া” বাদদিয়ে “আল্লাহু রসুলুহু”(নাউযুবিল্লাহ) একবারও নেই। “ওয়াআন্না” বাদ দিয়ে “আল্লাহ মুহাম্মাদ” পাশাপাশি অর্থাৎ “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ”(নাউযুবিল্লাহ) ইহা পড়তে কে বলেছেন? ইহা আল্লাহ্ বলছেন? নবী মুহাম্মদ (স) বলছেন? মনিষীরা বলছেন? …. …. শয়তান বলছেন? সুস্পষ্ট দলীলসহ জানতে চাই।
“যে ব্যক্তি আল্লাহর আয়াতের সাথে কুফরী করবে, অবশ্যই আল্লাহ হিসেব গ্রহনে অত্যন্ত দ্রুত। তারা যদি তোমার সাথে বিতর্ক করে, তাহলে তুমি বলে দাও আমি ও আমার অনুসারীরা ইসলাম গ্রহন করেছি। আর যাদের কিতাব দেয়া হয়েছে এবং যারা নিরক্ষর, তাদেরকে তুমি বলে দাও তোমরা কি ইসলাম গ্রহন করেছো? তবে যদি তারা ইসলাম গ্রহন করে, তাহলে নিঃসন্দেহে তারা সঠিক পথ পেয়েছে। আর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়,তবে তোমার দায়িত্ব শুধু পৌঁছে দেয়া। আর আল্লাহ বান্দাদের পর্যবেক্ষন করছেন।”( ইমরান-১৯,২০)।
নবী মুহাম্মদ (স) এর দেখানো পথে না চলে কথিত পীর/ঠাকুর, মুফতি, শায়খ, ওলামা/আলেমদের দেখানো পথে চললে জান্নাত পাওয়া যাবে কি? নবী মুহাম্মাদ (স) বলেছেন যারা ইসলামের নামে বিদয়াত করবে, তাদেরকে শেষ বিচারের দিন হাউজে কাওসার থেকে বিতারিত করে জাহান্নামে নেওয়া হবে।
কথিত পীর/ঠাকুর, মুফতি, শায়খ, ওলামা/আলেম …. …. এদের কারো অন্ধ অনুসরন মুসলিম করতে পারে না। মুসলিম ব্যক্তি কুরআন ও সুন্নাহ(সহীহ হাদীস) আলোকে প্রত্যেকের কথা যাচাই করে কেবলমাত্র সত্যটিকে গ্রহন করবেন। আমি একজন মুসলিম। আমি সাক্ষ্য দেই, “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াআন্না মুহাম্মাদার রসুলুল্লাহ” (আল্লাহ্ ছাড়া আর কোন সত্য ইলাহ্ নেই এবং নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ আল্লাহর রসূল)।(বুখারী ইফা হাঃ নঃ-৭, ৪০০৬, মুসলিম ইফা হাঃ নঃ-১, ২৯)। আল্লাহকে রব, নবী মুহাম্মাদ (স) কে রসুল এবং ইসলামকে দ্বীন হিসাবে পেয়ে আমি সন্তুষ্ট।(বুখারী ইফা হাঃ নঃ-৯৩, মুসলিম ইফা হাঃ নঃ-৫৮)।