আল্লাহর দুশমন আবু জাহেলের হত্যার ঘটনা

আব্দুর রহমান বিন আউফ বর্ণনা করেছেন “বদরের ময়দানে আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম। একজন তরুণ এসে আমাকে জিজ্ঞেস করলঃ হে চাচা! আবু জাহেল কোথায়? আমিও তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তার কাছে তোমার কি দরকার? সে উত্তর দিলঃ আমি শুনেছি, সে মহানবী (স) কে অনেক কষ্ট দিয়েছে। তাই আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি, ‘আমি যদি তাকে দেখতে পাই, আমার ছায়া তাকে অতিক্রম করবে না, যতক্ষণ না আমি তাকে হত্যা করি কিংবা সে আমাকে হত্যা করে।’

তিনি বলেছেন, ‘আমি তার এ কথায় অভিভূত হয়ে গেলাম!’

কিছুক্ষণ পর আরেকজন তরুণ আমার কাছে আসল। সেও আমাকে জিজ্ঞেস করলঃ হে চাচা! আবু জাহেল কেথায়?

আমি তাকেও জিজ্ঞাসা করলাম,তার কাছে তোমার কী দরকার? সে উত্তর দিলঃ আমি শুনেছি, সে মহানবীকে (স) অনেক কষ্ট দিত, নির্যাতন করত। তাই আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি, ‘আমি যদি তাকে দেখতে পাই, আমার ছায়া তাকে অতিক্রম করবে না, যতক্ষন না আমি তাকে হত্যা করি কিংবা সে আমাকে হত্যা করে।’

তারপর আমি লক্ষ করলাম যে, ‘আবু জাহল সামান্য দূরে লোকজনদের মাঝে বিচরণ করছে। আমি তাদেরকে বললাম, ঐ হলো সেই ব্যক্তি যাকে তোমরা খুঁজছো। এই কথা বলার পর আমি আকাঙ্খা করছিলাম আমি যদি এই তরুণদের মত উৎসাহী এবং উদ্যমী হতে পারতাম। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে তারা ফিরে আসল এবং মহানবীর (স) নিকট প্রত্যাবর্তন করল।’

রাসুলুল্লাহ(স) তাদের জিজ্ঞাসা করলেন-‘তোমাদের মধ্যে কে তাকে হত্যা করেছো?’

মুয়ায বিন আমর বিন ইল জামুহ বলল-‘আমি হত্যা করেছি’ এবং মুয়ায বিন আফরা বলল-‘আমি হত্যা করেছি।’

রাসুলুল্লাহ(স) পুনরায় বললেন, ‘তোমরা কি তোমাদের তরবারী পরিষ্কার করে ফেলেছো?’ তারা বলল, ‘না’। তিনি বললেন- ‘আমাকে দেখাও’। উভয় তরবারীতে রক্ত দেখতে পেয়ে বললেন, ‘তোমরা উভয়ে তাকে হত্যা করেছো।’

মুয়ায বিন আমর বিন জামুহ বলেছেন, “আমি আবু জাহেলকে আমার লক্ষ্যের কেন্দ্রবিন্দুতে নিলাম এবং তার প্রতি মনোযোগ নিবদ্ধ করে রাখলাম। তারপর যখন সুযোগ পেয়ে গেলাম, তখনই আক্রমণ করে বসলাম এবং এমনভাবে আঘাত করলাম যে, তার পা দ্বিখন্ডিত হয়ে গেল। এদিকে আমি যখন আবু জাহলকে আঘাত করলাম অন্য দিকে তখন তার ছেলে ইকরামা আমার কাঁধে তরবারীর আঘাত করল এবং তাতে আমার হাত কেটে গিয়ে চামড়ার সঙ্গে ঝুলে গেল এবং যুদ্ধের জন্য প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াল। আমি তাকে পিছনে টেনে সাধারণভাবে যুদ্ধ করতে থাকলাম। কিন্তু সে যখন আমাকে খুবই কষ্ট দিতে লাগল, তখন আমি তার উপর আমার পা রেখে জোরে টান দিয়ে তাকে বিচ্ছিন্ন করে ফেললাম।

এরপর আবু জাহলের নিকট পৌঁছে যান মুয়ায বিন আফরা। তিনি তাকে এত জোড়ে আঘাত করেন যে, তার ফলে সে সেখানেই পড়ে যায়। সে সময় শুধু তার শ্বাসঃপ্রশ্বাসটুকু অবশিষ্ট ছিল।”

যখন যুদ্ধ শেষ হয়ে গেল তখন রাসূলুল্লাহ (স) বললেন- “কে আছ এমন যে, দেখে আসবে আবু জাহলের অবস্থা কি হল। আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ তখন সৈন্যদের মধ্যে অনুসন্ধান চালিয়ে আবু জাহেলকে খুঁজে পেলেন। আবু জাহল তখন মৃত প্রায় অবস্থায় ছিলো।

এমতাবস্থায় আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ তার বুকের উপর উঠে বসলেন। আবু জাহল চোখ খুলে দেখলো আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ তার বুকের উপর। এতে আবু জাহল অপমানবোধ করে বললো, ‘তুমি মক্কায় রাখাল ছিলে না?’ ইবনে মাসউদ বললেন, ‘হে আল্লাহর দুশমন, আমি অবশ্যই মক্কাতে রাখাল ছিলাম।’ আবু জাহল বললো- হে উটপালক! তুমি অনেক বড় স্থানে চড়ে বসেছো। এত বড় সম্মানিত উচ্চাসনে এর আগে কেউ বসেনি। ইবনে মাসউদ বললেন, ‘আজকে কার দিন? আজকে কে বিজয়ী হয়েছে? আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল(স) বিজয়ী হয়েছেন।

সূত্র: ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ

 

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

১টি মন্তব্য

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button
skybet88 skybet88 skybet88 skybet88 mix parlay skybet88 slot bonus new member skybet88 skybet88 slot gacor skybet88 skybet88