নবী (সাঃ)-এর উপর দরুদ পাঠের ফজীলত

আল্লাহ্ তাআলা পবিত্র কুরআনে বলেনঃ
إِنَّ اللَّهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيماً
“আল্লাহ তাআলা ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি রহমত প্রেরণ করেন। হে মুমমিনগণ! তোমরা নবীর জন্য দুআ কর ও সালাম প্রেরণ কর। (সূরা আহজাবঃ ৫৬)

এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে তাঁর নবীর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশ করার আদেশ করেছেন। সুতরাং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি দরুদ পেশ করা গুরুত্বপূর্ণ একটি এবাদত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরুদ পাঠ করবে আল্লাহ্ তার উপর দশটি রহমত নাযিল করবেন। তার দশটি গুনাহ ক্ষমা করবেন এবং তার দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন। (আহমাদ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর দরুদ পাঠ করার বিভিন্ন সময় স্থান ও সময় রয়েছে।

তার মধ্যেঃ
১) দুআ করার শুরুতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর দরুদ পাঠ করা মুস্তাহাব। এটি দুআ কবুলের অন্যতম একটি মাধ্যম।
২) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম শুনার পর তাঁর উপর দরুদ পাঠ করা জরুরী। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ ঐ ব্যক্তির অকল্যাণ হোক, যার নিকট আমার নাম উচ্চারণ করা হল অথচ সে আমার উপর দরুদ পাঠ করে নি। (তিরমিজী)
৩) জুমআর দিন আসরের নামাযের পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর দরুদ পাঠ করা মুস্তাহাব। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ জুমআর দিন হচ্ছে তোমাদের অন্যতম একটি ফজীলতপূর্ণ দিন। সুতরাং তোমরা এই দিনে আমার উপর বেশী করে সালাত পাঠ কর। কেননা তোমাদের সালাত আমার নিকট পেশ করা হয়। (আবু দাউদ)
৪) নামাযে তাশাহুদ পাঠের সময় তাঁর উপর দরুদ পাঠ করা ওয়াজিব।
৫) চিঠি লেখার সময় এবং চিঠি লেখা শেষ করে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর দরুদ পাঠ করা মুস্তাহাব।
৬) মসজিদে প্রবেশ করার সময় এবং বের হওয়ার সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দরুদ পাঠ করা মুস্তাহাব।
৭) আযান শুনার পর। জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি আযান শুনে এই দু’আ পাঠ করবেঃ
اللهم رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ وَالصَّلاَةِ القَائِمَةِ آتِ مُحَمَّداً الْوَسِيْلَةَ وَ الفَضِيْلَةَ وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَحْمُوْداً الَّذِيْ وَعَدْتَهُ
“হে আল্লাহ্ এই পরিপূর্ণ আহবান এবং এই প্রতিষ্ঠিত নামাযের তুমিই প্রভু। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দান কর সর্বোচ্চ সম্মানিত স্থান এবং সুমহান মর্যাদা। তাঁেক প্রতিষ্ঠিত কর প্রশংসিত স্থানে যার অঙ্গিকার তুমি তাঁকে দিয়েছো, তার জন্য কিয়ামত দিবসে আমার শাফাআত আবশ্যক হয়ে যাবে।

এমনি আরও অনেক স্থান রয়েছে যেখানে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর দরুদ পাঠ করার কথা বর্ণিত হয়েছে। সুতরাং আমাদের উচিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর দরুদ পাঠ করা। আল্লাহ তাআলা যেন আমাদের সকলকে এই গুরুত্বপূর্ণ আমলটি করার তাওফীক দিন। আমীন।

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button