জুম’আর নামাজের ফযীলত

<<<<<<<(((জুম’আর নামাজের ফযীলত)))>>>>>>

‘বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম’
আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের জন্য যিনি সমস্ত জগৎ সমূহের একচ্ছত্র মালিক।
অসংখ্য শান্তির ধারা বর্ষিত হোক প্রিয় নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর ও তাঁর সাহাবীগণ এবং তাঁর পরিবারবর্গের উপর!

জুম’আর নামাজের ফযীলত ও তা আদায়কারীদের জন্য ঘোষিত পুরষ্কার-

১।
কুরবানী করার সমান সওয়াব অর্জিত হয়ঃ
দিনে আগে ভাগে মসজিদে গেলে দান-খয়রাত বা পশু কুরবানী করার সমতুল্য সওয়াব পাওয়া যায়। আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত এক হাদীসে রাসুল (সাঃ) বলেছেন,

“যে ব্যাক্তি জু’আর দিন ফরজ গোসলের মত গোসল করে প্রথম দিকে মসজিদে হাজির হয়, সে যেন একটি উট কুরবানী করল, দ্বিতীয় সময়ে যে ব্যাক্তি মসজিদে প্রবেশ করে সে যেন একটি গরু কুরবানী করল, তৃতীয় সময়ে যে ব্যাক্তি মসজিদে প্রবেশ করল সে যেন একটি ছাগল কুরবানী করল। অতঃপর চতুর্থ সময়ে যে ব্যাক্তি মসজিদে গেল সে যেন একটি মুরগী কুরবানী করল। আর পঞ্চম সময়ে যে ব্যাক্তি মসজিদে প্রবেশ করল সে যেন একটি ডিম কুরবানী করল। অতঃপর ইমাম যখন বেরিয়ে এসে মিম্বরে বসে গেলেন খুৎবার জন্য, তখন ফেরেশতারা লেখা বন্ধ করে খুৎবা শুনতে বসে যায়।” (বুখারীঃ ৮৮১, ইফা ৮৩৭, আধুনিক ৮৩০)

২।
মসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে ফেরেশতারা অগ্রগামীদের নাম তালিকাভুক্ত করেনঃ
জুম’আর সালাতে কারা অগ্রগামী, ফেরেশতারা এর তালিকা তৈরি করে থাকেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,

“জুম’আর দিন মসজিদের দরজায় ফেরেশতা এসে হাজির হয়। সেখানে দাঁড়িয়ে তারা সর্বাগ্রে আগমনকারীদের নাম লিখতে থাকে। প্রথম ভাগে যারা মসজিদে ঢুকেন তাদের জন্য উট, দ্বিতীয়বারে যারা আসেন তাদের জন্য গরু, তৃতীয়বারে যারা আসেন তাদের জন্য ছাগল, চতুর্থবারে যারা আসেন তাদের জন্য মুরগী, ও সর্বশেষ পঞ্চমবারে যারা আগমন করেন তাদের জন্য ডিম কুরবানী বা দান করার সমান সওাব্ব লিখে থাকেন। আর যখন ইমাম খুৎবা দেওয়ার জন্য মিম্বরে উঠে পড়েন ফেরেশতারা তাদের এ খাতা বন্ধ করে খুৎবা শুনতে বসে যান।” (বুখারী ৯২৯, ইফা ৮৮২, আধুনিক ৮৭৬)

৩।
দশ দিনের গুনাহ মাফ হয়ঃ
জুম’আর দিনের আদব যারা রক্ষা করে তাদের দশ দিনের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,

‘যে ব্যাক্তি ভালভাবে পবিত্র হল অতঃপর মসজিদে এলো, মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শুনতে চুপচাপ বসে রইল, তার জন্য দুই জুম’আর মধ্যবর্তী এ সাত দিনের সাথে আরও তিনদিন যোগ করে মোট দশ দিনের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। পক্ষান্তরে খুৎবার সময় যে ব্যক্তি পাথর, নুড়িকণা বা অন্য কিছু নাড়াচাড়া করল সে যেন অনর্থক কাজ করল।’ (মুসলিমঃ ৮৫৭)

৪।
জুম’আর আদব রক্ষাকারীর দশ দিনের গুনাহ মুছে যায়ঃ
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,

“জুম’আর সালাতে তিন ধরনের লোক হাজির হয়। (ক) এক ধরনের লোক আছে যারা মসজিদে প্রবেশের পর তামাশা করে, তারা বিনিময়ে তামাশা ছাড়া কিছুই পাবে না। (খ) দ্বিতীয় আরেক ধরনের লোক আছে যারা জুম’আয় হাজির হয় সেখানে দু’আ মুনাজাত করে, ফলে আল্লাহ যাকে চান তাকে কিছু দেন আর যাকে ইচ্ছা দেন না। (গ) তৃতীয় প্রকার লোক হল যারা জুম’আয় হাজির হয়, চুপচাপ থাকে, মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শোনে, কারও ঘাড় ডিঙ্গিয়ে সামনে আগায় না, কাউকে কষ্ট দেয় না, তার দুই জুম’আর মধ্যবর্তী ৭ দিন সহ আরও তিনদিন যোগ করে মোট দশ দিনের গুনাহ খাতা আল্লাহ তায়ালা মাফ করে দেন।” (আবু দাউদঃ ১১১৩)

৫।
প্রতি পদক্ষেপে এক বছরের নফল রোজা ও এক বছরের সারারাত তাহাজ্জুদ পড়ার সওয়াব অর্জিত হয়ঃ
যে ব্যাক্তি আদব রক্ষা করে জুম’আর সালাত আদায় করে তার প্রতিটি পদক্ষেপের বিনিময়ে তার জন্য পুরো এক বছরের রোজা পালন এবং রাত জেগে তাহাজ্জুদ পড়ার সওয়াব লিখা হয়।

আউস বিন আউস আস সাকাফী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,

“জুমা’আর দিন যে ব্যাক্তি গোসল করায় (অর্থাৎ সহবাস করে, ফলে স্ত্রী ফরজ গোসল করে এবং) নিজেও ফরজ গোসল করে, পূর্বাহ্ণে মসজিদে আগমন করে এবং নিজেও প্রথম ভাগে মসজিদে গমন করে, পায়ে হেঁটে মসজিদে যায় (অর্থাৎ কোন কিছুতে আরোহণ করে নয়), ইমামের কাছাকাছি গিয়ে বসে, মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শোনে, কোন কিছু নিয়ে খেল তামাশা করে না; সে ব্যাক্তির প্রতিটি পদক্ষেপের জন্য রয়েছে বছরব্যাপী রোজা পালন ও সারা বছর রাত জেগে ইবাদত করার সমতুল্য সওয়াব।” (মুসনাদে আহমাদঃ ৬৯৫৪, ১৬২১৮)

৬।
দুই জুম’আর মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহের কাফফারাঃ
জুম’আর সালাত জুম’আ আদায়কারীদের জন্য দুই জুম’আর মধ্যবর্তী গুনাহের কাফফারা স্বরূপ। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,

“পাঁচ বেলা সালাত আদায়, এক জুম’আ থেকে পরবর্তী জুম’আ, এক রমজান থেকে পরবর্তী রমজানের মধ্যবর্তী সময়ে হয়ে যাওয়া সকল (সগীরা) গুনাহের কাফফারা স্বরূপ, এই শর্তে যে, বান্দা কবীরা গুনাহ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখবে।” (মুসলিমঃ ২৩৩)

সূত্রঃ বই-প্রশ্নোত্তরে জুমু’আ ও খুৎবা

পরিমার্জনেঃ ডঃ মোহাম্মদ মনজুরে ইলাহী,

ডঃ আবু বকর মুহাম্মদ জাকারিয়া মজুমদার,

ডঃ মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
skybet88 skybet88 skybet88 skybet88 mix parlay skybet88 slot bonus new member skybet88 skybet88 slot gacor skybet88 skybet88