ইসলামের আলো পৌঁছে গেল খ্রিস্টান রাষ্ট্র কোরিয়ান সংস্কৃতিতেও

আফগানিস্তানে কোরিয়ান জিম্মি সঙ্কটের দশম বার্ষিকী হিসেবে পালিত হয়েছে ২০১৭ সাল। কোরিয়ায় ইসলামের ইতিহাসে ওই ঘটনা ছিল একটি বিরাট টার্নিং পয়েন্ট। দক্ষিণ কোরিয়া মূলত খ্রিস্টান এবং কনফুসীয় জনগোষ্ঠীর দেশ হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ার মুসলমানরা দেশটিতে একটি ক্ষুদ্র সংখ্যালঘুগোষ্ঠী তৈরি করেছে। দেশটির মোট জনসংখ্যার ০.২ শতাংশ হচ্ছেন মুসলমান।

দেশটিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ‘টার্মিনাল হাই অলটিউট এরিয়া ডিফেন্স (থাড) সিস্টেম’ মোতায়েন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার কারণে ইতোমধ্যে চীনা পর্যটকদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। এ কারণে মুসলমান পর্যটকদের জন্য দক্ষিণ কোরিয়া তার দরজা উন্মুক্ত করেছে। চীনা পর্যটকদের সংখ্যা কমে যাওয়ায় যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে তা মুসলমান পর্যটকদের মাধ্যমে পূরণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

স্থানীয় কোরিয়ান মুসলিমদের বিভিন্ন প্রজন্ম দেশটিতে দ্বৈত পরিচয়ের প্রতিফলন ঘটাচ্ছে। আর তা হচ্ছে কোরিয়ান এবং মুসলমান। কোরিয়ান পর্যটন সংস্থার প্রকাশিত নথি অনুযায়ী, ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে দেশটিতে মুসলিম পর্যটকদের সংখ্যা ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ২০১৭ সালের শেষ নাগাদ এই সংখ্যা ১২ মিলিয়নে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই অর্থনৈতিক সম্ভাবনার বিষয়টি বুঝতে পেরে দেশটি তার রেস্টুরেন্টগুলোতে হালাল সার্টিফিকেটের সংখ্যা বাড়িয়েছে এবং এতে নামাজের জন্য আলাদা কক্ষের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং রাজধানী সিউলের চারপাশে গড়ে ওঠা মুসলিম-বান্ধব রেস্তোরাঁসমূহের প্রচারের জন্য সিউল পর্যটন সংস্থা ধারাবাহিকভাবে ভিডিও প্রচার করছে।

ইসলাম এবং কোরীয় উপদ্বীপ পারস্পরিক আকর্ষণ এবং কৌতূহলের একটি ইতিহাস শেয়ার করেছে। ৯ম শতাব্দীতে সিল্ক রোডের যুগ থেকে আজকের আধুনিক আন্তঃসংযুক্ত বিশ্বের বন্ধন গঠিত হয়েছিল সমুদ্রপথে ভ্রমণের মাধ্যমে। এই বন্ধন এখন নতুন প্রজন্মের তরুণ মুসলিমদের কাছে হস্তান্তরিত হয়েছে। এসব তরুণ মুসলিমরা তাদের কোরিয়ান সংস্কৃতি এবং তাদের নব-আবিষ্কৃত ধর্মের মধ্যে একটি ভারসাম্য খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছে।

কোরিয়ায় ইসলামের ইতিহাস এবং ১৯৫০-১৯৫৩ সালের কোরিয়ান যুদ্ধের সময় দেশটির পুনঃপ্রবর্তনে তুর্কি সৈন্যরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

কোরিয়ান যুদ্ধের সময় দক্ষিণ কোরিয়ার সৈন্যদের সহায়তায় প্রায় ১৫,০০০ তুর্কি সৈন্য স্বেচ্ছায় যুদ্ধ করতে আসেন। তাদের অনেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় থেকে যান এবং দক্ষিণ কোরিয়ানদের কাছে নতুন করে ইসলামের পরিচিত তুলে ধরেন।

যুদ্ধের সময় তুর্কিরা ‘তাঁবুর মসজিদ’ প্রতিষ্ঠা করেছিল। শুরুতে মসজিদটিতে কেবল তুর্কি সৈন্যরাই ধর্মকর্ম পালন করত, তবে পরবর্তী সময়ে এটি দক্ষিণ কোরিয়ানদের ধর্মান্তরিত হতে উৎসাহিত করেছে এবং ২০ শতকের দক্ষিণ কোরিয়ার ইসলাম প্রচারের ভিত্তি স্থাপন করে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় তুর্কিদের সম্পৃক্ততা ও ত্রাণ তৎপরতা এমন একটি দীর্ঘস্থায়ী চিহ্নের মত ছিল যে, দক্ষিণ কোরিয়ানরা ‘রক্তের ভাই’ হিসাবে তুর্কিদের বর্ণনা করেন।

সূত্র: আল জাজিরা

সংগ্রহে:  Revert Stories : Journey To Islam – ইসলামে আসার গল্প

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
slot online skybet88 skybet88 skybet88 mix parlay skybet88 rtp slot slot bonus new member skybet88 mix parlay slot gacor slot shopeepay mix parlay skybet88 slot bonus new member