ইসলামে রসিকতা

সৃষ্টির শুরু থেকে বর্তমান যুগ পর্যন্ত মানুষের জীবনাচারের প্রতি লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে তাদের জীবনের সাথে অঙ্গাঅঙ্গি ভাবে মিশে আছে হাসি-তামাশা ও আনন্দ-রসিকতা। এ ক্রিড়া-কৌতুক ও আনন্দ-রসিকতা মানুষের জীবনে বয়ে আনে এক অনাবিল প্রান চাঞ্চল্য ও উদ্যমতা। মানুষকে করে ঘনিষ্ঠ। তাদের আবদ্ধ করে এক অকৃত্রিম ভালবাসার মায়াডোরে। আনন্দ-রসিকতার এ মহোময় ক্রিয়াটি সম্পাদিত হয় সমবয়সী বন্ধু-বান্ধব, সাথী-সঙ্গী, নিজ সন্তানাদি ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মাঝে।বরং কোন মানুষই এ আনন্দঘন কর্ম থেকে মুক্ত নয়। তবে কেউ কম আর কেউ বেশি।

আল্লাহ তাআলার বান্দা হিসাবে আমাদের জীবনের প্রতিটি পর্বকে সাজাতে হবে মহান আল্লাহ তাআলার নির্দিষ্ট রীতি অনুযায়ী। যাতে আমাদের মধ্যে আল্লাহ তাআলার উবূদিয়্যত (দাসত্ব) পূর্ণাঙ্গরূপে বাস্তবায়িত হয়। বর্তমানে মানুষের মাঝে হাসি-তামাশার প্রচলন একটু বেশি।তাই তার ধরণ-প্রকৃতি, হুকুম ও প্রকার এবং এ বিষয়ে শরয়ী দৃষ্টিকোণ কি সে সম্পর্কে জানা আবশ্যক হয়ে দাড়িয়েছে। যাতে মুসলমানরা সেগুলো মেনে চলতে পারে ও একঘেয়েমি দূরকারী এ সুন্দর পদ্ধতি পরিত্যাগ করতে না হয়। এবং এর শরয়ী দিকনির্দেশনা অবলম্বন করে যেন পুণ্য অর্জন করতে পারে পাশাপাশি নিজেকে গুনাহ থেকে বিরত রাখতে পারে।

রসিকতা তিন প্রকার:

(১)অনুমোদিত এবং প্রশংসাযোগ্য রসিকতা : আর সেটি হচ্ছে, যা ভাল উদ্দেশ্যে, সৎ নিয়তে এবং শরয়ী নিয়ম নীতি অবলম্বন করে সম্পাদন করা হয়। যেমন মাতা-পিতার সাথে আদবের সহিত রসিকতা করা অথবা স্ত্রী, সন্তানদের সাথে, অনুরূপ বন্ধু-বান্ধবদের সাথে তাদের অন্তরে আনন্দ-খুশির উপস্থিতির জন্য রসিকতা করা। এগুলির দ্বারা রসিকতাকারীর পুণ্য লাভ হয়।

এই প্রকার রসিকতার অনুমোদনে প্রমাণাদি :

ক) হানযালাহ রা. এর হাদীস এ আছে তিনি বলেন : হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হানযালাহ মুনাফেক হয়ে গেছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: কীভাবে? আমি বললাম হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমরা যখন আপনার কাছে থাকি আর আপনি আমাদেরকে বেহশত-দোযখের কথা স্মরণ করান, মনে হয় যেন চাক্ষুষ দেখতে পাচ্ছি। যখন আপনার নিকট থেকে চলে যাই আর আমাদের স্ত্রী সন্তান সন্ততি এবং বিভিন্ন সাংসারিক কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। তখন এর অনেক কিছুই ভুলে যাই। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন যার হাতে আমার জান তার শপথ: আমার নিকট থাকা কালীন সময়ে তোমাদের অবস্থা যেমন হয় যদি তোমরা সর্বদা ঐ অবস্থায় থাকতে এবং জিকিরের সাথে পূর্ণসময় অতিবাহিত করত, তাহলে অবশ্যই ফেরেশতারা তোমাদের বিছানায় ও চলার রাস্তায় তোমাদের সাথে করমর্দন করত। কিন্তু হে হানযালাহ কিছু সময় এভাবে কিছু সময় ঐ ভাবে। কথাটি তিনবার বললেন। (মুসলিমঃ৪৯৩৭)

খ) যাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রা. এর হাদীসে এসেছে: যখন যাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) বিবাহ করলেন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে প্রশ্ন করলেন: হে যাবের তুমি কি বিবাহ করেছ? আমি বললাম: হ্যাঁ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: কুমারী না বিধবা? আমি বললাম: বিধবা। রাসূলুল্লাহ বললেন: তুমি কুমারী মেয়ে বিবাহ করলে না কেন? কুমারী মেয়েকে বিবাহ করলে সে তোমার সাথে হাসি-তামাশা করত, আর তুমিও তার সাথে হাসি-তামাশা করতে পারতে। (মুসলিমঃ ৩৫০১;ইঃফাঃ)

গ) আয়েশা রা. এর হাদীসে এসেছে: কোন এক সফরে তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলেন। আয়েশা রা. বলেন : আমি রাসূলের সাথে দৌড় প্রতিযোগিতায় প্রবৃত্ব হলাম এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে পিছনে ফেলে দিলাম। অত:পর যখন আমার শরীর মোটা হয়ে গেল আবার প্রতিযোগিতা করলাম রাসূল বিজয়ী হলেন। তখন বললেন: এই বিজয় ঐ বিজয়ের পরিবর্তে (শোধ)। (আবু দাউদঃ২২১৪)

ঘ) আনাস রা. থেকে বর্ণিত এক হাদিসে আছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার তাকে এ বলে সম্বোধন করেছিলেন:(( হে দুই কান বিশিষ্ট ব্যক্তি)) হাদীসের একজন বর্ণনাকারী আবু উসামা বলেন:অর্থাৎ রাসূল তার সাথে রসিকতা করছিলেন। (তিরমিজিঃ ৩৫)

ঙ)আনাস রা. থেকে বর্ণিতঃ কোন এক ব্যক্তি রাসূলুল¬হ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট একটি (ভারবাহী জন্তু) বাহন চাইলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন আমি তোমাকে একটি উটের বাচ্চার উপর চড়িয়ে দেব। সে বলল: হে আল্লাহ্লর রাসূল আমি উটের বাচ্চা দিয়ে কি করব? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: উটতো উটের বাচ্চা ছাড়া আর কিছু জন্ম দেয় না। (বুখারিঃ ১৯১৪)

(২) নিন্দাযোগ্য রসিকতা : অর্থাৎ যে রসিকতা মন্দ উদ্দেশ্যে এবং অসৎ নিয়তে অথবা শরীয়তের নির্ধারিত রীতি ভঙ্গ করে সম্পাদন করা হয় । এর উদাহরণ: যেমন মিথ্যা মিশ্রিত রসিকতা, অথবা অন্যকে কষ্ট দেওয়ার উদ্দেশ্যে কৃত রসিকতা।

(৩) মুবাহ রসিকতা : ঐ রসিকতা যার কোন সঠিক উদ্দেশ্য নেই, ভাল নিয়তও নেই, কিন্তু শরীয়তের নির্ধারিত গণ্ডি থেকে বের হতে হয় না এবং নিয়মও ভঙ্গ করা হয়না।পাশাপাশি অতিরিক্ত পরিমাণেও করে না যে অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাবে । এমন রসিকতা প্রশংসাযোগ্যও নয় আবার নিন্দাযোগ্যও নয়। সুতরাং এর ভিতর কোন পুণ্য নেই। কারণ পুন্য পাওয়ার যে নীতিমালা অর্থাৎ সঠিক উদ্দেশ্য এবং সৎ নিয়ত তা এখানে পাওয়া যায়নি অনুরূপভাবে কোন গুনাহও হবেনা কারণ শরীয়তের বিরুদ্ধাচারণ করা হয়নি বা কোন নীতি ভাঙ্গা হয়নি।

রসিকতার কতিপয় নীতিমালা ও আদব :

প্রথমত : রসিকতা করার ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলোর প্রতি গুরত্ব দিতে হবে :

১। ভাল নিয়ত অর্থাৎ রসিকতা করার সময় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মনে মনে এমন ধারণা পোষন করবে যে সে আল্লাহ তাআলা পছন্দ করেন এমন একটি ভাল কাজ করছে। যেমন রসিকতার মাধ্যমে নিজ ভাই, স্ত্রী, পিতা বা এমন কারো অন্তরে খুশি-আনন্দ প্রবেশ করিয়ে তাদের কর্ম চঞ্চল করে তোলা। অথবা উক্ত তামাশা করার মাধ্যমে কাউকে একটি ভাল কাজের নিকটবর্তী করে দেয়া।অথবা নিজ আত্মাকে ভালকাজের জন্য শক্তি সঞ্চয়ের লক্ষ্যে প্রফুল্ল করা। বা এরূপ যে কোন ভাল নিয়ত পোষন করা। আর এ মহান মূলনীতির প্রমাণ হল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণীঃ

إنما الأعمال بالنيات

সমস্ত কাজের ফলাফল নিয়তে উপর ভিত্তি করে নিরোপিত হয়।

২। সত্যকে অত্যাবশ্যকীয় করে নেয়া অর্থাৎ রসিকতা করার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র সত্য ও বাস্তবধর্মী রসিকতা করবে এবং মিথ্যা পরিহার করবে।

আবু হুরাইরা রা. বলেন: লোকেরা বলল: হে আল্লাহর রাসূল আপনি কি আমাদের সাথে রসিকতা করছেন? নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: আমি সত্য ছাড়া বলি না।(তিরমিজিঃ১৯১৩)

৩। রসিকতা করার ক্ষেত্রে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধা এবং সম্মান বোধ থাকতে হবে, মানুষকে তার যোগ্য মর্যাদা দিতে হবে এবং প্রতিপক্ষের মন-মানসিকতা বুঝতে হবে। সকল মানুষ ঠাট্টা-রসিকতা পছন্দ করে না।

দ্বিতীয়ত: রসিকতার সময় যে সমস্ত বিষয় থেকে বেচে থাকতে হবে।

১। মিথ্যা, ঠাট্টার ছলে হোক আর উদ্দেশ্যমূলক ভাবেই হোক মিথ্যা সর্বাবস্থায়ই হারাম এবং শরীয়তের দৃষ্টিকোন থেকে খুবই নিকৃষ্ট কাজ। মানুষকে হাসানোর জন্য যে মিথ্যা বলে তার প্রতি বিশেষ শাস্তির কথা এসেছে। আর এটা এই জন্য যে এটি খুবই বিপদজনক, সাথীদেরকে উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি এর ভিতর খুব সহজেই জড়িয়ে পড়া যায়, এবং এর মাধ্যমে নিজেকে প্রকাশ করা যায়।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

ধ্বংস ঐ ব্যক্তির জন্য যে মানুষকে হাসানোর জন্য কথা বলে অতঃপর মিথ্যা বলে, তার ধ্বংস অনিবার্য, তার ধ্বংস অনিবার্য। (তিরমিজিঃ২২৩৭)

শরীয়ত মিথ্যা বলার এ কুঅভ্যাসকে শুধু এখানে নিষিদ্ধ করেই ক্ষান্ত হয়নি বরং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঠাট্টা-রসিকতার মত বিষয়েও এটি পরিত্যাগ করতে সকলকে দারুন ভাবে উদ্বুদ্ধ করেছেন। বলেছেন:

আমি জান্নাতের মধ্যবর্তী স্থানে একটি বিশেষ ঘরের জিম্মাদারী গ্রহন করছি ঐ ব্যক্তির জন্যে যে সর্বোতভাবে মিথ্যা পরিহার করেছে এমনকি রসিকতার মাঝেও।(আবু দাউদঃ ৪১৬৭)

২। হাসি-রসিকতার ক্ষেত্রে বাড়া-বাড়ি এবং পরিমাণে এত অধিক করা যে মজলিসটিই হাসি-তামাশার মজলিসে রূপান্তরিত হয়ে যায় এবং মূল লক্ষ-উদ্দেশ্য ও প্রয়োজনীয় বিষয়াদি চাপা পড়ে যায়। আর এটি ব্যক্তির পরিচয় ও বৈশিষ্টে পরিনত হয়। এরূপ পর্যায়ের মজা-রসিকতা নিন্দনীয়। কেননা এতে সময় নষ্ট হয়। ব্যক্তিত্বের প্রভাব নষ্ট হয়ে যায়, বৈশিষ্ট্য পূর্ণ ইসলামী ব্যক্তিত্ব শেষ হয়ে যায়, অবশ্যই ইহা মিথ্যায় পতিত করে। অন্যকে ছোট করা হয়, ছোটরা বড়দের উপর সাহসী হয়ে উঠে। অন্তর মরে যায় এবং মুসলমান যে ধরনের বাস্তব ও উপকারী গুনাগুন দ্বারা অলংকৃত থাকার কথা তা তার থেকে দূরে সরে যায়।

৩। বেগানা নারীদের সাথে ঠাট্টা করা। কেননা এটা ফিতনা ও অশ্লীলতায় পড়ার কারণ এবং অন্তর হারামের দিকে ধাবিত করে।

৪। অন্যের ক্ষতি সাধন করা, কষ্ট দেওয়া বা অধিকার হরণ করা, অথবা এমন আঘাত করা যা সীমা লঙ্ঘন করে অথবা এমন জিনিস দ্বারা ঠাট্টা করা যার দ্বারা ক্ষতি হতে পারে যেমন পাথর বা অস্ত্র।

এ ধরনের ঠাট্টা হিংসা বিদ্বেষ তৈরি করে বরং কখনও ঝগড়ার পর্যায়ে পৌঁছে যায়। ঠাট্টাকে তখন আর ঠাট্টা মনে করা হয়না বাস্তব মনে করা হয় আর ভালোবাসা পরিবর্তিত হয়ে যায় হিংসায় । পছন্দ মোড় নেয় অপছন্দের দিকে । আল্লাহ বলেনঃ

وَقُلْ لِعِبَادِي يَقُولُوا الَّتِي هِيَ أَحْسَنُ إِنَّ الشَّيْطَانَ يَنْزَغُ بَيْنَهُمْ

আমার বান্দাদেরকে বলে দিন তারা যেন যা উত্তম এমন কথাই বলে। শয়তান তাদের মাঝে সংঘর্ষ বাধায়।(সুরা আল ইসরাঃ৫৩)

ينزغ শব্দের অর্থ প্ররোচনা, ইবনে কাসীর (রাঃ) বলেন : আল্লাহ তাআলা তার মুমিন বান্দাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন পরস্পরে কথা বলার সময় নরম এবং ভাল কথা বলবে। তারা যদি এমন না করে তাহলে শয়তান তাদের মাঝে ঝগড়া বাঁধিয়ে দেবে।

৫। শরীয়তের বিষয়াদি নিয়ে রসিকতা করা। শরীয়তের বিষয়ে রসিকতা করাকে উপহাস ও বিদ্রুপ হিসাবে ধরা হয় যা মূলত: কুফরী এবং এগুলো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ইসলাম থেকে বের করে দেয়। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে রক্ষা করুন। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ

وَلَئِنْ سَأَلْتَهُمْ لَيَقُولُنَّ إِنَّمَا كُنَّا نَخُوضُ وَنَلْعَبُ قُلْ أَبِاللَّهِ وَآَيَاتِهِ وَرَسُولِهِ كُنْتُمْ تَسْتَهْزِئُونَ. لَا تَعْتَذِرُوا قَدْ كَفَرْتُمْ بَعْدَ إِيمَانِكُمْ.

আর যদি তুমি তাদের কাছে জিজ্ঞেস কর তবে তারা বলবে আমরাতো কথার কথা বলছিলাম এবং কৌতুক করছিলাম। আপনি বলুন : তোমরা কি আল্লাহর সাথে তার হুকুম আহকামের সাথে এবং তার রাসূলের সাথে ঠাট্টা করছিলে, ছলনা করো না, তোমরা যে কাফের হয়ে গেছ, ঈমান প্রকাশ করার পর।(সুরা তাওবাহঃ৬৫-৬৬)

অনুরূপ ভাবে দ্বীনের ধারক বাহক তথা সাহাবা , উলামা, সালেহীন প্রমুখদের বেলায়ও হুকুম তাই। অর্থাৎ তাদের চাল চলন, কথা বার্তা, আচার আচরন, ফতোয়া ইত্যাদি নিয়ে কেউ ঠাট্টা বিদ্রুপ করলে তারও ঈমান থাকবে না।

লেখক : আখতারুজ্জামান মুহাম্মদ সুলাইমান, ইসলাম প্রচার ব্যুরো, রাবওয়াহ, রিয়াদ

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
slot online skybet88 skybet88 skybet88 mix parlay skybet88 rtp slot slot bonus new member skybet88 mix parlay slot gacor slot shopeepay mix parlay skybet88 slot bonus new member