জেরুজালেমের ওপর ইসরাইলি দাবির অসারতা

রচনায় : ড. এহসান যুবাইর*

শেষতক জেরুজালেম শহরকে ইসরাইলি রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। শুধু তাই নয়, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তেলআবিবে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তরের নির্দেশও দিয়েছেন। ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইল ধাপে ধাপে তার লক্ষ্য পূরণে অগ্রসর হচ্ছে। ফিলিস্তিনের ভূখণ্ডে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও জেরুজালেমে এর রাজধানী প্রতিষ্ঠার সমর্থনে ইহুদিরা তাদের ধর্মগ্রন্থ হতে কিছু প্রমাণ উপস্থাপন করে। পর্যালোচনা না করেই আমরা ওসব প্রমাণ বাতিল বলে দাবি করতে চাইনা। তবে তারা ইতিহাসের সাথে কিংবদন্তিকে এমনভাবে মিশিয়ে ফেলেছে যে এগুলোকে পৃথক করা অসম্ভব। সে যা হোক- আমরা তাদের পৌরানিক কাহিনীর সাথেই অগ্রসর হতে চাই।

ফিলিস্তিনে ইহুদিদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে তারা প্রধানত দু’টি যুক্তি উপস্থাপন করে। একটি ধর্মতাত্বিক; অপরটি নৃতাত্ত্বিক। এক, এটি তাদের পিতৃপুরুষদের ভূখণ্ড, যা ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে তারা জয় করতে পেরেছিল। প্রায় দুই হাজার বছর পূর্বে তারা ফিলিস্তিন হতে বিতাড়িত হয়। এই দীর্ঘ সময়ে তারা ‘প্রমিজ ল্যান্ডে’র কথা ভুলেনি। দুই. ইহুদি জাতি অবিমিশ্র মানবগোষ্ঠী। তারা যেখানেই গমণ করেছে নিজেদের স্বকীয়তা ও বংশধারার বিশুদ্ধতা রক্ষা করেছে। ইহুদিবাদ অত্যন্ত রক্ষণশীল ধর্ম; তাই ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের এই ধর্মে প্রবেশের প্রবণতা কম ছিল। অতএব ফিলিস্তিনের আদি বাসিন্দাদের অবিমিশ্র উত্তরসূরি হিসেবে ওখানে বসবাসের অধিকার তাদেরই বেশি। এ যুক্তিগুলোর সমর্থনে ধর্ম গ্রন্থের বিবরণ ও কল্পকাহিনী ব্যতীত তারা কোন ঐতিহাসিক প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারে না। সে যাই হোক। তাদের কল্পিত ইতিহাসের সাথে যাত্রা করেই তাদের যুক্তিগুলো খণ্ডন করতে চাই।

ইহুদিরা নিজেদের ইতিহাস নাবী ইবরাহিম (আ)-এর সাথে সম্পর্কিত করে। মহান এই নাবীর জন্ম প্রাচীন ইরাক তথা ব্যবিলনে। ইবরাহিম (আ)-এর গোত্র তো বটেই, তাঁর পিতাও মূর্তিপূজক ছিলেন। ব্যবিলনের লোকেরা তাঁর দাওয়াতে সাড়া তো দেয়নি, উল্টো তাঁকে অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। মহান আল্লাহ তাঁর নাবীকে আগুন হতে রক্ষা করেন। আল্লাহর নির্দেশে ইবরাহিম (আ) হিজরত করে আওর কেলদানিন হয়ে মিশরে উপনীত হন। বহু ঘটনার পর তিনি মিশর হতে প্রত্যাবর্তন করেন। তাঁর এক স্ত্রী হাজেরাকে পুত্র ইসমাঈলসহ মাক্কার তৃণহীন মরুভূমিতে বসবাস করান। ইসমাইল (আ) ও তাঁর মাকে কেন্দ্র করে সেখানে একটি জনবসতি গড়ে ওঠে। আরবের জুরহাম গোত্রে বিয়ে করেন ইসমাঈল (আ)। তাঁর উত্তরপুরুষ হলেন মহানবী মুহাম্মদ (সা)।

ইবরাহিম (আ) তাঁর অপর স্ত্রী সারাসহ বসবাস করেন আরবের উত্তরে কেনআন নামক এলাকায়। এই অঞ্চলটি পরবর্তীতে ফিলিস্তিন নামে পরিচিতি লাভ করে। সেখানে তাঁর অপর পুত্র ইসহাক (আ)-এর জন্ম। তাঁরা যে গ্রামে বসবাস করতেন সেটি বর্তমানে হেবরন নামে পরিচিত। ইসহাক (আ)-এর পুত্র ইয়াকুব (আ)ও নাবী ছিলেন। তাঁর অপর নাম ইসরাঈল। এখানে উল্লেখ করা দরকার যে ইবরাহিম (আ) এর পরিবার এই অঞ্চলে অভিবাসী ছিলেন। এখানকার আদি জনগোষ্ঠী ছিল কেনআনি (বা কনআনি) গোত্রভূক্ত, যাদের আদি নিবাস ছিল আরবে। খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় সহস্রাব্দের প্রারম্ভে তারা আরবের বেদুইন জীবন ছেড়ে ফিলিস্তিনে গিয়ে উপস্থিত হন। অর্থাৎ ফিলিস্তিনের আদি অধিবাসীরা আরব জাতিভুক্ত ছিল। আল-কুরআন ও বাইবেলের বিবরণ অনুসারে ইয়াকুব (আ)-এর এক পুত্র ইউসুফ (আ) তাঁর ভাইদের ষড়যন্ত্রে মিশরে নীত হন (খ্রিস্টপূর্বাব্দ ১৬০০)। সেখানে সম্রাটের স্ত্রীর চক্রান্তে তিনি কারাগারে নিক্ষিপ্ত হন। কয়েক বছর পর মিশরের বাদশাহ-এর স্বপ্নের ব্যাখ্যার সূত্রে তিনি কারাগার হতে মুক্তিলাভ করেন। রাজা তাকে খাদ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত করেন। ওদিকে মিশর ও পার্শ্ববর্তী দেশ কেনআনে দুর্ভিক্ষ শুরু হলে ইউসুফ (আ)-এর ভায়েরা খাদ্যের সন্ধানে মিশরে গমন করেন। তারপর ইউসুফ (আ)-এর অনুরোধে তাঁর পিতামাতা ও বাকি এগারো ভাই মিশরে স্থানান্তরিত হন (ইউসুফ (আ)-এর মিশর গমণের ২৭ বছর পর।)। এভাবে ইয়াকুব (আ) বা ইসরাইলের পুত্ররা অর্থাৎ বনি ইসরাইল কেনআন হতে মিশরে স্থানান্তরিত হন এটি ছিল স্বৈচ্ছিক স্থানান্তর, কেউ তাদেরকে বিতাড়িত করেনি।

মিশরে বনি ইসরাইলের বংশ বৃদ্ধি হয়। এ সময় বনি ইসরাইলের সাথে স্থানীয় কিবতীদের বংশধারার মিশ্রণ হয়নি এমন কোন তথ্যপ্রমাণ আমাদের কাছে নেই, ইহুদিদের কাছেও নেই। প্রায় সাড়ে তিনশত বছর পর ইয়াকুব বংশে জন্মগ্রহণ করেন নবী মূসা (আ)। ওই সময় মিশরে বনি ইসরাইলের ওপর ফেরাউন বাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতন চলছিল। নবুওয়াত প্রাপ্তির পর মুসা (আ) দীর্ঘদিন দাওয়াতি কাজ পরিচালনা করেন। কিন্তু কোন ফল এলোনা। ফেরাউন তো বটেই; বনি ইসরাইলের অনেকেই মূসা (আ)-এর ওপর ঈমান আনল না। আল্লাহর নির্দেশে মুসা (আ) তাঁর অনুসারীদের নিয়ে লোহিত সাগর পার হয়ে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে চলে এলেন। এটি ১২২১ খ্রিস্টপূর্বাব্দের ঘটনা। স্মর্তব্য, বনি ইসরাইলের সকল সদস্য মূসা (আ)-এর সাথে মিশর ত্যাগ করেননি। কারণ তাদের একাংশ তাঁর ওপর ঈমানই আনেনি। যারা ঈমান এনেছিল, তাদের সবাই যে হিজরত করতে পেরেছিল এমন দাবিও করা যায় না। অপেক্ষাকৃত নতুন এক হিজরতের সাথে তুলনা করুন। ৬২২ খ্রিস্টাব্দে মহানবী (সা) মাক্কা হতে মদীনায় হিজরত করেন মক্কায় কোন নিয়মতান্ত্রিক সরকার ও দাপুটে রাজা ছিল না। মাক্কা হতে মাদীনার যোগাযোগ ছিল স্থলপথে, দূরত্বও বেশি ছিল না। তবুও সকল মুসলমান হিজরত করতে পারেননি। অনেক মুসলিম নারী, বৃদ্ধ ও দুর্বলচিত্তের ব্যক্তি মাক্কায় অবস্থান করতে বাধ্য হয়েছিলেন। অতএব মিশর হতে ফিলিস্তিন যাত্রার দূর্গম ও নদীময় পথে অনেকেই মূসা (আ) সাথী হতে পারেননি, এটা নিশ্চয়তার সাথে বলা যায়। মিশরে থেকে যাওয়া ইহুদিরা এবং তাদের নিকট পূর্বপুরুষরা কখনো ফিলিস্তিনে বসবাস করেননি।

আল্লাহ তা’আলা বনি ইসরাইলকে পবিত্র শহর তথা জেরুজালেমে প্রবেশের নির্দেশ দিলেন, তাদেরকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও দিলেন। মূসা (আ) জেরুজালেমের হাল-হকিকত যাচাই করার জন্য বারো ব্যক্তিকে প্রেরণ করলেন। তারা ঘুরে এসে জানাল, ‘ওই শহরে ভয়ানক শক্তিশালী এক জাতির বসবাস, তারা বের না হলে আমরা প্রবেশ করব না’। তারা আরো বলল, ‘মূসা! আপনি ও আপনার প্রভু গিয়ে যুদ্ধ করুন। আমরা এখানেই বসে থাকবো।’ বনি ইসরাইলের এমনতর অবাধ্যতা ও বাড়াবাড়ির জন্য আল্লাহ তাদের ওপর অসন্তুষ্ট হলেন। চল্লিশটি বছর তারা একটি প্রান্তরে ঘুরেফিরে কাটাতে বাধ্য হয়। মূসা ও হারুন (আ)-এর জীবদ্দশায় তারা জেরুজালেমে প্রবেশ করতে পারেনি। তাঁদের মৃত্যুর পর নবী ইউশা বিন নুন এর নেতৃত্বে বনি ইসরাইল জেরুজালেমে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়। তবে তাদের পক্ষে ফিলিস্তিনের আদি অধিবাসী তথা কেনআনি, হিত্তি, আম্মুরি, ফিরিজ্জি, হাভী ও ইয়াবুসীদের সম্পূর্ণরূপে পরাজিত করা বা পবিত্র ভূমি থেকে উৎখাত করা সম্ভব হয়নি। ওইসব জাতিগোষ্ঠীর কিছু নগররাষ্ট্রও ফিলিস্তিনে অবশিষ্ট ছিল।

জেরুজালেমে প্রবেশের পর ইহুদিদের মাঝে চরম বিভক্তি ছড়িয়ে পড়ে। তাদের বারো গোত্র একক নেতৃত্বের অধীনে বসবাস করতে অস্বীকার করে। ফলে বার গোত্রে বারো জন বিচারক নিয়োগ করা হয়। এ ব্যবস্থায় তারা প্রায় সাড়ে তিন শত বছর শাসিত হয়। এসময় ইহুদিদের নৈতিক অবস্থারও অবনতি হয়। মুশরিক জাতিগুলোর নানা – বিশ্বাস, পাপাচার ও সংস্কৃতি ইহুদিদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে কি অ-ইহুদি রাষ্ট্রগুলোর মোর্চা ইহুদিদের কাছ থেকে তাদের ভূমি কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এমতাবস্থায় বনি ইসরাইল একটি শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে এবং তারা নবী শামুয়েলকে একজন রাজা নিয়োগ দেয়ার জন্য অনুরোধ করে। রাজা হিসেবে তালুতকে নিয়োগ দিলেন শামুয়েল। তারপর তিনজন পরাক্রমশালী রাজা তালুত, দাউদ (আ) ও সুলায়মান (আ)-এর নেতৃত্বে ইহুদিরা ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। তবে ফিলিস্তিনে যেসব জাতিগোষ্ঠীর লোক প্রাচীনকাল থেকে বসবাস করে আসছিল তাদেরকে পদানত করা হলেও বিতাড়িত করা হয়নি বা ধ্বংস করা হয়নি। তাদের অনেকেই ইহুদি ধর্মমত গ্রহণ করেন, কেউ কেউ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় পদও গ্রহণ করেন। এর প্রমাণ হল, নবী দাউদ (আ)-এর স্ত্রী বৎশেবার পূর্বস্বামী উরিয়া, যিনি ইহুদি রাষ্ট্রের পক্ষে সামনের সারিতে যুদ্ধ করতে গিয়ে সীমান্তে মারা যান, তিনি ছিলেন হিত্তিয় বংশোদ্ভূত। আবার নবী সুলায়মান (আ) হায়কাল নির্মাণের জমিটি ক্রয় করেছিলেন ইয়াবুসি জাতির এক লোকের কাছ থেকে।

সে যাই হোক, বনি ইসরাইলের দুর্ভাগ্য এই যে, তাদের ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্র সত্তর বছরের বেশি স্থায়ী হল না। সুলায়মান (রা)-এর মৃত্যুর পরই ফিলিস্তিন দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। সামেরিয়াকে রাজধানী করে উত্তরে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসরাইল রাষ্ট্র, জেরুজালেম কেন্দ্রিক দক্ষিণ রাষ্ট্রের নাম দেয়া হয় ইয়াহুদিয়া। অচিরেই পূর্বপুরুষের রোগ তাদেরকে পেয়ে। বসে। মুশরিকী জাতিগুলোর আকিদা-বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও পাপাচার তাদেরকে গ্রাস করে।

এক পর্যায়ে অ্যাসিরিয়ার রাজা সারগুন ৭২১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ইসরাইল রাষ্ট্রের অবসান ঘটান। ২৭ হাজার ইহুদিকে অ্যাসিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেয়া হয়। খ্রিষ্টপূর্ব ৫৯৮ অব্দে ব্যবিলনের রাজা বখতে নসর (নেবুচাদ নেজার) জেরুজালেম দখল করেন। ইহুদিরা বিরোধিতা অব্যাহত রাখলে ৫৮৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রাজা বখতে নসর ইয়াহুদিয়া রাজ্য সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেন। এ সময় জেরুজালেম নগরীও সম্পূর্ণরূপে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। বহু সংখ্যক ইয়াহুদিকে দেশ-বিদেশে নির্বাসনে দেয়া হয়। খুব সম্ভবত এটিই সেই প্রথম মহাবিপর্যয় আল-কুরআনের সূরা বনি ইসরাইলে যেদিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।

খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের মধ্যভাগে ইহুদিদের অবস্থার পরিবর্তন হতে থাকে। ৫৩৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে পারস্যরাজ সাইরাসের হাতে ব্যবিলনের পতন হয়। রাজা ইহুদিদের প্রতি সদয় হন। তাদেরকে ফিলিস্তিনে প্রত্যাবর্তনের অনুমতি দেয়া হয়। নানা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ইহুদিরা ইয়াহুদিয়ায় প্রত্যাবর্তন করে। ৪৫৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দে নবী উযাইর ইয়াহুদিয়ায় প্রত্যাবর্তন করেন। এভাবে প্রথম বিপর্যয়ের প্রায় দেড় শত বছর পর ইহুদিরা আবার ফিলিস্তিনে ফেরার সুযোগ লাভ করে। পরবর্তীতে ফিলিস্তিনে গ্রিকদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় । খ্রিস্টপূর্ব ৬৩ সালে রোমান বিজয়ী পম্পেইকে আহ্বান করে ইহুদিরা। তিনি ফিলিস্তিন দখল করেন, তবে সরাসরি শাসন কায়েম না করে সেখানে করদ রাজা নিয়োগ দেন। এ সুযোগ নিয়ে হেরোদ নামের এক চতুর ইহুদি ফিলিস্তিনের রাজা হন। হেরোদের আমলে ঈসা (আ) জন্মগ্রহণ করেন। এ মহান নবীর যুগে ইহুদিদের নৈতিক মান কোন পর্যায়ে নেমে গিয়েছিল সেটি বুঝার জন্য একটি উদাহরণ দেয়াই যথেষ্ট। ঈসা (আ) এর বিরুদ্ধে ব্লাসফেমির অভিযোগ তোলা হলে তাঁকে গ্রেফতার করে শাসক পীলাতের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পীলাত তাকে শাস্তি প্রদানে ইচ্ছুক ছিলেন না। কিন্তু ইহুদি রাব্বীরা একযোগে তার শাস্তি দাবি করে। শাস্তিপ্রদান এড়াতে না পেরে পীলাত বলেন, ‘আজ উৎসবের দিন, এদিন আমি একজন বন্দী মুক্তি দিয়ে থাকি। তোমরা কি বল, ডাকাত বারাব্বাকে মুক্তি দিব না যিশুকে’। উপস্থিত লোকেরা স্বমস্বরে বলে, বারাব্বাকে মুক্তি দিন। শেষ পর্যন্ত যিশুকে শূলীতে চড়ানো হয় (খ্রিস্টান বিশ্বাসমতে)।

খ্রিস্টিয় ৬৪-৬৬ সনে ইহুদিরা রোমানদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিদ্রোহ করে। এর প্রতিক্রিয়ায় রোমান সেনাপতি টিটুস অত্যন্ত কঠোরভাবে ইহুদি বিদ্রোহ দমন করেন। ৬৭ হাজার ইহুদিকে ক্রীতদাস বানানো হয়। অনেককে আফ্রিকায় নির্বাসন দেয়া হয়। বহু ইহুদিকে রোমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ইহুদিরা ইউরোপের নানা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। আল-কুরআনে ইহুদিদের দ্বিতীয় বিপর্যয় বলে খুব সম্ভবত এ ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। এ ঘটনার পরও ফিলিস্তিন ইহুদি শূন্য হয়নি। তবে ফিলিস্তিন তো বটেই, দুনিয়ার কোথাও রাষ্ট্রশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে তাদের দুই হাজার বছর লেগে যায়।

ইহুদিদের দ্বিতীয় বিপর্যয়ের পর ফিলিস্তিনে ক্রমান্বয়ে খ্রিস্টানদের সংখ্যা বেড়ে যায়। স্মর্তব্য যে, এরা বহিরাগত ছিল না। শুরুর দিকে খ্রিস্টান ধর্মকে ইহুদিবাদের একটি শাখা বলে গণ্য করা হত। ঈসা (আ) ইসরাইলিদের মাঝেই দাওয়াতী কাজ করেন। এমনকি প্রাথমিক যুগের খ্রিস্টানরা ইহুদি সিনাগগেই প্রার্থনা অনুষ্ঠান পরিচালনা করতেন। ঈসা (আ)-এর উর্ধারোহণের প্রায় একশত বছর পর তাঁর অনুসারীদেরকে খ্রিস্টান নাম দেয়া হয়। এ নামটি প্রথম প্রচলিত হয় এন্টিয়কে, জেরুজালেমে নয়। তিনশত সালে রোমান সম্রাট কন্সট্যান্টাইন রোম হতে রাজধানী বাইজেন্টিয়ামে (পরবর্তীতে কন্সট্যান্টিনপোল, বর্তমানে ইস্তাম্বুল) স্থানান্তর করেন এবং খ্রিস্টবাদকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে গ্রহণ করেন। এরপর খ্রিস্টধর্ম প্রচারে জোয়ার সৃষ্টি হয়, ফলে রোমানশাসিত অঞ্চল ফিলিস্তিন ধীরে ধীরে খ্রিস্টান প্রধান অঞ্চলে পরিণত হয়। আর তাই আমরা দেখতে পাই ৬৩৬ সালে মুসলিমরা যখন জেরুজালেম জয় করেন তখন এটি ছিল খ্রিস্টান প্রধান শহর।

প্রথম মহাবিপর্যয়ের ১৫০ বছর পর ইহুদিরা ফিলিস্তিনে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়। কিন্তু দ্বিতীয় মহাবিপর্যয়ের পর ফিলিস্তিনে ফিরে আসতে তাদের দু’হাজার বছর লেগে যায়। তবে দীর্ঘ দুই সহস্রাব্দব্যাপী তারা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ফিলিস্তিনে ফিরে যাওয়ার স্বপ্ন লালন করেছে। অবশেষে উসমানীয় খেলাফতের অবসানের পর ফিলিস্তিন ব্রিটিশ কর্তৃত্বে অধীন হলে পৃথিবীর নানা প্রান্ত হতে দলে দলে ইহুদিরা ফিলিস্তিনে আগমন করে এবং ১৯৪৮ সালে ব্রিটিশ শাসন অবসানের সাথে সাথে ইসরাইল রাষ্ট্র ঘোষণা করে।

উপর্যুক্ত বিবরণে অতি সংক্ষেপে ইহুদিদের জাতীয় ইতিহাস উপস্থাপন করা হয়েছে। এক্ষণে ফিলিস্তিনে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে তাদের যুক্তিগুলো পর্যালোচনা করা সহজ হবে। তাদের প্রধান যুক্তি হল ফিলিস্তিন তাদের পূর্বপুরুষের ভূমি। পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও তাদের জাতিগত বিশুদ্ধতা বিনষ্ট হয়নি। অন্য জাতির লোকদের ধর্মান্তরিত হয়ে ইহুদি ধর্ম গ্রহণের প্রবণতা কম থাকায় ইহুদি ধর্মের অনুসারীদের নৃতাত্ত্বিক বিশুদ্ধতা সংরক্ষিত। অতএব ফিলিস্তিনের আদি বাসিন্দা হিসেবে ওই রাষ্ট্রে বসবাস ও কর্তৃত্ব প্রকাশের অধিকার অন্য যে কারো চেয়ে তাদেরই বেশি। অবশ্য এ যুক্তির সমর্থনে কোন নতাত্ত্বিক গবেষণার ফলাফল পাওয়া যায় না। গত শতাব্দীর মধ্যভাগে পশ্চিমাদের কেউ ইহুদিদের কাছে প্রমাণও চায়নি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যাপকহারে ইহুদি নিধনের কথিত প্রচারণার ফলে তারা যে সহানুভূতি অর্জন করেছিল, সে প্রেক্ষাপটে প্রমাণ চাওয়ার মত পাথুরে চিন্তা কারো মস্তিষ্কে উদিত হয়নি।

ইহুদিদের যুক্তির জবাবে প্রথমেই জিনোম গবেষণার ফলাফল উল্লেখ করা প্রয়োজন। অতি সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরের জনস হপকিন্স ইন্সটিটিউটের গবেষক অ্যারন হায়েক জিনোম গবেষণার এক ফলাফলে দেখিয়েছেন যে, ইউরোপীয় ইহুদিরা (বিশ্বের ৯০% ইহুদিই হল ইউরোপীয় ইহুদি) বংশধারার দিক থেকে ফিলিস্তিনি নয়। অর্থাৎ তাদের পূর্বপুরুষের বসবাস ফিলিস্তিনে ছিল না। ইউরোপীয় ইহুদিদের অধিকাংশের রক্তে বইছে ককেশাসের রক্তধারা। বাকিরা গ্রিক ও রোমান বংশোদ্ভূত। খুব অল্পসংখ্যক ইউরোপীয় ইহুদির শোণিতে বইছে প্রাচীন ফিলিস্তিনিদের বংশধারা। অন্য ভাষায় বলা যায়, আধুনিক ইসরাইল রাষ্ট্রের ইহুদি অধিবাসীদের খুব সামান্য অংশই ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত বা সেমেটিক জাতির অংশ।

এই গবেষণার ফলাফলের সাথে ঐতিহাসিক বাস্তবতার মিল রয়েছে। খ্রিস্টিয় ৮ম শতকে ককেশাস অঞ্চলে খাযার জনগোষ্ঠীর বিশাল সাম্রাজ্য ছিল। এটির সীমানা ছিল কাস্পিয়ান সাগরের পশ্চিম তীরে আজারবাইজানের উত্তরাংশ হতে রাশিয়ার ইউরোপ অংশের সীমানা পর্যন্ত। উমাইয়া আমলে আজারবাইজান পর্যন্ত খেলাফতের সীমানা সম্প্রসারিত হয়। তারপর মুসলিমরা বহু চেষ্টা করেও খাযারদের রাজ্য জয় করতে পারেনি। বাবুল আবওয়াব বা দেরবান্দের কাছে গিয়ে বারবার মুসলিমদের ফিরে আসতে হয়েছে। ৯ম ও দশম শতকের মুসলিম ঐতিহাসিক আল-মাসউদি ও ইবনুল ফাকীহ জানাচ্ছেন, খাযারদের রাজ্যে মুষ্টিমেয় ইহুদি বসবাস করত। ৯ম শতকের মধ্যভাগে একটি স্বপ্নের ব্যাখ্যার সূত্রে খাযাররাজ বোলান ও তার অমাত্যরা ইহুদি ধর্ম গ্রহণ করেন। পরবর্তী রাজার সময় বিপুল সংখ্যক খাযার ইহুদি ধর্ম গ্রহণ করে। খাযারি ইহুদিদের সাথে সেমেটিক ইহুদিদের কোন যোগাযোগ ছিল না। তাই আরব ঐতিহাসিকদের বিবরণে দূরদেশ খাযাররাজ্যে ইহুদিদের বসবাসের কথা শুনে বাগদাদের ইহুদিরা যারপর নেই বিস্মিত হয়েছিল।

একাদশ শতকের প্রারম্ভে রুশদের আক্রমণে খাযার রাজ্য ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। খাযার বা ককেশাসের ইহুদিরা রাশিয়া ও ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে। এদের একদল জার্মানিতে বসবাস শুরু করে যারা আশকানাযি ইহুদি নামে পরিচিতি লাভ করে। পূর্ব ইউরোপ ও জার্মানির বেশিরভাগ ইহুদি এই সম্প্রদায়ভুক্ত। মধ্যযুগের রাব্বীরা যেমন খাযারি ইহুদিদের কথা শুনে অবাক হয়েছিল তেমনি আধুনিক যুগের ইহুদিরাও আশকানাযি ইহুদিদের সংখ্যাধিক্যে বিস্মিত। ইহুদি গবেষকগণ নানাভাবে তাদের ফিলিস্তিনি শিকড় অনুসন্ধানের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু অনুমান নির্ভর সকল চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে গেল সর্বসাম্প্রতিক জিনোম গবেষণার ফল প্রকাশের পর। ৯ম শতকের মুসলিম ঐতিহাসিকদের বিবরণ আবার সত্য হল, প্রমাণিত হল অধিকাংশ ইউরোপীয় ইহুদিদের আদি বাসস্থান ছিল ককেশাসের খাযার রাজ্যে। আর এর মাধ্যমেই ইসরাইলিদের এই দাবির অসারতা প্রতিষ্ঠিত হল যে, ইহুদিদের বংশধারায় ভিন্নজাতির শোণিত মিশ্রিত হয়নি। আর তাই ফিলিস্তিনের আদি বাসিন্দাদের বংশধর হওয়ার সূত্রে ইসরাইলে তাদের বসবাস ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যুক্তি গ্রহণযযোগ্য নয়।

ইহুদি অপপ্রচারে চাপা পড়া ভিন্ন চিত্রটিও উপস্থাপন করা দরকার। ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ইবরাহিম (আ)-এর আগমনের শত শত বছর আগে থেকে কেনআন জনগোষ্ঠীর বসবাস। এরা আরব জাতির একটি শাখা। আর তাই ফিলিস্তিনে ইহুদিদের চেয়ে আরবদের অধিকার অগ্রগণ্য। পরবর্তীতে বনি ইসরাইলের মিশর হতে প্রত্যাবর্তনের পূর্বে আরো বহু জাতিগোষ্ঠীর বসবাস শুরু হয় ফিলিস্তিনে। এ জাতিসমূহের মাঝে বংশধারার সংমিশ্রণ হয়, যাদের উত্তর পুরুষ হল বর্তমান ফিলিস্তিনিরা। ফিলিস্তিনের খ্রিস্টান জনগোষ্ঠীও বহিরাগত নয়। আগেই ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, ঈসা (আ) বনি ইসরাইলের নাবী ছিলেন। তিনি ইহুদিদের মাঝেই ধর্মপ্রচার করেন। প্রাথমিক যুগের খ্রিস্টানদের প্রায় সবাই ইহুদি বিশ্বাস হতে ধর্মান্তরিত হয়েছেন। সেই সময় হতে তারা পুরুষানুক্রমে পবিত্র ভূখণ্ডে বসবাস করে আসছে। উমার ইবনুল খাত্তাব (রা) যখন সন্ধিচুক্তির মাধ্যমে জেরুজালেম জয় করেন তখন শহরটি ইহুদি প্রধান এলাকা ছিল না। আর তাই পবিত্র শহর হতে ব্যাপক ইহুদি বিতাড়নের জন্য কোনভাবেই মুসলিম ও আরবদের দায়ী করা যায় না। প্রায় ছয় শতক আগে রোমানরাই ইহুদিদের বিতাড়িত করেছিল। মুসলিমদের প্রাথমিক যুগের বিজয়াভিযানের নিয়ম ছিল এই যে, কোন শহর চুক্তির মাধ্যমে বিজিত হলে সেখান হতে স্থানীয় বাসিন্দাদেরকে বহিষ্কার বা বন্দি করা হতো না। বরং তাদেরকে বসবাসের সুযোগ দেয়া হত। অনুরূপ আচরণ করা হয় জেরুজালেমের ক্ষেত্রে। তাছাড়া শহরটির পবিত্রতা, ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় গুরুত্ব বিবেচনা করে এর বাসিন্দাদের সাথে অত্যন্ত সম্মানজনক আচরণ করা হয়েছে। খলীফা উমার (রা) দূর মদিনা হতে বহু দিনের সফরের পথ অতিক্রম করে নিজে এসে জেরুজালেমের খ্রিস্টানদের সাথে চুক্তি করেছিলেন। খ্রিস্টানরা যেমন, তেমনি জেরুজালেমের মুসলিমরাও বহিরাগত নয়। একটু আগে আমরা দেখেছি। মুসলিম বিজয়ের পর এ শহরের বাসিন্দাদেরকে বহিষ্কার বা বন্দি করা হয়নি। তাই দূরবর্তী অঞ্চলের মুসলিমদের এখানে বসতি স্থাপনের সুযোগ হয়নি। জেরুজালেম ও ফিলিস্তিনের মুসলিমদের অধিকাংশ স্থানীয় বাসিন্দাদের ধর্মান্তরিত অংশ। বহিরাঞ্চল থেকে যারা এসেছিলেন তাদেরও বসবাসের মেয়াদ প্রায় দেড় হাজার বছর পার হয়ে গেছে।

এ তো গেল জাতিতাত্বিক বিশ্লেষণ। রাজ্য পরিচালনার বিচারেও ফিলিস্তিনে ইহুদিদের চেয়ে মুসলিমদের অধিকার অনেক বেশি। বিগত চার হাজার বছরের ইতিহাসে মাত্র সত্তর বছর (তালুত, দাউদ ও সুলায়মান এর আমলে) ফিলিস্তিন একচ্ছত্র ইহুদি শাসনের অধীনে ছিল। আবার এ কৃতিত্বের দাবিদার কেবল ইহুদিরা হতে পারে না। কেননা ওই তিন শাসকের মধ্যে দাউদ ও সুলায়মান (আ) কে খ্রিস্টান এবং মুসলিমরাও নাবী বলে স্বীকার করেন। এই মহান বাদশাহদের শাসনাবসানের পর বিংশ শতকের মধ্যভাগে ইইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পূর্ব পর্যন্ত আর কখনো ইহুদিরা এককভাবে ফিলিস্তিন শাসন করতে পারেনি। পক্ষান্তরে ৬৩৬ সাল হতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি পর্যন্ত প্রায় চৌদ্দশত বছর মুসলিমরা এক নাগাড়ে (ক্রুসেডের সংক্ষিপ্ত ইনটেরেগনাম বাদ দিয়ে) ফিলিস্তিনে রাজত্ব করেছে অতএব রাজত্বের বিচারেও ফিলিস্তিনে আরব মুসলিমদের অধিকার অগ্রগণ্য।

আরবরা অশান্তি চায় না। ইসরাইলের অধিকাংশ বাসিন্দা বহিরাগত হলেও ফিলিস্তিনিরা তাদেরকে মেনে নিয়েছে। তারা চায় ১৯৬৭ সালের পূর্বের সীমানার আলোকে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র, যাতে আরব ও ইহুদিরা পাশাপাশি শান্তিতে বসবাস করতে পারে। আন্তর্জাতিক আইন ও রীতি-নীতি বিসর্জন দিয়ে ইসরাইল একতরফাভাবে জেরুজালেমকে তাদের রাজধানী ঘোষণা করেছিল। একই প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রও জেরুজালেমকে ইসরাইলি রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিল। ফিলিস্তিনের ভূমিপুত্র আরব নাগরিকদের ওপর সীমাহীন জুলুম নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। কে জানে, বাড়াবাড়ির চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত ইসরাইলের জন্য হয়ত তৃতীয় মহাবিপর্যয় অপেক্ষা করছে।

তথ্যসূত্র :

১. আল-কুরআন।

২. বাইবেলের পুরাতন নিয়ম

৩. আল-মাসউদী; মুরুযুয় যাহাব

৪. ইবনুল ফাকীহ আল-হামাদানী, কিতাবুল বুলদান।

৫. http://www.aljazeera.net/news/international/2013/1/18

৬. http://www.islamtoday.net/fatawa/quesshow-60-219014.htm

৭. https://www.paldf.net/forum/showthread.php?t=35587

* লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, আরবী বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

লেখাটি সংগ্রহ করা হয়েছে মাসিক পৃথিবী’র ফেব্রুয়ারী’১৮ সংখ্যা থেকে।

লেখাটির পিডিএফ ডাউনলোড করতে ক্লিক করুন

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

১টি মন্তব্য

  1. বসনিয়ার যুদ্ধ ও মোপলা বিদ্রোহীদের মত ইতিহাস আরো বেশি বেশি দিলে মুসলিমদের ঐক্য আশা করা যায়। আমরাও অনেক কিছু জানতে পারি। আল্লাহ আপনাদের জাজায়ে খয়ের দান করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button