মানসা মুসা: যার ধারে কাছেও নেই বিল গেটস বা জাকারবার্গরা
আজকের পৃথিবীতে গরীবতম অঞ্চলগুলো হলো চাঁদ, মালি, নাইজারের মত আফ্রিকার মুসলিম প্রধান দেশগুলো। কিন্তু জানতেন কি ১৪ শতাব্দীতে ইউরোপে যখন দুর্ভিক্ষ আর খাদ্যাভাবে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যায়, তখন পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ও সচ্ছল এলাকা ছিল আফ্রিকার মুসলিম দেশ মালি? আর ইতিহাসে গত এক হাজার বছরের মধ্যে সবচেয়ে ধনবান যে ব্যক্তিটি জীবন যাপন করেছেন তিনি মালির মুসলিম রাজা ‘মানসা মুসা’?
পশ্চিম আফ্রিকার সবচেয়ে বিশাল, দীর্ঘস্থায়ী ও ধনাঢ্য ‘মালি সাম্রাজ্য’ এর যে গোড়াপত্তনকারী, একাধিক সূত্রমতে তিনি ছিলেন রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর প্রিয় মুয়াজ্জিন, কৃষ্ণকায় সাহাবী বিলাল (রাঃ) এর একজন সরাসরি বংশধর। আয়তনে তা বাংলাদেশের চেয়ে প্রায় ২৯ গুণ বড় ছিল; এর অধীনে শুধু বর্তমানের মালিই ছিলোনা, ছিল গাম্বিয়া, গিনি, গিনি বিসাউ, আইভরি কোস্ট, মউরিতানিয়া, সেনেগাল ও নাইজার। সে যুগে পৃথিবীর সমস্ত স্বর্ণের অর্ধেক সরবরাহ করতো মালি (মনে রাখতে হবে মার্কিন ডলারের ভাউতাবাজি আসার আগ পর্যন্ত বিশ্বের বিনিময়ের মূল মাধ্যম ছিল স্বর্ণ)। প্রচুর স্বর্ণ ও লবণের খনি তাদের বিশ্বের সবচেয়ে ধনী জনপদে পরিণত করে। আর সেই সম্পদে শুধু রাজারাই যে ধনী ছিলো তা না, পশ্চিম আফ্রিকার জনগণেরও ছিল সচ্ছল ও সুখী জীবন।
বিশ্বের সবচে ধনী মানুষ কে? নিঃসন্দেহে বিল গেটস, কার্লোস স্লিম, ওয়ারেন বাফেট, রথচাইল্ড কিংবা রকফেলার পরিবার, অথবা তরুণ বিলিয়নেয়ার মার্ক জাকারবার্গের নামই মনে আসবে। কিন্তু না, এরও অনেক আগে ১৪ শতকে পশ্চিম আফ্রিকার এক ধনকুবের তাদের সবার চেয়ে ঢের বেশি সম্পদের মালিক ছিলেন।
২০১২ সালে ইতিহাসে ধনী ব্যক্তিদের সম্পদের পরিমাণ নিয়ে গবেষণাকারী সংস্থা ‘সেলিব্রেটি নেট ওয়ার্থ’ ওই ধনকুবেরকে বিশ্বের সর্বকালের সবচে ধনী মানুষের খেতাব দিয়েছে। ২০১৫ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিনও বিশ্বের সবচে ধনী মানুষের তালিকায় শীর্ষে রেখেছে তাকে।২০১২ সালের জরিপ মতে, ৪০ হাজার কোটি ডলারের মালিক ছিলেন মুসা। যেখানে ২০১৭ সালে ফোর্বসের হিসাব মতে, বিল গেটসের নেট সম্পদের পরিমাণ ৮ হাজার ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলার।
কে এই ব্যক্তি?
বিশ্বের সর্বকালের সেরা ধনী ওই ব্যক্তির নাম মানসা মুসা।
মালির রাজা আবু বাকর অ্যামেরিকা আবিষ্কারের মিশনে গিয়ে আর ফিরে না আসলে সিংহাসনে বসেন তার ভাই মানসা মুসা। ‘মানসা’ তার নামের অংশ নয়; উপাধী। মালির ভাষায় ‘মানসা’ অর্থ আমীর/রাজা, সুলতান বা সম্রাট। মালির অন্যান্য রাজাদের থেকে যা মানসা মুসাকে আলাদা করেছে তা হলো ইসলামের প্রতি তার ভালোবাসা ও একনিষ্ঠতা। তিনি পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জামাতে আদায়ের পাশাপাশি আরবী খুব ভালোভাবে জানতেন ও নিয়মিত কুরআন পাঠ করতেন। আল্লাহর দেয়া তার বিশাল ধনভান্ডার তিনি ব্যায় করেছিলেন আফ্রিকার বুকে ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠার জন্য। সাদাকা করার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন আফ্রিকায় কিংবদন্তী। তিনি পশ্চিম আফ্রিকায় প্রচুর মাসজিদ নির্মাণ করেন যাদের মধ্যে অনেক মসজিদ ৭০০ বছর পর আজও টিকে আছে।
এছাড়া দ্বীনি ইলম শিক্ষার জন্য সারা সাম্রাজ্য জুড়ে অসংখ্য মাদ্রাসা তার পৃষ্ঠপোষকতায় নির্মিত হয়। টিম্বাকতুর সাংকোরে মাদ্রাসাকে তিনি পুরোপুরি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করেন। সেখানে প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থীর থাকা-খাওয়ার সুব্যবস্থা ছিল। আর তাতে শিক্ষা দিতেন আরব, মাগরিব, আন্দালুস থেকে আসা নামী-দামী শিক্ষরকেরা। এতে ছিল আলেকজান্দ্রিয়ার পর বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লাইব্রেরী যাতে শারীয়া, মেডিসিন, জ্যোতির্বিদ্যা ইত্যাদির প্রায় দশ লাখ পান্ডুলিপি মজুদ ছিল। তার পৃষ্ঠপোষকতায় টিম্বাকতু তৎকালীন বিশ্বের অন্যতম সেরা জ্ঞান বিজ্ঞানের কেন্দ্রে পরিণত হয়।
যে বিষয়টির জন্য মানসা মুসা বিখ্যাত তা ১৩২৪ সালে তার ইউনিক হজ্জযাত্রা যার উপমা ইতিহাসে আর দ্বিতীয়টি নেই। এর ফলে সারা বিশ্বে তার নাম চাউর হয়ে যায় আর ইউরোপ প্রথমবারের মত ম্যাপে মালির নাম যোগ করে। মুসার মক্কায় হজ করতে যাওয়ার একটি ঘটনা আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসে খুবই আলোচিত। মালির এই শাসক মনে করতেন, ইসলামে প্রবেশ মানে হচ্ছে একটি সভ্য সাংস্কৃতিক দুনিয়ায় পদার্পণ। নিজের সাম্রাজ্যের মধ্যে ধর্ম প্রসারের কাজেই বেশিরভাগ সময় ব্যস্ত থাকতেন তিনি। ১৩২৪-২৫ সালের মধ্যে হজ করতে গিয়েছিলেন মুসা। ওই সময় তার সঙ্গে ছিল ৬০ হাজার মানুষ। এদের মধ্যে ১২ হাজার ছিল সেবক। এসব সেবকের প্রত্যেকের সঙ্গে ছিল একটি করে সোনার বার। এছাড়া ৮০ থেকে ১০০টি হাতি ছিল বহর, যেগুলো প্রত্যেকটি স্বর্ণ বহন করছিল, হাজার হাজার কেজি সোনা।
আরও শত শত উটের পিঠে ছিল খাবার, কাপড়সহ সহ প্রয়োজনীয় রসদপাতি।তার সফরে খাদ্যশস্য ছাড়াও সর্বপ্রকার প্রয়োজনীয় সামগ্রী ছিল। তার সফরের অগ্রদূতেরা সুসজ্জিত ঘোড়া, রেশমের কাপড়ে সজ্জিত হয়ে এবং ব্যাগ ভর্তি সোনা নিয়ে সফরের প্রথমাংশে থাকেন। যাত্রাপথে কয়েকশ কোটি টাকা মূল্যের সোনা বিতরণ করেন তিনি। মিসর হয়ে মক্কা যাবার পথে যত গরীব ও দরিদ্রের দেখা পেয়েছেন সবাইকে অর্থ-সম্পদ, খাদ্য-বস্ত্র সাদাকা দিয়ে সাহায্য করেছেন। প্রতি জুমআতে থেমে তিনি সেই এলাকায় একটি মসজিদ নির্মাণ শুরু করতেন ও পরে সম্পূর্ণ করার অর্থ দিয়ে দিতেন। এত বেশি স্বর্ণ বিতরণ করেছিলেন যে পরের কয়েক বছর কায়রো, মক্কা এবং মদিনায় সেখানে স্বর্ণের দাম একেবারেই নেমে গিয়েছিল।
মুসার এই হজযাত্রায় সঙ্গী হন তার প্রথম স্ত্রী। কাফেলায় বেশ কয়েকজন শিক্ষক, চিকিৎসক, সরকারি কর্মকর্তাও ছিলেন।
তখন মক্কাবাসীর জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা দেখে অভিভূত হয়ে পড়েন তিনি। ফেরার সময় সেখান থেকে বহু উট বোঝাই করে চিকিৎসা, জোতির্বিদ্যা, দর্শন, ভূগোল, ইতিহাস, গণিত এবং আইন বিষয়ে প্রচুর বই নিয়ে আসেন। এছাড়া মক্কার সবচে মেধাবী এবং সেরা গণিতবিদ, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী ও স্থাপত্যবিদদের আমন্ত্রণ করে নিয়ে আসেন মালিতে। ইসলামি শিক্ষাভিত্তিক অনেকগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন এবং নিজের সাম্রাজ্য থেকে উত্তর আফ্রিকার ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক শিক্ষার্থী প্রেরণ করেন মুসা।
বলা হয়ে থাকে, ওই হজে মুসা আজকের দিনের প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড ওজনের স্বর্ণ ব্যয় করেছিলেন। মালি সাম্রাজ্যের প্রায় ৪০০ শহরকে আধুনিক রূপ দিয়েছিলেন আলোচিত এই শাসক। তার নির্মিত উল্লেখযোগ্য স্থাপত্যের মধ্যে ইউনিভার্সিটি অব শাঙ্কোর, হল অডিয়েন্স, গ্র্যান্ড প্যালেস ইত্যাদি রয়েছে।
মানসা মুসার জন্ম আনুমানিক ১২৮০ সালে এবং মৃত্যু ১৩৩৭ সালে। তিনি ছিলেন মালি সাম্রাজ্যের (১২৩০খ্রিঃ-১৬০০খ্রিঃ) দশম “মানসা” এবং মালি সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সুন্দিয়াতা কিতার (Sundiata Keita) নাতি । ১৩০৭ সালে ৩২ বছর বয়সে তিনি সিংহাসনে আরোহণ করেন। তিনি প্রথম আফ্রিকান শাসক, যিনি ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছিলেন। মুসার পুরো নাম ‘প্রথম মুসা কিতা’। পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালির সুলতান হওয়ার কারণে তাকে মানসা খেতাবে ভূষিত করা হয়। মানসা ছাড়াও কমপক্ষে আরো ডজনখানেক উপাধী ছিল তার। তাকে প্রথম মুসা, মালির আমির, ওয়াংগারা খনির সম্রাট, কনকান মুসা/কানকো মুসা, মালির সিংহ, গঙ্গা মুসা ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়।
তিনি মালি সম্রাজ্যের এবং আফ্রিকার সবচেয়ে সফল সম্রাট/শাসনকর্তা ছিলেন। তিনি ছিলেন তার সময়ের সবচেয়ে সম্পদশালী সম্রাট এবং সর্বকালের সবচেয়ে ধনী ব্যাক্তি। মুসা ছিলেন একাধারে দক্ষ শাসন কর্তা, ইসলাম প্রচারক, শিক্ষা ও বিজ্ঞান অনুরাগী এবং দানশীল। ইউরোপকেও তিনি এতোটা প্রভাবিত করতে পেরেছিলেন যে তাদের আঁকা আফ্রিকার মানচিত্রে মুসার ছবি ব্যবহার করা হতো।
শুধু সম্পদ নয়, বিশাল একটি সেনাবাহিনীও ছিল তার, যাকে আজকের দিনে বলা যায়, ‘সুপারপাওয়ার আর্মি’। তার সেনাবাহিনীতে সদস্য ছিল দুই লক্ষাধিক, যার মধ্যে ৪০ হাজারই ছিল তীরন্দাজ। তখনকার দিনে এত সংখ্যক সেনাবাহিনী ছিল কল্পনাতীত। ক্ষমতায় আরোহণের পর আফ্রিকার ২৪টি বড় বড় শহর জয় করেছিলেন তিনি।
আফ্রিকার বিশাল অংশজুড়ে বিস্তৃত ছিল মুসার সাম্রাজ্য। তার সময়েই মালি সাম্রাজ্য সবচে বেশি বিস্তার করে। ইতিহাসবিদদের মতে, তার সাম্রাজ্যের আয়তন ছিল প্রায় ১২ লাখ ৯৪ হাজার ৯৯৪ বর্গকিলোমিটার। বর্তমান সময়ের মালি, আইভরি কোস্ট, মৌরিতানিয়া, সেনেগাল, নাইজার, গাম্বিয়া, বুর্কিনা ফাসো, গিনি, গিনি বিসাউ, ঘানা ইত্যাদি দেশগুলোও তখন মালি সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল।
মক্কায় হজপালনকালেই মুসা খবর পান, তার জেনারেল সাগমান্দিয়া গাও শহর দখল করেছে। বিজয়ের পর শহরটি সফর করতে যান তিনি। সেখানে গিয়ে গাও সম্রাটের দুই পুত্রকে বন্দিদশা থেকে মুক্তি দেন এবং মালি সাম্রাজ্যের রাজধানী নিয়ানিতে নিয়ে আসেন। তাদের দুই ভাইকেই উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করেন। মালির থিমবুকতু শহরকে বৃত্তিপ্রাপ্ত মুসলিমদের শিক্ষাকেন্দ্রে পরিণত করেন এই সম্রাট। একইসঙ্গে শহরটি হয়ে ওঠে বাণিজ্য এবং সংস্কৃতি চর্চার একটি কেন্দ্রও। ভেনিস, গ্রানাডা এবং জেনোয়ার মতো ইউরোপীয় শহরগুলোতে যখন এই বাণিজ্যকেন্দ্রটির সংবাদ পৌঁছায় তখন সেখানকার ব্যবসায়ীরা দ্রুত এটিকে তাদের বাণিজ্যিক শহরের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে নেন।
মুসার সময় থিমবুকতু শহরের শাঙ্কোর বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে ওঠে মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার আইন বিশেষজ্ঞ, জ্যোতির্বিদ এবং গণিতবিদদের একটি মিলনমেলা। ১৩৩০ সালে পার্শ্ববর্তী মোসি সাম্রাজ্য থিমবুকতু দখল করে নেয়। সঙ্গে সঙ্গেই সেনাবাহিনী পাঠিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ পুনর্দখল করতে সক্ষম হন মানসা মুসা।
ওই শহরের রাজপ্রাসাদটি ধ্বংস হয়ে গেলেও এখনো কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় এবং মসজিদগুলো। তার সময়েই লাইব্রেরি অব আলেকজান্দ্রিয়ার পর আফ্রিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম শিক্ষাকেন্দ্রে পরিণত হয় ইউনিভার্সিটি অব শাঙ্কোর। সেই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ২৫ হাজার আবাসিক শিক্ষার্থী বিদ্যার্জন করতো এবং পাঠাগারে ছিল এক লাখেরও বেশি বই।
টানা ২৫ বছর মালি শাসন করে ১৩৩২ সালে মৃত্যুবরণ করেন বিশ্বের সর্বকালের সবচে ধনী এই ব্যক্তি। তবে মৃত্যুর সঠিক কোনো কারণ এখনো উদ্ধার করতে পারেননি ইতিহাসবিদরা। মৃত্যুর সাল নিয়েও আছে বিতর্ক। ইতিহাসবিদ ইবনে খালদুনের মতে, কমপক্ষে ১৩৩৭ সাল পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন তিনি। ওই বছরই আলজেরিয়া বিজয়ে সেনাবাহিনী পাঠিয়েছিলেন মুসা।
সূত্র: ফোর্বস, টাইম ম্যাগাজিন, উইকিপিডিয়া
Note:
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে এই সচ্ছল জনপদের কি হলো যে এটি সবচেয়ে ধনী থেকে সবচেয়ে দরিদ্র এলাকায় পরিণত হলো?
উত্তরঃ তাদের ভূমিতে ফরাসী সাম্রাজ্যবাদীরা হামলা করে তাদের জনগণকে দাসে পরিণত করে এবং তাদের সম্পদ ও স্বর্ণ লুট করে নিজেরাই বিশ্বের রাজা হয়ে সে সম্পদ এখন খরচ করছে মধ্যপ্রাচ্যে ও আফ্রিকায় মুসলিমদের উপর বোমা ফেলতে।