
গৌতম চক্রবর্তী এখন মুশাররফ হুসাইন
নাম ছিল তার গৌতম চক্রবর্তী, এখন মুশাররফ হুসাইন। গত তিন বছর আগে স্ত্রী সহ মুসলিম হন। এক ছেলে তিন মেয়ে তার। স্বাভাবিক ভাবেই ধর্ম পরিবর্তনের কারণে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন তিনি। জন্মদাতা বাবা ও মা, সবচেয়ে আপনজনই তাকে অবাঞ্ছিত ও ত্যাজ্য ঘোষণা দেন।
.
ইসলাম গ্রহনের পর একটি রডের দোকানে ছোটখাট কাজ নেন। যা বেতন পেতেন, তা দিয়ে কোনমতে সংসারটাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এরই মধ্যে তার বড় ছেলেটার শরিরে ধরা পড়ে ক্যান্সার। একটি ছোট ছেলের হাসি বাবা মার সব কষ্ট যেমন ভুলিয়ে দেয়, তার কষ্ট মাখা একটি “আহ”ও সমস্ত আনন্দ ও খুশি কেড়ে নেয়ার জন্য যথেষ্ট।
সামান্য বেতনে চাকরি করা এই ভাইয়ের সামর্থ্য কোথায় ক্যান্সারের মত এমন একটি রোগের চিকিৎসা করানোর? এত টাকা কোথা থেকে আসবে? বাধ্য হয়েই ধার করতে হল। প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা ঋণের বোঝা ইতিমধ্যেই কাঁধে নিয়ে তার ছেলের চিকিৎসা করাতে হচ্ছে তাকে।
.
ঘটনা এখানেই শেষ নয়। সম্প্রতি তার ছোট মেয়েটার শ্বাসনালিতে ধরা পড়ে সমস্যা। কুরআন হিফযে রত এই ছোট্ট মেয়েটার ব্যথার কাতরানীও সহ্য করছেন এই নও-মুসলিম বাবা মা।
.
“হাসানাহ” প্রতিনিধির সাথে যখন তাদের দেখা হয়, তাদের চোখগুলো ছিল অশ্রুতে টয়টম্বুর, কিন্তু মুখটি ছিল নিরব। একটি শব্দও এমন বের হয় নি, যা আল্লাহ তা’আলার শানে বেয়াদবি বা অভিযোগের প্রমান বহন করে।
————-
মুশাররফ ভাইয়ের এই ঘটনা তার জন্য সাহায্য চাওয়ার উদ্দেশে দেয়া হয় নি। শুধু নিজের সাথে বোঝাপড়ার জন্য দেয়া। আমরা যেন নিজেদের কষ্টগুলোকে এই ভাইয়ের কষ্টের সাথে মিলিয়ে দেখি। সারাজিবন হিন্দু ধর্মের উপর থেকে মাত্র তিন বছর পূর্বে মুসলিম হওয়া এই স্বামী স্ত্রীর ইমানের দৃঢ়তাকে আমরা -জন্মসুত্রে মুসলিমরা- যেন নিজেদের ইমানের সাথে তুলনা করি।
.
আল্লাহ তা’আলা তার এই দুই বান্দা-বান্দির সমস্ত কষ্ট দূর করে দেন, দুয়ার অনুরোধ রইল।
.
Rizwanul Kabir