দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে ইসলামি আদর্শ

ইসলামে অসাধু উপায়ে অর্থ উপার্জন হারাম বা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের এই বাস্তুবাদী, পুজিবাদি সমাজে অবৈধ্য উপায়ে অর্থ উপার্জন একটা সাধারন ব্যাপার হয়ে গেছে। য়ে, য়েভাবে পারছে লুটে খাচ্ছে। এর থেকে নিস্তার পাওয়া য়াবে কিনা সন্দেহ আছে। অনেকেই চিৎকার করছে, আমাদের সমাজকে একটা দুর্নীতিমুক্ত সমাজ উপহার দেওয়ার জন্য। কিন্তু বাস্তবিকেই কি আমাদের দুর্নীতি মুক্ত সমাজ উপহার দিতে পারবে। কখনই নয়, দিতে পারবে না। হয়ত সাময়িক কিছু মনে হলেও, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ দেওয়া অসম্ভব। কারন আমাদের শিক্ষায় গলদ আছে।

য়ে শিক্ষায় আমরা ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের ছোট থেকেই দুর্নীতি করার শিক্ষা দেই, য়ে শিক্ষায় কচি মননে ডারউনের শিক্ষা দিই। শিক্ষা দিই মানুষ কিছুই না, তারা বিবর্তনের ফসল। শিক্ষা দিই, মানুষ প্রাকৃতিকভাবে জন্মেছ,  প্রাকৃতিক ভাবেই মারা য়াবে। মারা গেলেই সব শেষ, তাই এই জীবন উপভোগ কর। লুটে পুটে খাও। এই রকম সমাজে, দুর্নীতি মুক্ত সমাজ কল্পনাতীত। তাই দুর্নীতি মুক্ত সমাজ গঠনে চাই এমন শিক্ষা, য়ে শিক্ষা মানুষকে পরকালীন জবাবদিহিতার মনভাব  গড়ে তোলে। এই বিশ্বাসে গড়ে তুলতে হবে য়ে, মৃত্যুর পর তোমার ইহকালিন জীবনের কৃতকর্মের হিসাব নেওয়া হবে। সেই অনুয়ায়ী তোমার স্রষ্টা পুরুস্কার বা শাস্তি দেবেন।

একমাত্র য়ে আদর্শ পৃথিবীতে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠন করতে পারে তা হল ইসলাম। ইসলামের অর্থনৈতিক আদর্শকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে সমাজ দুর্নীতি মুক্ত হবে ইনসা-আল্লাহ। ইসলাম এমন এক ভারসার্ম্যপুর্ন জীবন ব্যাবস্থা,  য়ে ব্যাবস্থায় ধনীরা একদিকে য়েমন সম্পদের পাহড় গড়তে পারবে না। অন্যদিকে গরিবরা গরিব হবে না।

নিচে ইসলামের অর্থনৈতিক আদর্শ সংক্ষেপে দেওয়া হল———

১) ইসলাম বৈধ্য ব্যাবসার মাধ্যমে অর্থ উপার্জনকে হালাল করেছে। কিন্তু অন্যের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করতে নিষেধ করা হয়েছে। আর এও বলা হয়েছে কেঊ য়দি অন্যায়ভাবে অপরের সম্পদ ভক্ষন করে কিয়ামতে তা পরিশোধ করতে হবে।
য়ে অন্যায়ভাবে অন্যের সম্পদ আত্তস্বাত করবে, কেয়ামতের দিন,  সে য়ার সম্পদ আত্তস্বাত করেছে তার পাপগুলি ঐ ব্যাক্তির উপর নিক্ষেপ করা হবে। অত:পর তাহাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। ( সুত্র-সূরা নিসা ২৯, এবং হাদিস আহমেদ, মুসলিম, তিরমিয়ী)

২) ইসলামে সুদকে অবৈধ্য ঘোষনা করা হয়েছে। কারন সূদ ধনীকে আরো ধনী, গরীবকে আরো গরীব করে। আর য়েটা আমরা স্পষ্ট লক্ষ করছি। তাই পবিত্র কোরানে আল্লাহতায়ালা বলেন —-” হে বিশ্বাসিগন! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সূদের য়া বকেয়া আছে তা বর্জন কর; য়দি তোমরা বিশ্বাসি হও।”( সূরা বাকারা ২৭৮)
মহান আল্লাহ বলেছেন তোমরা য়দি সফলকাম হতে চাও তাহলে সূদ খেও না। সূদ একটি ধ্বংসকারী কর্ম য়া থেকে দূরে থাকতে হবে। আর ইসলামে বড়পাপগুলির একটি অন্যতম পাপ সূদ খাওয়া। কিন্তু আজ এই সূদকেই আকড়ে ধরে আছে আমাদের সমাজ।

৩) ইসলাম নির্দেশ দিয়ছে প্রত্যেক ধনি লোককে জাকাত দিতে, য়া বাধ্যতামুলক। প্রত্যেক ধনি লোক তার গুচ্ছিত সম্পদের শতকরা ২.৫ টাকা গরীব, অসহায় ইত্যাদি কাতে ব্যায় করতে বলেছে। আর এও বলা হয়েছে য়দি কেউ জাকাত না দেয় তাহলে তার সম্পদ অপবিত্র।  এই অবস্থায় তার কোন ইবাদত গ্রহনয়োগ্য হবে না।

৪) ইসলামে ঘুষকে নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। আর আল্লাহর রাসূল(সা) ঘুষখোর, ঘুষদাতা উভয়কেই অভিশাপ করেছেন।(আবু দাঊদ) ধোকা দিয়ে কোন পন্য বিক্রি করাকেও ইসলাম নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।

৫)ওজনে কম দেওয়াকে ইসলাম হারাম করেছে। তাই পবিত্র কোরানে আল্লাহতায়ালা বলেন–“ধ্বংস তাদের জন্য য়ারা মাপে কম দেয়, য়ারা লোকের নিকট হতে মেপে নেওয়ার সময় পূর্ন মাত্রায় গ্রহন করে আর য়খন ওজন করে দেয়, তখন তারা কম দেয়। তারা কি চিন্তা করে না য়ে, তাদেরকে পুনরুত্থিত করা হবে। এক মহা দিবসে ; য়েদিন দাঁড়াবে সমস্ত মানুষ বিশ্ব জাহানের প্রতিপালকের সন্মুখে।”( মুত্বাফফিফিন) ইতিহাস বলে আল্লাহ, এই কম ওজন দেওয়ার জন্য কত জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছেন।

৬) অন্যায়ভাবে খাদ্য শস্য গুদাম জাত করা ইসলাম নিষিদ্ধ করেছে।

৭) এতীমের সম্পদ ভক্ষন, ইসলামে নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। পবিত্র কোরানে বলা হয়েছে- য়ে এতীমের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষন করে সে য়েন উদরে অগ্নি ভক্ষন করে।(নিসা)

৮) অধিকারীর অধিকার ফিরিয়ে দিতে বলা হয়েছে। তাই কেঊ য়দি ঋন করে মারা য়ায় তাহলে আল্লাহ ক্ষমা করবে না, য়দি না তার ওয়ারিশ দিয়ে দেয়।

৯) য়ারা জাল জুচ্চোরি করে অর্থোপার্জন করে তাদেরকে বিশ্বাসঘাতকের পর্যায়ে ফেলা হবে। তাই আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ(সা) বলেছেন—” কিয়ামতের দিন প্রত্যেক বিশ্বাসঘাতকের জন্য একটি করে বিশেষ পতাকা নির্দিষ্ট হবে। বলা হবে য়ে, এটা অমুক ব্যাক্তির বিশ্বাসঘাতকতার প্রতীক।”( বুখারি)

১০) ইসলামে য়ৌতুক নিয়ে বিবাহকে হারাম করা হয়েছে। এছাড়াও বিয়ের সময় প্রাপ্য মহর(সম্পদ) তার স্ত্রীকে দেওয়ার নিয়েত রাখেনি বা ধোকা দিয়েছে কেয়ামতের দিন ব্যাভিচারী হয়ে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাত করবে।

ইসলামের আদর্শ ছাড়া কখনই সমাজে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠন করা য়াবে না,  তাই আসুন ইসলামের সুমহান আদর্শকে ব্যাক্তিজীবনে ও সমাজ জীবনে প্রতিফলিত করে সমাজকে সর্বাঙ্গ সুন্দর করে গড়ে তুলি।

লিখেছেনঃ এনামুল কবীর
উৎসঃ আহ্বান

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
skybet88 skybet88 skybet88 skybet88 mix parlay skybet88 slot bonus new member skybet88 skybet88 slot gacor skybet88 skybet88