ব্যাচেলর লাইফ ফ্যাক্টসঃ কাছ থেকে দেখা গুনাহের এক অন্ধকার জগত

যখন স্কুল-কলেজে পড়তাম তখন জানতাম গাঁজা খেতে হলে অনেক খারাপ হওয়া লাগে, যারা খায় তারা অনেক খারাপ স্বভাবের হয়! কিন্তু ভার্সিটি লাইফে উঠার পর ব্যাচেলর লাইফে থাকার সুবাধে দেখলাম আশেপাশে অনেকেই এতে অভ্যস্ত! সিগারেটের প্যাকেট চিড়ে তার মধ্যে গাঁজার উপাদান দিয়ে সিগারেট খাওয়ার মতই এই হারাম জিনিস খেতে হয় তাও জানলাম। তাদের অনেকেই আবার পড়াশোনায়ও ভালো,বন্ধুবান্ধবও ভালো হিসেবে চিনে।

আবার অনেকের মাসে কম করে হলেও একবার সিসা না খেলে চলেই না! বিশেষ বিশেষ অকেশনে ড্রিঙ্কস খাওয়া তো আছেই। রেস্টুরেন্টে গিয়ে হাতে বিয়ার নিয়ে ছবি তুলে ফেসবুকে দেয়া তো আছেই।

যদিও সিগারেট খাওয়া হারামের পর্যায়ে পরে (অনেক আলিমের মতে মাকরুহে তাহরিমি তথা হারামের কাছাকাছি) তারপরও গাঁজা এর চেয়েও মারাত্মক গুনাহ কেননা এতে মানুষ  নেশাগ্রস্থ হয়ে যায়।

“আর প্রত্যেক নেশার বস্তুই হারাম।”(বুখারীঃ হাদিস নং ৫৬৮২, আবূ দাঊদঃ হাদিস নং ৩৬৪৩)

“যা অধিক পরিমাণে পান করলে নেশার সৃষ্টি হয় তা অল্প পরিমানে পান করাও হারাম।”[আবূ দাঊদঃহাদিস নং ৩৬৪০]

খেলায় জুয়া ধরা নতুন দেখা আরেক হারাম কাজ। বিশ্বকাপ হোক বা যেকোন ম্যাচ হোক বিশেষ করে চ্যাম্পিয়নস লিগ/স্প্যানিশ লিগ/ইংলিশ লিগের খেলাগুলোতে জুয়া ধরা এখন ডাল ভাত ব্যাপার। জুয়া ধরার ব্যাপারটা মিছামিছি নয়। সরাসরি টাকা লেনদেনের ব্যাপার চলে এখানে। একজন মুসলিমের জন্য জুয়া ধরা সম্পূর্ণ হারাম।

রাত জেগে তাস খেলা আর পর্ণোগ্রাফিতে মেতে উঠা তো আছেই। একজন পেনড্রাইভ ভর্তি করে হারাম জিনিস নিয়ে আসে আর বাকিরা তার কাছ থেকে উৎসবমুখর পরিবেশে ওই হারাম জিনিস গ্রহণ করে। তারপরের কাহিনী নিজ দায়িত্বে বুঝে নিন।

যাদের গার্লফ্রেন্ড আছে তাদের অনেকের ব্যাপার স্যাপার পুরাই আলাদা। দিনের পর দিন ফোনে অশ্লীল কথা বলা তাদের একটি অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি হারাম সম্পর্ক শেষ তো নতুন হারাম সম্পর্কে জড়ানো। অনেকের বাসায় গার্লফ্রেন্ড নিয়ে আসাটা তাদের কাছে খুব স্বাভাবিক একটি কাজ। বসুন্ধরা, নিকুঞ্জ, বনানী এলাকায় ঢাকার বাইরে থেকে আসা অনেকেই ভাই-বোন পরিচয় দিয়ে লিভ টুগেদার করে অভ্যস্থ ! অনেকটা ডাল-ভাত খাওয়ার মতই এটি এখন কমন হয়ে গেছে!

(নিকেতন-বনানী-নিকুঞ্জ-বসুন্ধরা এলাকায় পরিচিত অনেক বন্ধু থাকার সুবাধে ব্যাপারগুলো আরও ভালভাবেই জানি…..আল্লাহ সকলকে হিদায়াত দান করুন। )

পরিবার জানে না, সমাজ জানে না…জানে শুধু কাছের কিছু বন্ধু যাদের সাথে শেয়ার করে এই হারামে ডুবে থাকা হয়। আর জানেন সর্বজ্ঞানী আল্লাহ্‌ সুবাহানাহু  ওয়া তায়ালা। যার কাছে হাশরের ময়দানে এই দুনিয়ার প্রতিটি জিনিসের হিসাব দেয়া লাগবে। একমাত্র  আখিরাত তথা পরকালকে ভুলে যাওয়ার কারণে, আল্লাহ্‌ সুবাহানাহু ওয়া তায়ালার কাছে জবাবদিহিতার মনোভাব না থাকার কারণে, জাহান্নামের কঠিন শাস্তির ভয় না থাকার কারণে, সর্বোপরি নিজের পরিবারের প্রতি দায়বদ্ধতা না থাকার কারণে এবং সন্তানের প্রতি ছোটবেলা থেকে পরিবারের নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি উদাসীনতার কারণে এই খারাপ অভ্যাসে অনেকেই আসক্ত হয়ে পরছে।

মৃত্যু তো আজ হোক,কাল হোক আসবেই। কী নিয়ে কবরে যাবেন ভাই। বর্তমান অবস্থায় যদি মৃত্যু এসে হাজির হয় শত আফসোস করলেও তাওবা করার কোন সুযোগ দেয়া হবে না। সময় থাকতে তাওবা করে আল্লাহ্‌র পথে ফিরে আসুন, আখিরাতের অনন্তকালের জীবনকে ভয় করুন। যে জীবনের শুরু আছে শেষ নেই। শাস্তি একবার শুরু হলে চলতেই থাকবে। যে নেককার হবে সে অনন্তকালের সুখের জীবন লাভ করবে। যে আল্লাহ্‌র হুকুমমতো চলবে না তার শাস্তি মাফ করা বা কমানোর কোন সুযোগই থাকবে না।

মহান আল্লাহ্‌ বলেন,

“যখন তাদের কারও কাছে মৃত্যু আসে, তখন সে বলে, হে আমার পালণকর্তা! আমাকে পুনরায় (দুনিয়াতে)প্রেরণ করুন। যাতে আমি সৎকর্ম করতে পারি, যা আমি করিনি। কখনই নয়, এ তো তার একটি কথার কথা মাত্র। তাদের সামনে পর্দা আছে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত। অতঃপর যখন শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে, সেদিন তাদের পারস্পরিক আত্নীয়তার বন্ধন থাকবে না এবং একে অপরকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে না।যাদের পাল্লা ভারী হবে, তারাই হবে সফলকাম, এবং যাদের পাল্লা হালকা হবে তারাই নিজেদের ক্ষতিসাধন করেছে, তারা দোযখেই চিরকাল বসবাস করবে। আগুন তাদের মুখমন্ডল দগ্ধ করবে এবং তারা তাতে বীভৎস আকার ধারন করবে। তোমাদের সামনে কি আমার আয়াত সমূহ পঠিত হত না? তোমরা তো সেগুলোকে মিথ্যা বলতে।তারা বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা দূর্ভাগ্যের হাতে পরাভূত ছিলাম এবং আমরা ছিলাম বিভ্রান্ত জাতি।হে আমাদের পালনকর্তা! এ থেকে আমাদেরকে উদ্ধার কর; আমরা যদি পুনরায় তা করি, তবে আমরা গোনাহগার হব।আল্লাহ বলবেনঃ তোমরা ধিকৃত অবস্থায় এখানেই পড়ে থাক এবং আমার সাথে কোন কথা বলো না।

(সূরা আল মু’মিনুনঃ আয়াতঃ ৯৯-১০৮)

মহান আল্লাহ্‌ আমাদের সকলকে হিদায়াত দান করুন এবং সকলকে এই খারাবি থেকে হিফাজত করুন।আমিন।

উৎসঃ ফেসবুক

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
skybet88 skybet88 skybet88 skybet88 mix parlay skybet88 slot bonus new member skybet88 skybet88 skybet88 slot gacor skybet88 skybet88