মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের পরিচয়

মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের পরিচয়

লেখক: আব্দুল হামীদ বিন শাসসুদ্দীন

অনুলিখন : শাহাদাত হুসাইন।

উপক্রমণিকা:

মহাগ্রন্থ আল-কুরআন আল্লাহর প্রত্যক্ষ বাণী। কোন মানুষের কাল্পনিক উক্তি এতে অনুপ্রবেশ করেনি। এতে এমন কোন কথা নেই, যা অনুমানভিত্তিক বা অর্থহীন। দুনিয়ার পথহারা মানুষকে সঠিক পথ দেখানোর জন্য মহান আল্লাহ যুগে যুগে নবী ও রাসূল প্রেরণ করেছেন। তাঁদের প্রতি অনুগ্রহ করে আসমানী কিতাব নাযিল করেছেন। এ ক্রমধারার সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ও রাসূল ছিলেন মুহাম্মাদ (সা)। মুহাম্মাদ (সা)-এর উপর বিশ্বজুরে আলোড়ন সৃষ্টিকারী সর্বশেষ  ‘ওয়াহী’ নাযিল হয় তাই আল-কুরআন নামে পরিচিত। মানুষের উদ্দেশ্যে প্রেরিত মহান প্রভুর এই বাণীর প্রতিটি শব্দ ও বাক্য সত্য ও সুন্দরেরর প্রতীক।

identity of al quran

কুরআনের আভিধানিক অর্থ :

পবিত্র কুরআন আল্লাহ প্রেরিত সর্বশেষ ‘ওয়াহী’। এর নামকরণ স্বয়ং আল্লাহ প্রদত্ত। ‘কুরআন’ শব্দের অর্থ বিশ্লেষণে আরবী ভাষার বৈয়াকরণগণ বিভিন্ন মতামত ব্যক্ত করেছেন। তন্মদ্যে কয়েকটি প্রধান মতামত নিম্নরূপ:

  1. ইবনে কাসীর ও ইমাম শাফেঈ (রহ) এর মতে, আল-কুরআন একটি নামবাচক বিশেষ্য। এটি সর্বশেষ ঐশী গ্রন্থের নাম এবং এ নাম তার জন্যে নির্দিষ্ট। কোন ধাতু বা শব্দ থেকে এনামটি নিষ্পন্ন নয়।
  2. ইমাম রাগীব ইস্পাহানীর মতে, ‘ক্বারউন’ শব্দ মূল থেকে আল-কুরআন শব্দটি নিষ্পন্ন।‘ক্বারউন’ অর্থ একত্র করা, সংগ্রহ করা। এ মহাগ্রন্থে সকল আসমানী কিতাবের সারমর্ম ও শিক্ষা এবং হরফ, শব্দ, আয়াত ও সূলা সমূহ একত্রিত করা হয়েছে বলে এরে নাম  ‘আল-কুরআন’।
  3. অনেক ভাষাবিদ ও মুফাসসিরের মতে, আল-কুরআন শব্দটি নিজেই ‘কা্বারাআ’ ক্রিয়ার মাছদার বা ক্রিয়ামূল কাজেই আল-কুরআন অর্থ পাঠ করা। কিন্তু এখানে শব্দটি ‘মাক্বরুউন’ বাপঠিত অর্থে ব্যবহৃত হয়। এ মহাগ্রন্থ জিবরাইল (আ) মহানবী (সা)-কে পাঠ করে শুনাতেন। তাছাড়া এটি বিশ্বের সর্বাধি পঠিত গ্রন্থ। যেমন Encyclopedia of Britannica-তে আল-কুরআনকে বলা হয়েছে “The most widely read book in the world”.

আল-কুরআনের অন্যান্য নাম :

কুরআনুল কারীমের পূর্ণাঙ্গ পরিচিতি তুলে ধরার জন্য আল্লাহ তা’আলা কুরআনের বিভিন্ন সূরায় এ মহাগ্রন্থকে ‘কুরআন ছাড়াও আরো ৩৩টি নামে অভিহিত করেছেন।

যেমন- আল-ফুরক্বান, আল-কিতাব, আয-যিকর, আল-হুদা, আল-হাকীম, আল-হিকমা, আল-বায়ান, আল-বুরহান, আন-নূর, আল-হাক, আল-হাবল, আল-মুবীন, আশ-শিফা, আত-তানযীল, আর-রাহমাত, আর-রূহ, আল-খায়ের প্রভৃতি।

মাক্বী ও মাদানী সূরা :

কুরআনে হাকীমের সূরা ও আয়াতসমূহ প্রধানত: দু’ভাবে বিভক্ত।যথা : মাক্কী ও মাদানী। প্রসিদ্ধ মুফাসসিরগণের মতে, মুহাম্মাদ (সা)-এর হিজরতের পূর্বে মাক্বী জীবনে যে সমস্ত আয়াত ও সুরা নাযিল হয়েছে সেগুলো মাক্বী সুরা। আর যে সমস্ত আয়াত ও সুরা হিজরতের পর নাযিল হয়েছে সেগুলো মাদানী সূরা।

মাক্কী ও মাদানী সূরাগুলির মধ্যে কিছু পার্থক্য বা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। প্রধান বৈশিষ্টগুলোর নিম্নরূপ:

মাক্কী সূরা :

  1. মাক্কী সূলা ও আয়াতসমূহ আকারে ছোট।
  2. ইসলামের মলিক আক্বীদা-বিশ্বাস, তাওহীদ, রিসালাত, আখিরাত, শিরক, কুফর, জান্নাত,ত জাহান্নাম, হিসাব-নিকাশ ইত্যাদির উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
  3. “হে মানব মন্ডলী’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে।
  4. ‘কাল্লা’ শব্দের আধিক্য দেখা যায় ।
  5. আদম (আ), শয়তান ও অতীত নবী-রাসূলগণের ইতিহাস অধিক বর্ণিত হয়েছে।

মাদানী সূরা :

  1. মাদানী সুরা ও আয়াতসমূহ আকারে দীর্ঘ ও বড়।
  2. ‘হে ঈমানদারগণ’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে।
  3. আহকামে শারী’আহ, হালাল, হারাম, বিবাহ,তালাক, ব্যবসা-বাণিজ্য, লেন-দেন প্রভৃতি ব্যবহারিক জীবনের বিশদ বর্ণনা রয়েছে।
  4. উত্তরাধিকার আইন, জিহাদ, রাস্ট্রীয় আইন-কানুন, আন্তর্জাতিক আইন ইত্যাদির প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

কুরআনের সংখ্যাতাত্ত্বিক পরিসংখ্যান:

কুরআনে মোট সূরার সংখ্যা ১১৪টি। প্রসিদ্ধ মতে এর মধ্যে ৮৪ বা ৮৬ বা ৯২টি মাক্বী। অবশিস্ট ২২ বা ২৮ বা ৩০টি সূরা মাদানী। প্রচলিতভাবে আয়াত সংখ্যা বলা হয় ৬৬৬৬টি । কিন্তু তা সঠিক নয়।

সঠিক আয়াত সংখ্যা ছয় হাজার ( এর মধ্যে ২৭৭৫টি আয়াতের পুনরাবৃত্তি রয়েছে।)। ইবনে কাছীর (রহ) বলেন, কুরআনের আয়াত সংখ্যা ৬০০০ হওয়ার ব্যাপারে সকলে একমত। তবে এ সংখ্যা নিয়ে মতভেদ দেখা যায়। মতভেদকৃত অন্যান্য সংখ্যাগুলি নিম্নরূপ:

৬২০৪, ৬২১৪, ৬২১৯, ৬২২৫, ৬২২৬, ৬২৩৬।

মতভেদ সহ কুরআনের শব্দসংখ্যা ৭৭,২৭৭ আ ৭৭,৪৩৭ বা ৭৭,৯৩৪। অক্ষর সংখ্যা ২২১২৬৫ থেকে ৩৩৮৬০৬। যতি চিহ্নের সংখ্যা ১০৫৬৪৮, যের সংখ্যা ২৯৫৮২, যবর-এর সংখ্যা ৫২২৪৩, পেশের সংখ্যা ৮,৮০৪, তাশদীদ সংখ্যা ১,২৭৪টি, মাদ সংখ্যা ১,৭৭১টি, নুকতা ১০৫৬৮৪টি। আল্লাহ শব্দটি ১৫৮৪বার, সালাত ও যাকাত বিধান রয়েছে ১৫০টি আয়াতে, রুকু সংখ্যা ৫৪০টি, মঞ্জীল ৭টি।

সর্ববৃহত সূরা আল-বাক্বারাহ এবং এ সূরার ২৮২ নম্বর আয়াত কুরআনের সর্ববৃহত আয়াত। সূরা আল-কাওছার সর্বাপেক্ষা ছোট সূরা ।সূরা মুযযাম্মিলের ২০নম্বর আয়াত হলে একমাত্র রুকু, যা এক আয়াত বিশিষ্ট। সূরায়ে বারাআত বা তাওবাহ হলো একমাত্র সুরা যার শুরুতে বিসমিল্লাহ লিখিত নেই। সূরা নামল হলো একমাত্র সুলা যার শুরুতে একবার ও মধ্যে একবার মোট দু’বার বিসমিল্লাহ বর্ণিত আছে।

কুরআনের শতকরা ১১ভাগ অর্থ্যাত প্রায় সাড়ে সাতশত আয়াতে বিজ্ঞান সম্পর্কিত বর্ণনা রয়েছে। অবশিষ্ট ৮৯ ভাগ আয়াতে আইন-কানূন, বিধি-বিধান, আচার-অনুষ্ঠান এবং শিক্ষামূলক বিষয়ের অবতারণা করা হয়েছে। বিভিন্ন সূরায় মোট ২৫জন নবী-রাসূলের নাম উল্লেখ রয়েছে।

আল-কুরআনের বৈশিষ্ট্য :

বিষয় বস্তুর পরিপাট্যে, বর্ণনা রীতির মাধুর্যে, ভাষা শৈলীর স্বাতন্ত্রে কুরআন এক অনবদ্য ও স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে দেদীপ্যমান আসমানী গ্রন্থ। নিম্নে এর মাহাত্ম ও গুণ-বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলো।

অভ্রান্ত গ্রন্থ:

মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের প্রথম ও প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এ গ্রন্থ সর্বপ্রকার সংশয়, সন্দেহ মুক্ত, ত্রুটিহীন একমাত্র অভ্রান্ত গ্রন্থ। মানব রচিত গ্রন্থের ভূমিকাতেই ভুল-ত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়। পরবর্তী সংস্করণে ভুল-ত্রুটি দূর করার জন্য সুহৃদয় পাঠকের সহযোগীতা কামনা করে মানবিক দুর্বলতা প্রকাশ করা হয়।কিন্তু কুরআন তার ব্যতীক্রম।কিতাবের শুরুতেই স্বয়ং কুরআন দ্বর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করেছে,

ذَٰلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ

‘এটা সেই কিতাব যা মধ্যে কোন সন্দেহ নেই’।  (সূরা আল-বাক্বারাহ, আয়াত নং-২)।

পূর্নাঙ্গ জীবনবিধান:

আল-কুরআন মানব জাতির পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা।  আল্লাহ বলেন, …………..’এ কিতাবে আমি কোন কিছু লিপিবদ্ধ করা বাদ রাখিনি। (সূরা আল-আনআম, আয়াত নং-৩৮)। কুরআনের মধ্যে মানব জীবনের সকল সমস্যার সমাধান নিখুঁতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

কোন মানব রচিত গ্রন্থ নয় :

মহাগ্রন্থ আল-কুরআন যে হুবুহু আল্লাহর বাণী তাতে কোন সন্দেহ নেই। তদুপরি কুরআন নাযিলের প্রাক্কালে কিছু স্বার্থান্ধ মানুষ এটা ‘মানুষের রচনা’ বলে অপপ্রচার চালায়। এতে আল্লাহ তাদের ও তাদের অনাগত বংশধরদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, ‘আমি আমার বান্দার প্রতি যা নাযিল করেছি, তাতে তোমাদের যদি কোন সন্দেহ থাকে, তাহলে তার অনুরূপ কোন সূরা রচনা করে আন’ (সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত নং-২৩)।

কুরআনের দুশমনরা এ চ্যালেঞ্জের মোকাবেলায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে অবশেষে ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে লিখতে ও বলতে বাধ্য হয়েছে-………… না, এটা কোন মানুষের বাণী নয়।

অবিকৃত গ্রন্থ :

পবিত্র কুরআনের পূর্বেকার সকল আসমানী গ্রন্থই কোন না কোন ভাবে বিকৃত হয়ে গেছে। কিন্তু কুরআন নাযিলের প্রথম দিন থেকে আজ অবধি অবিকৃত অবস্থায় আছে এবং ক্বিয়ামাত পর্যন্ত অবিকৃত থাকবে ইনশাআল্লাহ। কেননা স্বয়ং আল্লাহ এর হেফাযতের দায়িত্ব গ্রহণ করে বলেছেন,

إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُ لَحَافِظُونَ [١٥:٩]

‘আমিই কুরআন নাযিল করেছি আর আমিই তার সংরক্ষণকারী’ (হিজর ৯)

সর্বাধিক সঠিক ও সম্মানিত গ্রন্থ:

দুনিয়ার সবচেয় বেশী পঠিত গ্রন্থ হচ্ছে আল-কুরআন জগতের অন্য কোন গ্রন্থই এত বেশী মানুষ পাঠ করে না। প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষ নানাভাবে এই গ্রন্থ পাঠ করছে। এটা বিশ্বের সর্বাধিক সম্মানিত গ্রন্থ। কোন গ্রন্থকে মানুষ এত সম্মান দেখায় না; যেমনভাবে দেখায় মহাগ্রন্থ আল-কুরআনকে।

জ্ঞান-বিজ্ঞানের উত্স:

কুরআন কেবলমাত্র ধর্মী গ্রন্থই নয়; বরং সর্বপ্রকার জাগতিক জ্ঞান-বিজ্ঞান, গবেষণা ও আবিষ্কারের মূল উত্স।দুনিয়ার সকল জ্ঞান-বিজ্ঞান কুরআন হতেই উত্সারিত। আল্লাহ বলেন,

يُخْرِبُونَ بُيُوتَهُم بِأَيْدِيهِمْ وَأَيْدِي الْمُؤْمِنِينَ فَاعْتَبِرُوا يَا أُولِي الْأَبْصَارِ [٥٩:٢]

‘হে চক্ষুষ্মান ব্যক্তিগণ! তোমরা গবেষণা ও শিক্ষা গ্রহণ কর। (হাশর ২)

কুরআন নাযিলের সময়কাল:

কুরআন একদিনে একত্রে নাযিল হয়নি। দীর্ঘ সময় ধরে তা একটু একটু ও অল্প অল্প করে নাযিল হয়েছে। সর্বসম্মত মত হচ্ছে- আল-কুরআন নাযিল হয়েছে রামাদান মাসের লায়লাতুল ক্বাদরে। আল্লাহ বলেন,

شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِّنَ الْهُدَىٰ وَالْفُرْقَانِ

‘ এই সেই রামাদান মাস, যার মধ্যে কুরআন নাযিল হয়েছে’ (বাক্বারাহ ১৮৫)

অন্যত্র বলা হয়েছে,

إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةٍ مُّبَارَكَةٍ

‘আমি তো এটা অবতীর্ণ করেছি এক মুবারক রজনীতে’ (দুখান ৩)।

বলা হয়েছে,

إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ [٩٧:١]

‘আমি এটা অবতীর্ণ করেছি মহিমান্বিত রজনীতে (ক্বাদর ১)।এই তিন আয়াত পরষ্পর যোগসূত্রে গ্রথিত। কুরআন রমযান মাসে লায়লাতুল ক্বাদরে নাযিল হয়েছে, তাতে সন্দেহ নেই।তবে লায়লাতুল ক্বাদর রামাদানের কত তারিখ ছিলে তা নিয়ে মতভেদ দেখা যায়।

কোন কোন গবেষক বলেন, সে দিন ছিল রমাদান মাসের সতের বা সাতাশ তারিখ। এ সময় রাসূলুল্লাহ (সা) মক্কার জাবালুন নূরে নির্জন গুহায় আল্লাহর ইবাদাতে গভীরভাবে তন্ময় হয়ে থাকতেন এবং তখন তার বয়স হয়েছিল ৪১ বছর। মুসনাদে আহমাদের একটি হাদীস উদ্ধৃত করে ইবনে কাসীর বলেছেন, কুরআন রমাদান মাসের ২৪ তারিখে অবতীর্ণ হয়েছে।

তাফসীর ইবনে কাসীরে বলা হয়েছে, অর্ধ রামাযানে কুরআনে কারীম দুনিয়ার আকাশে অবতীর্ণ হয এবং ‘বায়তুল ইযযায়’ রাখা হয়। অত:পর প্রয়োজন মত ঘটনাবলী ও প্রশ্নাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে অল্প অল্প করে অবতীর্ণ হতে থাকে এবং বিশ বছরে পূর্ণ হয়। অনেকগুলো আয়াত কাফিরদের কথার উত্তরেও অবতীর্ণ হয়।

কুরআন বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উপলক্ষে নাযিল হয়েছে। নাযিল হওয়ার উপলক্ষ বা কারণ সমূহ শানে নুযূল নামে অভিহিত।

রাসূল (সা)-এর প্রতি সর্বপ্রথম সুলা আলাক্বের প্রথম পাঁচটি আয়াত নাযিল হয়।এরপর প্রায় তিনবছর কোন ‘ওয়াহী’ নাযিল হয়নি। এরপর রাসূল (সা)-কে দ্বীনের দাওয়াত প্রচারের কাজ শুরু করার ও লোকদেরকে সতর্ক করার নির্দেশ দিয়ে আয়াত ও সূরা সমূহ ক্রমাগত নাযিল হতে থাকে এবং তা ১০ম হিজরীর ৯ই যিলহাজ্জ পর্যন্ত চলতে থাকে। এ সময়টির মেয়াদকাল ২২ বছর ১ মাস ২২ দিন বলে উল্লেখ আছে।

কুরআন সংরক্ষণ ও সংকলন:

পবিত্র কুরআন জগতের একমাত্র অবিকৃত শ্বাশ্বত ও চিরন্তন ঐশী গ্রন্থ। নাযিলের সূচনা কাল থেকে তা আগাগোড়া এমনভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে যে, তা যে ভাষায় এবং যে শব্দে ও বর্ণে নাযিল হয়েছিল আজ পর্যন্ত ঠিক সে রূপই আছে এবং প্রলয়কাল পর্যন্ত ঠিক তদ্রুপই থাকেব। আল-কুরআন সংরক্ষণের ইতিহাস সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় ছিল রাসুল (সা)-এর যুগ। এ যুগে তাঁর নিজস্ব তত্ত্বাবধানে কুরআন সংরক্ষণের কাজ চলে।এ সময় প্রধানত তিনটি উপায়ে কুরআনের আয়াত সমূহকে সংরক্ষণের প্রয়াস চালানো হয়। যা নিম্নে বর্ণিত হলো:

(ক) হিফয বা মুখস্থকরণ পদ্ধতি: কুরআন নাযিলের ধারা শুরু হওয়ার পর যখন যেটুকু নাযিল হতো রাসূল (সা) সাথে সাথে তা হিফয করে নিতেন এবং সাহাবীদের নিকট তা উচ্চৈ:স্বরে পাঠ করে শোনাতেন ও তাদেরকেও তা মুখস্থ করা নির্দেশ দিতেন। ফলে মেধাবী সাহাবীগণ তা সঙ্গে সঙ্গে মুখস্থ করে ফেলতেন। সে সময় শত শত সাহাবী ছিলেন, যাঁদের কুরআন আগাগোড়া কন্ঠস্থ ছিল।যে যুগের হাফেস সাহাবীদের মদ্যে বিখ্যাত কয়েকজনের নাম- আবু বকর, উমার,উসমান, আলী, ত্বালহা, সা’দ বিন আবী ওয়াক্কাস, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ, আবূ হুরায়রা, আমর ইবনুল আ’স, মু’আবিয়া, আয়েশা (রা)। তাঁর সবাই মুহাজির ছিলেন। অপরদিকে আনসার সাহাবীদের মর্ধ্যে যারা হাফেয ছিলেন, তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন- উবাই বিন কা’ব, যায়েদ বিন সাবিত, মু’আয বিন জাবাল, আনাস বিন মালিক (রা) প্রমুখ সাহাবীগণ।

(খ) লিখন পদ্ধতি: কুরআন নাযিলের সময় রাসূল (সা) মুখস্থ করার পাশাপাশি তা লিপিবদ্ধ করার বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। ‘ওয়াহী’ লিপিবদ্ধ করার জন্য তিনি একদল শিক্ষিত ও চৌকষ সাহাবীকে ‘কাতেবে ওয়াহী’ নিযুক্ত করেন। যাঁরা এ বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন তারা হলেন, যায়েদ বিন সাবিত, আলী, উসমান, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ, উবাই ইবনে কা’ব, মু’আবিয়া, যুবাইর ইবনুল আউয়াম, আব্দুল্লাহ ইবনুল আরকাম, মু’আয ইবনে জাবাল, মুগীরা বিন শু’বা (রা) প্রমুখ।

কাগজের দুষ্প্রাপ্যতার দরুন চামড়া, হাড়, গাছের পাতা, ছাল, পাথর, কাপড় প্রভৃতি লিখার উপকরণ নিয়ে তাঁরা সর্বদাই পর্যায়ক্রমে  প্রস্তুত থাকতেন এবং রাসূলুল্লাহ (সা)-এর নির্দেশ পাওয়ামাত্র ওয়াহী লিপিবদ্ধ করে নিতেন। এ সম্পর্কে যায়িদ বিন সাবিত (রা) বলেন, লেখা শেষ হলে রাসূলুল্লাহ (সা) বলতেন, ‘যা লিখেছ আমাকে পড়ে শোনাও। আমি লিখিত অংশ পড়ে শুনাতাম।কোথাও কোন ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে তা শুদ্ধ করে দিতেন। এরপর সংশ্লিষ্ট অংশটুকু অন্যদের সামনে তিলাওয়াত করতেন।আর এমনিভাবে রাসূল (সা)-এর জীবদ্দশায় পর্যায়ক্রমে সমগ্র কুরআন মাজীদ হিফযকরণ ও লিখন প্রক্রিয়া অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য পন্থায় সুসম্পন্ন হয়।

(গ) পঠন-পাঠন পদ্ধতি ও শিক্ষা দান পদ্ধতি: মুখস্থকরণ ও লিখন পদ্ধতি ছাড়াও রাসুল (সা) ও তার সাহাবীগণ পারষ্পরিক কুরআন শিক্ষা দান, পঠন-পাঠন ও শ্রবণ এবং আমলের মাধ্যমে তার ব্যাপক চর্চা অব্যাহত রাখেন।

সর্বোপরি প্রতি রামাযান মাসে জিবারাঈল (আ) ও মুহাম্মাদ (সা) পরষ্পরে কুরআন আবৃত্তি করতেন ।আর এভাবেই রাসূল (সা) ও সাহাবীগণের দ্বারা আল-কুরআন নিরন্তর সংরক্ষিত হতে থাকে।

সংকলন:

রাসুলুল্লাহ (সা) যতদিন বেঁচে ছিলেন ততদিন কুরআন গ্রন্থাবদ্ধ আকারে সংকলিত হয়নি। রাসূল (সবা)-এর মৃত্যুর পর প্রথম খলীফা আবু বাকর (রা)-এর খিলাফতকালে এক ঐতিহাসিক প্রয়োজনে উমার (রা)-এর পরামর্শে ও যায়িদ বিন সাবিত(রা)-এর তত্ত্বাবধানে সমগ্র কুরআন সর্বপ্রথম গ্রন্থাবদ্ধ আকারে সংকলন করা হয়। তৃতীয় খলিফা উসমান মূল মাসহাফ হতে অতিরিক্ত পান্ডুলিপি তৈরী করে তা বিভিন্ন অঞ্চলে ও কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেন।সেই থেকে অদ্যাবধি ‘মাসহাফে উসমানী’ বিভিন্ন প্রকারে অনুলিপি হয়ে সারা দুনিয়ায় প্রচারিত ও বিকাশিত হয়ে চলছে।

আল-কুরআন একটি চিরন্তন ও জীবন্ত মু’জিযা:

পবিত্র কুরআন এক চিরন্তন ও জীবনন্ত মু’জিযা । যা মুহাম্মাদ (সা)-এর নবুওয়াতের সবচেয়ে বড় প্রমাণ। মুহাম্মাদ (সা) ছিলেন নিরক্ষর। তিনি কখনও কোন শিক্ষকের কাছে যাননি।আর যাননি বিদ্যা অর্জন করতে কোন স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে।জীবনে কখনও তিনি অলংকার সমৃদ্ধ কবিতা রচনা করেননি। এমতাবস্থায় জীবনের ৪০তম বছরে শাব্দিক অলংকারসমৃদ্ধ, বিষ য়বস্তুর বৈচিত্রে অনন্য এ ই কুরআনের মত গ্রন্থ রচনা করা তাঁর পক্ষে কোনভাবেই সম্ভব ছিলো না। তদুপরি তিনি দৈনন্দিন কথাবার্তায় যে ভাষা ব্যবহার করতেন তার সাথে কুরআনের ভাষার কোন মিল ছিল না। তাই নিশ্চিত বলা চলে যে, কুরআন একমাত্র আল্লাহরই বাণী এবং মুহাম্মাদ (সা)-এর এক জীবন্ত মু’জিযা।

কুরআন নাযিল হওয়ার সাথে সাথে একে এমনভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে যে, এর একটি বাক্য বা শব্দ তো দূরের কথা, একটি বর্ণেও কেউ কোনদিন পরিবর্তনা আনতে পারেনি এবং ভবিষ্যতেও এমন কোন সম্ভাবনা নেই। কিন্তু পূর্ববর্তী আসমান কিতাবগুলো যুগে যুগে ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় এবং বিভিন্ন ব্যক্তির দ্বারা লিখিত ও ভাষান্তরিত হ’তে হ’তে আজ এমন পর্যায়ে এসে পৌছেছে যে, ঠিক কোন ভাষায় তা অবতীর্ণ হয়েছিল এবং সে ভাষার আসল রুপ কি ছিল তা ঐ সমস্ত গ্রন্থের অনুসারীরাও সঠিকভাবে বলতে পারে না। সব কিছু মিলে তা বিকৃত রুপ নিয়েছে। কিন্তু কুরআন বিশ্বের অসংখ্য ভাষায় অনূদিত হলেও তা মূল যে ভাষায় নাযিল হয়েছিল, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে হুবহু সে ভাষায়ই বিশ্বের সর্বত্র পঠিত হচ্ছে এবং ভাষান্তরের ফলে এর মানে মতলবা বা ভাবের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির কোন অবকাশ নেই।

কুরআন কি পরিমাণ অপরিবর্তিত রয়েছে, তার একটি জ্বলন্ত প্রমাণ এই যে, সাম্প্রতিককালে ঢাকায় মুদ্রিত এক কপি কুরআন আর কয়েক শতাব্দী পূর্বে ইরাক বা অন্য যেকোন শহরে মুদ্রিত এক কপি কুরআন পাশাপাশি মিলিয়ে দেখলে দেখা যাবে যে, এই দুই কপি কুরআনের কোন বাক্যে, শব্দে, বর্ণে এমনকি কি বিন্দু বিসর্গেওকোন গরমিল নেই।এর কারণ একটিই যে, একে কেউ কোনদিন বিকৃত করতে পারবে না। এটা আল্লাহর কালাম। আর স্বয়ং তিনিই এর সংরক্ষণকারী।

মানব রচিত কোন পুস্তকের সমস্ত কপি যদি পুড়িয়ে বা পানিতে ফেলে দিয়ে ধ্বংস করা হয়, তাহ’লে হুবুহু ঐ ভাষায় পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে না। কিন্তু কুরআন এ নিয়মের ব্যতিক্রম।কুরআনের দুশমুনরা আজ যদি বিশ্বের সমস্ত কুরআনের পান্ডুলিপি ধ্বংস করে ফেলে, তাহলেও তা হুবুহু পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে যে ভাবে পূর্বে ছিলো। তার কারণ, কুরআনেরর লক্ষ লক্ষ হাফিয রয়েছেন। এটিই একমাত্র গ্রন্থ যার অর্থ না বুঝেও আগাগোড়া অনায়াসে মুখস্ত করে নেয়া যায় এবং একারণেই বিশ্বে অন্য কোন গ্রন্থের নয়; শুধুমাত্র কুরআনেরই অগণিত হাফিয রয়েছেন। এটিও একটি কুরআনের চিরন্তন ও জীবন্ত মু’জিযা।

 

কুরআন সম্পর্কে বিভিন্ন মনিষীর অভিমত:

মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের গুণ ও বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। কুরআন যে ঐশী ও অতুলনীয় গ্রন্থ তা জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সবাই স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছে।এখানে কয়েকজন অমুসলিম পন্ডিতদের অভিমত উদ্ধৃত করা হল:

(১) ঐতিহাসিক লেনপুল বলেন, ‘শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে দুনিয়ার উপর পাপাচারের যেসব আচ্ছাদন পড়েছিল পবিত্র কুরআন সে সব নির্মূল করল। পবিত্র কুরআন দুনিয়াকে উন্নত মানবিক চরিত্র, নাগরিক আইন এবং জ্ঞান বিজ্ঞান সম্পর্কে অবহিত করলো। অত্যাচারীদের হৃদয়বান এবং বর্বরকে ধার্মিক বানিয়ে ছাড়ল।এই পবিত্র গ্রন্থ না এলে মানবিক চরিত্রসমূলে ধ্বংস হয়ে যেত, আর দুনিয়ায় মানুষ হ’তো নামকা ওয়াস্তে মানুষ।

(২) ঐতিহাসিক বাসওয়ার্থ বলেন, ‘মুহাম্মাদ (সা) ছিলেন এম এক ব্যক্তি যিনি না লিখতে পারতেন আর না পড়তে জানতেন। অথচ এমন একটি গ্রন্থ উপহার দিলেন, যা একাধারে ছিল ছান্দিক গদ্য গ্রন্থ, আইন গ্রন্থ ও উপাসনা গ্রন্থ। আজ বিশ্বের এক ষষ্ঠাংশ (বর্তমানে এক চতুর্থাংশ) লোক কুরআনের ভঙ্গি, সত্যতা ও জনপ্রিয়তাকে একটি জীবন্ত মু’জিযা বলেই মনে করে। মুহাম্মাদ (সা) এই একটি মাত্র মু’জিযারই দাবী করেছিলেন এবং একে একটি জীবন্ত মু’জিযারূপে প্রতিষ্ঠিতও করে গেছেন এবং প্রকৃতপক্ষে এটি মু’জিযাও বটে।

(৩) ফরাসী ভাষায় কুরআনের অনুবাদক ড. মরিস বুকাইলি বলেন: ‘বিষয়বস্তুর পরিপাট্যে এবং ভাবের গাম্ভীর্যে পবিত্র কুরআন সমস্ত আসমানী কিতাবকে ছাড়িয়ে গেছে। অনাদি অনন্ত প্রভু তাঁর অসীম অনুগ্রহে মানুষের জন্য যে সব গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছেন পবিত্র কুরআন তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। মানুষের মঙ্গল সাধনার ক্ষেত্রে পবিত্র কুরআনের সুর গ্রীক দর্শনের সুর হতে অনেক উর্দ্ধে। হযরত দাউদ (আ)-এর যুগ থেকে  যে সমস্ত আসমানী গ্রন্থ নাযিল হযেছে তার কোনটিই পবিত্র কুরাআনের একটি ছোট্ট সুরার সাথেও প্রতিদন্দ্বিতায় টিকে উঠতে পারেনি। এর সত্য সনাতন ও অনবদ্য ভাব ব্যঞ্জনা যা দিনের পর দিন মানুষের মনোজগতে উদ্ভাসিত হচ্ছে । এর অনুরূপ তথ্য রহস্য যা কোনদিনই সেকেলে হবার নয়। প্রত্যেক মুসলিম মাত্রেই একে একটি গর্বের বস্তু বলে মনে করে ।

(৪) প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও দার্শনিক টলস্টয় বলেন, ‘পবিত্র কুরআন মানব জাতির একটি শ্রেষ্ঠ পথ প্রদর্শক। এর মধ্যে আছে শিক্ষা, সভ্যতা, সংস্কৃতি, জীবিকা অর্জন ও চরিত্র গঠনের নিখূঁত দিগদর্শন। দুনিয়ার সামনে যদি এই একটি মাত্র গ্রন্থ থাকত এবং কোন সংস্কারকও না আসতেন তবুও মানবজাতির পথ পদর্শনের জন্য এটাই ছিল যথেষ্ট।

(৫) সাহিত্যিক দার্শনিক কার্লাইল বলেন, ‘পবিত্র কুরআনকে এমন এক সময়ে দুনিয়ার সামনে তুলে ধরা হয় যখন পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণ, তথা দুনিয়ার প্রতিটি প্রান্তে ছিল ধর্মহীনতার অবাধ রাজত্ব। মিটে গিয়েছিল মানবতা, সৌজন্যতা এবং সভ্যতা সংস্কৃতির নাম নিশানা। দিকে দিকে ছিল অশান্তি ও অরাজকতার আধিপত্য এবং ব্যক্তি পূজার ঘনঘটা। পবিত্র কুরআন মানুষকে বাতলে দিল শান্তির পথ, তাদের অন্তর ভরে দিল প্রেম ভালবাসায়। ফলে কেটে গেল ফিতনা-ফাসাদের কালো প্রেম, প্রতিহত হলো যুলুম-অত্যচারের অবাধ গতি। পথভ্রষ্টরা পথে এলো আর বর্বররা সভ্য হল। এই গ্রন্থ পাল্টে দিল দুনিয়ার অবয়ব। পবিত্র কুরআন মূর্খকে জ্ঞানী, অত্যাচারীকে হৃদয়বান এবং আল্লাহদ্রোহীকে আল্লাহভীতুতে পরিণত করল। এই গ্রন্থ আজ ৪০ কোটি (বর্তমানে ১৫০ কোটি প্রায়) মানুষের মনোরাজ্যের অধিপতি এবং তাদের পরম শ্রদ্ধার বস্তু।

(৬) ঐতিহাসিক গীবন বলেন, “ Quran is glorious testimony of the unity of God”.

শেষ কথা:

বস্তুত: মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের পরিচয় বর্ণনা করা অসাধ্য ব্যাপার। কুরআনের কোন তুলনা নেই। তার তুলনা সে নিজেই। যে যত খোলামন নিয়ে ও নিরপেক্ষ দৃষ্টি দিয়ে কুরআন অধ্যয়ন করবে তার চোখে তত বেশী কুরআনের সৌন্দর্য, মাহাত্ম্য ও সত্যতা ফুটে উঠবে। পরিশেষে বল যায়, পবিত্র কুরআন নি:সন্দেহে আল্লাহর বাণী, সর্বশেষ ওয়াহী ও মানুষের হিদায়াতের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল।

( From Old Islamic Magazine)

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button