রোমান সেনাপতি মাহানের তাঁবুতে খালিদ বিন ওয়ালিদ (আমরা সেই জাতি!)
ইয়ারমুকের যুদ্ধ তখনও শুরু হয়নি। সম্রাট হেরাক্লিয়াসের প্রধান সেনাপতি মাহানের অধীনে কয়েক লক্ষ সৈন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়ে নির্দেশের অপেক্ষায় দণ্ডায়মান। এমন সময় ময়দানের অপর প্রান্তে মুসলিম শিবিরে খবর এল, রোমক সেনাপতি মাহান মুসলিম দূতের সাথে দেখা করতে চান। এই আহবান অনুসারে মুসলিম বাহিনীর প্রধান সেনাপতি আবু উবাইদার নির্দেশে খালিদ ১০০ অশ্বারোহী সৈন্য নিয়ে মাহানের শিবিরে যাবার জন্য প্রস্তুত হলেন। কয়েক লক্ষের বিশাল বাহিনীর মধ্য দিয়ে বীরদর্পে খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁর ১০০ জন সাথী সহ মাহানের দরবারে গিয়ে পৌঁছলেন।
রোমক সেনাপতি মাহান চাইলেন রোমক সৈন্যের শান শওকত ও রোমক দরবারে ঐশ্বর্য দেখিয়ে মুসলমানদেরকে দুর্বল করে দিতে। কিন্তু হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু যখন স্বর্ণ ও রৌপ্য নির্মিত ও কিংখাব খচিত চেয়ারগুলো সরিয়ে রেখে মেঝেতে নিঃসংকোচে আসন গ্রহণ করলেন, তখন যে মাহান মুসলমানদেরকে দুর্বল করে দিতে চেয়েছিল সে নিজেই মনে মনে দুর্বল হয়ে পড়ল। তারপর মাহানের সাথে খালিদের অনেক বিষয়ে তর্ক বিতর্ক হল। মাহান এক সময় বললেন,মুসলিম সৈন্যের প্রত্যেককে একশত দিনার, আবু উবাইদাকে তিনশত দিনার এবং খলীফাকে দশ হাজার দিনার আমি দান করছি, বিনিময়ে যুদ্ধ থেকে বিরত থাকতে হবে। খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু পাল্টা দাবী উত্থাপন করলেন, হয় জিযিয়া দিন, নয়তো ইসলাম গ্রহণ করুন। মাহান খালিদের প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করে বলেন, ঠিক আছে তলোয়ারের সব ফায়সালা করে দেবে।উত্তরে খালিদ বললেন,যুদ্ধের বাসনা আপনাদের চেয়ে আমাদেরই বেশি এবং আমরা অবশ্যই আপনাদেরকে পরাজিত করব।বন্দী করে খলীফার দরবারে হাজির করব।
মাহান তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন। ক্রুদ্ধ কন্ঠে বলল, দেখ, চেয়ে দেখ তোমরা, এখনই তোমাদের সামনে তোমাদের পাঁচজন বন্দী বীরকে হত্যা করছি। সঙ্গে সঙ্গে খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলে উঠলেন, তুমি আমাদেরকে মৃত্যুর ভয় দেখাচ্ছ অথচ মৃত্যুই আমাদের কাম্য। মুসলমানদের জীবন তো মৃত্যুর পর থেকেই শুরু হয়। কিন্তু জেনে রাখ, কোন বন্দীর গায়ে যদি হাত তোল তাহলে এখনই তোমাকে আমরা সদল বলে হত্যা করব। তোমাদের সংখ্যাধিক্যের পরোয়া আমরা করি না।
লক্ষ লক্ষ রোমক সৈন্য পরিবেষ্টিত শিবিরে খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহু আনহুর এই বীরত্বপূর্ণ কথা মাহানের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে দিল। সে খাপ থেকে তলোয়ার বের করার জন্য তলোয়ারের বাঁটে হাত দিল। শিবিরে উপস্থিত কয়েকশ রোমক সৈন্যও প্রস্তুত হয়ে দণ্ডায়মান। কিন্তু তলোয়ার বের করার সুযোগ সে পেলনা। হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এক লাফে তার সমীপবর্তী হয়ে তার বুকে তলোয়ারের অগ্রভাগ ঠেকিয়ে নির্দেশ দিলেন,সব প্রহরীদের অস্ত্র ফেলে দিতে বল, এবং কেউ যাতে কোন বাধা দিতে এগিয়ে না আসে, সে নির্দেশ ঘোষণা কর। ভীত ও বিস্ময় বিস্ফোরিত মাহান সে নির্দেশ পালন করল।
খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তার সাথীগণ সহ বিশাল সৈন্যসারির মধ্য দিয়ে ঘোড়া ছুটিয়ে স্বীয় তাঁবুতে এসে পৌঁছলেন।
I want to download any file
Which file do you want to download ?
I want to download.
খালিদ বিন ওয়ালিদ সম্পর্কিত পূর্নাঙ্গ বই আছে? থাকলে ডাউনলোড লিঙ্ক টি দিন।