আল-কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে রামাদান মাসে একজন মুমিনের দায়িত্ব ও কর্তব্যঃ (পর্ব ২)

আজকের বিষয়ঃ
আল-কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে রামাদান মাসে একজন মুমিনের দায়িত্ব ও কর্তব্যঃ (পর্ব ২)

সিয়াম পালন তথা রোযা ফরয এবং এটি ইসলামের অন্যতম একটি রুকন। আল্লাহ তা’আলা বলেন,
‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমদের উপর রোযা ফরয করে দেয়া হয়েছে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরয করা হয়েছিল, যাতে তোমরা মুত্তাকী হতে পার – নির্দিষ্ট কয়েকদিন মাত্র ……।’’ (সূরা আল-বাকারাহ: ১৮৩-১৮৪)
‘‘সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এ মাস পাবে, তারা যেন এ মাসে রোযা পালন করে।’’ (সূরা আল-বাকারাহ: ১৮৫)
রোযার গুরুত্ব আরো প্রকটিত হয় সে সব ফযীলতের দ্বারা, সে সবের মধ্যে রয়েছেঃ

1. রোযার পুরস্কার আল্লাহ স্বয়ং নিজে প্রদান করবেনঃ
একটি হাদীসে কুদসীতে রাসূল (সা) বলেন,
আল্লাহ বলেন, ‘‘বনী আদমের সকল আমল তার জন্য, অবশ্য রোযার কথা আলাদা, কেননা রোযা আমার জন্য এবং আমিই এর পুরস্কার দিব।’’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮০৫, ৫৫৮৩ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭৬০)

2. রোযা রাখা গোনাহের কাফফারা স্বরূপ এবং ক্ষমালাভের কারণঃ
রাসূল (সা),
‘‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সাওয়াবের আশায় রামাদান মাসে রোযা রাখবে, তার পূর্বের সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।’’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯১০ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৮১৭)

3. রোযা জান্নাত লাভের পথঃ
রাসূল (সা),
‘‘জান্নাতে একটি দরজা রয়েছে যাকে বলা হয় ‘রাইয়ান’ – কিয়ামতের দিন এ দরজা দিয়ে রোযাদারগণ প্রবেশ করবে। অন্য কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না….. রোযাদারগণ প্রবেশ করলে এ দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে আর কেউ সেখান দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।’’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৭৯৭ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭৬৬ )

4. রোযাদারের জন্য রোযা শাফায়াত করবেঃ
উত্তম সনদে ইমাম আহমাদ ও হাকেম বর্ণনা করেন যে, রাসূল (সা) ‘‘রোযা এবং কুরআন কিয়ামতের দিন বান্দার জন্য শাফায়াত করবে। রোযা বলবে, হে রব! আমি তাকে দিবসে পানাহার ও কামনা চারিতার্থ করা থেকে নিবৃত্ত রেখেছি। অতএব, তার ব্যাপারে আমাকে শাফায়াত করার অনুমতি দিন…..।’’ (মুসনাদ, হাদীস নং ৬৬২৬, আল-মুস্তাদরাক, হাদীস নং ২০৩৬)

5. রোযাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর কাছে মিসকের সুগন্ধির চেয়েও উত্তমঃ
রাসূল (সা),
‘‘যার হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ তার শপথ! রোযাদারের মুখের গন্ধ কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে মিসকের চেয়েও সুগন্ধিময়।’’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৯৪ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭৬২)

6. রোযা ইহ-পরকালে সুখ-শান্তি লাভের উপায়ঃ
রাসূল (সা),
‘‘রোযাদারের জন্য দু’টো খুশীর সময় রয়েছে। একটি হলো ইফতারের সময় এবং অন্যটি স্বীয় প্রভু আল্লাহর সাথে মিলিত হওয়ার সময়।’’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮০৫ ও সহীহ মুসলিম, হদীস নং ২৭৬৩)

7. রোযা জাহান্নামের অগ্নি থেকে মুক্তিলাভের ঢালঃ
রাসূল (সা),
‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় একদিন রোযা রাখে, আল্লাহ তাকে জাহান্নাম থেকে সত্তর বৎসরের দূরত্বে নিয়ে যান।’’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৬৮৫ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭৬৭ )

সূত্র

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button
kiw kow kan