প্রশ্ন: সুদ কে কেন হারাম করা হল? যারা সুদ খায় তাদের পরিণাম কি হবে? সুদী ব্যাংকে চাকরী করা যাবে?

প্রশ্ন: সুদ কে কেন হারাম করা হল? যারা সুদ খায় তাদের পরিণাম কি হবে? সুদী ব্যাংকে চাকরী করা যাবে?

উত্তর: যে কোনো মুসলমানের জন্য ওয়াজিব হলো সে আহকামে শরিয়াকে মনে-প্রাণে গ্রহণ করবে এবং আল্লাহর যে কোনো বিধানের ওপর সন্তুষ্ট থাকবে। সে বিধান বা আল্লাহর আদেশের হিকমত-কারণ জানা থাক বা না থাক, তাকে অবশ্যই তার আনুগত্য করতে হবে। তবে আল্লাহর আহকামের মধ্যে কোনো কোনো আহকাম এমন আছে যেগুলির কারণ স্পষ্ট যেমন সুদ হারাম হওয়ার কারণ। সুদকে আল্লাহ এ কারণেই হারাম করেছেন যে, এর মাধ্যমে অভাবীদের অভাবকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগানো হয়, একজন গরিব লোকের ওপর অধিকহারে ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়। এছাড়াও সমাজে সুদের প্রচলনের কারণে পারস্পরিক সুসম্পর্ক নষ্ট হয়, বিশৃংখলা, মারামারি, কাটাকাটি, হানাহানি, খুন-খারাবি ব্যাপকহারে সংঘটিত হয়। সুদের প্রচলনের কারণে মানুষ কাজ-কর্ম, ব্যবসা-বাণিজ্য ছেড়ে দেয়। তারা সুদের আয়ের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে ফলে তারা জমিনে ফসল ফলানোর জন্য কোনো পরিশ্রম করে না। এসব ছাড়াও সুদের রয়েছে আরো অনেক ক্ষতিকারিতা।

আল্লাহ পাক এরশাদ করেন:

“যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে মোহবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছে: ক্রয়-বিক্রয় তো সুদ নেয়ার মতই। অথচ আল্লাহ তা’আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন। অত:পর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপর আল্লাহর উপর নির্ভশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযথে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। আল্লাহপাক সুদকে নিশ্চহ্ন করেন এবয দান খায়রাতকে বর্ধিত করেন। আল্লাজ পছন্দ করেন না কোন অবিশ্বাসী পাপীকে।” (সূরা বাকারাহ: ২৭৫-২৭৬)

যারা সুদ খেয়েছে তাদের তাওবা করে তা থেকে বিরত থাকতে আল্লাহপাক নির্দেশ দিয়েছেন। এরশাদ হয়েছে:

“হে ইমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে সমস্ত আছে, তা পরিত্যাগ কর, যদি তোমরা ইমানদার হয়ে থাক। অত:পর যদি তোমরা পরিত্যাগ না কর, তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত হয়ে যাও। কিন্তু যদি তোমরা তাওবা কর, তবে তোমরা নিজের মূলধন পেয়ে যাবে। তোমরা কারও প্রতি অত্যাচার করো না এবং কেউ তোমাদের প্রতি অত্যাচার করবে না।” (সূরা বাকারাহ: ২৭৮-২৭৯)

সুদী ব্যাংকে চাকরী হারাম। যারা সুদ খায় তাদের যায়গা জাহান্নাম। তাছাড়া রাসূল (স:) সুদের সম্পৃক্ত চার প্রকারের লোককে অভিসম্পাত করেছেন। আব্দুল্লাহ ইবেনে মাসউদ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:
لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- آكِلَ الرِّبَا وَمُوكِلَهُ وَشَاهِدَهُ وَكَاتِبَهُ.
“রাসূল (স:) সুদগ্রহীতাকে, সুদদাতাকে, সাক্ষীদাতাকে এবং লেখকে অভিসম্পাত করেছেন” (হাদীস সহীহ/ আহমদ, তিরমিযী ও ইবনে মাযাহ)

উপরোক্ত হাদিস মতে সুদী ব্যাংকে চাকরী করা হারাম। সুদবিহীন ব্যাংকের ক্ষেত্রে মডেল হিসেবে ‘ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশে লিমিটেড’ কে বিবেচনায় আনা যায়। কারণ বাংলাদেশে এটিই প্রথম ইসলামী ব্যাংক এবং এই ব্যাংকের কার্যক্রম বাংলাদেশের সর্বত্র বিদ্যমান এবং একইসাথে অন্যান্য ইসলামী ব্যাংকের তুলনায় এই ব্যাংকের কার্যক্রম অধিকতর শরীয়াহ ভিত্তিক বলে বিজ্ঞ জনের মত রয়েছে। তাছাড়া বাংলাদেশে কিছু সুদী ব্যাংক আছে, যারা তাদের কিছু শাখায় ইসলামী ব্যাংকিং চালু করেছে, কিন্তু অনেকেরই কাছে এ ধরনের ব্যাংকিং নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ তারা হালালকে হারামের সাথে মিশিয়ে ফেলেছে।

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button
slot online skybet88 skybet88 skybet88 mix parlay skybet88 rtp slot slot bonus new member skybet88 mix parlay slot gacor slot shopeepay mix parlay skybet88 slot bonus new member